প্রসূন গুপ্তঃ দল বদল করাটা মহাপাপ নয়। কিন্তু দেখার বিষয় কী হেতু দলটি বদলাচ্ছে ব্যক্তি বিশেষ। ইন্দিরা গান্ধী দুবার দল ভেঙে নতুন দল গড়েছিলেন। প্রথমে নব কংগ্রেস পরে ইন্দিরা কংগ্রেস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা যেখানে কংগ্রেসও সেখানেই প্রমাণিত হয়েছে। দলের সঙ্গে সিম্বলটিও বদলেছিলেন ইন্দিরা। প্রথমে জোড়া বলদ, পরে গাই বাছুর এবং শেষে হাত চিহ্ন। দল ছেড়ে নতুন দল গড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। সারা ভারতে এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে। কমিউনিস্টরা ভারতে বারবার দল ভেঙে দল গড়েছে। একেবারে প্রথম ছিল কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া বা সিপিআই, যার চিহ্ন ছিল কাস্তে ধানের শীষ। পরে ভেঙে হয়েছে সিপিএম, আরএসপি, এসইউসি ইত্যাদি। নকশালদের জন্মও ওই কাস্তে ধানের শীষের থেকেই।
এতো গেলো দল ভেঙে দল গড়া। কিন্তু দল ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার ইতিহাসও কম কিছু নয়। এও চলেছে দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার একটা চল শুরু হয়েছিল ২০১৯ থেকে ২০২১ অবধি। অবশ্য তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুকুল রায়ের হাত ধরে বাম দলগুলি থেকে বহু কর্মী দলে যোগ দেন। আজ তার খেসারত দিতে হচ্ছে পার্টিকে।
আবার তৃণমূল থেকে বহু নেতা দল থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভোটে ফের পায়ে ধরে ফিরেছে দলে, যথা সব্যসাচী দত্ত বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি। টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছিলেন এক সময়ে মমতার ছায়াসঙ্গী সোনালী গুহ। যতদিন তৃণমূলে ছিলেন এবং যত মমতার নাম ছড়িয়েছিলো, তত পথেঘাটে রোয়াবি দেখিয়েছিলেন সোনালী। হাওড়ার পুলিস স্টেশনে ঢুকে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন পুলিস কর্তাকে। দাপট কী প্রচন্ড ছিল তাঁর। পরে টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যান এবং বিজেপি ক্ষমতায় না আসার পর ফের মমতাকে হাতে পায়ে ধরে ফিরতে চান। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য ফেরত নেওয়া হয়নি। এখন ফের তিনি ফিরতে চাইছেন বিজেপিতে। এবারে কিন্তু অধিকাংশ বিজেপি নেতা কর্মীরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন সোনালী নিয়ে। কাজেই? আসলে এই সোনালী গুহরা আদৌ বদলায় কি? সোনালীরা বদলায় না।