লোকসভা আবহে রাজ্যবাসীর জন্য সুখবর কেন্দ্রীয় সড়ক, পরিবহন এবং মহাসড়ক মন্ত্রকের। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অর্জুন সিং-কে চিঠি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরির। এক্স হ্যাণ্ডেলে সেই কথা নিজেই জানান অর্জুন সিং। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি জানান, কেন্দ্রের তরফে বারাসত-বঢ়জাগুলি বিভাগের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চার লেন তৈরির কাজে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের তরফে ৩৫২.০১ কোটি টারা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এই মুহুর্তে দেশজুড়ে লাগু হয়েছে আদর্শ আচরণ বিধি। সেকারণে ভোটপর্ব মিটলেই শুরু হবে এই রাস্তা তৈরির কাজ। ফলে সাধারণের যাত্রী ভোগান্তি কমবে, এছাড়াও এলাকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এই প্রকল্প, আশাবাদী অর্জুন সিং।
রাজ্যের একাধিক অভিযোগে বিদ্ধ কেন্দ্র। বারবার সংবাদমাধ্যমের সামনে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের ছবিও উঠে এসেছে। বলাই বাহুল্য, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ইস্যুই যখন রাজ্যের শাসকদলের ভোটপ্রচারের প্রধান বিষয়, সেই মুহূর্তেই কেন্দ্রের বিরাট ঘোষণা। তবে কি বাংলায় নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করতেই নয়া চমক বিজেপির? প্রশ্ন ওয়াকিবহল মহলের।
আজ থেকে লোকসভা ভোটের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরে প্রথম সভা করেন তিনি। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে প্রচার শুরু করলেন তিনি। মহুয়াকে কেন লোকসভা থেকে ‘তাড়িয়েছে’ বিজেপি, সেই ব্যাখা দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়ের পরিবারকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে খোঁচা দিলেন মমতা।
জনসভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহুয়াকে জেতাবেন। আপনারা জেতানোর পরেও ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ মহুয়া জোরে জোরে কথা বলত। বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলত। ওকে জেতালে ও যোগ্য জবাব দিতে পারবে। বিজেপির মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দিতে পারবে।’ পাশাপাশি ধুবুলিয়ার সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠ থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মমতা। বলেন, জেতার বিষয়ে নিশ্চিত হলে কেন রাজ্যে ইডি? কেন সিবিআই? কেনই বা ইনকাম ট্যাক্স অফিসাররা?
সূত্রের খবর, ভিন রাজ্যেও প্রচারে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। অসমে দুটি সভা করবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। আগামী ১৭ এবং ১৮ এপ্রিল অসমে দুটি জায়গায় সভা করবেন তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়েই মাথায় চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপালে চারটে সেলাই পড়েছিল। তারপরে বিশ্রামেই ছিলেন তিনি। আজ অর্থাৎ রবিবার থেকে লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমেছেন তিনি। প্রথমেই বেছে নিয়েছেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রকে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কৃষ্ণনগরে সভা করে গিয়েছেন।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল এবারও প্রার্থী করেছে সৌগত রায়কে। চতুর্থবারের জন্য দমদম থেকে সাংসদ হওয়ার লড়াই লড়ছেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। শনিবার সকালে উত্তর দমদমের নিমতা কালচার মোড় থেকে বিরাটি ব্রিজ পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রচার সারেন তিনি। তাঁর সমর্থনে প্রচারে অংশ নেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও উত্তর দমদম পুরসভার পুরপ্রধান বিধান বিশ্বাস।
ধামসা মাদল থেকে ব্যান্ড ও নৃত্যের মাধ্যমে চলে এই প্রচারাভিযান। তৃণমূলের অগণিত কর্মী-সমর্থক এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। নিমতা কালচার মোড় থেকে শুরু করে গোটা এম বি রোড ধরে চলে এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়েই ভোটের আবেদন জানান দমদমের তৃণমূল প্রার্থী।
তৃণমূলের জমানায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন বণ্টন দুর্নীতি সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। আর অভিযোগের তিরে রয়েছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতারা। এ নিয়ে লোকসভা
লোকসভা নির্বাচনে তিনি টিকিট পাননি। অভিমান করেছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে হতাশ করেননি। এবার উপ নির্বাচনে তিনি লড়াই করবেন। বরাহনগর কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আর ভগবানগোলায় উপনির্বাচনের প্রার্থী করা হয়েছে রেহাত হোসেন সরকারকে।
শুক্রবার বিকেলের পর প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হল। বরাহনগর ও ভগবান গোলা দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন। বিজেপি দুটি কেন্দ্রেই প্রার্থী দিয়েছে। এবার তৃণমূলও তাঁদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল। লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি উপ নির্বাচনে বরাহনগর কেন্দ্রেও নজর থাকবে।
অন্য়দিকে বিজেপিতে উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরে উপনির্বাচনের প্রার্থী কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষকে। সেই সঙ্গে ভগবানগোলা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন শ্রী ভাস্কর সরকার।
উল্লেখ্য়, বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় ইস্তফা দেওয়ায় ওই আসনটি শূন্য হয়। সেখানে এবার বিজেপি প্রার্থী করেছে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষকে।
ভোটপ্রচারে বেরিয়ে ক্ষোভের মুখে যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। রোড শো চলাকালীন উপস্থিত মহিলাদের থেকে কোথাও নিকাশি নিয়ে অভিযোগ শুনতে হল, কোথাও আবার রাস্তা কিংবা পানীয় জল নিয়ে ক্ষোভ।
রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে শুক্রবার রোড শো করছিলেন সায়নী। সঙ্গে ছিলেন সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম। তৃণমূল প্রার্থীকে সামনে পেয়ে অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মহিলারা।
উল্লেখ্য, গত ১৫ বছর ধরে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে। বিধায়ক শাসকদলের, পুরসভাও। তারপরেও কেন কাজ হয়নি? কেন ইচ্ছে করে গড়িমসি করা হয়েছে? ২০০৯ থেকেই যাদবপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কোনও তারকাকে প্রার্থী করেছে। কবীর সুমন, সুগত বসু এবং মিমি চক্রবর্তী এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তারকারা জয়ী হওয়ায় কি মাটির সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না। সেই জন্যই কি ন্যূনতম কাজও হয়নি? এমন ঘটনায় তৃণমূলকে পাল্টা জমিদার কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি।
বস্তুত, ভোটের আগে বিক্ষোভে রীতিমতো অস্বস্তিতে শাসকদল। বিরোধীরা ক্ষোভের ফায়দা তুলতে পারে কি না সেটাই এখন দেখার।
ইতিমধ্যে লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। ভোটের আগেই শহর কলকাতায় উদ্ধার বান্ডিল বান্ডিল নোট। আয়কর দফতর সূত্রে খবর, এক ব্যবসায়ীর অফিস থেকে ৫৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ২দিন তল্লাশি অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় এই বিপুল পরিমাণ টাকা। কী কারণে এত টাকা সে তার অফিসে রেখেছিল তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি এই ব্যবসায়ী।
জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ী ছাতু প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক। সে কেন এত টাকা মজুদ রেখেছিল তার কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি ব্যবসায়ী। গোটা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে আয়কর দফতর।
আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আগেই ছিল। সেই বিষয়ে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে অফিসের ২ জায়গা থেকে ৫৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে বিস্ফোরক বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি ইউসুফ পাঠান ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। যদিও ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন আক্রমণের জন্য দিলীপ ঘোষকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূল এবার রেকর্ড গড়ার আশায় বহরমপুরে প্রার্থী করেছে ইউসুফ পাঠানকে। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেন, ইউসুফ পাঠান থাকেন গুজরাতে। একটা শব্দ বোঝেন না, বাংলায় তাঁকে নিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের টিকিটে কেউ দাঁড়াতে চাইছে না। প্রার্থী পাচ্ছে না শাসক দল।
দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন, পুরনোরা রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে তাও কিছু লোককে পাল্টাতে পারেনি, রেখেছে। তাঁদের হোয়াইটওয়াশ করার চেষ্টা হচ্ছে। আর প্রার্থী খুঁজতে খুঁজতে বিহার পার হয়ে গুজরাত চলে গিয়েছে। তৃণমূলের অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে, যার টিকিট কেউ দাঁড়াতে চায় না, তারা জিতবে টা কী করে! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ডায়মন্ড হারবারে হাই প্রোফাইল দলীয় বৈঠক করেছেন। সেখানে একলক্ষের বেশি ভোটে জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ওখানে সবার সব সময় হাই প্রোফাইল থাকে, লো প্রোফাইল হয় না। ওখানে একটা আলাদা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চলে, ওয়েস্ট বেঙ্গল গর্ভমেন্টের থেকে আলাদা।
নাম না করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রকে উনিও আলাদা দেখাতে চান। তিনি বলেন, সরকারের টাকা নেই, ওখানে বিলিয়ে দেয় কী করে? এত খরচা করেছেন। একটাই লোকসভা আছে নাকি? বাকি ৪১ টার কী হয়েছে, কেন সরকার দেখে না। এদিক ওদিক লুটপাট করে সব লোককে দেখাচ্ছেন! দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, ডায়মন্ড হারবারের মানুষের জীবনে কী উন্নতি হয়েছে, সামাজিক কি পরিবর্তন হয়েছে, বড় বড় কথা বলেন।
শান্তনু ঠাকুর, রেখা পাত্রকে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাধা দেওয়া ছাড়া কী করবে তারা? রেখা পাত্রকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছিল, সন্দেশখালি তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। রেখা পাত্রকে বুকে টেনে নিয়েছে। এই ধরনের রাজনীতি এবার বাংলা থেকে বিদায় নেবে, বলেছেন তিনি।
ইডির হাজিরা এড়িয়ে নির্বাচনী প্রচারে মহুয়া মৈত্র। 'বিদেশ মুদ্রা লেনদেন' সংক্রান্ত মামলায় আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সকাল ১১ টার মধ্যে দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই তলবে সাড়া দিলেন না কৃষ্ণনগর তৃণমূল প্রার্থী। বরং নিজের কেন্দ্রেই প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন বলে তদন্তকারী সংস্থাকে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে এদিন শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দান্দিকেও তলব করেছে ইডি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তার ভিত্তিতেই মহুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল ইডি, এমনটাই সূত্র মারফর খবর।
গত কয়েকদিন আগেই কৃষ্ণনগরের বহিস্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। দিল্লির বিশেষ টিম কলকাতায় নেত্রীর বাবার ফ্ল্যাটে দীর্ঘ তল্লাশি চালান। তল্লাশি চলে কৃষ্ণনগরের একাধিক ঠিকানায়। এমনকি নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকেও দীর্ঘ তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন মামলায় এই তল্লাশি অভিযান চলে। যদিও দীর্ঘ র্তল্লাশি অভিযানে খালি হাতে ফিরতে হয় তদন্তকারী সংস্থাকে।
এরপরেই 'বিদেশ মুদ্রা লেনদেন' সংক্রান্ত মামলায় মহুয়া মৈত্রকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়। যদিও ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে তদন্তের মুখোমুখি তৃণমূল নেত্রী হবেন কিনা তা নিয়ে ছিল একাধিক প্রশ্ন। এর আগেও এই মামলায় তাঁকে নোটিশ দেয় ইডি। কিন্তু তদন্তকারী আধিকারিকদের মুখোমুখি হননি। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ইডির হাজিরা এড়ালেন মহুয়া। ভোট প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন বলে তদন্তকারী সংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।