গ্যালারি থেকে মেসির বিরুদ্ধে কুমন্তব্য। তার জেরে প্রতিবাদ। আর তার থেকেই বিশ্বকাপের যোগ্যতার ম্যাচে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচে উত্তেজনা ছড়াল মারাকানায়। দু দেশের সমর্থকদের হাতাহাতির জেরে ম্যাচ শুরু হল আধ ঘণ্টা পরে। সংবাদসংস্থার খবর, দু দেশের জাতীয় সঙ্গীতের পরেই উত্তেজনা তৈরি হয় গ্যালারিতে। এই ঘটনায় এক সমর্থককে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই প্রথম আর্জেন্টিনার কাছে ঘরের মাটিতে হারল ব্রাজিল।
এই ঘটনার জেরে মাঠ থেকে বেরিয়ে যায় লিও মেসির আর্জেন্টিনা। তাঁদের ট্যানেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আর্জেন্টিনার ফুটবল দল জানিয়ে দেয় উত্তেজনা থাকলে তারা মাঠে ফিরবে না। এরপর ব্রাজিলের রায়ট পুলিশ মারাকানার গ্যালারির দায়িত্ব নেয়। প্রায় ৩০ মিনিট পর মাঠে ফেরেন মেসিরা।
তার আগে অবশ্য, সমর্থকদের ঠান্ডা করতে গ্যালারির দিকে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনার দল। মঙ্গলবার রাতের এই ম্যাচে ৬৯ হাজার দর্শক হয়েছিল মারাকানায়। ব্রাজিল পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন গ্রেফতার করা হয়েছে।
কাতারে বিশ্বজয়ের পর টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান আর্জেন্তিনা। কিন্তু শুক্রবার সব অঙ্ক ভেস্তে দিল উরুগুয়ে। ২০২৬-এর বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন ম্যাচে তারা আর্জেন্তিনাকে হারিয়ে দিল ২-০ গোলে। মেসির আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে গোল করলেন রোনাল্ডো। তবে তিনি পর্তুগালের নন। এই রোনাল্ডোর পুরো নাম রোনাল্ডো আরাউহো। আরও একটি গোল করেন ডারউইন নুসেস। ২০২২ সালের নভেম্বরে কাতারের সৌদি আরবের কাছে শেষ ম্যাচ হেরেছিল আর্জেন্তিনা।
যদিও বাছাই পর্বেও টানা তিন ম্যাচে জিতেছে আর্জেন্তিনা। ইতিমধ্যে তাদের ঝুলিতে রয়েছে ১২ পয়েন্ট। সেকারণে পয়েন্ট টেবিলেও একদম শীর্ষে রয়েছে তারা।
খেলার প্রথমার্ধে দুই দলই একাধিক ফাউল করেছিল। মোট ১৭টি ফাউলের মধ্যে ১১টি ফাউলই করে উরুগুয়ে। অন্যদিকে পোস্টে শট ছিল মাত্র ৩টি। একাধিক ফাউল হওয়ায় ১৯ মিনিটের মাথায় মেজাজ হারান দুই দলের খেলোয়াড়রা। জড়িয়ে পড়েন ধাক্কাধাক্কিতে। তাতে খেলা কিছুসময়ের জন্য বন্ধও থাকে।
আরও একবার আর্জেন্টিনার উদ্ধারকর্তা লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন ম্যাচে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। ১-০ গোলের ব্যবধানে জেতে টিম।
দেশের হয়ে ১৭৬টি ম্যাচে ১০৪তম গোল করলেন লিওনেল মেসি। দেশের হয়ে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন ম্যাচে এই নিয়ে ২৯টি গোল করলেন তিনি। উরুগুয়ের লুই সুয়ারেজের গোলের সংখ্যাও একই।
এদিন নুনেজ স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ দেখার জন্য ছিলেন ৮৩ হাজার দর্শক। মেসির গোলে ম্যাচ জেতে আর্জেন্টিনা। ইকুয়েডরও বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সমতা ফেরাতে পারেনি তারা।
বিশ্বকাপ জয়ের পর ফের নীল-সাদা জার্সি। বল পায়ে এদিক ওদিক দৌড়। দেশের দায়িত্ব পালন করতে আন্তর্জাতিক শিবিরে আর্জেন্টিনা দলে যোগ দিলেন লিওনেল মেসি। ২০২৬ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপ জয়ের এক বছর হওয়ার আগেই ফের বিশ্বকাপের লড়াইয়ে নামবে আর্জেন্টিনা। বৃহস্পতিবার ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে নামবেন তাঁরা।
২০২৬ বিশ্বকাপ হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডাতে। এই টুর্নামেন্টে ৪৮টি দল অংশ নেবে। আমেরিকার ক্লাব ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপের মেগা ইভেন্টে অংশ নিতে পারবেন কিনা, তা সময় বলবে। তবে এই বিশ্বকাপে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যোগ্যতা অর্জন চলবে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও উরুগুয়ে রাউন্ড রবিন লিগ থেকে বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নেবে।
বর্তমানে আর্জেন্টিনা টিমে আছেন ৩৬ বছরের লিওনেল মেসি। গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, ডিফেন্ডার নিকোলাস ওটামেন্ডি, মিডফিল্ডাপ এনজো ফার্নান্দেজ ও স্ট্রাইকার জুলিয়ান আলভারেজের মতো তারকারা।
বলিপাড়ায় (Bollywood) হৃত্বিক রোশন (Hrithik Roshan) ও সাবা আজাদের (Saba Azad) প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। অভিনেতা-অভিনেত্রী দু'জনে প্রকাশ্যেই সাক্ষাৎ করেন। সমস্ত অনুষ্ঠানে একসঙ্গেই যান। ফলে আর কোনও লুকোচুরিই রাখছেন না দু'জনে। এর আগে একাধিকবার মুম্বইয়ের রাস্তায় একসঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁদের। আর এবারে তাঁদের দেখা গেল আর্জেন্টিনার (Argentina) রাস্তায়। তাঁরা ছুটি কাটাতে চলে গেলেন মুম্বই থেকে বহুদূরে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে। সেই ছবিই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন সাবা।
হৃত্বিক ও সাবা আর্জেন্টিনায় গিয়ে যে খোশমেজাজে ছুটি কাটাচ্ছেন, তা তাঁদের ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সাবা যে ছবি তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে শেয়ার করেছেন, সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক ক্যাফেতে বসে হৃত্বিক। তাঁর পরনে ব্ল্যাক টি-শার্ট ও প্যান্ট। আর সামনে সাজানো খাবার। আর ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন হৃত্বিক। ছবিতে হৃত্বিককে উদ্দেশ্য করে লেখা 'মাই হিপ্পো হার্ট'। আবার আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের একটি রেস্তোরাঁয় বসে রোশনের সঙ্গে একটি সুন্দর সেলফি পোস্ট করেছেন সাবা। ছবি সামনে আসতেই হৃত্বিক এবং সাবার ভক্তরা এই জুটিকে তাঁদের শুভকামনা জানিয়েছেন
আমেরিকার ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিলেন বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ক্লাবের সোশাল মিডিয়ায় নতুন জার্সিতে মেসির ছবি পোস্ট করা হয়েছে। দিন কয়েক আগেই ফ্লোরিডায় এসেছিলেন তিনি। ভারতীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে ইন্টার মায়ামির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই ছবি পোস্ট করা হয়েছে। আগামী ২১ জুলাই ক্লাবের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলবেন মেসি।
এদিকে, আমেরিকায় এসে বিপত্তি। ট্রাফিক নিয়ম ভাঙার অভিযোগ মেসির বিরুদ্ধে। আর্জেন্টিনার এক টেলিভিশন চ্যানেলের দাবি, ক্লাবে আসার পথেই সিগন্যাল বুঝতে না পেরেই বাঁদিকে গাড়ি নিয়ে চলে যান মেসি। তাতে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত বলে দাবি ওই টিভি চ্যানেলের। ফ্লোরিডা পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই ইন্টার মায়ামির কর্তরা আবেদন করেছেন, মেসির প্রথম ভুল ক্ষমা করে দিতে।
আর কয়েক ঘণ্টা। তার পরেই কলকাতায় পা রাখবেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা (Argentina) দলের গোলকিপার (GoalKeeper) এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (Martinez)। এই প্রথম বিশ্বকাপ জেতার পরে কলকাতায় আসছেন কোনও খেলোয়াড়। যা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। মার্টিনেজের সফরসূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার মোহনবাগান ক্লাবে যাবেন তিনি।
মার্টিনেজের সফরের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাবের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বজয়ীকে একটি স্মারক দেওয়া হবে। মোহনবাগান রত্নের আদলে তৈরি ওই স্মারক। তবে, মার্টিনেজকে মোহনবাগান রত্ন করা হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে। স্মারকটি রুপোর তৈরি। মাঝখানটা সোনার। যাতে মার্টিনেজের নাম লেখা 'দিবু'। স্মারকের সঙ্গে দেওয়া হবে একটি পদকও।
বুধবারও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। সকাল ১১টা ৪৫ নাগাদ সন্তোষ মিত্র স্কয়্যারে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হবে মার্টিনেজকে। এরপর বাংলার বিভিন্ন ক্লাবের জুনিয়র ও সাব জুনিয়র পর্যায়ের গোলকিপারদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। ওইদিনই সুজিত বোসের ক্লাব শ্রীভূমি এবং রিষড়ার যাওয়ার কথা তাঁর। দেখা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। সোমবার রাজ্যের বিশিষ্ট ক্রিয়া উদ্যোগপতি শতদ্রু দত্ত এবং মার্টিনেজ একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সে ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্টও করেছেন শতদ্রু দত্ত।
আর কয়েকদিন পরেই কলকাতা আসছেন তিনি। তার আগেই আর্জেন্টিনার (Argentina) বিশ্বজয়ী (World Champion) গোলকিপার (Goal Keeper) এমলিয়ানো মার্টিনেজকে ঘিরে দলবদলের মরশুমে শুরু হয়ে গেল দড়ি টানাটানি। আর্জেন্টাইন এই গোলকিপার পেতে নাকি এবার ঝাঁপিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, যে কোনও মূল্যেই মার্টিনেজকে পেতে আগ্রহী এই দুই ক্লাব।
গত বছর কাতারে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। নায়ক মেসির এই বিশ্বকাপে তাঁর অন্যতম সেনাপতি ছিলেন মার্টিনেজ। বিশেষ করে পেনাল্টি বাঁচিয়ে তিনি হিরো হয়েছিলেন। জিতেছিলেন সোনার গ্লাভস। তারপর থেকেই ক্লাব ফুটবলের বাজারে দর উঠতে শুরু করেছিল মার্টিনেজের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই মরশুমে গোড়া থেকে মার্টিনেজকে পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ম্যান ইউ এবং চেলসি। শোনা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুই ক্লাবের সঙ্গে কথা বলেছেন দিবুর এজেন্ট। মোটা টাকা অফার করা হয়েছে বিশ্বজয়ী গোলকিপারকে।
বর্তমান বিশ্বে অন্যতম বড় সমস্যা মুদ্রাস্ফীতি (Inflation)। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতির হারের নিরিখে দেশগুলির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিসটিক্স (World of Statistics)। যেখানে মুদ্রাস্ফীতির হারের নিরিখে বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আর্জেন্টিনা (Argentina)। গত মাসে আর্জেন্টিনার বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আর্জেন্টিনার মুদ্রাস্ফীতি সূচকের বৃহত্তম অংশ হল খাবারের দাম। যা এক মাস আগের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মুদ্রাস্ফীতির তালিকায় আর্জেন্টিনার পরই রয়েছে তুরস্ক। ভারত ১০ নম্বর তালিকায়। কোন দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার কত, দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিসটিক্স-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মুদ্রাস্ফীতির হারের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে আর্জেন্টিনা। সেখানে জিনিসের দাম এক বছর আগের থেকে ১০২.৫ শতাংশ হারে বেড়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তুরস্ক (৫৫.১৮)। এই দুই দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার অত্যাধিক বেশি। এরপর অবশ্য দেশগুলির মুদ্রাস্ফীতির হার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া (১১ শতাংশ), এরপর যথাক্রমে ব্রিটেন (১০.১ শতাংশ), ইতালি (৯.২ শতাংশ), জার্মানি (৮.৭ শতাংশ)। অস্ট্রেলিয়া রয়েছে অষ্টম স্থানে (৭.৮ শতাংশ)। তালিকার দশম স্থানে রয়েছে ভারত, মুদ্রাস্ফীতির হার ৬.৪৪ শতাংশ।
উল্লেখ্য, এই বছরে রয়েছে আর্জেন্টিনায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ফলে মুদ্রাস্ফীতি একটি কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। দেশের শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দল মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে ভোটারদেরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
২০২২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি ক্লাব ফুটবলে নিজের ৭০০তম গোলটি করে ফেললেন রবিবার রাতে। ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের ম্যাচে মার্সেইলের বিপক্ষে পিএসজি জয় পায় ৩-০ গোলে। প্রথম গোলটি করেন ফরাসি তারকা এমবাপে। ২৯ মিনিটে দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোলটি করেন প্রাক্তন বার্সা তারকা মেসি। দলের পক্ষে শেষ গোলটি আসে সেই এমবাপের পা থেকেই। গত ডিসেম্বরে বার্সেলোনা থেকে পিএসজি-তে আসার পর এটা তাঁর নতুন ক্লাব জার্সিতে ২৮ তম গোল। ১৩ বছর বয়সে কাতালান ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন মেসি।
সেই জার্সিতে ৭৭৮টি ম্যাচ খেলে ৬৭২টি গোল করেছিলেন এলএম-১০। ৭টি ব্যালন-ডি-ওর পাওয়ার রেকর্ডও তাঁরই দখলে। পাশাপশি বার্সেলোনার হয়ে ৩৫টি প্রতিযোগিতামূলক ট্রফি জিতেছিলেন মেসি। ফিফার সেরা খেলোয়াড়ের খেতাবও তাঁরই পকেটে আসছে বলেও ফুটবল বিশ্বে খবর। দেশের হয়ে ৯৮টি গোল করে রেকর্ডের সামনে দাড়িয়ে রয়েছেন লিও। ১০০টি গোল করলেই তিনি হবেন তৃতীয় আর্জেন্টাইন, যিনি ১০০টি গোলের মালিক হবেন। স্বভাবতই মেসি প্রেমীরা উচ্ছসিত এই সাফল্যে।
প্রসূন গুপ্ত: একটাই স্বপ্ন ছিল আর্জেন্টিনা অধিনায়ক মেসির, কোনও একদিন বিশ্বকাপটি তাঁর হাতে ওঠে। স্বাভাবিক, বিশ্বসেরা তিন খেলোয়াড়ের মধ্যে সদ্য প্রয়াত পেলেকে বলা হয় সম্রাট, মারাদোনাকে রাজপুত্র এবং মেসিকে সুলতান বা রাজা। সমকালীন অনেক খেলোয়াড়ই এই তিন কিংবদন্তির সময়ে ছিলেন। কিন্তু এঁরা বিখ্যাত হয়েছেন একক শক্তিতে বা পায়ের জাদুতে দর্শকের ভোটেই। পেলে একমাত্র ফুটবলার, যিনি তিন-তিনবার বিশ্বকাপ পেয়েছেন। মারাদোনা ১৯৮৬-তে এবং অবশেষে মেসি খেলোয়াড় জীবনের শেষ প্রান্তে এসে। ২০০৬ থেকে নিয়মিত বিশ্বকাপ খেললেও এতদিন লাগলো কেন মেসির, উঠছে এমন প্রশ্ন। আসলে আর্জেন্টিনার গাঁট জার্মানি দল। ৮৬-র ফাইনাল বাদ দিলে এই জার্মানি কতবার যে আর্জেন্টিনার মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছে তা নিয়ে রেকর্ড বই ঘাঁটার দরকার নেই। দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছেন ৯০-এ মারাদোনা, ২০১৪-তে মেসি।
১৯৮৬-র বিশ্বকাপ ফাইনালে নিয়মিত পায়ের জাদু দেখানো মারাদোনাকে বোতলবন্দি করে রেখেছিলো তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি। কিন্তু তাঁকে লক্ষ্য রাখতে গিয়ে বাকিদের ঢিলে পরে যাওয়াতে শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা জিতেছিল। পরে ৯০-তেও ফাইনালে মারাদোনাকে আটকে দিয়েছিলো এই জার্মানিই। মেসির ২০০৬-০এ তেমন নাম ধাম ছিল না, কিন্তু উঠতি খেলোয়াড় ছিলেন তো বটেই। ২০১০-এ মেসির আর্জেন্টিনাকে জার্মানি কোয়ার্টার ফাইনালে ৪ গোল দিয়ে বিদায় করেছিল। ২০১৪-র ফাইনালে মেসিকে বল নিয়ে ড্রিবলিং বা পাসিং করতেই দেয়নি জার্মান ডিফেন্স। ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের ১১৩ মিনিটের মাথায় গোৎজের গোলে আর্জেন্টিনা ১ গোলে হারে।
এবারে মেসি বলেই দিয়েছিলেন, এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। কাজেই ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের মতোই জানপ্রাণ লড়িয়ে সারা টুর্নামেন্ট খেললেন নেতার মতোই। অবশেষে ঐতিহাসিক ফ্রান্সের সঙ্গে দ্বৈরথে টাই-ব্রেকে জয় পায়ে মেসি বাহিনী। ট্রফিতে পেলেনই সঙ্গে বিশ্বকাপ ইতিহাসে নামটিও তুলে ফেললেন। সেই রাতে ঘুমের সময়ে নাকি মেসি বিশ্বকাপটি সঙ্গে নিয়ে শুয়েছিলেন।
তাঁর ফেসবুকে সে ছবিই পোস্ট করেছিলেন। এরপর তাঁর ক্লাব ফ্রান্সের পিএসজিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি বর্তমানে দেশে এবং এই সময়ে আর্জেন্টিনায় গ্রীষ্মকাল। সারা বছর শীতের দেশে থাকা মেসি গরমকাল উপভোগ করছেন স্ত্রী এবং ৩ পুত্রের সঙ্গে। এই ছবিও পোস্ট করেন মেসি দ্য গ্রেট।
বিশ্বকাপ (World Cup 2022) জিতেছে আর্জেন্টিনা (Argentina। ৩৬ বছরের শাপমোচনের পর বাঁধভাঙা উৎসব চলছে। একইসঙ্গে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসছে ছোট্ট ছোট্ট নানান গল্প। বিশ্বকাপ ঘরে তুলতে মাঠের প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখেননি কোচ স্কালনি। মাঠের বাইরে নিজেদের মতো করে শপথ নিয়েছিলেন কর্তা আর ফুটবলাররা।
মেসিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মানত করে রেখেছিলেন আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার প্রধান ক্লদিও তাপিয়া। সান হুয়ানে জন্ম তাঁর। সন্ত দিফুনতা কোরিয়ার সমাধি রয়েছে সান হুয়ানে। তাপিয়া সন্তের ভক্ত। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, মেসিরা কাপ জিতলে বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে সেখানে যাবেন। কাপ এসেছে। মানত পূরণ করতে সমাধি ঘুরে এলেন তাপিয়া। বিশ্বকাপ ট্রফি স্পর্শ করিয়ে নিয়েছেন সমাধিতে।
মিডফিল্ডার পালাসিও-কে নিয়ে গিয়েছিলেন তাপিয়া। বেদিতে ট্রফি স্পর্শ করানোর সময় তাপিয়া বলেছেন, "ভালোবাসা আর আনুগত্য কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ করতে হয়।" পরে সান হুয়ানের মেয়রের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। ২০২১-এ কোপা আমেরিকা জেতার পরেও এই বেদিতে এসেছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল প্রধান। দিফুনতার সমাধিতে যাওয়ার ছবি নিজেই টুইট করে দিয়েছেন তাপিয়া।
রোজারিওর নতুন অতিথি কে জানেন? বড়দিনের আগে নতুন অতিথিকে নিয়ে সরগরম রোজারিও (Rosario)। আর্জেন্টিনায় লিও মেসির (Lionel Messi) জন্ম ওই রোজারিওর পাড়ায়। বিশ্বকাপ (World Cup 2022) জেতার পর দেশে ফিরেছে আর্জেন্টিনা দল। ডি মারিয়া, মার্টিনেজ, আকুনাদের স্বাগত জানাতে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ উপস্থিত ছিলেন বুয়েনস এয়ার্স রাজপথে। ভিড়ের চাপে কপ্টারে করে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয় ফুটবলারদের।
রোজারিওর কেন্টাকি কান্ট্রি ক্লাবে রয়েছেন মেসি ও পরিবার। বড়দিনে উৎসবের আগেই পরিবার সহ পৌঁছে গিয়েছেন লুই সুয়ারেজ। উরুগুয়ে ফুটবলার একটা সময় বার্সায় খেলতেন। মেসির ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুই পরিবার একসঙ্গে বড়দিন উদযাপন করবে। সবমিলিয়ে সেলিব্রেশন মোডে ঢুকে পড়েছে মেসির আঁতুরঘর।
পাশাপাশি এবার টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচের শুভেচ্ছাও পেলেন আর্জেন্টাইন ফুটবলের জাদুকর। সার্বিয়ান টেনিস তারকা ফাইনাল দেখেছেন। বিনয়ী মেসি জুনিয়রদের রোল মডেল। তাই মেসি কাপ জেতায় খুশি জোকার। নিজে সৌজন্য দেখিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন লিও কে।
কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) ফাইনাল রাজ্যের ক্রীড়া ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের (Arup Biswas) চোখে। খেলা দেখে কী লিখলেন তিনি..
১৪ ঘন্টা কেটে গিয়েছে, এখনও ফাইনাল (World Cup Final 2022) জ্বরে আচ্ছন্ন সারা পৃথিবীর ফুটবলপ্রেমীরা। কী খেলাটাই দেখলাম রবিবাসরীয় রাতে। এরকম একটা ফাইনাল এর আগে কবে দেখেছি মনে করতে পারছি না। আমি একসময় মোহনবাগান ও ব্রাজিলের প্রচন্ড সমর্থক ছিলাম। কিন্তু মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে আসার পর একেবারেই নিরপেক্ষ।
রবিবার রাতে আমার এলাকায় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে ফাইনালের (Argentina beats France) ব্যবস্থা করেছিলাম। বললে বিশ্বাস করবেন না প্রায় ৫ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল। নানা পোশাকে, বিশেষ করে নীল-সাদা জার্সিতে এই ঠান্ডায় সব এসে উপস্থিত। একেক সময়ে ভাবি এই খেলা পাগল দর্শকের দেশ ভারত বা বাংলাদেশ, অথচ এখন থেকে কবে যে ফুটবলার উঠবে কে জানে।
অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন বা এআইএফএফের ভাবনার বিষয়। যাই হোক, এবারে লিখি খেলা কেমন হলো! নিঃসন্দেহে প্রথম অর্দ্ধে অসাধারণ আর্জেন্টিনা। মুহুর্মুহু আক্রমণে কাহিল করে দিয়েছিলো ফ্রান্সকে। মনে হচ্ছিলো ফ্রান্স কি খেলা ছেড়ে দিলো? ডি'মারিয়া বাঁ প্রান্ত থেকে দুজন ফ্রান্স ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সেঢুকেছে , অমনি ফাউল। আর্জেন্টিনার কোচের এবার টুর্নামেন্টে একটা বিশেষ স্ট্রাটেজিই ছিল বক্সে ঢুকে কাটাও, ড্রিবল করো, তোমাকে মারবেই এবং মারলেই পেনাল্টি। লক্ষ্য করে দেখা প্রায় প্রতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা পেনাল্টি পেয়েছে এবং গোল করেছে মেসি। দ্বিতীয় গোলটি কয়েক মিনিটের মধ্যে ৫টি টাচ এবং বাঁ প্রান্ত থেকে ডি'মারিয়ার অসাধারণ গোল।
দ্বিতীয়ার্দ্ধে একসময় কোচ ডি'মারিয়াকে কেন তুলে নিলো বুঝলাম না। ও উঠে যাওয়ার পর ফ্রান্সের কোচ একে একে গ্রিসম্যান এবং জিরুডকে তুলে নেওয়ার পর ফ্রান্সের খেলার ঝাঁজ বাড়লো। এই সময়ে আর্জেন্টিনা কি খেলায় একটু হালকা দিলো। এমবাপেকে অনেকটাই মাঠজুড়ে খেলতে দেখা গেলো।
এরপর বক্সের মধ্যে ধাক্কা এবং পেনাল্টি। প্রথম গোল এমবাপের। কিছুক্ষণের মধ্যে দ্বিতীয় অসাধারণ মুভে ফের এমবাপেই গোল করলেন। এক্সট্রা টাইম, ফের খেলা ধরলো আর্জেন্টিনা এবং টাচ ফুটবলে ড্রিবল করে গোল পেলেন মেসি কিন্তু ওই কিছুক্ষণ। বক্সে হাতে বল লাগার জন্য ফের পেনাল্টি পেলো ফ্রান্স।
ফের গোল করলেন এমবাপে। শেষ পর্যন্ত টাই ব্রেকারের মাধ্যমে খেলা শেষ হলো। আর্জেন্টিনা টাই ব্রেকে অনেক সপ্রতিভ ছিল। পরপর ৪টি গোল করলো মেসির দল কিন্তু এখানেই পিছিয়ে ফ্রান্স কারণ গ্রিসম্যান , জিহুর মতো খেলোয়াড় ছিল না যাঁরা পেনাল্টি বিশেষজ্ঞ।
ভালোই হয়েছে, পেলে , মারাদোনার পর একটি নামই আসে বিশ্ব ফুটবলের সেরাদের মধ্যে তিনি জাদুকর মেসি। তাঁর হাতে কাপটি না উঠলে খারাপ লাগত। তবে মেসি হয়তো বিদায় নিলেন এবং দেখে গেলেন নতুন প্রজন্মের এমবাপে এসে গিয়েছেন আগামীর জন্য।
সাড়ে তিন দশকের প্রতীক্ষার অবসান। ফ্রান্সকে টাই ব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। দিনের শেষে এই ট্রফি হয়তো বা মারাদোনাকে উৎসর্গ করবেন মেসিরা। কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসের পাতায় এখন পেলে, মারাদোনা, জিদান, রোনাল্ডোর সঙ্গেই মেসির নাম ঢুকে গেল। ২০১৪-তে তীরে এসে তরী ডুবেছিল, কিন্তু 2022 মানেই ভামোস ভামোস আর্জেন্টিনা।
লুসেইল স্টেডিয়ামে নাটকীয়, রোমহর্ষক ফাইনালে ১২০ মিনিট পর্যন্ত খেলার ফল ৩-৩। পেনাল্টিতে দুটি গোলের পাশাপাশি ফ্রান্সের তৃতীয় গোলও এমবাপের ঝুলিতে। ১৯৬৬-র পর এই প্রথম কোন ফুটবলার ফাইনালে হ্যাট্রিক করলেন। ব্যস ওইটুকুই, কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের প্রথম ৮০ মিনিট দেশর ছেলেদের সঙ্গে দাপট রেখেই খেলেছে আর্জেন্টিনা। প্রথম ৭৫ মিনিট মাঠেই খুঁজে পাওয়া যায়নি এমবাপে, গ্রিজম্যানদের আক্রমণ।
প্রথম অর্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় স্কালোনির দল। ম্যাচের ৬০ মিনিট পর্যন্ত ফ্রান্সের ঝুলিতে না ছিল কর্নার, না অফসাইড। বল পজেশন থেকে শুরু করে গোলমুখী শট এগিয়ে সেই নীল-সাদাই। আর্জেন্টিনার ৩ গোলের পিছনে অবদান মেসি ২ আর ডি মারিয়া ১। মেসির করা দুটি গোলের মধ্যে একটি আবার পেনাল্টি থেকে। কিন্তু ৮০ মিনিটের মাথায় ডি মারিয়াকে স্কালোনি তুলে নিতেই আক্রমণের ধার ভারে এমবাপের।
প্রথম ৯০ মিনিট শেষ হয় ২-২ গোলে। অতিরিক্ত সময় শেষ হয় ৩-৩ গোলে। অবশেষে ম্যাচের ভাগ্য লিখতে হয় পেনাল্টি শুটআউটে। কোয়ার্টার ফাইনালের মতো এই ম্যাচেও নায়ক আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক ই মার্টিনেজ। ফ্রান্সের দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে চাপে ফেলে দেন এমবাপেদের। এরপর শুধু সময়ের অপেক্ষা, কারণ ফুটবল দেবতা বিশ্ব ফুটবলের এল এম -১০-কে নিরাশ করেনি।
কাতার বিশ্বকাপ এই নামে খ্যাত হল আমি 'মেসিরই বিশ্বকাপ।' ঠিক যেভাবে ৯৪ রোমারিও, ৯৮ জিদান, ৮৬ মারাদোনা আর ২০২২ মানে লিওনেল মেসি। ৭৮,৮৬,২০২২ বিশ্বকাপের হ্যাটট্রিক এখন মারাদোনার দেশে।