শীতেও নিস্তার নেই ডেঙ্গি থেকে। শহরে ফের মৃত্যু ডেঙ্গি আক্রান্তের। এবারে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল এক ডাক্তারি পড়ুয়ার। সূত্রের খবর, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া পৃথ্বীরাজ দাসের মৃত্যু হয় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে। গত ১৩ তারিখ, বৃহস্পতিবার বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
বর্ষার পর থেকে ডেঙ্গির দাপট শুরু হলেও নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। কিন্তু চলতি বছরে পুরোপুরি উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে। বাংলায় প্রবেশ করেছে শীত, কিন্তু শীতেও ডেঙ্গির দাপট কমার নাম নেই। চিকিৎসকদের অনেকেই জানিয়েছেন, ঠান্ডায় ডেঙ্গির লার্ভা খুব একটা সক্রিয় থাকে না। কিন্তু ডিসেম্বরের ঠান্ডায় কীভাবে ডেঙ্গি এত সক্রিয় হয়ে উঠল তা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরাও।
শুধু কলকাতা নয়, চলতি বছরে ডেঙ্গিতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল দুই বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলির মতো জেলাগুলি। চিকিৎসকদের মতে গত এক দশকে সর্বোচ্চ ডেঙ্গির প্রকোপ সর্বোচ্চ ছিল। এদিকে ডিসেম্বরেও ডেঙ্গির দাপটে রীতিমতো চিন্তা বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের।
কোনও ভাবেই যেন রোখা যাচ্ছে না ডেঙ্গি, এমনকি রোখা যাচ্ছে না মৃত্যুও। বৃহস্পতিবার সকালেই কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল আরও এক মহিলার। সূত্রের খবর, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল সল্টলেকের বাসিন্দা প্রতিমা মণ্ডলের। বিধান নগর মহকুমা হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি, বৃহস্পতিবার সকাল ৭:৫০ নাগাদ মারা যান তিনি।
ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই শহর কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০ জনের, সেই হারেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডেঙ্গি সংক্রমণ। একদিকে যেমন গোটা রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ প্রায় ৪০ হাজার ছুঁয়েছে। অন্যদিকে কেবল কলকাতাতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ছুঁয়েছে। কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে ডেঙ্গি রুখতে ইতিমধ্যেই রাজ্য মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জেলাশাসকরা। এরপর নবান্ন কতৃর্ক গোটা রাজ্যের ডেঙ্গি রুখতে যত কর্মী কাজ করছেন সমস্ত কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এমনকি এই কাজে পুলিসকেও হাত লাগাতে বলা হযেছ।
অন্যদিকে কলকাতা পুর এলাকাগুলিতে ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে সক্রিয় মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। দুজনেই কলকাতার বিভিন্ন ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকা ঘুরে দেখেন। জমা জল বা ডেঙ্গির লার্ভা খোঁজের জন্য ড্রোনও ব্যবহার করে কলকাতা কর্পোরেশন কতৃর্ক। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার জরুরি বৈঠকে বসে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার ১৬টা বোরোর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। ডেঙ্গি প্রতিরোধে আগামী দিনে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে? তা নিয়েই হয় এই বৈঠক।
বৈঠকের শেষে ডেপুটি মেয়র জানান, পুরসংস্থার তরফ থেকে টাকা খরচ করে পরিষ্কার করা হচ্ছে। অথচ কিছু অসচেতন মানুষ যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলছেন। ফলে মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন, যেসব বাড়ি থেকে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। তাঁদের প্রত্যেকটি বাড়িতে নোটিস পাঠানো হবে। প্রয়োজনে জরিমানাও করা হবে। জানান ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি আরও জানান, ডেঙ্গি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে খিদিরপুর আরবান হেলথ সেন্টারে ফিভার ক্লিনিক করা হবে। যেখানে অতিরিক্ত ৪০টি বেড বাড়ানো হবে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ইসলামিয়া হাসপাতালেও ১০০টি বেড, ডেঙ্গি ফিভার ক্লিনিক হিসাবে ব্যবহার করা হবে। একই সঙ্গে হেল্প লাইন চালুর ঘোষণাও করেন তিনি।
ডেঙ্গির (Dengue) গতবছরের ভয়াবহতা ফিরছে এবছরেও। বর্ষার শুরু থেকেই রাজ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গির সংক্রমণ। রাজ্যে এ পর্যন্ত ডেঙ্গির বলি (Dengue Death) হয়েছে ২৩ জন। সদ্য প্রকাশিত স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুসারে, ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের নিরিখে ১০ জেলার মধ্যে প্রথম স্থানেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Parganas)। দ্বিতীয় স্থানে নদিয়া আর পঞ্চমে কলকাতা (Kolkata)। ক্রমশ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে দক্ষিণ দমদম (South DumDum) পুরসভার একাধিক জায়গার ডেঙ্গির প্রকোপ। এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। সংক্রমণের সংখ্য বেশি দক্ষিণ কলকাতাতেও। পুরসভা সূত্রে খবর, ৯, ১০, ১১, ১২,১৩ ও ১৪ ছয়টি বরোতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়িয়েছে।
তবে তাতেও কী সর্তক প্রশাসন? শহরে বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলছে প্রশাসনের গাফিলতির ছবি। গত বছর দক্ষিণ কলকাতার আনন্দপুরের ১০৮ নং ওয়ার্ডে দেখা মিলেছিল ডেঙ্গির প্রার্দুভাব। তবে তাতেও পাল্টায়নি এলাকার ছবি। এবছরও এলাকার বিভিন্ন জায়গা ডেঙ্গির মশার প্রজননের মোক্ষম স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও জমে রয়েছে ময়লার স্তুপ, আবার কোথাও রাস্তার ওপর জমা জলে বাসা বেঁধেছে মশার লার্ভা। ঘনবসতি পূর্ণ এলাকা হওয়ায় এই ছবি যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় নেই পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ। যত্রতত্র জমে রয়েছে আবর্জনা, জল। বেহাল এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা। সামন্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন এলাকা। পুরসভার তরফ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ স্থানীয়দের।
ফের ডেঙ্গিতে (Dengue) মৃত্য়ু কলকাতায় (Kolkata)। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকার পরপর দু'জনের মৃত্যু (Dengue Death) হল জ্বরে। শনিবার ভোররাতে দমদম থানার অস্থায়ী পুলিস কর্মীর মৃত্যু হয়। আবার এদিনই দুপুরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক কিশোরীর। স্বাভাবিকভাবেই মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানের দু'জনের মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে দমদম থানার অস্থায়ী পুলিস কর্মী প্রীতম ভৌমিক জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় নাগেরবাজার সংলগ্ন এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। এরপরেই শনিবার ভোর ৩টে ৪৬ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর কারণ হিসেবে মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গি উল্লেখ করা হয়। মৃত প্রীতম ভৌমিক দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনিবাস রোড অঞ্চলের বাসিন্দা।
শনিবার দুপুরে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের দেবেন্দ্র নগর অঞ্চলের বাসিন্দা উদয় সিং-এর ছোট কন্যা ১৬ বছরের মধু সিংয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমের উল্লেখ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই নিয়ে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৫ জনের। রাজ্যে সব মিলিয়ে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। স্বাস্থ্যদফতরের তরফে প্রকাশিত হিসেব বলছে, সংক্রমণের নিরিখে রাজ্যের ১০ জেলার মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা।
ফের ডেঙ্গিতে (dengue) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (death) ৮ বছরের এক নাবালিকার। সে বিধাননগর (Bidhannagar) পুরনিগমের ১৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব নারায়ণতলার বাসিন্দা। ঘটনায় একদিকে যেমন শোকের ছায়া গোটা এলাকায়, অন্যদিকে অভিযোগ ওঠেছে পুরসভার গাফিলতির।
স্থানীয় সূত্রে যেমনটা জানা গিয়েছে, নারায়ণতলার বাসিন্দা ঋত্বিকা সাউ বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে (fever) ভুগছিল। মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তড়িঘড়ি বিসি আর শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিত্সা হচ্ছিল তার। তবে মাঝরাতেই হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে খবর আসে ঋত্বিকার মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিল ছোট ঋত্বিকা। তার শরীরে এনএসওয়ান ভাইরাসের দেখা মিলেছিল।
তবে এমন ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। স্থানীয়রা সরাসরি অভিযোগ করেছেন পুরসভার গাফিলতির। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় কম পরিমাণে দেওয়া হয় ব্লিচিং অথবা মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার অন্য সরঞ্জাম। আর দিলেও তার কোনও প্রভাব তাঁরা দেখতে পান না। সকাল থেকেই ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে রাখতে হয়। যেখানে ডেঙ্গি আক্রান্তে সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে সেখানে উদাসীন মনোভাব পুরসভার।
অন্যদিকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এই বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে জানান, তিনি যথা সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে মৃত্যু বেদনাদায়ক। তিনি দুঃখিত, আগামীদিনেও তাঁর যা করণীয় তাই করবেন।
অন্যদিকে এদিনই রাজপথে নেমে মানুষকে সচেতনতার বার্তা দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। এদিন তিনি ভবানীপুরের (Bhabanipur) একাধিক এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে বার্তা দেন। তিনি স্পষ্টতই বলেন, আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে, শুধুমাত্র পুরসভার ভূমিকা যথেষ্ট নয়। এবছর মাত্রারিক্তভাবে ডেঙ্গির প্রভাব বেড়েছে তাই নিজস্ব উদ্যোগে মানুষকে এই রোগ মোকাবিলা করতে হবে। না হলে একা পুরসভার পক্ষ থেকে কখনই সম্ভব নয় এই রোগ মোকাবিলা করা।
রাজ্যে হুহু করে বাড়ছে ডেঙ্গি (dengue) আক্রান্তের সংখ্যা। সঙ্গেই বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যাও। এবার শিলিগুড়িতে (Siliguri) ডেঙ্গির বলি আরও এক। মৃত্যু (death) বিশ্বজিৎ সরকার নামে এক ব্যক্তির (৪৬)। তিনি শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের (Gautam Dev) প্রতিবেশী। বিশ্বজিৎবাবু শিলিগুড়ি পুর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে (fever) আক্রান্ত ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। পরবর্তীতে ৫ তারিখ একটি বেসরকারি সংস্থায় রক্ত পরীক্ষা করান। সেই পরীক্ষার রিপোর্টে তাঁর ডেঙ্গি আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর শুরুতে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। তবে রবিবার বিকেলে আচমকা অসুস্থতা বাড়তেই তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে (hospital) ভর্তি করা হয়। কিন্তু সোমবার তাঁর মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎবাবু একটি সোনার অলংকারের দোকানে কাজ করতেন। এদিন তাঁর বাড়িতে যান শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ঘটনা প্রসঙ্গে শোকজ্ঞাপন করে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র।
এদিকে, ডেঙ্গি রোধে তৎপর স্বাস্থ্য দফতর। ডেঙ্গি প্রতিকারে নজরদারি দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে নজরদারি দল গঠন করার কথাও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ফিভার ক্লিনিক চালু রাখার নির্দেশও দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। একই সঙ্গে হাসপাতালেও বেড তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গি রোধে সবরকম পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এবার ডেঙ্গি (Dengue Death) প্রাণ কাড়ল কলকাতা পুলিসের (Kolkata police) এক অ্যাসিসটেন্ট সাব ইনস্পেক্টরের (ASI)। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু এএসআই উৎপল কুমার নস্করের। ২৭ তারিখ ডেঙ্গি আক্রান্ত অবস্থায় তাঁকে চিকিৎসাধীন করা হয়েছিল। শনিবার ভোরে উৎপলবাবুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, মৃত এএসআই চম্পাহাটির বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে বাঁশদ্রোণীতে থাকতেন। পরিবার বলতে স্ত্রী এবং মেয়ে।
জানা গিয়েছে, ২৩ অক্টোবর জ্বরে ভুগতে শুরু করেন তিনি। ২৪ অক্টোবর রক্ত পরীক্ষায় তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়ে। সেই সময় প্লেটলেট ছিল সাড়ে ৪ লক্ষ, কিন্তু চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি হতে বারণ করেছিলেন। বুধবার প্লেটলেট নেমে দাঁড়ায় ৩ লক্ষ ৮০। কিন্তু ওই পুলিসকর্মীর জ্বর কমে যায় কিন্তু মাথাব্যথা এবং শরীরে একটি অস্বস্তি থেকে যায়। বৃহস্পতিবার উৎপলবাবুকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করা হয়। ফলে স্থানীয়স্তরে চিকিৎসায় গাফিলতির একটি অভিযোগ তুলছে পরিবার।
মৃত এএসআই কলকাতা পুলিসের ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সদস্য ছিলেন। লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিসের এখনও অনেক কর্মী ডেঙ্গু আক্রান্ত। কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি, কেউ আবার বাড়িতে চিকিৎসাধীন।
প্রসবের দু'দিনের মাথায় মৃত্যু ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত প্রসূতি। মর্মান্তিক এই ঘটনায় ভবানীপুরের (Bhabanipore) গুড়িয়া রজকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ২২ বছর ।কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ভবানীপুর নন্দন পার্কের বাসিন্দা তিনি। রবিবার ডেঙ্গি পজিটিভ ধরা পড়ে। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর (Pregnant Woman) প্রসব করানো হয়। আর প্রসবের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনা। এসএসকেএম হাসপাতাল মৃতার ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি আক্রান্তের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছে।
এদিকে, বুধবার স্কুলছুটির মধ্যেও দমদম মাঠকল চারুচন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দির স্কুল এলাকায ঘুরে ডেঙ্গি সচেতনতার প্রচার করেছে। পাশাপাশি মশারিও বিতরণ করা হয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। ডেঙ্গি থেকে কী করে রক্ষা পাওয়া যায় এবং কী কী সচেতনতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, সেই সমস্ত বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের অবগত করেছে স্কুল।
প্রসঙ্গত, স্কুলটি দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্তর্গত। যে পুর এলাকায় ইতিমধ্যেই দু'জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। যার মধ্যে একজন দশম শ্রেণীর ছাত্রও রয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান ছাত্ররা। প্রধান শিক্ষক জানান, তারা বেশ কয়েকদিন ধরেই সচেতনতা প্রচার করছেন, স্কুলছুটির মধ্যেও যাতে ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ থাকে।
ফের ডেঙ্গি (dengue) আক্রান্তের মৃত্যু (death) শহরে। জানা যায়, বাগবাজারের (Bagbazar) একটি বেসরকারি হাসপাতালে (hospital) ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) বাসিন্দা সুমন সরকার। বছর ৪০-এর সুমনকে ২২ তারিখ ভর্তি করা হয়। এরপর দু'দিন পর অর্থাত্ ২৪ তারিখ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। অপরদিকে, দেশবন্ধু রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু আরও একজনের। জানা যায়, বছর ৩৮-এর ওই মহিলা উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা। মহিলার নাম মল্লিকা দাস।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবাসী যখন পুজো মুডে, তখন রাজ্যে ফের বাড়ল ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার ৮১১৭ জনের ডেঙ্গি টেস্ট করা হয়। যার মধ্যে নতুন করে ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৯১২ জন। অপরদিকে ৬১০ জন রোগী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি। একই সঙ্গে ডেঙ্গির প্রভাব যে সমস্ত জেলাতে রয়েছে যেমন, উত্তর ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে আক্রান্তের সংখ্যা একই রয়েছে। এমনটাই পরিসংখ্যান দিয়ে জানালো স্বাস্থ্যভবন।
এছাড়াও, পুজোর আবহে যেভাবে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেই প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সামাল দিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় কোনওভাবেই স্বাস্থ্য দফতরে কর্মরত আধিকারিক, ডিরেক্টর, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদ মর্যাদার আধিকারিক, এছাড়াও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার, ডেপুটি সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার-রা যথাযোগ্য কারণ ছাড়া ছুটি নিতে পারবেন না।
পাশাপাশি, নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সকল স্বাস্থ্য আধিকারিকদের যেন ফোনে পাওয়া যায়। অন্যদিকে হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পুজোর দিনগুলিতে অর্থাৎ ২-রা অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত জরুরী বিভাগ যেন স্বাভাবিক সময়ের মত খোলা থাকে। অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা ব্যবস্থা যেন স্বাভাবিক থাকে। পুজোর মধ্যে রবিবার ৯-ই অক্টোবরও স্বাভাবিক রাখতে হবে সমস্ত বিভাগের চিকিৎসা ব্যবস্থা।
ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু বেলুড়ের জয় বিবি রোডে। মৃত্যু হয়েছে ছয় মাসের শিশুর। গত ২ তারিখ তাকে ভর্তি করা হয় কলকাতার মেডিকেল কলেজে। গত রাতে তার মৃত্যু হয়। ওই এলাকায় গত মঙ্গলবার এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গিতে।
অর্থাৎ ফের ডেঙ্গি ছড়াল হাওড়া শহরাঞ্চলে। ডেঙ্গিতে চারজনের মৃত্যু হল। গতকাল বালি রবীন্দ্রভবনে ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ডেঙ্গি প্রতিরোধে উপযুক্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে সভা হয়।
অন্যদিকে শহরে ফের মৃত্যু এক ডেঙ্গি আক্রান্তের। মৌমিতা মুখার্জি হালতুর কায়স্থপাড়ার বাসিন্দা। সোমবার জ্বর নিয়ে যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ সকালে তাঁর ক্যার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। ছোট ছেলেও ডেঙ্গি আক্রান্ত হয় এবং আজ বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রকে।
ফের ডেঙ্গিতে (dengue) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু উত্তরপাড়ায় (Uttarpara)। এবার মৃত (dead) এক বছর ৩৭-এর যুবক। ঘটনায় ফের আতঙ্ক হুগলিতে (Hooghly)। জানা যায়, মৃতের নাম সন্দীপ কুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি হুগলির উত্তরপাড়া শিবনারায়ন স্ট্রিটের বাসিন্দা। একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়েও আছে। পরিবার সূত্রে খবর, গত শুক্রবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন সন্দীপ। এরপরই উত্তরপাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে উত্তরপাড়া পুরসভা পরিচালিত মহামায়া হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয় আইসিসিইউতে। তবে শনিবার তিনটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।
মৃত যুবকের বাবা উজ্জ্বল কুমার মুখোপাধ্যায় জানান, "এক সপ্তাহ আগে বাড়িতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরে যান সন্দীপ। এরপর দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করেন তিনি। কোনওভাবেই তাঁর জ্ঞান ফিরছিল না। এদিকে নার্সিংহোমের বিল বাড়তে থাকে। রক্ত পরীক্ষায় জানতে পারি তাঁর ডেঙ্গি হয়েছে। তার আগে আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি।"
প্রসঙ্গত, উত্তরপাড়া পুরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশা মারার তেল স্প্রে করা হয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়, তা সত্ত্বেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। তবুও খুব বেশি মশার উৎপাত। এর আগে উত্তরপাড়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দু'জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এক কথায় উত্তরপাড়া শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি বেড়েই চলেছে। পুজোর মুখে ডেঙ্গি ভয় ধরাচ্ছে হুগলিতে।
হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভূঁইয়া বলেন, "ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে কিনা সেটা আগে জানা দরকার। আমাদের কাছে এখনও কোনও রিপোর্ট আসেনি। তবে প্রাথমিক একটা রিপোর্ট যেটা এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে কোমর্বিডিটি ছিল। বর্তমানে হুগলি জেলায় ৬৫০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৩৬ জন।"