সরকারি হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে গর্বের অন্ত নেই বর্তমান রাজ্য সরকারের। অথচ এদিকে ফের সরকারি হাসপাতালে অমানবিকতার নজির। অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে মাত্র ৪ মাসের অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে বাবা-মাকে বসে থাকতে হল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শনিবার রাতের এমন ছবি উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ হাসপাতালের সামনের।
শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিল ৪ মাসের ছোট্ট শিশু। বাবা-মা নিয়ে যায় হেমতাবাদ হাসপাতালে। বিপদ বাড়ে শিশুকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে রেফার করা হলে। অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স। বাধ্য হয়ে কোলের শিশুকে নিয়ে বসে থাকতে হয় ঠাণ্ডায়।
সূত্রের খবর, হেমতাবাদ হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স ৫ টি। তার মধ্যে সচল ৩ টি। কেন ২ টি অ্যাম্বুল্যান্স চলে না? ৩ টি সচল অ্যাম্বুল্যান্সের পরিষেবাও অমিল কেন? তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি।
এসএসকেএম-এ বুধবার সন্ধ্যায় আচমকা নজরে আসে ইডির তৎপরতা। এসএসকেএমে পৌঁছয় জোকা ইএসআই হাসপাতালের 5G অ্যাম্বুলেন্স। CRPF-এর কমান্ডেন্ট ঢুকলেন হাসপাতালে। কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে মোতায়েন রয়েছেন CRPF জওয়ান। আজই কি তবে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠ পরীক্ষা? যদিও এ বিষয়ে এখনও অবধি কোনও কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়ায় 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর। একাধিকবার তাঁকে জিজ্ঞাসবাদ করে ইডি-সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থা। পরবর্তীকালে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতারির পর কিছুদিন প্রেসিডেন্সি জেলে থাকলেও কালীঘাটের কাকুর বর্তমান ঠিকানা এসএসকেএম হাসপাতাল। একাধিকবার হাসপাতালে গিয়ে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে ইডি। এবার দেখার আজ, বুধবার ইডি আধিকারিকরা এসএসকেএম থেকে বের করতে পারেন কিনা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্স। ঘটনায় আহত চালক সহ গাড়িতে থাকা মোট ছয়জন। বৃহস্পতিবার সকালে হুগলির গুড়াপ থানার অন্তর্গত কংসারিপুরে জাতীয় সড়কে ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস গিয়ে গাড়িতে থাকা ছয় জনকেই উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়।
হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিস সুপার জানিয়েছেন, এদিন সকালে সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সটি বর্ধমানের দিক থেকে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি উল্টে যায়। বর্তমানে আহত ওই ছয় জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
তবে এই দুর্ঘটনার ফলে একেবারে দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে ওই অ্যাম্বুলেন্সের সামনের অংশ। যদিও দুর্ঘটনাস্থল থেকে গাড়িটিকে এখনও উদ্ধার করা হয়নি।
সাইরেন (Siren) বাজিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটে আসছে অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance)। আর তা দেখা মাত্রই ট্রাফিক আটকে রাস্তা ফাঁকা করে দিলেন ট্রাফিক পুলিস (Traffic police)। কিন্তু কিছু দূর গিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স গিয়ে থামল একটি ফাস্টফুডের দোকানে। দরজা খুলে চালক বেরিয়ে এসে কিনলেন আমের শরবত। আর ভিতরে নেই কোনও রোগী। এই অবাক করা ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদে। এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইরেন বাজিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স আসছে দেখেই কর্মরত ট্রাফিক পুলিস অ্যাম্বুল্যান্সটিকে রাস্তা ফাঁকা করে দেন। কিন্তু ফাঁকা রাস্তায় প্রায় ১০০ মিটার গিয়েই থেমে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। দরজা খুলে নেমে এসে ঢুকে যান একটি ফাস্টফুডের দোকানে। কিছু ক্ষণ পর বেরিয়ে আসেন হাতে একটি আমের শরবতের বোতল নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত পুরো সময় ধরেই বেজে যাচ্ছিল অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন। এই ঘটনাটি দেখেই ছুটে আসেন ট্রাফিক পুলিস।
#TelanganaPolice urges responsible use of ambulance services, citing misuse of sirens. Genuine emergencies require activating sirens for swift and safe passage. Strict action against abusers is advised.
— Anjani Kumar IPS (@Anjanikumar_IPS) July 11, 2023
Together, we can enhance emergency response and community safety. pic.twitter.com/TuRkMeQ3zN
এই পুরো ঘটনাটি বন্দি হয়েছে ট্রাফিক পুলিসের জামায় লাগানো ক্য়ামেরাটিতে। ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সটি খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। এরপর দোকান থেকে আমের শরবত কিনে বেরিয়ে আসেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তখন পুলিসকর্মী জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি সাইরেন দিচ্ছিলেন দেখে আমি রাস্তা পরিস্কার করে দিলাম। আর আপনি হাসপাতালে না গিয়ে দোকানে দাঁড়িয়ে আছেন। কোথায় রোগী?'
পুলিস সূত্রে খবর, অ্যাম্বুল্যান্স চালককে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট আইন ভাঙার কারণে। এই ঘটনাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে জরুরি পরিস্থিতির নাম করে সাইরেনের অপব্যবহার নিয়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়া ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও অমানবিকতার ছবি। টাকার অভাবে অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে পারেনি রোগীর পরিবার। অভিযোগ কর্তব্যরত চিকিৎসককে বলেও হয়নি সুরাহা। উলটে রোগীর পরিবারকে বলা হয়, 'ট্রেনে করে বর্ধমানে নিয়ে যান।' এরপর নিরুপায় হয়ে ট্রেন পথে আশঙ্কাজনক রোগীকে নিয়ে বর্ধমানে যাওয়ার তোরজোড় শুরু হতেই ভাতার স্টেশনে মৃত্যু হয় বছর ৪৮-র মেনকা কোঁড়ার।
ঠিক কী ঘটেছে বৃহস্পতিবার? জানা গিয়েছে, ৪৮ বছরের মেনকা কোঁড়ার বাড়ি বর্ধমানের পারবীরহাটার কোঁড়া পাড়ায়। ধান কাটার জন্য সপরিবারে ভাতারের কাঁচগোড়িয়া গ্রামে এসেছিলেন মেনকারা। গত দু-তিন দিন অসুস্থ থাকায় দুর্বল হয়ে পড়েন মেনকাদেবী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ তাঁকে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা তিনটে স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়, তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে রেফার করা হয়।
এখন এই অব্যবস্থার ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, রেফার রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা না করে দিয়ে কীভাবে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হল? ভাতারের ঘটনায় মৃতার ভাই রাজু কোঁড়ার অভিযোগ, 'দিদিকে সকাল সাড়ে আটটার সময় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য হাসপাতালে বলি, তাঁরা বলে টাকা লাগবে। আমাদের কাছে অত টাকা নেই শুনে বলা হয়, যাঁদের বাড়ির ধান কাটতে এসেছেন, তাঁদের বাড়ি থেকে টাকা আনতে। এদিকে দিদি ছটফট করছে, তখন ঠিক করি, ট্রেনে করে বর্ধমান নিয়ে যাব। সেই মতো টোটো করে স্টেশনে নিয়ে আসি। প্ল্যাটফর্ম ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই দিদি মারা যান।'
মৃতার স্বামী অসিত কোঁড়ার অভিযোগ, 'আমাদের রোগীকে নিয়ে বর্ধমানে যেতে বললে, আমরা বলি পয়সা নেই কীভাবে যাবো। ওরা বলে ট্রেনে করে চলে যাও। এরপর সঙ্গে যা টাকা ছিল, সেই টাকায় টোটো ভাড়া করে স্টেশনে নিয়ে যাই। তারপরেই মারা গেলো রোগী। হাসপাতালে ছাড়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনা। সঠিক সময়ে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা গেলে স্ত্রী বেঁচে যেতেন।'
তবে এখানেই দুর্গতির শেষ নেই। জানা গিয়েছে, রেল স্টেশনে গাছের তলায় বাঁধানো বেদিতে মৃতদেহ রেখে কান্নাকাটি শুরু করে মৃতার পরিজন। কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ীর নজরে বিষয়টি পড়লে তাঁরা চাঁদা তুলে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করেন। সেই গাড়ি করে মৃতদেহকে বর্ধমানে পরিবার। এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ভাতারের এই ঘটনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) জগন্নাথ হেমব্রম জানান, 'ঘটনার কথা শুনেছি। বিএমওএইচ-কে রিপোর্ট দিতে বলেছি। শুনেছি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি খারাপ আছে। এই ঘটনা অনভিপ্রেত।'
হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) থাকা সত্ত্বেও মিলছে না রোগীদের পরিষেবা। ক্যানিং (Canning) মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবা একটি ব্লক হাসপাতালের থেকেও দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। হাসপাতালে ১০২-এর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকলেও সেই অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা পাচ্ছেন না রোগী ও তাঁর পরিজনরা। তাই বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে মোটা টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে রোগীর স্থানান্তরের জন্য।
এক রোগীর পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের শিশু হাসপাতাল বিভাগে ১৭ দিনের এক শিশু ভর্তি ছিল। তবে হঠাত্ ওই শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হবে, জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তখন এই পরিস্থিতিতে ওই শিশুর পরিবার পরিজন ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের দ্বারস্থ হন। কিন্তু হাসপাতালে চত্বরে চার চারটে ১০২ অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা রোগীকে নিয়ে কলকাতায় যেতে রাজি হননি। একের পর এক নানা ধরনের অজুহাত দিয়েছেন তাঁরা। ফলে বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে তিন হাজার টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তবেই রোগীকে স্থানান্তরিত করেন রোগীর পরিজনরা, এমনটাই দাবি তাঁদের।
এই ঘটনার পর থেকেই ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবার। তাঁরা হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন।
ওড়িশার কালাহান্ডির মর্মান্তিক ছবি এবার জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri)। হাসপাতাল থেকে মায়ের দেহ (body Carry) নিয়ে ৫০ কিমি দূরে বাড়ির পথে হাঁটা লাগান ছেলে। নেপথ্যে অর্থাভাব, ৩ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে পারেননি ছেলে। তাই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে সৎকারের জন্য মায়ের দেহ কাঁধে তুলে হাঁটা লাগান ছেলে, সঙ্গী বৃদ্ধ বাবা। যদিও পরে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) দেওয়ান পরিবারকে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
জলপাইগুড়ির ক্রান্তিহাটের নগরডাঙা এলাকার এই ঘটনায় কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতালের দালাল চক্র। এমনকি, হাসপাতালের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, হাসপাতাল থেকে সাধ্যের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স বা শববাহী গাড়ি পরিষেবা না পেয়ে মায়ের দেহ কাঁধে তুলেই হাটা লাগান ছেলে এবং বাবা।
মর্মান্তিক এই ঘটনা প্রসঙ্গে দেওয়ান পরিবার জানায়, ওরা ক্রান্তি পর্যন্ত আসতে ৩ হাজার টাকা চাইছিল। আমরা বলেছিলাম ৯০০ টাকায় নিয়ে এসেছি তোমরা আর ২০০-৩০০ টাকা বেশি নিয়ে পৌঁছে দাও। ওরা রাজি হয়নি। তাই এই ব্যবস্থা, ঘাড়ে করে বাড়ি নিয়ে যাব। আমাদের পয়সা নেই ফ্রি-তে কে নিয়ে যাবে? হাসপাতালেও বলা হয়েছিল, ওদের কোনও ব্যবস্থা নেই।
এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের এমএসভিপি জানান, 'আমার সঙ্গে দেওয়ান পরিবারের কথা হয়েছে। আমাদের ২৪X৭ বিনামূল্যে রোগী সহায়তার প্রকল্প আছে। মৃতদেহের ক্ষেত্রেও এই প্রকল্প কার্যকর। তিন হাজার চাওয়া হয়েছে যাওয়ার সময়, ওরা ৯০০ টাকায় হাসপাতালে এসেছিল। এটা অমানবিক। আমরা হাসপাতালের সব ধরনের স্টাফকে সতর্ক করেছি। এই ধরনের ঘটনা কানে এলে বা চোখে পড়লেই যাতে হাসপাতাল প্রশাসনকে তাঁরা সতর্ক করে।'
এদিকে অ্যাম্বুলেন্স সংগঠনের এক সদস্য বলেন, 'এই ঘটনা খুবই জঘন্য। এই ঘটনা আমার ৩০ বছরের কর্মজীবনে দেখিনি। অ্যাম্বুলেন্স সংগঠনকে বদনাম করার জন্য এই কাজ করানো হয়েছে।' তাঁর কাঠগড়ায় আবার সেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যাঁদের অ্যাম্বুলেন্সে মায়ের দেহ বাড়িতে নিয়ে যায় দেওয়ান পরিবার। ওই সদস্য জানান, 'রোগীর পরিবারকে ভুল পথে চালানো হয়েছে। উনি ৩ হাজার টাকার বদলে ১২০০ টাকা বললে আমাদের ছেলেরা রাজি হয়ে যায়। ওদের বলে ঠিক আছে দেহ নিয়ে আসুন, হয়ে যাবে। পরে ওই পরিবার আর যোগাযোগ করেনি।'
ফের মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। একটি ১০২ অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) ও গ্যাসের ট্যাঙ্কার (Gas tanker) মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত (injured) সদ্যোজাত শিশু-সহ পাঁচজন। ঘটনাটি ফাঁসিদেওয়ার (Phansidewa) ঘোষপুকুর ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের গোয়ালটুলি মোড় এলাকায়। দুর্ঘটনা দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা গুরুতর আহত সদ্যোজাত শিশু ও পাঁচজনকে উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (hospital) স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, ইসলামপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা মাকে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এমন সময়ই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আসে বিশাল পুলিসবাহিনী। ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খবর দেওয়া হয় দমকলকে।
এবার ১০২ এর বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ। ঘটনাস্থল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) মেডিক্যাল কলেজের আওতাধীন জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল (hospital)। অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রসূতি মায়েদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১০২ এর অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) পরিষেবার জন্য। রবিবারও সেই ছবি দেখা গেল হাসপাতাল চত্বরে। সদ্যজাত সন্তান কোলে অসহায় অবস্থায় অপেক্ষা করতে দেখা গেল একাধিক প্রসূতি মাকে। ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে।
রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়দের অভিযোগ, রবিবার জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের মাদার এণ্ড চাইল্ড হাব (মাতৃমা) থেকে বেলা ১২ টার পর থেকে বেশ কয়েকজন প্রসূতি মায়েদের ছুটি হয়। যাদের বাড়ি জলপাইগুড়ি শহরে বা শহর সংলগ্ন এলাকায়, এই সমস্ত রোগীদের সময় মত পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু যাদের বাড়ি রাজগঞ্জ, বানারহাট, ধূপগুড়ি এবং অন্যত্র তাঁদের পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে হাসপাতাল চত্বরেই। যার জেরে বেলা বাড়তেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ঘটনায় রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদ্যজাত সন্তান কোলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে হাসপাতাল চত্বরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কয়েকজন প্রসূতি মা ও পরিবারের লোকজনকে। তাঁরা বারবার রোগী সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, দূরে যেতে হবে বলেই ১০২ অ্যাম্বুলেন্স চালকরা যেতে চান না। পাশাপাশি, অনেক সময় এই সমস্ত রোগীদের পরিজনদের থেকে টাকাও চাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ১০২ অ্যাম্বুলেন্স এর এক চালক বাসুদেব বর্মণ। তাঁর কথায়, এই হাসপাতালে ১০২ এর মোট ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স আছে। রোটেশন ভিত্তিতে তা যাওয়া-আসা করে। একজনকে পৌঁছে দিয়ে এসে অন্যজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেই তার জন্যই অপেক্ষা করতে হয় রোগীদের।
জানা গিয়েছে, এই হয়রানির জেরে কেউ পকেটের টাকা খরচ করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে নিয়ে গিয়েছেন। কেউ আবার কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্যেও বাড়ি পৌঁছেছেন। কিন্তু জেলা হাসপাতালের এমন দুর্দশায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন একাধিক রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। কবে মিলবে সুরাহা জানা নেই কারও।
সাতসকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়েই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা মা ও মেয়ের (Road Accident)। ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন উলুবেড়িয়ার (Uluberia) জোড়া কলতলায় অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় মৃত মা-মেয়ে। এরপরেই ঘাতক অ্যাম্বুলেন্সের উপর চড়াও হন স্থানীয়রা। মৃতদেহ আটকে চলে পথঅবরোধ। সকাল থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধে যান চলাচল ব্যাহত হয় জাতীয় সড়কে (National Highway)। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পরে একের পর এক গাড়ি। প্রায় তিন কিমি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এই ট্রাফিক। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে লিখিত আশ্বাস দিলে পাঁচ ঘণ্টা পর অবরোধ (Road Block) ওঠে। দুপুর ১২টা থেকে ধীরে ধীরে শুরু হয়েছে যান চলাচল।
এই ঘটনায় অবরুদ্ধ হয়ে যায় হাওড়া-খড়গপুরগামী দুটি লেন। এলাকার মানুষের দাবি, দুর্ঘটনাপ্রবণ এই এলাকা। বারবার ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও উদাসীন প্রশাসন। প্রশাসনকে লিখিত দিতে হবে এখানে ফুট ওভারব্রিজ বা আন্ডার পাসের। এই দাবিতে চলতে থাকে অবরোধ। স্থানীয় থানা এবং হাওড়া গ্রামীণ পুলিসের বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
এদিকে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ উলুবেড়িয়ায় জোড়া কলতলায় পথদুর্ঘটনায় মৃতদের নাম অপর্না পাড়াল (৪০) ও মেয়ে টুসু পাড়াল (১০)। মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথেই এই মর্মান্তিক ঘটনা। মুম্বই রোডে খড়গপুরগামী লেনের রাস্তার বাঁদিকে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মা ও মেয়েকে ধাক্কা মারে একটি বেপরোয়া অ্যাম্বুলেন্স। উত্তেজিত জনতা এরপরেই ঘাতক অ্যাম্বুলেন্সে চড়াও হয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। দমকল আগুন নেভাতে এলে কর্মীদের বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় আহত এক সাইকেল আরোহী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।