এনআরএস কাণ্ডের ছায়া এবার শিলিগুড়িতে। ২০১৯ সালে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে ১৬টি কুকুরছানাকে নৃশংস হত্যায় নাম জড়িয়েছিল দুই নার্সিং ছাত্রীর। সেই ঘটনা নিয়ে হইচই কম হয়নি। প্রায় বছর তিনেক পর আবারও একই ঘটনার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শনিবার রাতে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৮নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লিতে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ১৪টি কুকুরছানাকে ‘খুন’ করেছে দুষ্কৃতিরা। কে বা কারা এই কাজ করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
জানা গিয়েছে, সুভাষপল্লিতে সম্প্রতি একটি পথকুকুর ১৫টি সন্তানের জন্ম দেয়। স্থানীয় বেশ কয়েকজন তাদের দেখভাল করতেন। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিল তারা। রাতের দিকে একের পর এক ১০টি পথকুকুরের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তার রেশ কাটতে না কাটতেই একই এলাকা থেকে আরও একাধিক কুকুর ছানার দেহ উদ্ধার হয়।
স্থানীয়রাই শিলিগুড়ি থানায় খবর দেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পথে নামে পশু প্রেমী সংগঠন। পুলিস দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। কে বা কারা অমানবিক কাজ করল, তা জানার চেষ্টা চলছে।
পায়ের দগদগে ঘায়ে এক ফোঁটা ওষুধও পড়েনি। ক্ষতয় মলম বলতে কলের ঠাণ্ডা জল। কাতরাতে কাতরাতে হাসপাতালের (Hospital) বাইরেই প্রায় অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তবু হুঁশ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ফিরেও তাকাচ্ছেন না কোনও ডাক্তার বা নার্স। কেউ এগিয়েও এল না শুশ্রুষার জন্য? চরম অমানবিকতার ছবি নদিয়ার তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে। অভিযোগ, ৪ দিন আগে নদিয়ার (Nadia) নাজিরপুর হাসপাতাল থেকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে রেফার করা হয় ওই ব্যক্তিকে। তবু হাসপাতালের ভিতরে একটু ঠাঁই মিলল না। গত ৩দিন ধরে হাসপাতালের বাইরেই ঠাঁই হয়েছে তাঁর।
বিভিন্ন সভা, মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর গর্বের বিষয় তাঁর সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির চিকিৎসা পরিষেবা। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে কি তা হচ্ছে? মাত্র এক মাস আগেই হুগলির চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালও সাক্ষী ছিল এই নির্মমতার। মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা ঘা নিয়ে রাস্তায় পরে থাকলেও এগিয়ে যায়নি হাসপাতালের কেউ। কোন অন্ধকার গ্রাস করছে রাজ্যকে? মানুষ হয়ে মানবিক হওয়া যাচ্ছে না? হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না?
আবারও অমানবিকতার চিত্র ধরা পড়ল! এবার ঘটনাস্থল ওড়িশা (Odisha)। জানা গিয়েছে, অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিকিৎসায় সাড়া না দেওয়ায় হাসপাতাল (Hospital) থেকে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলা হয়। তিনি অটোয় করে স্ত্রীকে নিয়ে ফেরার পথে স্ত্রীয়ের মৃত্যু হয়। মহিলার মৃত্যুর পরই অটোচালক জানিয়ে দেন, তিনি আর যেতে পারবেন না। এরপর উপায় না দেখেই নিজেই স্ত্রীর দেহ কাঁধে তুলে নেন। আর ৮০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি পৌঁছন কোরাপুটের সামুলু পাঙ্গি।
ওড়িশার কোরাপুটের ৩৫ বছর বয়সী সামুলু পাঙ্গি। তাঁর অসুস্থ স্ত্রী গুরুকে সম্প্রতি বিশাখাপত্তনমের একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু চিকিৎসায় কোনওরকম সাড়া না দেখায় চিকিৎসকরা তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ১০০ কিলোমিটার দূরে। তাই একটি অটো ভাড়া করেছিলেন সামুলু।
অটোতে করে গ্রামে ফেরার সময় সামুলুর ৩০ বছর বয়সী স্ত্রী মারা যান। অটো চালক তখন বাকি পথ তাঁদের নিয়ে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন। ওই নির্জন রাস্তায় তাঁদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। অনেক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনও গাড়ি না পেয়ে নিজেই স্ত্রীর মরদেহ কাঁধে তুলে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন। বাড়ি পৌঁছতে আর মাত্র বাকি ছিল ২০ কিলোমিটার। পুলিস খবর পেয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেয়।