প্রায় ৮ ঘণ্টা পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দিল্লির ইডি দফতর থেকে বেরোলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব। বুধবার সকাল ১১টায় গরু পাচার মামলায় তলব করা হয়েছিল তাঁকে।
হাসিমুখেই রাজধানীর প্রবর্তন ভবন থেকে বেরোতে দেখা যায় দেবকে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, 'আমি হাসতে হাসতে গেছি, হাসতে হাসতে বেরোলাম। আমি একজন আইন মেনে চলা নাগরিক। যতবার ডাকবে ততবার আসবো। যত রকম ভাবে পারব সহযোগিতা করবো।' যদিও কোন মামলায় তিনি এদিন ইডির মুখোমুখি হলেন? সিএন-এর করা এই প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে গেলেন।
দিল্লিতে ইডির দফতরে ঢোকার আগেও তিনি বলেছিলেন, আমি কোনও চুরি করিনি, তাই ভয় পাইনা। ইডি যতবার তলব করবে ততবার আসব। তবে যদি শ্যুটিংয়ে বড় কিছু কাজ থাকে তাহলেই এই না আসার কথা জানাব। অর্থাৎ ইডির সঙ্গে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন অভিনেতা দেব।
এর আগে ২০২২-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি, গরুপাচার মামলায় দেবকে নিজাম প্যালেসে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কয়েক মাসের ব্যবধানে ২২ জুন এই মামলাতেই দেবকে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর প্রায় দেড় বছর পর ফের দেবকে তলব করল তারা।
চলতি বছরের শুরুর দিকেই মাওবাদী নেতা সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোরদাকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। জানুয়ারির ১১ তারিখ তাকে পাকড়াও করেছিলেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। এবার সেই মাও নেতাকে জেরা করে আরও একজনের সন্ধান পেল পুলিস। দিন কয়েক আগেই মাওবাদী নেতা কিশোরদাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল কলকাতা পুলিস।
তাকে জেরা করে আরও তথ্যতালাশ শুরু হয়। উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই এবার সঞ্জয় মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
মঙ্গলবার রাতে কলকাতা পুলিসের এসটিএফ-এর অফিসাররা এক বিশেষ অভিযান চালান নরেন্দ্রপুর এলাকায়। স্পেশাল টাক্স ফোর্সের গোয়েন্দাদের অভিযানেই গতরাতে নরেন্দ্রপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তিকে। বছর তেতাল্লিশের ওই ব্যক্তির বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানা এলাকার চণ্ডীপুর গ্রামে। মাওবাদী যোগ সন্দেহে গ্রেফতার ওই ব্যক্তিকে বুধবার আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় পুলিস। বিচারক ওই ধৃতের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিস সূত্রে খবর, জানুয়ারিতে গ্রেফতার হওয়া মাওবাদী নেতা সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোরদার বয়ান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নরেন্দ্রপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার এই ব্যক্তিকে জেরা করে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন পুলিসের তদন্তকারী অফিসাররা। তবে একেবারে শহর কলকাতার নাকের ডগাতেই এই মাওবাদী-যোগ সন্দেহে গ্রেফতারি নিয়ে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। গোটা ঘটনার আরও বিশদে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিস।
পুলিসের তলবে যাদবপুর থানায় গেলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গবেষণারত পড়ুয়া অরিত্র মজুমদার। মঙ্গলবার থানায় ঢোকার আগে বেশ হাসিখুশি দেখায় তাঁকে। সকালেই আত্মসমর্থনে লম্বা ফেসবুক পোস্ট দিয়ে জানান, তিনি সদ্য ট্রেকিং করে ফিরেছেন। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে তিনি ক্লান্ত। দুদিন পরে বিশ্ববিদ্যালয় যাবেন। কিন্তু তার আগেই তাঁকে ডেকে পাঠাল পুলিস। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটিও বুধবার অরিত্রকে ডেকে পাঠিয়েছে।
অন্যদিকে যাদবপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আরও এক ছাত্রকে ডেকে পাঠায় যাদবপুর থানার পুলিস। বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়াকেও মঙ্গলবার থানায় তলব করা হয়েছে। জানা গিয়েছে তাঁর নাম রুদ্র।
জিজ্ঞেসসাবাদের কারণ দর্শিয়ে এবার অভিষেককে চিঠি লিখল ইডি। সূত্রের খবর, অভিষেককে আজ অর্থাৎ সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের কারণ দর্শিয়ে ১৫ পাতার একটি চিঠি লেখেন ইডি। সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে তাঁকে তলব করেছিল ইডি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই তলবের পরিপ্রেক্ষিতে ইডিকে একটি চিঠি লিখে জানিয়েছিল, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কেন? কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় সে সম্পূর্ণ উত্তর দিয়েছে।
সূত্রের খবর, এছাড়া আরও বেশ কিছু নথির জন্য তাঁকে বলা হয় ইডির তরফে। এই নথিগুলি উদ্ধারে বেশ কিছু সময় লাগবে, ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না বলে জানান তিনি। এরপর আজ অর্থাৎ সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১৫ পাতার চিঠি দিয়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের কারণ জানালো ইডি।
সূত্রের খবর, ইডির পাঠানো চিঠিতে কিছুটা বক্তব্য এমন যে, শুধু কুন্তল সংক্রান্ত বিষয় নয় বা কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত বিষয় নয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করা হবে নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় নিয়েও। প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি কোম্পানি, যেখানে ডিরেক্টর হিসেবে ছিলেন কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনও তথ্য মিলেছে কিনা যে বিষয়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসা করা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও বিরোধীদের দাবি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে কালীঘাটের কাকু একটি কান। আসল মাথা অভিষেকই।
মঙ্গলবার আদালতের (court) নির্দেশে অনুব্রত মণ্ডলের স্বাস্থ্যপরীক্ষা (health check up) করা হয়। আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে (Alipur Command Hospital) রুটিন মেডিক্যাল চেকআপের পর তৃণমূল নেতাকে আনা হয় নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace)। সূত্রের খূবর, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর অনুব্রত মণ্ডলকে অভিনব কায়দায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। জানা গেছে, গরু পাচার মামলায় ৯৬ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে জেরা।
গরু পাচার মামলায় সিবিআই-এর হাতে এল এবার কল লিস্ট। এনামূল এবং লতিফের সঙ্গে ফোনে কথা অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষ্মী সায়গল হোসেনের। ১৬ বার ফোনে কথা হয় বলে সূত্রের খবর। গরু পাচারে টাকার লেনদেন নিয়ে কথা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিনিধি হয়ে এই ফোন আলাপ বলে অনুমান করছে সিবিআই।
এদিন সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদে অসহযোগিতা করছেন অনুব্রত মণ্ডল বলে জানা গেছে। সিবিআই সূত্রে খবর, জেরায় কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, সায়গলের সঙ্গে এনামূলের যোগাযোগের জন্য কে নির্দেশ দেন, জানতে চায় সিবিআই। উত্তরে অনুব্রত জানান, তিনি এই ধরনের কোনও নির্দেশ দেননি।
সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, সায়গল এনামূলের থেকে যে টাকা নিয়েছিল, ২০১৫ সাল থেকে তারপরই সায়গলের সম্পত্তি বাড়তে থাকে। সেই বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে প্রশ্ন করা হলে অনুব্রতর দাবি, সায়গল তাঁর দেহরক্ষী ছিল। সম্পত্তি বৃদ্ধির বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। সায়গল হোসেন শুধুমাত্র তার দেহরক্ষী ছিলেন, এর থেকে বেশি কিছু নয় বলে দাবি তাঁর।
সিবিআই প্রশ্ন করে, এনামূল বা লতিফের সঙ্গে আপনার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল? অনুব্রত জানান সিবিআইকে, তাঁর সঙ্গে এদের কারও যোগাযোগ ছিল না। লতিফকে চিনতে অস্বীকার করেন অনুব্রত।
হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে যাওয়া-আসার পথে এদিন প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি অনুব্রত মণ্ডল।
সিবিআই দফতরে অনুব্রত মণ্ডলের হাজিরা এড়ানোর পরেই আরও তত্পর সিবিআই(CBI)। বুধবার গভীর রাতে(night) উচ্চপদস্থ সিবিআই আধিকারিকদের একটি দল বোলপুর পৌঁছয়। একাধিকবার হাজিরা এড়ানোয় পরবর্তী পদক্ষেপ (next step)ঠিক করতে নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক সারেন তাঁরা । সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার তাঁরা অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি(house) যেতে পারেন। সূত্রের খবর, মোট ৫টি গাড়িতে(car) সিবিআই আধিকারিকরা বুধবার রাতে বোলপুরে এসে পৌঁছন৷ এর মধ্যে তিনটি গাড়ি কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে ও দু’টি গাড়ি আসানসোলের সিবিআই দফতর থেকে এসেছে । বোলপুরের কেন্দ্রীয় সরকারের গেস্ট হাউস(guest house) রতনকুঠিতে উঠেছেন সিবিআই কর্তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে(central force) সঙ্গে নিয়ে এসেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। জানা গেছে প্রায় ৩০ জনের বেশি সিবিআই কর্তারা এসেছেন বোলপুরে।
গরু পাচার মামলায় নতুন করে তল্লাশির সম্ভাবনা উছঠে আসছে। যে গেস্ট হাউসে সিবিআই আধিকারিকরা আছেন সেখানে এক ব্যাঙ্ক কর্মীকে ডাকা হয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বোলপুর থেকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযানে বেরোবেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, বুধবার গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে তলব করা হলেও দশম বারের জন্য তিনি এই হাজিরা এড়িয়ে যান। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি পৌঁছননি। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সিবিআইয়ের কাছে ১৪ দিনের সময়ও চেয়ে নেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি সূত্রের খবর, যে চিকিৎসা করাতে তিনি দক্ষিণ ভারতে যেতে পারেন।
অন্যদিকে , অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল টিম পাঠানোয় ক্ষুব্ধ অ্যা সোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস চিকিৎসক সংগঠন। সংগঠনের তরফে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই চিঠিতে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মুখ্য সচিব ছাড়াও,এই চিঠিটি স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।