ময়ূরকণ্ঠী নীল কিংবা রানি রঙের সোনালি ছোঁয়া। আঁচল বেয়ে নেমে এসেছে রঙিন ঝুমকো, সিল্কের সুতোর বুনোন, জরির ফুল-- এককালে এসবের চাহিদা তুঙ্গে। এখন কমছে চাহিদা, ধুঁকছে জরি শিল্প। হাওড়ার ধুলাগড়ে এক সময় ঘরে ঘরে জরির কাজ হত। রমরমিয়ে চলছিল ব্যবসা, সংসারের হালও ফিরেছিল। কিন্তু সেই জরি ওস্তাদরা হতাশায় ভুগছেন। যে শিল্পে নিজের হাতে গড়ে পিঠে তুলেছিল, সেই শিল্পের আলো একটু একটু করে নিভছে।
২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় মহিলাদের স্বনির্ভর করতে উদ্যোগ নিয়েছিল। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনও করেছিলেন। সেমত, ২০১৩ সালে হাওড়ায় জরি শিল্পীদের অগ্রগতির জন্য ধুলাগড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জরি হাব তৈরী করে উদ্বোধন করেছিলেন। কথা ছিল, এখানে যেমন ভিন রাজ্যের ক্রেতারা আসবেন, তেমনই কারিগর-ওস্তাগরদের স্টল থাকবে। বড়বাজারের বিকল্প হয়ে উঠবে এই হাব। কিন্তু এখনও তা খাঁ খাঁ করছে। বেশির ভাগ জরি শিল্পীরা কাজ ছেড়ে অন্য কোন কাজে যুক্ত হয়েছেন। তাদের আশা মুখ্যমন্ত্রী যদি একটু জরি শিল্পীদের দিকে নজর দেন, তাহলে হয়ত ফের আগের মত কাজ পাওয়া মিলছে, দুটো পয়সার মুখ দেখতে পারবেন।
পুজো ও বিয়ের মরসুমে আগে এই সময়ে ওঁদের নিঃশ্বাস ফেলার সময় থাকে না। কিন্তু এখন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন হাওড়ার জরি শিল্পের কারিগর-ওস্তাগররা! এই অবস্থায় এখন আশার আলো তেমন চোখে পড়ছে না। অগত্যা শুধুই হা-পিত্যেশ অপেক্ষা।
"শিল্প চাই, শিল্প চাই" বর্তমানে হাহাকার রব পশ্চিমবঙ্গে। নবান্নের কাছেই আছে শিল্পের (industry) হাতছানি। আছে "কৃতী"। তবে এই কৃতী মানুষ নয়, কৃতী যন্ত্র মানব বা রোবট। কৃতির হাত ধরে শিল্প আসতে পারে বাংলায় (bengal)। আপাতত এমনই বার্তাই দিচ্ছে কৃতীর প্রস্তুতকারক। ভাবছেন কীভাবে?
প্রস্তুতকারকের মতে, কৃতী করতে পারে ডাক্তারদের সাহায্য। কোভিড মহামারির (covid-19) মুহূর্তে রোগীদের কাছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পৌঁছে দিতে ডাক্তারদের সহযোগী হিসাবে কৃতী কাজ করতে পারে। এছাড়াও, কৃতীকে দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতীদের হামলার কাজ-সহ এডুকেশনাল বেশ কিছু কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। সেই বার্তা দিচ্ছে কৃতীর প্রস্তুতকারক অতনু ঘোষ।
কিন্তু কৃতীর ডাকে সাড়া দিচ্ছে না কেউ। তাই কৃতী সরাসরি নবান্নের পড়শি হওয়ার সুযোগে নবান্নকেই হাতছানি দিয়ে ডাকছে। যদি তাকে সাহায্য করে বাংলার নাম উজ্জ্বল করবে বিশ্বের দরবারে। পাশাপাশি আমাদের তরুণ প্রজন্ম আগামীদিনে কৃতীর সঙ্গে কাজ করে বাংলাকে বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি দিতে পারবে। এমনটাই আশা করা যায়।