প্রসূন গুপ্ত: স্বাধীনতার পর থেকেই কলকাতার পুজোর জাঁকজমক ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। বিধান রায় থেকে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় অবধি পুজোর জাঁকজমক। বড় প্যান্ডেল থেকে ভোগপ্রসাদেই সীমাবদ্ধ ছিল। জ্যোতি বসুদের জমানায় সরকার সরাসরি পুজোতে অংশগ্রহণ না করলেও তাঁদেরই পরোক্ষ সহযোগিতা থাকতো। কারণ বাম জমানাতে ৭০ দশক থেকে অন্তত ৩০ শতাংশ দুর্গাপুজো বেড়েছে বাংলায়। তারই সঙ্গে বুদ্ধবাবুর আমলে শুরু হয়েছে প্রবল ভাবে থিম পুজো।
আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে দুর্গাপুজোর ঐতিহ্যর দায়ভাগ অনেকটাই মুখ্যমন্ত্রী নিজের স্কন্ধে নিয়েছেন। আজ যতটা ধর্মীয় বিষয়ে পুজো হয়। তার থেকে বেশি পুজোগুলি একটা এক্সিবিশনে বা প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে। শহর কলকাতা থেকে শুরু করে বনগাঁ অন্যদিকে কল্যাণী অবধি জুড়ে যায় শারদ উৎসবে। গ্রাম বা মফস্বলের পুজো হয়তো আগের তুলনায় অনেক আধুনিক হয়েছে। কর্পোরেটের গন্ধও সেখানে কিন্তু তাহলেও সেখানে আজও দুর্গাপুজো মানে স্রেফ একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
গত কয়েক বছর ধরে বাংলার কয়েক হাজার পুজোকে মুখ্যমন্ত্রী কয়েক হাজার (গত বছর ৫০ হাজার ছিল এই বছর ৬০ হাজার) টাকা করে অনুদান করে থাকেন। কলকাতা থেকে দূরের পুজোগুলির হয়তো টাকার দরকার নিশ্চয় কিন্তু মহানগরীতে? কলকাতার পূজো মানে কোনও ক্লাবের হলেও এদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কিন্তু কোনও না কোনও রাজনৈতিক নেতা বা মন্ত্রী। আজকাল বিরোধী বিজেপির নেতারাও পুজো করে আসছেন। কলকাতার এই পুজো মানে শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান আজ আর নেই। লক্ষ লক্ষ (নাকি কোটি) টাকা খরচ হয় এই পুজোতে। থিম বা এমন কিছু এই পুজোগুলিতে থাকে যা দেখতে বিদেশিদের ভিড় পর্যন্ত হয়। ইতিমধ্যে কলকাতার এই পুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। এই পুজো সরকারি অনুদানের উপর নির্ভরশীল নয়। অনায়াসেই কর্মকর্তারা এই অনুদান শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতেই পারেন, তাতে সাধারণ জনতার আশীর্বাদই তারা পেতে পারেন। নেতারা ভাববেন কি?
সম্প্রতি বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করে বিহারে মহাজোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতীশ কুমার। বিজেপি বিরোধী ৭ দলের এই জোট সরকারের অন্যতম বড় শরিক আরজেডি এবং কংগ্রেস। বিহারের আম আদমি যখন এই রূপান্তরে গা ভাসাচ্ছেন, তখনই মুখ্যমন্ত্রী কনভয়ে হামলা। পাটনায় পাথর ছুড়ে হামলা নীতীশ কুমারের কনভয়ের গাড়িতে। যদিও ওই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী।
ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে।
Patna | Stones pelted at the convoy of Bihar CM Nitish Kumar; CM was not present in the convoy at the time of the incident. pic.twitter.com/5kNnn7IDlv
— ANI (@ANI) August 21, 2022
তেমনই এক ভাইরাল ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, জনবহুল রাস্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময় স্থানীয় কিছু লোক লাঠি, পাথর দিয়ে হামলা চালায়। দাঁড়িয়ে পড়ে কনভয়। এরপর আশপাশ থেকে দলে দলে আরও লোক ছুটে এসে কনভয়ের গাড়িতে পাথর ছুড়তে থাকেন। রাস্তায় নেমে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে মহিলাদের।
কেন এই হামলা, নির্দিষ্ট কোনও কারণ অবশ্য এখনও জানা যায়নি। সূত্রের দাবি, যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে, কিছু দিন আগে সেই এলাকারই এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। সেই ক্ষোভ থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে হামলা চালানো হতে পারে।
রাজ্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের পর প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক (Cabinet Meeting) করলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। এই বৈঠকে মন্ত্রীদের আরও স্বচ্ছ এবং সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পার্থ-কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রীর, তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতি এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। সূত্রে মারফত এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
সূত্রের খবর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, 'ভালো ভাবে, সতর্ক হয়ে কাজ করুন। কোনও ফাইল সইয়ের আগে খতিয়ে দেখে নিন।' এমনকি, জেলা থেকে কলকাতায় আসা মন্ত্রীরা পাইলট কার এবং বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। এমন নির্দেশ নাকি এদিনের ক্যাবিনেট বৈঠকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিমন্ত্রীদের জন্যও কাজ ভাগ করে দেওয়া হবে। এযাবৎকাল পূর্ণমন্ত্রীদের জন্য কাজ থাকলেও প্রতিমন্ত্রীদের জন্য সেভাবে ছিল না কাজ। সেই দায়িত্ব এবার ভাগ করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই সূত্রের খবর। পাশাপাশি রাজ্যে আগামি দিনে ১৮টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিট ও ৫টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হবে।
৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে ৪০০০ কর্মসংস্থান হবে রাজ্যে। নবান্নের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তই হয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্নে জানান অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২১ হাজার রেশন ডিলারেরর সহযোগিতায় ৯.২৫ কোটি মানুষকে পরিষেবা দিতে পারছে সরকার। আগে তাই দুয়ারে রেশন প্রকল্পে ৭৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল কমিশন দেওয়া হতো। সরকার সন্তুষ্ট হয়ে এবার ৫০০০টাকা করে প্রতি মাসে কমিশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের (East Bengal Club) এক অনুষ্ঠানে এসে প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চন্দ্র মেমোরিয়াল আর্কাইভের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার বিকাশ পাঁজি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্তরীয় পরিয়ে ও স্মারক তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জানান। ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা নীতু সরকার দিদি ১০০ নামাঙ্কিত জার্সি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এই অনুষ্ঠানে স্মৃতিমেদুর মমতা বলেছেন, 'যাদবপুরে যখন সাংসদ হয়েছিলাম, কথা দিয়েছিলাম উদ্বাস্তুদের জন্য জমির ব্যবস্থা করব, তা করতে পেরেছি। কঠিন সময়ে ওপার বাংলা থেকে যারা এপার বাংলায় এসেছেন, আমি তাঁদের স্যালুট করি।'
তিনি জানান, যারা কাপুরুষ নয়, তাঁরাই গড়তে পারে এবং মরতে ভয় পায় না। আমারা মনের জোর দিয়ে না পারা জিনিস জয় করতে পারি। তাঁর দাবি, 'গত বছর একেবারে শেষ মুহূর্তে একজনকে বলে ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএল খেলতে পাঠানো হল। এ বছর
ইমামি গ্রুপ কথা রেখেছে। আগামী কয়েক বছর চিন্তার কারণ নেই। মন দিয়ে খেলে যান। মোহনবাগান খেলছে, ইস্টবেঙ্গল খেলুক, আমি চাই মহামেডানও আইএসএল খেলুক।'
এদিন তিনি ১০০ বছরের পুরনো এই ক্লাবের পরিকাঠামো উন্নয়নের আরও ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। শুধু ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান নয়, পরিকাঠামো উন্নয়নে এই টাকা পাবে মহামেডানও। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনুষ্ঠানে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি জানান, স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি তৈরি হবে। বাংলার দুর্গাপুজো বিশ্বসেরা। সেই স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। খেলা হবে স্লোগান মনে রাখতে আমি বাড়িতে প্রতিদিন ১০০ বার বল নাচাই। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'ছোটবেলায় ব্যাডমিন্টন খেলেছি, পিটটু, গাদি খেলেছি। আদি গঙ্গায় সাঁতার কেটেছি। লড়ব, খেলব, জিতব রে জয় বাংলা।' এদিন ইস্টবেঙ্গলে লাইব্রেরি তৈরির জন্য ৫৭ লক্ষ টাকা ক্রীড়া দপ্তরের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে লাল-হলুদ ক্লাবকে।
আমরা দেখেছি বিয়ে (Marriage) মানে সানাই, ঢাকঢোল, জাঁকজমক। কিন্তু এবার সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডকে ছাপিয়ে এক ঐতিহাসিক বিয়ের সাক্ষী রইলেন চোপড়াবাসী। মনের শক্তি ও একে অপরের প্রতি অগাধ বিশ্বাসই যে সবার উর্ধ্বে, তা প্রমাণ করে দিলেন এই নবদম্পতি।
চোপড়া ব্লকের সোনাপুর অঞ্চলের মোহম্মদ সাইন আনোয়ারের বড় মেয়ে সবল পারভীন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা নওশাদ আলির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা গেল এক অন্য দৃশ্য, শোনা গেল এক অন্য কাহিনী। মেয়েটি টানা ২২ বছর ধরে এক কঠিন রোগে (Serious Disease) জর্জরিত, যে রোগের এখনও পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা (Treatment) মেলেনি। সেই মেয়েই ইউটিউবের (You tube) দৌলতে এবার বিয়ের আসরে বসলেন।
মেয়ের উচ্চতা মাত্র দু ফুট, হাঁটতেও পারেন না। কিন্তু এতদিনে সোশ্যাল মিডিয়াতে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। মঙ্গলবার বিয়ের আসরে বসলেন। বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা সাইন বেশ কয়েক বছর থেকে চোপড়া ব্লকের সোনাপুরের জিয়াখুরি এলাকায় থাকেন। তাঁর গ্রারাজের ব্যবসা রয়েছে। ছয় মেয়ে, সবল সবার বড়।
তিনি বলেন, মেয়ে বিরল রোগে ভুগছে, নওশাদ আলি নামে ছেলেটির সঙ্গে ইউটিউবে তাদের আলাপ হয়। দুজনের সহমতে এদিন বিয়ে সম্পূর্ণ হল। বিয়ের কাজিনামা পড়লেন সোনাপুর বড় মসজিতের ইমাম বদরুল হাসান। অন্যদিকে সবলের মা গজালা পারভীন মেয়ের সম্পর্কে বলতে গেলে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। জামাই নওশাদ আলির কথা বলতে গেলেই ভাবুক হয়ে পড়লেন। বললেন, আমরা কেউ ভাবতেই পারিনি যে কোনওদিন কেউ আমার এই মেয়েকে গ্রহণ করবে। জামাই সম্পর্কে আমার কিছু বলার ভাষা নেই।
নওশাদ আলি বলেন, আমরা যুবসমাজ যদি এই জটিল সমস্যাগুলোর পাশে না দাঁড়াতে পারি, তাহলে কিভাবে হবে? আমি সবাইকে আহ্বান করছি, তারাও যেন এমন কাজে সামিল হয়।
উত্তর দিনাজপুরে (North DinajPur) প্রকাশ্যে তৃণমূল (TMC) বিধায়কের সঙ্গে ব্লক সভাপতির সংঘাত। মঙ্গলবার রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে ইসলামপুরের ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক (TMC MLA) আব্দুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, 'আমি মমতা দি-কে বারবার বলে আসছি এই সন্ত্রাসবাদীকে নেতা না করতে। একটা সন্ত্রাসবাদীকে এখানে রাখবেন না। আমি মোট ১১ বার বিধায়ক হয়েছিল। কিন্তু কোনও বার সন্ত্রাস করে ভোট করিনি। সংগঠন এবং মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ভোটে লড়েছি।'
তিনি জানান, বুথ ক্যাপচার, হিংসার আশ্রয় নিয়ে ভোট করিনি। কিন্তু এখন এই সন্ত্রাসবাদী হুমকি নিয়ে ভোট করাচ্ছে। অভিষেক নিজেই বলেছে ওর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে কথা দিয়েছিল, করিম দা আমি আপনাকে মর্যাদা দেব। আপনি সম্মানীয় ব্যক্তি, আপনার সম্মান ফিরিয়ে দেব। কিন্তু এখন সেই সম্মান দিচ্ছেন না কেন? আগেরবার আমাকে হারানোর চেষ্টা করেছে, আগামি দিনে দাঁড়ালে আমাকে হারানোর চেষ্টা করবে। এই লোককে কেন দায়িত্ব দিচ্ছেন।
রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষভ উগড়ে দিয়ে ইসলামপুরের বিধায়ক বলেন, 'যে ব্যবহার আমাকে দিচ্ছে নেতৃত্ব, সেই ব্যবহার আমার প্রাপ্য নয়।'
এদিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই জাকির হোসেন জানান, বাংলায় কারও ব্যক্তিগত এলাকা নেই। বাংলা একটাই, আর সেই একটা বাংলার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংগঠন করছে। আমার নিজের কিছু নেই যা আছে দলের। আমার পিছন থেকে তৃণমূলের প্রতীক সরলে সাম্নের দিকে ফাঁকা হয়ে যাবে। দলের শক্তি সর্বশক্তি, আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মানুষের সঙ্গে থেকে দলের কাজ করা। আগামি দিনেও নিষ্ঠা ভরে সেই কাজ করব। তিনি বলেন, 'দলের একজন বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও সমালোচনা করব না। উনি কী বলেছেন সেটা দল দেখে বিচার করবে।'
এই সংঘাতকে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা তাপস বিশ্বাস বলেন, 'তৃণমূলের এক বিধায়ক, তাঁর দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে বলছে। তৃণমূলের ব্লক, অঞ্চল বা জেলা সভাপতি হতে গেলে তাঁকে বুথ দখল, কাট্মানি আদায়ে পটু হতে হবে। বিরোধী কণ্ঠরোধে পটু হতে হবে। তৃণমূলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতির এসব যোগ্যতা আছে। কিন্তু ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক, মানুষের ভোটে জিতে এসেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বুথ দখল বা সন্ত্রাসের অভিযোগ নেই। উনি ভালো লোক, চাইছেন এখানে দলটা ভালো ভাবে ভালো পথে চলুক।'
মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের (Maharashtra Cabinet) এক সপ্তাহের মধ্যেই দফতর বণ্টন করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (CM Shinde)। গুরুত্বপূর্ণ অর্থ এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব পেলেন মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডের ডেপুটি দেবেন্দ্র ফড়নবিস (Devendra Fadanvis)। গত মঙ্গলবার শিন্ডে মন্ত্রিসভার জন্য ১৮ জন বিধায়ক শপথ নিয়েছিলেন। শিন্ডে ক্যাম্পের ৯ জন এবং বিজেপির ৯ জন বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছিল।
এবার শপথ নেওয়া মন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি বিধায়ক রাধাকৃষ্ণ পাটিলের পেয়েছেন রাজস্ব দফতর। চন্দ্রকান্ত পাটিল পেয়েছেন উচ্চশিক্ষা দফতর। এদিকে, মহারাষ্ট্রে পালাবদল একমাস পেরিয়েছে। উদ্ধবের জায়গায় খানিকটা নাটকীয় পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন একনাথ শিন্ডে। তাঁর ডেপুটি সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। পাশাপাশি শিন্ডে সেনা এবং বিজেপি জোট সরকারের ৪০দিনের মাথায় মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত মঙ্গলবার এই জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৮ জন শপথ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ জনই আগেও কোনও না কোনও আমলে ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। তবে সবপক্ষকে হতাশ করে এই মন্ত্রিসভায় নেই কোনও মহিলা প্রতিনিধি।
সেদিন সকাল ১১টায় রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির কাছে শপথ নিয়েছেন শিন্ডে সেনার ৯ জন এবং বিজেপির ৯ জন বিধায়ক। এই তালিকায় রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিল, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুধীর মুঙ্গনতিওয়ার প্রমুখ। রয়েছেন সদ্য কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা রাধাকৃষ্ণ ভিকে পাতিলও।
মহারাষ্ট্রের ধনীতম বিধায়ক তথা মুম্বই শহর বিজেপির সভাপতি এমপি লোঢাও এই জোট সরকারের ক্যাবিনেটে জায়গা পেয়েছেন। এছাড়াও আছেন বিজেপি বিধায়ক, তফসিলি নেতা বিজয়কুমার গাভিট, সুরেশ খারে, অতুল সাভের মতো গেরুয়া শিবির প্রভাবশালী নেতারাও। অন্য দিকে, শিন্ডে ঘনিষ্ঠ দীপক কেসরকর, তানাজি সামন্ত, গুলাবরাও পাটিল, উদয় সাবন্তরা ঠাঁই পেয়েছেন মন্ত্রিসভায়। ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ছেড়ে শিবসেনায় যোগ দিয়ে জিতেছিলেন আব্দুল সাত্তার। শিন্ডে শিবিরে যোগ দিয়ে এবার মন্ত্রী তিনিও।
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বেহালায় তৃণমূলের অনুষ্ঠানে ঘুরিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই অবস্থানকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে বিরোধী দলগুলো। একযোগে আক্রমণ করেছে বিজেপি-কংগ্রেস। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'তৃণমূলের নৌকা ডুবতে চলেছে। মানুষ বুঝতে পারছে তৃণমূল চোরদের দল। অনুব্রত মণ্ডল সাংসদ, বিধায়ক না হয়েও মেডিক্যাল কলেজের মালিক। এমনটা শোনা যাচ্ছে। চুরি না করলে এমনটা কী করে হয়? আগে শুনতাম চোরের মায়ের বড় গলা, এখন চোরের দিদির বড় গলা।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ঝাড়খণ্ডে বিধায়ক কেনবেচা বাংলার পুলিস আটকেছে। এদিন সেই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা, 'উনি এ রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক চুরি করে পিএসির চেয়ারম্যান করেছে। আরও অনেক বিরোধী বিধায়ককে কিনেছেন।'
একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএম-র গলায়। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'বেহালার যিনি বিধায়ক আগে জেলে গিয়েছেন। বেহালায় বসে তিনি অনুব্রতর কথাই বলে গেলেন। অনুব্রত মণ্ডল কেন এমএলএ, এমপি না, সেটা দলনেত্রীর বিষয়। উনি যা বলেছেন তার কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি নেই। যেহেতু অনুব্রতর কাছে মধুভান্ড আছে, তাই বেহালায় দাঁড়িয়ে অনুব্রতর কথা বলে গেলেন। আসলে ভয় পেয়ে হালুম করলেন।'
এদিন বেহালার জনসভায় মমতার প্রশ্ন, 'কেষ্ট কী করেছিল? ওকে ধরলে কেন? একটা কেষ্টকে জেলে পুরলে হাজার কেষ্ট তৈরি হবে। কেষ্টরা এজেন্সিকে ভয় পায় না। প্রতি ভোটে ওকে নজরবন্দি করে রাখে।'
রবিবার, ১৪ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বেহালায় যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। প্রতি বছর তিনি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু এ বছর চিত্রটা ভিন্ন। এই বেহালার (Behala) এক বিধানসভা আসনের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) আপাতত জেলবন্দি। প্রতিবার বেহালার এই অনুষ্ঠানে 'দিদি'র পাশেই দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে আপাতত তিনি দলের কোনও পদে নেই। তাঁকে সরানো হয়েছে রাজ্য ক্যাবিনেট থেকে।
তাই তৃণমূল তথা রাজ্য মন্ত্রিসভার একদা নাম্বার দুয়ের অনুপস্থিতিতে বেহালাবাসীকে কী বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী? সেদিকে তাকিয়ে বিরোধীরা। এদিকে, জানা গিয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে এদিন পরিদর্শন করল ৮ জন ডাক্তারের একটি টিম। টিমের সদস্যরা সকলেই এসএসকেএমের চিকিত্সক বলে জানা গিয়েছে। মূলত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতেই এই মেডিক্যাল টিম বলে জেল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে জেলেরই অন্য সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
খাওয়াদাওয়াও করছেন স্বাভাবিকভাবেই। গত দুদিনে পায়ের ব্যথা কিছুটা বেড়েছে। তাই মাঝেমধ্যেই সেলের বাইরে হাঁটাহাঁটি করছেন।
জেলে একদিন মাছ, একদিন মাংস, একদিন ডিম, একদিন সোয়াবিন ও বাকি দিন নিরামিষ খাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পড়ছেন রামকৃষ্ণদেবের কথামৃত। অর্থাত্, টাকা মাটি মাটি টাকার সেই মূল মন্ত্রকেই এখন জেলের নিস্তরঙ্গ সেলে নিজের সঙ্গী করে নিয়েছেন পার্থবাবু।
সূত্রের খবর, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পার্থর খাওয়ার আবদারে প্রায় প্রতিদিনই দুবেলা ভাত দিতে হচ্ছে। কখনও আবার বিকালের দিকে চপ, বেগুনি এনে দিতে হচ্ছে জেলের ক্যান্টিন থেকে অনেক জোরাজুরিতে। এর মধ্যে একদিন খাসির মাংসের ঝোল ও ভাত দিতে হয়েছে তাঁকে। যদিও গতকাল রাখি পূর্ণিমার দিন জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাতে আমিষ পড়েনি। গতকাল তাঁর দুপুরের মেনুতে ছিল ভাত, ডাল এবং দু-রকমের তরকারি। যা খাবার দেওয়া হয়েছে সবটুকুই খেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মহাসচিব। পাশাপাশি তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।