এবারে বাংলাদেশি অভিনেতার সঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন টলিউড অভিনেত্রী সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar)। ওয়েব প্ল্যাটফর্মে আসতে চলেছে আরও একটা বাংলা রহস্য রোমাঞ্চে ভরা সিরিজ। তবে, ভারত নয়, প্রযোজনায় কিন্তু বাংলাদেশ। অর্থাৎ ওপার বাংলার সিরিজে অভিনয় করবেন সোহিনী সরকার। তাঁর বিপরীতে দেখা যাবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভকে। 'কিশমিশ', 'দিলখুশ'-এর মতো রোম্যান্টিক সিনেমার পর একেবারে প্রেম বর্জিত সিরিজ বানাতে চলেছেন পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। ফলে দর্শকদের এক নতুন জুটি উপহার দিতে চলেছে।
জানা গিয়েছে, সিরিজের নাম 'লহু'। তবে এই সিরিজ বাংলাদেশের ওয়েব প্ল্যাটফর্ম 'চরকি'তে দেখা যাবে। আগামী ১৮ নভেম্বর থেকেই শুটিং শুরু হবে। কলকাতা ছাড়াও শিলংয়ের বেশ কিছু জায়গায় শুটিং হবে বলে জানা গিয়েছে। একদিকে যেমন অন্যরকম গল্পে কাজ করতে পেরে সোহিনী বেশ উচ্ছ্বসিত। তেমনি সিরিজে কাজ করতে পেরে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আরিফিন।
মৃণাল সেনের ছবি 'ইন্টারভিউ' দিয়ে অভিনয় জগতে ডেবিউ করেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। তারপর কয়েক দশক অভিনেতা ধারাবাহিকভাবে সিনেমা করেছেন। টলিউড ছবির জগতে নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নবাব নন্দিনী, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদের মতো জনপ্রিয় ছবিও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে। পরিচালকেরা জানতেন, সিনেমা যদি ফ্লপও হয়, রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick) একাই সেই ছবির রেশ ধরে রাখবেন। তবে এবার ছবি ছেড়ে নতুন মাধ্যমে দেখা যাবে বর্ষীয়ান অভিনেতাকে।
বর্তমান দশক ওটিটি, ওয়েব সিরিজের। এবার সেই মাধ্যমেই পদার্পণ করতে চলেছেন রঞ্জিত মল্লিক। হাত মিলিয়েছেন বর্ষীয়ান পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে। এই দুইয়ের যুগলবন্দিতে তৈরী হয়েছে ওয়েব সিরিজ, 'ঘোষ বাবুর রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান'। এই সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রে ঘোষ বাবু। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই চরিত্রে দেখা যাবে রঞ্জিত মল্লিককে। কাজ থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকেই তাঁর জীবন আগের থেকে বদলে যাবে। কিভাবে এই বদলগুলির সঙ্গে মানিয়ে নেবেন, তাঁর জীবনদর্শন সবটাই ফুটে উঠবে এই ওয়েব সিরিজে।
এই সিরিজে অভিনয় করবেন অভিনেত্রী অনুরাধা রায়। তাঁর সঙ্গে দেখা যাবে অদৃজা রায়, আরিয়ান ভৌমিকের মতো অভিনেতাদেরও। আগামী মাসেই নাকি মুক্তি পেতে চলেছে সিরিজটি।
অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়ার (Tamannaah Bhatia) সঙ্গে বিজয় বর্মার প্রেমের গুঞ্জন সারা বলিউডে। শুধু গুঞ্জন নয়, তাঁদের ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু মুহূর্ত পাপারাৎজিদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। যদিও তাঁরা সম্পর্ক নিয়ে সাফ জবাব দেননি। কিন্তু চোখে মুখে প্রেম একেবারে স্পষ্ট। তামান্নাকে আর কিছুদিন পরেই ওটিটির পর্দায় দেখা যাবে বিজয়ের (Vijay Verma) সঙ্গে। সিরিজের নাম 'লাস্ট স্টোরিজ-২', তাই সিনেমায় সাহসী দৃশ্য থাকবে না তা কী হয়! তেমনই চরিত্রে দেখা যাবে প্রেমিক যুগলকে।
সেইরকম দৃশ্যের একটি ভিডিও শেয়ার করে তামান্না একটি বিশেষ বার্তা দিলেন আসন্ন কাজ প্রসঙ্গে। অভিনেত্রী বললেন, 'লাস্ট স্টোরিজ ২ দেখার সময় ঘরে কেউ চলে এলে ঘাবড়ে গিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এর মধ্যে লালসা ছাড়াও আরও অনেক কিছু রয়েছে। ড্রামা রয়েছে, রোম্যান্স রয়েছে,অ্যাকশন রয়েছে, মায়ের ভালোবাসা রয়েছে, ঠাম্মার ভালোবাসা রয়েছে, প্রাক্তনের ভালোবাসা রয়েছে, কাজের লোকের ভালোবাসা রয়েছে।'
প্রসঙ্গত, তামান্নার এত বছরের কেরিয়ার জীবনে তাঁকে খুব বেশি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে দেখা যায়নি। এই প্রথম প্রেমিক বিজয়ের সঙ্গে তিনি সাহসী দৃশ্যে ধরা দেবেন। এই নিয়ে অভিনেত্রী অবশ্য নিজের যুক্তি দিয়েছেন। তবে নেটিজেনরা বলছেন, বিপরীতে প্রেমিক বিজয় থাকাতেই তামান্না তাঁর চারপাশের রক্ষণ ভেঙেছেন অবলীলায়।
অভিনেত্রী সোলাঙ্কি রায়কে (Solanki Roy) নিয়ে এবার বিতর্ক। শ্যুটিংয়ের একেবারে মুখে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের (Rahool Mukherjee) সিরিজ 'কেয়ার অফ চৌধুরী বাড়ি' থেকে নাকি সরে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী। হঠাৎ এই মতবদলের পর সোলাঙ্কির অভিযোগ ছিল পরিচালক নাকি তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। তাই তিনি সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে পরিচালক অভিযোগের আঙুল তুলেছেন অভিনেত্রীর দিকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রাহুল একাধিক কারণে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সোলাঙ্কিকে।
এক সাক্ষাৎকারে রাহুল বলেন, 'সোলাঙ্কি এবং আমি বন্ধু ছিলাম। সিরিজে তাঁকে নেওয়ার জন্য আমি রীতিমত লড়াই করেছি। কিন্তু সে আমার মান রাখেনি। সোলাঙ্কি যা করেছে তা অনৈতিক, অপেশাদার।' রাহুল বলেন, 'সোলাঙ্কি তাঁর টেলিভিশনের কাজ শেষ করে আমাকে জিজ্ঞেস করে সিরিজের কাজ হচ্ছে কিনা। আমি তাঁকে হ্যাঁ বলতে, সেও কাজ করতে চায়। তবে যে পারিশ্রমিকের উল্লেখ করেন তা খুব বেশি ছিল। পরে মধ্যস্থতা করে সেই টাকার অর্থ কিছুটা কমাতে সক্ষম হই। সিরিজে সোলাঙ্কিকে অভিনয় করতে হত মাত্র ১১-১২ দিন। এরপর সোলাঙ্কি লুক টেস্টে আসেন। আমাদের কস্টিউম ডিজাইনারের সঙ্গে শপিংও করতে যান।'
এরপর কী হয়? রাহুল বলেন, সিরিজের অভিনেতা সত্যম চৌধুরীর সঙ্গে কর্মশালায় নাকি সোলাঙ্কি আসেননি। শ্যুটিংয়ের ঠিক ২ দিন আগে নাকি সোলাঙ্কি আবারও বলেন, তাঁর পারিশ্রমিক কম এবং আবারও বড় সংখ্যার টাকা পারিশ্রমিক চান। সোলাঙ্কি অভিযোগ তুলেছিলেন, পরিচালক নাকি তাঁকে প্রযোজনা সংস্থায় আর কাজ দেবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন। এদিকে রাহুলের দাবি, তাঁকে ভুল বুঝেছেন অভিনেত্রী। পরিচালক নাকি অভিনেত্রীকে বলেছেন, আর কখনও তিনি সোলাঙ্কির সঙ্গে কাজ করবেন না। এই তরজার মধ্যে নাকি পরিচালক সোলাঙ্কির বিকল্প ভেবে ফেলেছেন। সিরিজে সোলাঙ্কির চরিত্রটি করবেন অভিনেত্রী সৃজলা গুহ।
টলিউডে নতুন অভিনেত্রীদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্র (Sauraseni Maitra)। মডেলিং করে যেমন প্রশংসা অর্জন করেছেন, অভিনয় করেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। অঞ্জন দত্তের বিপরীতে অভিনয় করেও নিজস্ব পরিচিতি তৈরী করেছেন। টলিউডে সাহসী চরিত্রগুলিতে তাঁকে এতদিন দেখা গিয়েছে। এবার টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও (Bollywood) পদার্পণ করলেন অভিনেত্রী। 'তাজ' (Taj) ওয়েব সিরিজে বিশেষ চরিত্রে দেখা যেতে চলেছে সৌরসেনীকে।
ওটিটিতে এর আগে মুক্তি পেয়েছিল ওয়েব সিরিজ তাজ। নাসিরুদ্দিন শাহ, অদিতি রাও হায়দারীর মতো অভিনেতাদের দেখা গিয়েছিল পর্দায়। দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল মুঘল আমলের রাজ সিংহাসনের লড়াইয়ের রাজনীতি-কূটনীতি। এইবার সেই সিরিজে যুক্ত হলেন অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্র। ইতিমধ্যেই তাঁর চরিত্রের ঝলক প্রকাশ পেয়েছে নেট দুনিয়ায়।
আকবর পুত্র জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মেহের-উন-নিসার চরিত্রে দেখা যাবে সৌরসেনীকে। টিজারের ঝলকে ইতিমধ্যেই তিনি নজর কেড়েছেন। বাদশাহী পোশাকে তিনি একেবারে অনন্যা। এই সিরিজেও সাহসী চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। তাজের আগের সিজনে আনারকলির চরিত্রে অদিতি যতটা নজর কেড়েছিলেন, সিক্যুয়েলে সৌরসেনী ততটা নজর কাড়তে পারেন কি না সেইটাই দেখার। তবে ইতিমধ্যে টিজার দেখে বেশ আশাবাদী দর্শক।
সৌমেন সুরঃ পৃথিবী প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে বিশ্বায়নের হাত ধরে। বাংলাও বিশ্বমুখী। বাঙালিই বা থেমে থাকবে কেন? বাঙালির আজ বং-ট্রেন্ডের হাওয়াতো গায়ে লাগবেই। ম্যাটিনী শো'তে হলে বাঙালির ভেসে যাওয়ার দিন শেষ। একথা মেনে নেওয়াই ভালো। বাংলা সিনেমা দেখা মানে পয়সা নষ্ট। একসময় বাংলা সিনেমা দেখার জন্য টিকিট কাটার লম্বা লাইন চোখে পড়তো। সে অনেককাল আগে। এমনও দিন গিয়েছে সিনেমার কনটেন্ট নিয়ে আলোচনায় একেবারে যুদ্ধং দেহি মনোভাব। কিন্তু বর্তমানে শুনশান আবহাওয়া। ইশ, তুই অমুকের ছবি দেখিস! পথে যেতে যেতে এরকম উড়ো কথায় মনে ভয় এসে যায়। ভয় আসে এই অর্থে, বাংলা ছবি দেখে সমাজদূত হওয়ার। আশা জাগানো প্রতিভাবান ফিল্মমেকার ভাল সুযোগের হাতছানিতে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। তাহলে দর্শকরাই বা কম কিসে! আমরাও turn back করি।
বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকেরই হাতে মোবাইল ফোন। অর্থাৎ পৃথিবীটা তার হাতের মুঠোয়। একটু অন্যভাবে দেখলে দেখা যায়, ওয়ের সিরিজ হোলে মোবাইল হবে উপযোগী। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালির হাতের মুঠোয় পৌছে যাবে সৃষ্টিশীল কাজ ক্ষুদ্র গন্ডী পেরিয়ে। বিপুল সংখ্যক বাঙালির কাছে পৌছে যাবে নানা সৃষ্টি। এই ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ হতে থাকবে সৃষ্টিধরের সৃষ্টিশীল কর্ম, যা এক দেশ থেকে অন্য দেশে পৌছে যাবে অত্যন্ত স্মার্ট পরিবেশনে। দূরে থেকেও বাঙালি হারাবে না তার বাংলাকে, তার গৌরবকে। শুরু হোক নতুন স্টাইল, নতুন ভাবনা, নতুন পথ। বস্তাপচা চেনা ছক বদলাবে ওয়ের সিরিজের হাত ধরে। তথ্যঋণ-শুদ্ধশীল বসু
কোথায় গেলেন চিরঞ্জিত? সিনেমার পর্দায় বহুদিন তাঁকে দেখতে না পেয়ে এমনই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সমসাময়িক সময়েই উত্থান তাঁর। কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে প্রসেনজিতের 'জুবিলী' ওয়েব সিরিজ। নেট দুনিয়া জুড়ে শুধুই বুম্বাদার চর্চা। এর মধ্যে কী হারিয়ে গেলেন চিরঞ্জিত? এমন প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে দর্শকমনে। তবে এবারে শোনা গেল খুশির খবর। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের (Parambrata Chatterjee) পরিচালনায় অভিনয়ে ফিরতে চলেছেন চিরঞ্জিত (Chiranjeet Chakraborty)।
মে মাসেই একটি নতুন সিরিজ পরিচালনা করতে চলেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। শোনা গিয়েছে, সেই সিরিজের মূল চরিত্রেই অভিনয় করার ডাক পেয়েছেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। এর আগেও একসঙ্গে কাজ করেছেন টলিউডের এই দুই তারকা, তবে সহ অভিনেতা হিসেবে। এইবার সেই সমীকরণেই কিছুটা বদল আসবে। এই সিরিজের বিষয় মূলত হরর। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বুদ্ধিদীপ্ত পরিচালক। তাই চিত্রনাট্যের প্রতি আকর্ষিত হয়েই এই কাজ করতে রাজি হয়েছেন চিরঞ্জিত।
সিরিজের শ্যুটিং হতে চলেছে পাহাড়ে। চিরঞ্জিতের পাশাপাশি এই সিরিজে অভিনয়ের প্রস্তাব গিয়েছে, অনিন্দিতা বসু, গৌরব চক্রবর্তী, অর্ণ মুখোপাধ্যায় এবং সুরঙ্গনা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে। যদিও এই নিয়ে এখনও পরিচালক বা প্রযোজনা সংস্থার তরফে কিছু জানানো হয়নি।
দীপিকা দাস: ভ্যাম্পায়ার ও মানুষের প্রেমকাহিনী বলতে প্রথমেই মাথায় আসে হলিউডের 'টোয়ালাইট' (Twilight), 'ভ্যাম্পায়ার ডায়েরিস'-এর কথা। কিন্তু এবারে ভ্যাম্পায়ার ও মানুষের প্রেমকাহিনীকে ভারতীয়করণ করে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে 'টুথ পরী: হোয়েন লাভ বাইটস' (Tooth Pari: When Love Bites) ওয়েব সিরিজ। বলিউডে (Bollywood) এখনও পর্যন্ত হয়তো ভ্যাম্পায়ার নিয়ে তেমনভাবে কাজ করা হয়নি। ফলে এই ওয়েব সিরিজটি একটু অন্য স্বাদের, ফলে দর্শকদের কাছে এটা বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। কল্পবিজ্ঞান, রোমাঞ্চ ও রহস্যে ঠাসা এই সিরিজ যেন এক রূপকথার গল্প। কলকাতার প্রেক্ষাপটে তৈরি করা এই সিরিজ নজর কাড়বে দর্শকদের, বিশেষ করে কলকাতাবাসীর।
প্রতীম দাশগুপ্তের হাত ধরেই ভারতবাসী এবারে বলিউডে একটু ভিন্ন স্বাদের সিরিজ দেখার সুযোগ পেলেন। ছবিতে যেমন বাংলা ভাষার সচরাচর ব্যবহার করা হয়েছে, তেমনি দেখানো হয়েছে, কলকাতার মেট্রো, ভিক্টোরিয়া, আনাচে-কানাচে অন্ধকার গলি, হাওড়া ব্রিজ। আবার সিরিজে দেখা গিয়েছে বাংলার অনেক জনপ্রিয় চেনা মুখ। অনেক বাঙালি অভিনেতা যেমন- অনিন্দিতা বোস, অঞ্জন দত্ত, খরাজ, ভাস্করকে দেখা গিয়েছে। ফলে শহরবাসীরা চুটিয়ে মজা নিয়েছে এই আট পর্বের সিরিজের। সিরিজের যে প্রধান চরিত্র শান্তনু মাহেশ্বরিও কলকাতার ছেলে।
এবারে আসা যাক, সিরিজের গল্পে। ভ্যাম্পায়ার হয়ে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানিয়া মানিকতলা। তাঁকে এখানে রুমি নামে দেখা যায়। শান্তনুকে দেখা যায় এক ক্ষীণ হৃদয়ের, নরম মনের সাধারণ মানুষ ড. বিক্রম রায় নামের চরিত্রে। যিনি একজন ডেন্টাল সার্জেন। এই দু'জনের মধ্যেই হয় কীভাবে ধীরে ধীরে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে ও ভালোবাসার জন্য পরবর্তীতে কী কী করতে রাজি হয়, তা নিয়েই এই সিরিজ। প্রথমত সিরিজে সাধারণ মানুষ ও ভ্যাম্পায়ারদের পৃথকভাবে দেখানো হয়েছে, মাটির উপরের মানুষ ও মাটির নীচের মানুষ হিসাবে দেখানো হয়েছে। মাটির নীচে যারা থাকেন, তাদের কেমন ভাবে জীবন-যাপন করতে হয়।
প্রথম থেকে রুমি ও ড. রয়ের মধ্যে কেমিস্ট্রি ভালোভাবেই দেখানো হয়েছিল। কিন্তু পরে কোথাও যেন গল্প একঘেয়ে লাগছিল। কোনও কোনও জায়গায় গল্পের প্লট অন্য ছবির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা বলেও মনে হয়েছে। যেমন- মেট্রো প্ল্যাটফর্মের থামে হাত দিতেই অন্য দুনিয়ায় যাওয়ার রাস্তা খুলে যাচ্ছে। এমনটা হলিউড ছবি 'হ্যারি পটার'-এও দেখা গিয়েছে। আবার ভ্যাম্পায়রা দিনের আলোয় বেরোতে পারে না, রূপো-রসুনে তাদের অস্বস্তি হয়, এসবই হলিউড ভ্যাম্পায়ার ছবি থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে করা।
সিরিজে সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক, ভালো মনে হলেও, স্টোরি লাইনে তেমন টানটান উত্তেজনা ছিল না। এত ভালো ভালো অভিনেতাদের নেওয়া হলেও তাঁদের দক্ষতাকে ঠিক মতো কাজে লাগানো হয়নি। শান্তনুর অভিনয় ছিল নজরকাড়া, শ্বাশত-তিলোত্তমার অভিনয় তাক লাগিয়েছে। তবে রুমির চরিত্রতে তানিয়ার অভিনয় তেমন আকর্ষণীয় ছিল না। ভ্যাম্পায়ার হিসাবে তিনি নিজেকে আরও ভালোভাবে ফুটিয় তুলতে পারতেন। তবে সবমিলিয়ে অন্য ধরনের স্বাদ পেতে এই সিরিজ দেখাই যায়, ভ্যাম্পায়ারপ্রেমীরা মিস করতে ভুলবেন না। সিরিজের শেষে এটাও নিশ্চিত যে এটাই শেষ পর্ব নয়, আরও সিজন আসতে চলেছে ভবিষ্যতে।
হইচই-'তে (Hoichoi) সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল' ওয়েব সিরিজ। কল্লোল লাহিড়ীর গল্প অবলম্বনে, দেবালয় ভট্টাচার্যের পরিচালনায় এই সিরিজ বর্তমানে আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। সিরিজের পাশাপাশি আলোচনায় এসেছে গানগুলি। 'পাখিদের স্মৃতি', 'দেহতরী', 'আমি একা চিনি'র মতো গানগুলি এখন সংগীত-প্রেমীদের কানে বাজছে। কিন্তু এরই মাঝে আজ সৃষ্টি নয়া বিতর্কের। নেটমাধ্যমে বিস্ফোরক হয়েছেন বিশিষ্ট গায়িকা জয়তী চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল' সিরিজে 'আমি একা চিনি' গানটি গেয়েছিলেন জয়তী। গানটি গেয়ে আপনজনদের বলেছিলেন তাঁর তৃপ্তির কথা। সকলকে বলেছিলেন সিরিজটি দেখতে। কিন্তু এরপরেই আশাহত হন তিনি। সিরিজটির প্রথম সিজন মুক্তি পেতে দেখা যায় 'আমি একা চিনি' গানটি রয়েছে ঠিকই, তবে তা জয়তীর কন্ঠে নয়, গেয়েছেন অন্য এক শিল্পী। এরপরেই তিনি ফেসবুকে নিজের বক্তব্য লেখেন।
জয়তী ফেসবুকে লেখেন, 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল সিরিজে আমার কণ্ঠে একটি গান আছে বলে জানতাম। অনেক আশা নিয়ে দেখতে বসে দেখলাম গানটি আমার কণ্ঠে নেই।' গায়িকা আরও লেখেন, 'বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তিনি আঘাত পেয়েছেন। তাঁর কণ্ঠ বাদ দিয়ে, যার কণ্ঠে এই গানটি রয়েছে সেই গুণী শিল্পীরও অপমান। পছন্দ না হওয়াটা গর্হিত অপরাধ নয় বটেই। কোনও শিল্পীর আশাভঙ্গ হওয়ার দায়ও কোনোদিন কেউ নেয়নি আর নেবেনও না একথাও সত্যি।'
এই বিষয়ে জয়তীর সঙ্গে সিএন ডিজিটালের তরফে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি এই বিষয়ে বেশি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। যদিও তিনি ফেসবুকে সেই পোস্টের একেবারে শেষে নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে লেখেন, 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে আমার কোনও গান নেই। কেউ আমাকে ভুল বুঝবেন না আশা রাখবো।' গায়িকা লিখেছেন সিরিজটি খুব ভালো। সকলকে দেখার অনুরোধও জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে সিএন ডিজিটাল থেকে কথা বলা হয় 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল' ওয়েব সিরিজের পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনি আমাদের জানান, 'পুরো ওয়েব সিরিজ এখনও আসেনি। গানটা যে সিরিজে রাখা হয়নি, তা তিনি জানলেন কী করে! দ্বিতীয় সিজনে যদি গানটি না থাকে তখন তিনি বলতে পারেন গানটি নেই। তিনি জয়তীদির বিরাট ভক্ত। আমি একা চিনি গানটি জয়তীদি দারুন গেয়েছেন।' খুব সম্প্রতি গানটির সিঙ্গল ভিডিও রিলিজ করবে, একথাও পরিচালক জানান সিএন ডিজিটালকে।
সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার শিকার হলেন 'টেলিভিশন ক্যুইন' একতা কাপুর (Ekta Kapoor)। শুক্রবার প্রযোজক-পরিচালক একতা কাপুরের ওয়েব সিরিজ 'এক্স এক্স এক্স'(XXX)-এর বিষয়বস্তুকে তীব্র আপত্তিকর আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দুই বিচারপতি। এই সিরিজে অত্যন্ত আপত্তিকর দৃশ্য দেখানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করে শীর্ষ আদালতে। সম্প্রতি একতা এবং তাঁর মা শোভা কাপুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল বিহারের (Bihar) বেগুরসরাই আদালতের পক্ষ থেকে। এবং সেই মালমার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন 'বালাজি টেলি ফ্লিমস'এর মালকিন তথা জিতেন্দ্র কন্যা একতা কাপুর। সেই মামলার শুনানি হয় ১৪ অক্টোবর, শুক্রবার। আর সেখানেই আদালতের ভর্ৎসনার শিকার হন একতা।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অজয় রস্তোগি এবং সিটি রবিকুমারের বেঞ্চে শুনানি হয় এই মামলার। সেখানে বিচারকদের মন্ত্যব্য, "আপনি দেশের যুব সমাজকে কলুষিত করছেন। এই সিরিজ সকলের জন্য উপলব্ধ। দর্শকদের কী বেছে নিতে বলছেন?" উল্লেখ্য, একতা কাপুরের প্রযোজনা সংস্থার একটি ওয়েব সিরিজ 'এক্স এক্স এক্স' সম্প্রচারিত হয় তাঁরই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম 'অল্ট বালাজি'তে।
আর সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও তাঁদের পরিবার নিয়ে আপত্তিকর কিছু দৃশ্য দেখানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর গরিমা এবং তাঁদের পরিবারের ভাবাবেগে তীব্র আঘাত লেগেছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহালমহলের একাংশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই একতা কাপুর এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
যদিও এবিষয়ে একতা কাপুরের আইনজীবী মুকুল রোহতগি প্রথমে পাটনা হাইকোর্টে এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার জন্য আবেদন জানান। আদালতে তিনি জানিয়েছেন, 'এই গোটা বিষয়টি সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক, তাই দর্শক নিজেদের মতো করেই এই শো দেখবেন কিনা তা বেছে নিতে পারবেন।' তবে শীর্ষ আদালত এবিষয়ে তিরস্কার করে জানিয়েছে, 'সাধারণ মানুষ ন্যায়ের আশায় আদালতে আসেন। এর আগেও এরকম বিষয় নিয়ে শীর্ষ আদালতের কাছে এসেছিলেন একতা কাপুর। কিন্তু প্রতিবার এরকম বরদাস্ত করা হবে না। পরের বার এরকম হলে উপযুক্ত জরিমানা ধার্য করা হবে।'