প্রসূন গুপ্ত: এ বছর ১৪ নভেম্বর, সোমবার দেশব্যাপী পালিত 'শিশু দিবস' (Childrens Day)। লোক দেখানো নয়, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু (Jawaharlal Neheru) যথার্থই ভালোবাসতেন শিশুদের। যে কোনও সভা-সমিতিতে গেলে সেখানে বাচ্চা দেখলেই তিনিও শিশু হয়ে যেতেন। শোনা যায়, তাঁর জামাই তথা প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ফিরোজ গান্ধীর মৃত্যুর পরে নাকি প্রচণ্ড অবসাদে ভুগেছিলেন ইন্দিরা। নেহেরু কন্যা-সহ দুই নাতিকে নিজের কাছেই রেখেছিলেন। এই দুই নাতিদের অন্যতম প্রাক্তন প্রধামন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং একসময়ের কংগ্রেস যুব নেতা সঞ্জয় গান্ধী।
কার্যত যখনই সময় পেতেন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল তখনই নাতিদের সঙ্গে খেলায় মত্ত হতেন। নেহেরু পছন্দ করতেন আইনজীবীদেরও, তিনি নিজে ব্যারিস্টার ছিলেন। মহাত্মা গান্ধীও ব্যারিস্টার ছিলেন। ফলে স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত নেতাদের মধ্যে আইনজীবীদের একটা ভূমিকা ছিল। প্রথম স্বাধীন ভারতের মন্ত্রিসভায় নেহেরু অনেক আইজীবীদের মন্ত্রী করে নিয়ে আসেন। চিত্তরঞ্জন দাশের নাতি ঠিকমতো ব্যারিস্টারি পড়ছে কিনা, তার খবরও নিতেন নিয়মিত। পরে ওই নাতিই সিদ্ধার্থ শংকর রায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এরকম বহু ইতিহাস আছে আইনজীবী ও নেহেরুকে নিয়ে।
প্রয়াত অজিত পাঁজার আজ আবার প্রয়াণ দিবস। ১৯৩৬-এ অজিতবাবু এক বর্ধিষ্ণু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারটি ছিল পুরোদস্তুর গান্ধীবাদী স্বদেশী আন্দোলনের। অজিতবাবু এই প্রতিবেদককে জীবদ্দশায় জানিয়েছিলেন, চিকিৎসা বিদ্যায় আগ্রহ থাকা তাঁর পরিবারে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। তাই আইন পড়া শুরু করেন। কলেজে জীবনে স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে যান। ১৯৬২-র চীন ভারত যুদ্ধের পর নেহেরু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলার পথে তাঁকে লাঠি ব্যবহার করতে হতো।ক্রমে অজিত পাঁজার সঙ্গে নেহেরুর আলাপ হয়। অজিতবাবু তখন আইন পাস করে একদিকে হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করছেন অন্যদিকে চুটিয়ে কংগ্রেস করছেন। নেহেরু খুব খুশি হন আরও এক আইজীবীকে কাছে পেয়ে।
তিনি অজিতবাবুকে নবীন প্রজন্মের রাজনীতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার উপদেশ দেন। এঁরা যেন আইন বুঝে দেশের কাজ করে।অজিতবাবু পরবর্তীতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব পান।রাজীব গান্ধীর আমলে কেন্দ্রের মন্ত্রী, নরসিমা রাওয়ের আমলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। শেষে দল ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেন এবং জিতে ফের বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন অজিত পাঁজা। সুস্থও হয়েছিলেন কিন্তু মমতার বঙ্গজয় আর দেখে যেতে পারেননি। ভারতীয় রাজনীতির এই দুই বর্ণময় চরিত্র; একজনের জন্মদিন আর একজনের প্রয়াণ দিন।
একের পর এক নিখোঁজের ঘটনা। হদিশ হওয়ায় কিছুদিন বাদে মৃতদেহ (Deadbody) উদ্ধার। এসব ঘটনায় কার্যত আতঙ্কিত ছিলেন নিখোঁজ (Missing) হওয়া দুই শিশুর পরিবার। অবশেষে খোঁজ মিলল তাঁদের। পুলিসি (Police) তৎপরতায় তারা এখন কোথায় রয়েছে তা জানা গিয়েছে। অবশেষে স্বস্তি শিশুদুটির পরিবারে।
গত শনিবার দুপুর ১ টার পর থেকে বোলপুর (Bolpur) থানার অন্তর্গত সুরশ্রী পল্লী (Surashree Palli) থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় বিনোদ মাহাতো এবং প্রমোদ মাহাতো নামের ওই দুই শিশু। ঘটনার পর বোলপুর থানায় অভিযোগ জানান শিশুদুটির বাবা। এরপর থেকেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিসের তরফ থেকে তল্লাশি শুরু হয়। তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি ওই দুই শিশুর।
শেষমেশ রবিবার রাতে তাদের খোঁজ পায় পুলিস। পুলিস এবং তার বাবা যৌথভাবে পৌঁছে যায় বিহারের বৈশালী জেলার শীতল ভাকরোহ গ্রামে। সেখানে ওই দুই শিশুর মায়ের নিজের বাড়ি। দুই শিশুর খোঁজ মিলতে স্বস্তি ফেরে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। যদিও দুই শিশুকে বাবা মহেশ মাহাতো মায়ের কাছে রেখে আসতে বাধ্য হন বলে জানা গিয়েছে। এরপর সেখান থেকে বোলপুর থানার পুলিস এবং মহেশ মাহাতো বোলপুর ফিরে আসছেন।
বসিরহাটের (Basirhat) বাদুড়িয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের খোড়গাছি বয়ারডাঙ্গা পাড়ার ঘটনা। বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ একদল শিশু (Children Death) এলাকার এক ধর্মীয় স্থানের পাঁচিলের উপর খেলা করছিল। সেই সময় হঠাৎ পাঁচিলের গেটের কংক্রিটের স্ল্যাব (Concrete slab) দুই শিশুর ওপরে পড়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু'জনকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে (Basirhat District Hospital) নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যে ছটা নাগাদ চিকিৎসকরা তাদের মৃত (Dead) বলে ঘোষণা করে।
জানা গিয়েছে, মৃত দুই ৮ বছরের শিশুর মধ্যে একজন আসিফ সর্দার, অপরজন সাকিবুল হোসেন গাজী। স্থানীয় বাসিন্দারা, আহত আরও দুই শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বাদুড়িয়া থানার পুলিস। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে ওই দুই মৃত শিশুর পরিবারে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছে ওই কংক্রিটের স্ল্যাব। পাঁচিল গেঁথে এটি তৈরি হলে এমন বিপদ ঘটার সম্ভাবনা থাকত না। ওই শিশুদুটির সামান্য ভার নিতে পারল না। তাহলে কতটা খারাপ পরিস্থতিতে তৈরি হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
অন্য এক এলাকাবাসী প্রশাসনের এহেন কাজে ক্ষোভ উগড়ে দেন। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।