প্রসূন গুপ্ত: সোমবার দ্বিতীয় জোট বৈঠক হচ্ছে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে। ২৬টি ছোট বড় দল উপস্থিত হয়েছে এই বৈঠকে। কংগ্রেস (National Congress) বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) গুরুত্ব দিচ্ছে এই সভাতে। এ ছাড়া এই সভাতে উপস্থিত হতে পারবেন না বলে আপ পার্টি থেকে বলা হয়েছিল। মমতা নিজে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং একই সাথে কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মালিকার্জুন খার্গের সাথেও। মমতার বিশেষ অনুরোধে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উপস্থিত হয়েছেন এবং তাঁর যে দাবি ছিল দিল্লির প্রশাসন নিয়ে তারও সমাধান হচ্ছে বলেই সংবাদ।
বেঙ্গালুরুর এই বৈঠকের আয়োজক এবারে সদ্য ক্ষমতা পাওয়া কংগ্রেস দল কাজেই তাদের লক্ষ যে ভাবেই হোক বিজেপি বিরোধীদের একাট্টা করা। অবিশ্যি নূন্যতম মোদী ঘনিষ্ঠদের পাটনা সভা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। মজার বিষয় আপ দল যেমন কংগ্রেস বিরোধিতা করে ক্ষমতায় এসেছে তেমনই সিপিএম বিরোধিতা করে আজ বাংলার মসনদে মমতা কিন্তু এসব অঙ্ক বাদ দিয়ে বিরোধিতার প্রশ্নে আজ সকলেই এক টেবিলে।
সম্প্রতি বাংলায় হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস বাম পর্যদস্তু হয়েছে তৃণমূলের কাছে।ভোট নিয়ে মৃত্যু হয়েছে কয়েক ডজন কর্মীর। রাজ্য কংগ্রেসের আপত্তি তৃণমূলের জোটে থাকা নিয়ে। তাদের বক্তব্য তাদের কর্মীরা খুন হয়েছে তৃণমূল আশ্রিত সমাজবিরোধীদের হাতে।
একই বক্তব্য সিপিএমেরও। এ বিষয় প্রবল কটাক্ষ আসছে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে এই দুই দলের দিকে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটকে আমল দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় কংগ্রেস বা অন্য জোটের দলগুলি। কংগ্রেস এবারে প্রবলভাবে তৃণমূলকে পাশে চাইছে। তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও'ব্রায়ান অবিশ্যি জানিয়েছেন যে, কংগ্রেসের ইদানিং কাজের ধারা খুবই সন্তোষজনক।
এদিকে জোটের অন্যতম উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনা ভেঙে গিয়েছে অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের অন্যদল এনসিপিও সম্প্রতি ভেঙে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়েছে কাজেই এই দুই দল এখন সম্পূর্ণ কংগ্রেস নির্ভর হয়ে পড়েছে।
সোনিয়া গান্ধী সোমবার সন্ধ্যায় সমস্ত দলকে ডিনারে ডেকেছেন, কিন্তু মমতা জানিয়েছেন যে সম্প্রতি তাঁর পায়ের সংকট হওয়াতে হয়তো থাকতে পারবেন না কিন্তু হয়তো সোনিয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হবে বলেই সংবাদ। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে যে মেঘালয়ে যদি কংগ্রেস তাদের সঙ্গে জোট করে তবে এ রাজ্যে তারা কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে রাজি আসন্ন লোকসভায়। নাটকীয় ঘটনার কিছু ঘটতেই পারে।
প্রায় আড়াই দশক পর গান্ধী পরিবারের (Gandhi Family) বাইরে জাতীয় কংগ্রেসের (Indian National Congress) ব্যাটন। সীতারাম কেশরীর পর এবার মল্লিকার্জুন খাড়গে নির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি। শশী থারুরকে বিপুল ভোটে হারিয়ে শতাব্দীপ্রাচীন এই দলের সর্বোচ্চ পদে বসতে চলেছেন রাজ্যসভার সাংসদ খাড়গে (Mallikarjun Kharge)। যদিও তিনি গান্ধী পরিবার অনুমোদিত সভাপতি পদপ্রার্থী, এমনটাই কটাক্ষ বিজেপির। এদিন ভোট গণনার পর জানা গিয়েছে, খাড়গের পক্ষে ভোট পড়েছে ৭৮৯৭টি আর থারুর (Sashi Tharoor) পেয়েছেন ১০৭২টি ভোট। সোমবার দলের সভাপতি নির্বাচনে প্রায় ৯০% ভোটদান ছিল।
এদিন নির্বাচনের ফল যখন স্পষ্ট, তখনই রাহুল গান্ধী জানান, নতুন সভাপতি দলে আমার ভূমিকা ঠিক করে দেবেন। এ ব্যাপারে খাড়গেজি এবং সোনিয়াজি ভালো বলতে পারবেন।
এদিন ভোট গণনা চলাকালীন অনিয়মের অভিযোগ তোলেন কংগ্রেসের তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভোট গণনা শুরু হয়ে বেলা ১টা নাগাদ শেষ হয়। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে একাধিক ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখেছে জাতীয় রাজনীতি। ২০১৯ লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর সভাপতি পদ ছাড়েন রাহুল গান্ধী। অন্তর্বর্তী সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু ২০২৪-র লোকসভা ভোট এবং রাজ্য বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে পূর্ণ সময়ের সভাপতি বাছতে এই নির্বাচন।