অর্থের অভাব। মেলেনি সরকারি অ্য়াম্বুলেন্স। অর্থ ও চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে মৃত্য়ু হল এক চা শ্রমিকের। মৃতের নাম সুশীল ওঁরাও (৪৫)। মাদারিহাট ব্লকের ঢেকলা পাড়া চা বাগানে কাজ করতেন। যদিও তালাবন্ধ হয়ে গিয়েছে ওই চা বাগানে। এমনকি মালিক পক্ষ নিজে বাগান ছেড়ে পালিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে অসুস্থ হন তিনি।
অভিযোগ, হাসপাতালে ফোন করলে জানানো হয় অ্যাম্বুলেন্স খারাপ হয়ে রয়েছে। প্রায় দু মাস ধরে চা শ্রমিকদের উপার্জন না থাকায় অর্থকষ্টে ভুগছিলেন সুশীল ওঁরাও। অর্থের অভাবে অন্য গাড়িও জোগাড় করতে পারে নি তাঁর পরিবার। তাই একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় বাড়িতেই মারা যান তিনি।
বীরপাড়া হাসপাতালে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায়নি সেই অ্যাম্বুলেন্স। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে সরকারি পরিষেবা প্রদান করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্য়ায়। সেই সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, বন্ধ চা বাগানে শ্রমিকদের ১৫০০ টাকা করে এই মাস থেকেই অনুদান দিতে। পাশাপাশি ওই শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, চিকিৎসা পরিষেবা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তাঁর এই ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল এক চা শ্রমিকের।
ফের হাতির হানায় মৃত্যু (death)। এবার প্রাণ গেল এক চা বাগান শ্রমিকের। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার মাদারিহাট থানার মুজনাই চা বাগানের। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতার নাম মালো গঞ্জু। তিনি চা বাগানের ৫ নম্বর লাইনের বাসিন্দা। শুক্রবার ওই যুবতি ম্যানেজারের বাংলো থেকে ঘরে ফিরছিলেন। সেই সময় একটি হাতি (elephant) তাঁর উপর আক্রমণ করে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। দেহটি উদ্ধারে গিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বনকর্মীদের। বনদফতরের মাদারিহাট রেঞ্জ (Madarihat Range) সূত্রে জানানো হয়েছে, মৃতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, এলাকায় নিত্যদিন হাতির হানা লেগেই রয়েছে। সন্ধ্যার পর হাতির ভয়ে ঘর থেকে বেরোনো যায়না। হাতির আক্রমণে মাদারিহাটে পরপর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। হাতির হানা বন্ধের জন্য একাধিকবার বলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। কিন্তু এবার পাকাপোক্ত ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন তাঁরা। তবে বনদফতরের দাবি, হাতির হানা রুখতে লাগাতার টহল চলছে তাঁদের পক্ষ থেকে।
শুক্রবারের এই মর্মান্তিক ঘটনার পর চা শ্রমিকরা শনিবার বাগানের কাজ বন্ধ রাখে। এদিন ফ্যাক্টরির সামনে জমায়েত হয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা দাবি রাখেন। তাঁরা জানান, বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাঁদের সমস্ত কাজ থেকে ছুটি দিতে হবে। তা না হলে শ্রমিকদের বাগান কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সঠিক নিরাপত্তার সঙ্গে শ্রমিক মহল্লায় পৌঁছে দিতে হবে।