প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না সরকারি কর্মচারিরা। এমনটাই নির্দেশিকা জারি করল অসম সরকার (Assam Government)। যদি ধর্মেও দ্বিতীয় বিয়ের অনুমোদন থাকে, সেক্ষেত্রেও অসম সরকারের অনুমতি নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে। একই নিয়ম মহিলা সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রেও অর্থাৎ তাঁদেরও স্বামী জীবিত থাকলে তাঁরা দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। আর এর অন্যথা হলেই মোটা অঙ্কের জরিমানা তো বটেই, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্ত্রিসভার তরফে। নয়া নির্দেশকায় বলা হয়েছে, 'পার্সোনাল ল' বা নিজস্ব ধর্মীয় আইন যাই থাক না কেন, প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকতে অসম সরকারের অনুমতি ছাড়া আর দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে সরকারের কাছে উপযুক্ত ছাড়পত্র নিতে হবে। একইভাবে, কোনও সরকারি মহিলা কর্মীও স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। যদি কেউ এই নির্দেশিকা অমান্য করে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকী তাঁকে আগাম অবসর নিতে বাধ্য করা হবে বলেও জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়।
বৃষ্টির বিরাম নেই। টানা বৃষ্টিতে ভাসছে অসম (Assam)। ব্রহ্মপুত্র সহ সমস্ত নদীর জল বিপদসীমার (Danger level) উপর দিয়ে বইছে। ফলে ক্রমশ বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। প্রায় ২ লক্ষ মানুষ বন্যায় বিপর্যস্ত। চলতি বছরে এই বন্যার জেরে ইতিমধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুও হয়েছে।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত চলবে। এই পরিস্থিতি থেকে এখনই রেহাই পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে জলস্তর আরও বাড়বে এবং অসমের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে চলেছে। সোমবার অসম সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বন্যায় রাজ্যে এক লক্ষ ৯০ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এক জনের মৃত্যু হয়েছে সোমবার। বহু মানুষ গ্রাম ছেড়ে, নিজের বাসস্থান ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।
বিপদসীমার উপর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদীর জল বইয়ে যাওয়ায় গুয়াহাটি ও জোরহাটে ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের নানা প্রান্তে কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তারাই জানিয়েছে, এই মুহূর্তে অসমের মোট ১৭টি জেলা বন্যার কবলে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লখিমপুর। তার পরেই তালিকায় আছে ধেমাজী। এই দুই জেলায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
অসমের (Assam) বন্যা (Flood) পরিস্থিতি নিয়ে এবার সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী (CM) হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ফোন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। পাশাপাশি একটি টুইটও করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, অসমের এই কঠিন পরিস্থিতিতে সব রকমভাবে সহায়তা করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
অন্যদিকে অসমের বন্যা পরিস্থিতির সেভাবে কোনও উন্নতিই হয়নি এখনও। কয়েকটি জায়গায় জল নামলেও বেশিরভাগ গ্রাম এখনও জলের তলায়। জানা গিয়েছে, বন্যায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা।
বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, অসমে বন্যার কারণে প্রায় চার লক্ষের বেশি মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বারপেটা, কামরূপ, লখিমপুর, নলবাড়ি, ধুবড়ি সহ একাধিক এলাকা। সরকারের তরফে প্রায় ১০১টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তরফেও বন্যা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হচ্ছে।
ভারী বৃষ্টিতে অসম (Assam) এবং সিকিমের (Sikkim) পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ক্রমাগত বৃষ্টিতে লাগাতার ভূমিধসে ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে ১০০টি বাড়ি। একেই বন্যা পরিস্থিতি, তার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে ধস। বন্যা পরিস্থিতি কলেজ খোলা উপত্যকা বন্যায় ডুবে গিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিম্ফক। সেখানে একটি ব্রীজ একেবারে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। প্রায় ৩০০ জন ট্যুরিস্ট আটকে পড়েছিলেন এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে। ভারতীয় সেনা তাঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে।
ভয়ঙ্কর ভূমিধসে পশ্চিম সিকিমের প্রায় ১০০টি বাড়ি এবং ব্রিজ ভেসে গিয়েছে। গ্যালসিং জেলার ডেন্টাম সহ শাখাও এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি তরফে। চাষের জমি, এবং সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া এবং ট্রেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলির বিকল্প রাস্তা চালু করা হয়েছে।
রবিবারেও অসমের বন্যা পরিস্থিতি আগের থেকে ভালো হয়নি। ১২টি জেলার প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৬টি ত্রাণ সেন্টার খোলা হয়েছে। ব্রক্ষ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীগুলির জলস্তর বিপদসীমা পার করেছে। লাগাতার বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
অসমের (Assam) বন্যা (Flood) বিপর্যয় যেন কিছুতেই কাটছে না। শুক্রবারের বৃষ্টিতে আবারও বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে সেখানে। ১১টি জেলা বানের জলে ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছে। প্রায় ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃষ্টির জলে অসমের ব্রক্ষ্মপুত্র নদী সহ অন্যান্য নদীগুলির জলস্তর বিপদসীমা পার করেছে। ১৪ হাজারের বেশি মহিলা, ৩ হাজারের বেশি শিশু, সব মিলিয়ে ৩৪ হাজারের বেশি মানুষের উপর এর প্রভাব পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে, বিশ্বনাথ, দারাং, ধিমাজি, ডিব্রুগড়, লখিমপুর, তমালপুর ও উদলগুড়ি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে লখিমপুরে। সেখানে ২৩ হাজার ৫১৬ জন মানুষ বন্যায় প্রভাবিত হয়েছে। এরপর ডিব্রুগড়ের ৩ হাজার ৮৫৭ জন মানুষ, দারাংয়ের ২ হাজার ২৩১ জন মানুষ, বিশ্বনাথের ২ হাজার ২৩১ জন মানুষ এবং ধীমাজির ১ হাজার ৮৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ইতিমধ্যেই। মোট ১১ টি ত্রাণ শিবিরের মধ্যে ৮টি রয়েছে লখিমপুরে ও ২টি উদলগুড়িতে। সব মিলিয়ে ৭৭টি গ্রাম বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে। বন্যার প্রভাবে বহু জায়গায় ভূমি ধস নেমেছে। প্রত্যেক বছর বন্যায় প্রায় নাজেহাল হয়ে যাচ্ছেন অসমের সাধারণ মানুষের। এই বছরেও যে নিশ্চিন্ত থাকা গেল না তা বুঝে গিয়েছে সকলেই।
একটি দোকানে ঢুকে কিছু বিস্কুট এবং মিষ্টি খেয়ে, আবার কিছু খাবার শুঁড়ের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে একটি হাতি। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গুয়াহাটির (Assam) সাতগাঁও এলাকার একটি খাবারের দোকানে। ধীরে সুস্থে ওই দোকানে ঢুকে পড়েছিল হাতি (Elephant)। হাতিটিকে দোকানে ঢুকতে দেখে আস্তে আস্তে ভয়ে সরে যাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে লোকজন দেখেও পিছিয়ে পড়ছে না হাতিটি। ঠিক এমনই একটি ভিডিও (Viral Video) ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে।
An #elephant came out of Amchang Wildlife Sanctuary to have sweets at a local shop in the Satgaon area of #Guwahati. #Viralvideo pic.twitter.com/uskNHgzjK7
— Zaitra (@Zaitra6) June 13, 2023
ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, হাতিটি দোকানে ঢুকে প্রথমে বেশ কিছু মিষ্টি খায়। তার পর বিস্কুট। হাতিটি যখন একের পর এক মিষ্টি মুখে তুলে নিচ্ছিল, তখন দোকান মালিককে একটি কাগজে আগুন জ্বালিয়ে হাতিটিতে তাড়ানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। তবে হাতিটি সেদিকে নজর না দিয়ে নিজের খিদে মেটানোর চেষ্টা করছিল, এমনই দেখা গিয়েছে ভিডিওটিতে।
কয়েকটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, হাতিটি লোকালয়ে ঢুকেও কারোর কোনও ক্ষতি করেনি। বরং সে নিজের মতো খাবার খেয়ে আবার জঙ্গলেই ফিরে গিয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর (PM Modi) উপহার। এবারে অসমেও (Assam) চালু হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। ২৯ মে, সোমবার বেলা ১২ টা নাগাদ অসমে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে এই ট্রেন উদ্বোধন করলেন তিনি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, 'সোমবার প্রধানমন্ত্রী অসমে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধন করবেন। ফলে এটা খুবই গর্বের মুহূর্ত'।
উত্তর-পূর্ব ভারত এবারই প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পেল। এটি দেশের অষ্টাদশ বন্দে ভারত ট্রেন। রেলসূত্রে খবর, এই ট্রেন গুয়াহাটি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ এই ট্রেনের মাধ্যমে অসমের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যোগাযাোগ আরও দ্রুত হবে। জানা গিয়েছে, ৪১০ কিমি পথ যেতে এই ট্রেনের সময় লাগবে সাড়ে ৫ ঘণ্টা। এই ট্রেন সপ্তাহে ছ'দিন চলবে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে এই ট্রেন যাত্রা শুরু করবে ৬ টা ১০ মিনিটে আর গুয়াহাটি পৌঁছবে দুপুরের দিকে। আবার গুয়াহাটি থেকে এই ট্রেন চলবে বিকাল সাড়ে ৪টায় ও নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছবে রাত ১০ টা ২০ মিনিটে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ও অসমের মধ্যে মোট পাঁচটি জায়গায় ট্রেনটি দাঁড়াবে। সেই জায়গাগুলো হল- নিউ আলিপুরদুয়ার, নিউ কোচবিহার, কোকরাঝাড়, নিউ বঙ্গাইগাঁও, কামাখ্যা।
সূত্রের খবর, সোমবার অসমের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রেলমন্ত্রীকে এই ট্রেনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সোমবার ফের ভূমিকম্পে (Earthquake) কেঁপে উঠল অসম (Assam)। এই নিয়ে পাঁচদিনে তিনবার ভূমিকম্পে কাঁপল অসম। এবার ভূমিকম্পস্থল অসমের রাজধানী গুয়াহাটি (Guwahati) ও সংলগ্ন অঞ্চল। সোমবার দুপুরে ভূমিকম্প অনুভূত হয় অসমের গুয়াহাটিতে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩.৭। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভূটানেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। যদিও কম্পনের তীব্রতা খুব বেশি ছিল না। ফলে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের কোনও খবর নেই। বারবার ভূমিকম্পের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরে।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (NCS) সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল কামরূপ জেলায় ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। যদিও এই ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের কোনও খবর নেই। প্রসঙ্গত, এর আগে রবিবার বিকালে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল অসমের নওগাঁও। রিখটার স্কেলে ওই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৪। তার তিনদিন আগে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল গুয়াহাটি। রিখটার স্কেলে ওই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৩.৫। মৃদু হলেও চারদিনের মধ্যে পরপর তিনবার ভূমিকম্পের ঘটনায় ক্রমশ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অসমে।
অসমের (Assam) এক ঐতিহ্যবাহী নাচ হল বিহু (Bihu)। আর এই বিহু নাচের মাধ্যমে এক রেকর্ড গড়ল প্রতিবেশি রাজ্য। বিহু নাচের হাত ধরে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে (Guinness Book of World Records) নাম উঠল অসমের। বৃহস্পতিবার, গুয়াহাটির সারুসাজাই স্টেডিয়ামে বসে এই বিহু নাচের আসর। এই বিহু নাচে একসঙ্গে অংশগ্রহণ করেছিলেন মোট ১১ হাজার ৩০৪ জন। অসমের ঐতিহ্যবাহী বিহু নাচকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্যেই এই নাচের আসরের আয়োজন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
সূত্রের খবর, বিহু নাচকে গিনেস বুকে নাম ওঠানোর জন্য রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার উদ্যোগেই হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেন, 'আমাদের গামোছা কেন্দ্রের কাছে GI ট্যাগ পেয়েছে। আমাদের আরও যে সব নিজস্ব শিল্প আছে সেগুলিও যাতে স্বীকৃতি পায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের গৌরবকে তুলে ধরার কাজ করব আমরা।'
উল্লেখ্য, আজ শুক্রবার বেলা ১২ টা নাগাদ অসমে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মন্ত্রী। সেখানে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করবেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পের উদ্বোধনের পরই সারুসাজাই স্টেডিয়ামে পৌঁছে যাবেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সামনেও ফের বিহু নাচ করবেন নৃত্যশিল্পীরা। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই এদিন গিনেস বুকের সার্টিফিকেটটি তুলে দেওয়া হবে অসম সরকারের হাতে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার হিমন্ত বিশ্বশর্মা নৃত্যশিল্পীদের জন্য পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যেসমস্ত নৃত্যশিল্পীরা এই নাচের আসরে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
পরিবারের সদস্যের হাতে খুন (Child Murder) সাত বছরের এক শিশু। সম্পত্তিগত বিবাদে মতবিরোধ চলছিল কয়েকদিন ধরে। অসমের (Assam Incident) শিলচর এলাকার এই খুনের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য। জানা গিয়েছে, শনিবার পারিবারিক এই বিবাদ বিশাল আকার নেয়। সে সময় বাড়ির অন্য সদস্যরা রাগের মাথায় উত্তেজিত হয়ে এক মহিলার দিকে ছুরি নিয়ে এগিয়ে আসেন। তা দেখে বাড়ির ছোটো সদস্যরা ভয়ে মা-কে জড়িয়ে ধরতেই এক শিশুর গায়ে ছুরি লাগে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই খুদের। শিশুর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরের এই খুনের ঘটনা চাউর হতেই তদন্তে নামে পুলিস। এই ঘটনার ভিত্তিতে কঠিন পদক্ষেপ নেয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্পত্তিগত বিবাদে প্রায় অশান্তি লেগে থাকতো ওই বাড়িতে। ঘটনার দিন চরম আকার নেয় ঝামেলা।ঝামেলা গড়ায় খুনোখুনিতে। মৃত শিশুর মাকে মারতে উদ্যত হয় পরিবারের অন্য সদস্যরা। যার ফলে আচমকাই ছুরির ঘা গিয়ে লাগে শিশুর শরীরে। পুলিস জানিয়েছে, খুনের এই ঘটনায় অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মদ্যপান করে বিয়ের (Marriage) পিঁড়িতে বসেলেন হবু বর। বিয়ে করতে আসার আগে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করে ফেলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে অসমের (Assam) নলবাড়ি এলাকায়।
মদ্যপান করে সেই রেশ না কাটতেই বিয়ে করতে হাজির হয় হবু বর। হবু বরের নাম প্রসেনজিত হালোই। নিয়ম অনুযায়ী, সবটাই ঠিক-ঠাক ভাবেই চলছিল। কিন্তু হবু বরের এমন আচরণ বিয়েবাড়ির সকলকে হতবাক করে তোলে। বিয়ের পিঁড়িতে বসে একটাও মন্ত্র উচ্চারণ করতে পারছেন না। কিছুসময় পিঁড়িতে বসলেও কিছুক্ষণ বাদেই নেশায় টাল সামলাতে না পেরে লুটিয়ে পড়েন বিয়ের মন্ডপে। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও দেখতে পাওয়া যায় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সিএন পোর্টাল।
হবু বরের এমন আচরণ দেখে চুপ করে থাকতে পারেননি কনে। তখনি বিয়ে বাতিল করে দেয় কনে। কনেকে যথাযথ বোঝানো হলেও সে এই বিয়ে করতে একদমই নারাজ।তারপরেই দু-পরিবারের মধ্যে ঝামেলা বেঁধে যায়। পুলিসকে খবর দেওয়া হলে, পুলিস এসে জানায় বরপক্ষের বেশির ভাগ লোক মদ্যপান করেছিলেন। রীতিমতো জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল হবু বর প্রসেনজিতকে। পাত্রের এইরকম বিশৃঙ্খল আচরণের জন্য তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নলবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কনেবাড়ির পক্ষ থেকে।
দুই বন্ধু জমিয়ে বসে মদ্যপান করছিলেন। আচমকা কথা কাটাকাটি শুরু হয় দু'জনের মধ্যে। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে যায় মদ্যপ অবস্থায় বন্ধুর গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ বসান আরেক বন্ধু। ধড় থেকে একেবারে আলাদা হয়ে যায় বন্ধুর মাথা। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে অসমের (Assam) জোরহাটে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম লোহিত গগৈ। পেশায় গাড়িচালক।
পুলিস সূত্রে খবর, লোহিতের বাড়িতে ঘটনার দিন মদ্যপানের আসর বসেছিল। বন্ধু রাতুল সৌরা ওরফে ফাই (২১)-কে সেখানেই খুন করার অভিযোগ উঠেছে লোহিতের বিরুদ্ধে। রাগের রাগের বশে সৌরার গলা কেটেখুন করেন। এরপর সেই মাথা একটি স্কুল ব্যাগে ভোরে ২ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে লোহিত নিজে থানায় গিয়ে হাজির হন।
তবে থানায় যাওয়ার পথে লোহিতের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর মা ও বোনের। ব্যাগ থেকে রক্ত পড়তে দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। জোর করে ব্যাগের ভিতর কী রয়েছে দেখতে গিয়ে চমকে যান। এর পরই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিসে খবর দেন লোহিতের মা। যদিও তার আগেই সৌরার কাটা মাথা নিয়ে থানায় হাজির হয়েছিলেন লোহিত।
পুলিস হতবাক হয়ে যায় সৌরার কাটা মুণ্ড দেখে। পুলিস গ্রেফতার করে লোহিতকে। কী নিয়ে বচসা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিস।
গুয়াহাটিতে শাশুড়ি-স্বামী (Double Murder) খুনের ঘটনায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিসের (Assam Police) হাতে। যে বাড়িতে স্বামীকে খুন করেছিলেন বন্দনা, সেখানেই ঘটা করে সত্যনারায়ণ পুজো করেন তিনি। ইতিমধ্যে এই জোড়া হত্যাকাণ্ডে বন্দনা কলিতা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে এমন তথ্যই হাতে পেয়েছে পুলিস। জানা গিয়েছে, স্বামী-শাশুড়িকে খুন করে দেহাংশ মেঘালয়ের জঙ্গলে ফেলে দেন অভিযুক্তরা। এই কাজে বন্দনাকে (vandana Kalita) সাহায্য করেছিলেন প্রেমিক ধাতি কলিতা এবং বন্ধু অরূপ দাস। দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকর এবং নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ড ঘিরে চর্চার মধ্যে অসমে এই খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে।
সূত্রের খবর, ৩২ বছরের বন্দনা পেশায় জিম প্রশিক্ষক। ঠাণ্ডা মাথায় প্রথমে শাশুড়ি শঙ্করী দে এবং পরে স্বামী অমরজ্যোতি দে-কে খুন করেন তিনি। ধাতির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন কিনা খতিয়ে দেখছে অসম পুলিস।
সাম্প্রতিককালে নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ড (Nikki Yadav Murder) নিয়ে তুঙ্গে চর্চা। দিল্লির এই ঘটনায় পুলিসের জালে মূল অভিযুক্ত শাহিল গেহলট-সহ একাধিক ব্যক্তি। এই আবহে আরও এক খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে। জানা গিয়েছে, স্বামী-শাশুড়িকে খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে ফ্রিজে (Body in Fridge) রেখেছিলেন এক মহিলা, নেপথ্যে পরকীয়া। এই অভিযোগ পুলিসের কাছে আসতেই গ্রেফতার অসমের (Assam Murder) বন্দনা কলিতা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, স্বামী এবং শাশুড়ির টুকরো দেহাংশ পরে মেঘালয়ের জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, রবিবার যা উদ্ধার করেছে পুলিস।
মূল অভিযুক্ত বন্দনার সঙ্গে গ্রেফতার ধনজিৎ ডেকা নামে এক যুবক। পুলিসের দাবি, ধনজিতের সঙ্গে বন্দনার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই কারণেই এই খুন কি, খতিয়ে দেখছে পুলিস। খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে অরূপ দাস নামে বন্দনার এক বন্ধুকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
গুয়াহাটির পুলিস কমিশনার জানিয়েছেন, অমরেন্দ্র দে এবং তাঁর মা শঙ্করী দে-কে ৭ মাস আগে খুন করা হয়েছিল। খুনের পর তাঁদের দেহ টুকরো করে পলিথিনে ভরে প্রথমে ফ্রিজে রেখেছিলেন বন্দনা। তার পর সেই দেহাংশগুলি লোপাটের জন্য মেঘালয়ের জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়।
কীভাবে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যভেদ? জানা গিয়েছে, খুনের পর স্বামী এবং শাশুড়ির নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন বন্দনা। কিন্তু সেই তদন্তে কিছুই পাওয়া যায়নি। এরপর অমরেন্দ্রর তুতো ভাই আরও একটি নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুনরায় ঘটনার তদন্ত শুরু হয়।
উদ্বেগজনকভাবে বাল্যবিবাহ বাড়ছিল অসমে (Assam)। বাল্যবিবাহ বন্ধ (Prohibition of Child Marriage Act) করার লক্ষ্যে অনেক প্রচার হলেও কার্যক্ষেত্রে তা ব্যর্থ হয়েছে। তারপরেই অসমের সরকার বাল্যবিবাহ বন্ধ করার জন্য রাজ্যজুড়ে বড় ধরনের অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যের ক্যাবিনেটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে অভিযান শুরু হবে। কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। সেই মতো নির্দেশও দেন পুলিসকে, শুরু হয় ধরপাকড়। রিপোর্ট বলছে, এখন পর্যন্ত ২,৭৬৩ জনকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিস। আর বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে মোট ৪,১৩৫টি।
অসম পুলিস সূত্রে খবর, নাবালিকার বিয়ের অভিযোগে ২১৬ জন গ্রেফতার হয়েছেন খোজালেতে, নগাঁওতে ১৮৪ জন, ধুবরিতে ১৮৩ জন, বাকসায় ১৫৮ জন, বরপেটায় ১৪৬ জন, বিশ্বনাথে ১৪০ জন, মোরিগাঁওতে ১২৮ জন, বঙ্গাইগাঁওতে ১২১ জন, হাইলাকান্দিতে ১১৮ জন, কোকরাঝাড়ে ১০৮ জন, করিমগঞ্জে ১০৭ জন, কামরূপে ১০২ জন গ্রেফতার হয়েছেন।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “এই অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলবে। কেউ বাল্যবিবাহ করলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ক্ষেত্রে কোনও জেলা বা জাতি দেখা হবে না। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে POCSO এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ আইন অনুসারে মামলা দায়ের করা হবে।”
মন্ত্রিসভায় বলা হয়েছিল, যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা করতে এই পদক্ষেপ। সেই কারণেই ১৪ বছরের কম বয়সি মেয়ের বিয়ে হলে পকসো আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ১৪-১৮ বছরের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে করলে বাল্যবিবাহ নিষেধাজ্ঞা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।