বিলম্বিত বোধদয়। গরু পাচার কীভাবে হয় তিনি জানেন। কিন্তু এতদিন আশ্চর্য রকম ভাবে চুপ ছিলেন। শনিবার দিনহাটার একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলীয় কর্মীদের কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সতর্ক করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। বর্তমান রাজনীতির সবথেকে আলোচিত বিষয় অবশ্যই গরুপাচার দুর্নীতি। এই অভিযোগে ইতিমধ্যে সিবিআই গ্রেফতার করেছে অনুব্রত মণ্ডলকে। পিঁয়াজের খোসার মত পরতে পরতে বেরিয়ে আসছে দুর্নীতির অভিযোগ। শাসকদলের তরফে এহেন দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে মানুষ। এরকম পরিস্থিতে আক্রমণই রক্ষণের ভালো পথ, নীতি নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে বিঁধছেন তৃণমূল নেতামন্ত্রীরা। বাদ গেলেন না উদয়ন গুহও।
কেন্দ্র সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বাংলা দখলের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উদয়ন গুহ এদিন আরও বলেন, 'হয়তো বা গরুচুরি, কয়লাচুরির মিথ্যে কেসে ফাঁসিয়ে কোনও একদিন আমাকেও জেলে ঢোকানো হতে পারে। সীমান্তে গরুপাচার হওয়ার সময় বিএসএফ আশ্চর্যরকম ভাবে উদাসীন থাকে। বখরায় গণ্ডগোল হলেই তত্পর হয়।' উদয়ন গুহর এই বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, সীমান্তে কীভাবে গরু পাচার হয়, তা যদি তিনি জেনেই থাকেন তাহলে এতদিন ধরে মুখ খোলেননি কেন? কেন হঠাত্ করে মনে হল যে তাঁকে জেলে ঢোকানো হতে পারে?
ঠিক কী বললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ?
তবে কি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতের আভাস মিলেছে? রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী নেতা মন্ত্রী এখন সিবিআই-ইডি ব়্যাডারে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তা নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে শাসক দল। উদয়ন গুহর ক্ষেত্রে প্রশ্নটা কমন হলেও উত্তর মেলেনি এখনও।
যদিও উদয়ন গুহর এহেন মন্তব্যের সমালোচনায় সরব বিজেপি। দলের কোচবিহার জেলা বিজেপির সম্পাদক বিরাজ বসু জানান, উদয়ন গুহ ভালো রাজনীতিবিদ। বাম থেকে তৃণমূল শিবিরে আসা পুরোটাই নিজের স্বার্থরক্ষার জন্য তিনি সবকিছুই করেছেন।
সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে রাজ্য পুলিসের কাছে সপরিবারে আত্মসমর্পণ (Surrender) করলেন কেএলও নেতা (KLO Leader) কৈলাস কোচ। বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিসের ডিজি (DGP, bengal Police) মনোজ মালব্য, কৈলাস এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্নাকে পাশে বসিয়ে এই ঘোষণা করেন। ডিজি জানান, 'কামতাপুরী লিবারেশন অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক কৈলাস। তিনি নিজেই আমাদের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব রাখেন। গণতন্ত্রে হিংসা বা সন্ত্রাসবাদের জায়গা নেই, এটা অনুধাবন করেই কৈলাস এবং তাঁর পরিবারের এই সিদ্ধান্ত।' এদিন ভবানী ভবনে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে ডিজির কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র সমর্পণ করেন কেএলও-র একদা এই কমান্ডার।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে কৈলাস কোচ জানান, 'হিংসার মাধ্যমে কামতাপুরের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা আমি ১৬ বছর সশস্ত্র আন্দোলন করে বুঝেছি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কামতাপুরে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে মুলস্রোতে ফিরলাম। আমি চাই আমার যারা ভাইবোন এবং বন্ধুবান্ধব এখনও অস্ত্র ধরে আছেন, তারাও মূলস্রোতে ফিরুক।'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কৈলাস কোচ কেএলও বিচ্ছিনতাবাদী সংগঠনের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। অসম এবং কোচবিহারের একটি অংশকে পৃথক করে গ্রেটার কোচবিহার বা কামতাপুর রাজ্যের দাবি বহুদিনের। সেই দাবিকে বাস্তব রূপ দিতে তৈরি হয়েছিল বিচ্ছিনতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলও। এই সংগঠনের নেতা জীবন সিং বর্তমানে মায়ানমারে আত্মগোপন করে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে বার্তা পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই কাজে মধ্যস্থতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে।
ইতিমধ্যে একদা সক্রিয় থাকা জীবন সিং এবং কেএলও ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়েছে। কিন্তু নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে মাঝে মধ্যেই ভিডিওবার্তা পাঠান তিনি। সেখানেও পৃথক রাজ্যের দাবি জানান তিনি। যদিও সম্প্রতি আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্য চেয়ে ভিডিওবার্তা পাঠাতে দেখা গিয়েছে জীবন সিংকে।
আর্থিক লেনদেনের কারণে এক ব্যক্তিকে মেরে (murder) ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কোচবিহার (Cooch Behar) দক্ষিণ খাগড়াবাড়ি এলাকায়।
জানা যায়, মৃত ওই ব্যক্তির নাম প্রদীপ মজুমদার, বয়স ৫৯ বছর। খবর পেয়ে ছুটে আসে কোচবিহার কোতোয়ালি থানা পুলিস (police)। মৃতদেহটি (deadbody) উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশী সমৃষ্ঠা গোস্বামীর কাছে টাকা পয়সা পেতেন প্রদীপ মজুমদার। সেই টাকা দিচ্ছিল না বহুদিন ধরেই সমৃষ্ঠা। এরপর মঙ্গলবার রাতে সমৃষ্ঠার বাড়িতেই ঝুলন্ত অবস্থায় প্রদীপ মজুমদারের দেহ পাওয়া গিয়েছে। যা নিয়ে বিভিন্ন রহস্য ডানা বেঁধেছে।
মৃত প্রদীপ মজুমদারের দাদার অভিযোগ, সমৃষ্ঠা গোস্বামী নামে ঐ মহিলার কাছে টাকা পেতেন তাঁর ভাই। সেই টাকা চাইতে গেলে তা দিচ্ছিল না সমৃষ্ঠা। বিভিন্নভাবে হুমকি দিত উল্টো তাঁরা। এরপর মঙ্গলবার হঠাৎই ওই মহিলা তাঁকে ফোন করে বলে তাঁর বাড়িতে আসার জন্য। তিনি এই মহিলার বাড়িতে আসার পর দেখেন তাঁর ভাই ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এরপরে খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। পুলিস এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তাঁর অভিযোগ, ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁর ভাইকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।
যদিও সমৃষ্ঠা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সমৃষ্ঠা গোস্বামী। তাঁর দাবি, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনার তদন্তে পুলিস।
ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় (Accident) গুরুতর আহত (injured) হলেন দুই বিএসএফ জওয়ান (BSF jawan)। ঘটনাটি মাথাভাঙা (Mathavanga) ১ নং ব্লকের পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চানন মোড় সংলগ্ন এলাকার। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোচবিহারের (Cooch Behar) দিক থেকে মাথাভাঙার দিকে আসা একটি ট্রাক এবং মাথাভাঙার দিক থেকে কোচবিহারের দিকে যাওয়া একটি বিএসএফ জওয়ানের গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে বিএসএফ জওয়ানদের গাড়ির সামনের অংশ একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়। পাশাপাশি ঘটনাস্থলেই আহত হন দুই বিএসএফ জওয়ান। পথদুর্ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে আহত দুই বিএসএফ জওয়ানকে উদ্ধার করে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।