সন্দেশখালি ও বনগাঁর ঘটনা নিয়ে এবারে রাজ্য পুলিসকে বিঁধে বিবৃতি জারি করল ইডি। সন্দেশখালি এবং বনগাঁ- এই দুই জায়গাতেই রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে এসে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয় ইডি আধিকারিকদের। পুলিস সুপারকে বিষয়টি জানানোর পরেও কেমন করে অফিসারদের উপর হামলা হল, তা নিয়েই এবারে রাজ্য পুলিসের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে ইডি। ইডির মতে, দুই ক্ষেত্রেই পুলিসের ভূমিকা অতি নিষ্ক্রিয়। তাই এবারে পুলিসের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে ইডি।
দুর্নীতির তদন্ত করতে এসে সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে তার অনুগামীদের হাতে মার খেতে হয়েছে ইডি আধিকারিকদের। গুরুতর আহত হয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। ভেঙেছে ইডির গাড়ির কাঁচ। অপরদিকে বনগাঁর ঘটনায় কাউকে আঘাত না পেতে হলেও সেক্ষেত্রেও গাড়ির কাঁচ ভাঙা হয়েছে। আর এই দুই তুমুল শোরগোল ফেলে দেওয়া ঘটনার পর এবার পুলিসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ইডি। ইডির প্রেস বিবৃতিতে দেখা গেল দুটি ঘটনা নিয়েই পুলিসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ইডি।
সন্দেশখালির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিবৃতি, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক অভিযোগ থাকলেও, লঘু ধারায় মামলা রুজু করেছে রাজ্য পুলিস। খুনের চেষ্টার ধারা দেওয়া হয়নি। অধিকাংশই জমিনযোগ্য ধারায় মামলা। এখানেই ইডির প্রশ্ন, ঘটনা যেখানে এত গুরুতর, সেখানে জামিনযোগ্য ধারায় কীভাবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিস? ঘটনায় পুলিসি নিষ্ক্রিয়তা প্রকট। তবে এই সন্দেশখালি নিয়েই মুখ খুললেন বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গঙ্গাসাগর সফররত রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি বলেন, "যারা যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠিনতম পদক্ষেপ করা হবে। আর যারা আইন ভেঙেছেন তাদের বিরুদ্ধেও।"
অপরদিকে বনগাঁয় শঙ্কর আঢ্যর গ্রেফতারির সময় যে ঘটনা ঘটে, তার পরে পুলিসের বিরুদ্ধে আরও জোরালো অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছে ইডি। ইডির প্রশ্ন, যেখানে শঙ্কর আঢ্যর বাড়িতে তদন্তে আসার কথা ইমেইলের মাধ্যমে ইডির তরফে সকাল ৮টা ৪৫ নাগাদ পাঠানো হয়েছিল, পরে বিকেল ৪টে নাগাদ বনগাঁর এসপিকেও জানানো হয়েছিল। সেখানে শঙ্কর আঢ্যর বাড়ির সামনে ওই ভিড়, এবং সেই ক্ষুব্ধ জনতার ইডি আধিকারিক সহ সিআরপিএফ জওয়ানদের আক্রমণ, অভব্য ব্যবহার- কীভাবে মুখ বুজে সহ্য করল পুলিস? কেনই বা করল? ইডির অভিযোগ, ওই ভিড়কে একবারের জন্যেও আটকায়নি পুলিস। নেতার অনুগামীরা ইডি অধিকারিক, সিআরপিএফ জওয়ানদের উপর ইঁট ছুড়েছে, ইডির গাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ করেছে, তবুও বাধা দিতে ব্যর্থ পুলিস। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিসের বিরুদ্ধে মামলা করল ইডি।
সবমিলিয়ে পুলিসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্যের সঙ্গে মামলা দায়ের করেছে ইডি। আর সবটাই তাঁরা জানাল তাঁদের প্রেস রিলিজের মাধ্যমে। এরপর পুলিসের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, সেটাই দেখার।
ফের প্রকাশ্যে পুলিসের নিষ্ক্রিয়তা। ফের প্রকাশ্যে পুলিসের ইচ্ছামত কাজ। ফের প্রকাশ্যে পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ঘটনা বেহালা থানা কেন্দ্র করে। গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে বেহালা বিএল সাহা রোড এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সংযোগস্থলে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় অজয় সিং রাজপুত নাম এক যুবক। তবে যে বাইক এসে ধাক্কা মারে, সেই চালক পলাতক। অভিযোগ, পুলিস ছেড়ে দেয় ওই চালককে। বেহালা থানার সামনে বিশাল বিক্ষোভে সামিল মৃতের পরিবার পরিজন।
জানা গিয়েছে, গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে বেহালা বিএল সাহা রোড এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সংযোগস্থল দিয়ে অজয় সিং রাজপুত নামে এক যুবক বাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় উল্টোদিক থেকে দ্রুত গতিতে আরেক বাইক এসে অজয়ের বাইককে ধাক্কা মারে। অজয়কে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। তবে মঙ্গলবার অবশেষে তাঁর মৃত্যু হয়। আর এরপরেই বেহালা থানার উপর চড়াও হয় অজয়ের পরিবার পরিজন।
প্রসঙ্গত, এই দুর্ঘটনা ঘটার পর বেহালা থানার পুলিস অভিযুক্তকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়, এমনটাই অভিযোগ মৃতের পরিবারের। আর এই নিয়েই বেহালা থানার পুলিসের উপর ক্ষুব্ধ মৃতের পরিবার পরিজন। যে অভিযুক্ত, সে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত, ঘটনার এক সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কীভাবে অভিযুক্তকে ছেড়ে দিল পুলিস, প্রশ্ন তুলছেন মৃতের পরিবার।
তবে কি এটাই এখন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন? পুলিস মন্ত্রী জানেন? তিনি কি অবগত নন পুলিসের এমন অপ্রত্যাশিত ভূমিকা নিয়ে? নাকি সবটা জেনেও মানুষকে বিচার না পাওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন খোদ পুলিসমন্ত্রী? উঠছে প্রশ্ন। এই দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবার, বন্ধুরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালে পুলিসের বক্তব্য ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁরা অভিযুক্তকে খুঁজে আনবেন। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই দুজন অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে আসাও হয়েছে। তাহলে কি পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ না দেখালে এ রাজ্যে ন্যায়বিচার হবে না? প্রশ্ন উঠলেও উত্তর অধরা।
এবারে রেশন বণ্টন দুর্নীতি কাণ্ডে (Ration Scam) রাজ্য পুলিসের ডিজিকে চিঠি দিল ইডি, খবর সূত্রের। 'রেশন দুর্নীতি মামলায় সঠিকভাবে তদন্ত করুক রাজ্য পুলিস। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রেশন দুর্নীতি নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ। রেশন দুর্নীতি মামলায় বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন।' এ সমস্ত বিষয় জানিয়েই রাজ্য পুলিসের ডিজিকে চিঠি ইডির।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় সর্বপ্রথম রাজ্য পুলিসের তরফ থেকে তিনটি মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে এই চিঠিতে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে রাজ্য পুলিস রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় যাতে আরও সক্রিয় হয় সেই অনুরোধও করা হয়েছে। জেলায় জেলায় রেশন বণ্টন দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেই সমস্ত অভিযোগগুলিকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে। তাই চিঠিতে ইডির আবেদন, পুলিস ভালো করে তদন্ত করুক। রেশন দুর্নীতিতে পুলিসেরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
রাজ্যের নতুন মুখ্য তথ্য কমিশনার হলেন রাজ্য পুলিসের প্রাক্তন ডিজি বীরেন্দ্র। সোমবার রাজ ভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor Bose)। তিন বছরের জন্য প্রাক্তন আইপিএস বীরেন্দ্রকে (Former IPS) এই পদে নিয়োগ রাজ্যপালের। রাজভবন (Raj Bhawan) বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে।
রাজ ভবনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি পদে বসার দিন থেকে থেকে তাঁর নিয়োগ কার্যকর হবে। তথ্য জানার অধিকার আইনের ১৫ ধারা (৩ উপধারা) মেনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস বীরেন্দ্রকে রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনার পদে নিযুক্ত করলেন। নিজের ৬৫ বছরের আগ পর্যন্ত কিংবা নিয়োগের পর আগামি তিন বছর তিনি এই পদে বহাল থাকবেন।
শাসন থেকে উদ্ধার একটি রিভালবার (Fire Arms) ও চার রাউন্ড কার্তুজ। একটি ভোজালি আটক একটি মোটরবাইক। ধৃতদের নাম আবিদ রহমান (২১) ও রাজু সদ্দার (২২)। পুলিস সূত্রে খবর, শনিবার রাতে শাসনের বোয়ালঘাটা এলাকায় ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হয়েছিল প্রায় আট জনের একটি সশস্ত্র দুষ্কৃতীর দল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিস (Bengal Police) এলাকায় হানা দিয়ে দু'জনকে
প্রথমে আটক করে পরে গ্রেফতার করা হয়, বাকিরা পালিয়ে যায়। পুলিস তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে একটি আগ্নেয়াস্ত্র চার রাউন্ড কার্তুজ একটি ভোজালি ও একটি বাইক। পুলিস সূত্রের খবর এর আগেও এই দুই যুবক একাধিক অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। পুলিস দুই যুবককে খুঁজছিল রাতে ২ যুবক যখন ডাকাতের উদ্দেশে জড়ো হয়। তখনই তাদের ধরে শাসন থানার পুলিস। রবিবার দুই যুবককে গ্ৰেফতার করে বারাসাত আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক দুষ্কৃতীদের খোঁজ তল্লাশি শুরু করেছে শাসন থানার পুলিস।
বাংলায় আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন চলছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে। এই অভিযোগ তুলেই বিজপি সভাপতি জেপি নাড্ডাকে রিপোর্ট পাঠালো অনুসন্ধান কমিটি। পাঁচ সদস্যের এই অনুষ্ঠান কমিটি সম্প্রতি কলকাতা এসেছিল। নবান্ন অভিযানে আহত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের কথা বলার পাশাপাশি দেখতে যান দলের কাউন্সিলর মীনদেবী পুরোহিতকে। এরপরেই দিল্লি ফিরে তাঁরা কড়া রিপোর্ট তৈরি করে পাঠিয়েছেন জেপি নাড্ডাকে। সেই রিপোর্টে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথায় গুলি মারা প্রসঙ্গের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।
পাশাপাশি রাজ্যের তিন আইপিএস দময়ন্তী সেন, সিদ্ধিনাথ গুপ্ত এবং প্রবীন ত্রিপাঠিকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। অনুসন্ধান কমিটির অভিযোগ, 'এই তিন আইপিএস দায়িত্ব উপেক্ষা করে শাসক দলের হয়ে কাজ করেছে। উচ্চপদস্থ পুলিসকর্তারা শাসকের অঙ্গুলিহেলনে বিজেপি কর্মকর্তাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। বিরোধী দলের কোমর ভাঙার জন্য সন্ত্রাস এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হেনস্থা করার চেষ্টা চলছে।'
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড উল্লেখ করে রিপোর্টে লেখা, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন অভিযানে পুলিসি বর্বরতাকে সমর্থন করে বলেছেন তিনি ঘটনাস্থলে থাকলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মাথায় গুলি করতেন। এই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার বাংলার শাসক দলের ফ্যাসিস্ট মনোভাব। শাসক দলের নেতারাই বিজেপির নবান্ন অভিযানে পুলিসি নির্যাতনের অনুমোদন দিয়েছিল।'
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, নবান্ন অভিযানের পর যে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি কলকাতায় এসেছিল, সেই কমিটির সদস্য-- ব্রিজলাল (অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস, সাংসদ), কর্নেল রাজ্য বর্ধন সিং রাঠৌর (সাংসদ, লোকসভা), অপরাজিতা সারেঙ্গি (সাংসদ, লোকসভা), সুনীল জাখর, সমীর ওঁরাও (সাংসদ)।
পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকে (ISI) ভারতীয় সেনার গোপন নথি পাচারের অভিযোগ। রাজ্য পুলিসের এসটিএফ-র (STF)) হাতে গ্রেফতার সন্দেহভাজন ব্যক্তি। কালিম্পংয়ের (Kalimpong) মুরগীহট্ট থেকে পীর মহম্মদ ওরফে সমীর দা-কে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। তাঁর মোবাইল এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, টাকার বিনিময়ে ভারতীয় সেনার গোপন নথি পাক গুপ্তচরদের পাচার করতো পীর মহম্মদ। ২০২০ সালে নেপালে গিয়েছিল সে। তখন আইএসআইয়ের একজন তাঁকে টাকার বিনিময়ে ভারতীয় সেনার গোপন নথি পাচারের প্রস্তাব দেয়।
ধৃতের মোবাইল ঘেঁটে জানা গিয়েছে, হোয়াটস অ্যাপ কলের মাধ্যমে অভিযুক্ত পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। এমনকি, কালিম্পং এবং উত্তরবঙ্গের সেনাঘাঁটি, সেনা সক্রিয়তা সংক্রান্ত একাধিক তথ্য সে পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ধৃতের ইলেকট্রনিক সামগ্রির দোকান আছে। বিশেষ সূত্র মারফৎ খাওবর পেয়েই পুজোর দিন সাতেক আগে এই গ্রেফতারি। তার গতিবিধি নজরে রেখে এবং সায়েন্টিফিক সূত্র জুড়ে পীর মহম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনটাই রাজ্য পুলিস সূত্রে খবর।
তাকে জেরা করে জানা গিয়েছে,গোপন নথি পাচারের বিনিময়ে ২ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও টাকাই সে পায়নি। এমনটাই গোয়েন্দাদের জানিয়েছে অভিযুক্ত।
বেসরকারি কুরিয়র সংস্থার প্রোফাইল হ্যাক করে ডেলিভারি বয়কে ডেকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ। ঘটনায় গুরুতর জখম ওই ডেলিভারি বয় (delivery boy)। ঘটনাটি শনিবার বিকেলে সোনারপুর (Sonarpur) থানা এলাকার লালগেটের কাছে ঘটে। এরপরই সোনারপুর থানায় (police station) অভিযোগ দায়ের আতঙ্কিত পরিবারের।
জানা যায়, জখম ওই ডেলিভারি বয় দীপঙ্কর নাইয়া নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুরের বাসিন্দা। পুরনো শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের। অভিযুক্ত যুবকের নাম সৌরভ নস্কর। সৌরভও লস্করপুরের বাসিন্দা। সৌরভ একসময় একই বেসরকারি কুরিয়র সংস্থায় কাজ করত। যার জন্য চক্রান্তের বিষয়টি আরও স্পষ্ট বলেই মনে করছে পরিবার। ওইদিন দীপঙ্কর একটি পার্সেল দিতে বের হন। আর এরপরই তাঁকে একটি জায়গায় ডাকা হয়। পরিবার জানায়, সেদিন আগে থেকেই ওই জায়গায় একটি গাড়িতে করে সৌরভ ও তাঁর ৪ সঙ্গী দাঁড়িয়ে ছিল। দীপঙ্কর আসতেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় ও অপহরণ করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় কোনওরকমে রক্ষা পায় দীপঙ্কর।
পরিবারের আরও অভিযোগ, কিছুদন আগে দীপঙ্করের ভাইকেও মারধর করে সৌরভ। সেইসময় সৌরভের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবাকে এই ঘটনার কথা জানান দীপঙ্কর। তারই বদলা নিতে এই হামলা বলে দীপঙ্কর ও তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্তে সোনারপুর থানার পুলিস (police)।
সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে রাজ্য পুলিসের কাছে সপরিবারে আত্মসমর্পণ (Surrender) করলেন কেএলও নেতা (KLO Leader) কৈলাস কোচ। বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিসের ডিজি (DGP, bengal Police) মনোজ মালব্য, কৈলাস এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্নাকে পাশে বসিয়ে এই ঘোষণা করেন। ডিজি জানান, 'কামতাপুরী লিবারেশন অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক কৈলাস। তিনি নিজেই আমাদের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব রাখেন। গণতন্ত্রে হিংসা বা সন্ত্রাসবাদের জায়গা নেই, এটা অনুধাবন করেই কৈলাস এবং তাঁর পরিবারের এই সিদ্ধান্ত।' এদিন ভবানী ভবনে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে ডিজির কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র সমর্পণ করেন কেএলও-র একদা এই কমান্ডার।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে কৈলাস কোচ জানান, 'হিংসার মাধ্যমে কামতাপুরের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা আমি ১৬ বছর সশস্ত্র আন্দোলন করে বুঝেছি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কামতাপুরে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে মুলস্রোতে ফিরলাম। আমি চাই আমার যারা ভাইবোন এবং বন্ধুবান্ধব এখনও অস্ত্র ধরে আছেন, তারাও মূলস্রোতে ফিরুক।'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কৈলাস কোচ কেএলও বিচ্ছিনতাবাদী সংগঠনের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। অসম এবং কোচবিহারের একটি অংশকে পৃথক করে গ্রেটার কোচবিহার বা কামতাপুর রাজ্যের দাবি বহুদিনের। সেই দাবিকে বাস্তব রূপ দিতে তৈরি হয়েছিল বিচ্ছিনতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলও। এই সংগঠনের নেতা জীবন সিং বর্তমানে মায়ানমারে আত্মগোপন করে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে বার্তা পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই কাজে মধ্যস্থতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে।
ইতিমধ্যে একদা সক্রিয় থাকা জীবন সিং এবং কেএলও ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়েছে। কিন্তু নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে মাঝে মধ্যেই ভিডিওবার্তা পাঠান তিনি। সেখানেও পৃথক রাজ্যের দাবি জানান তিনি। যদিও সম্প্রতি আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্য চেয়ে ভিডিওবার্তা পাঠাতে দেখা গিয়েছে জীবন সিংকে।