রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের দামামা ইতিমধ্যেই বেজেছে। লাগু হয়েছে আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধিও। রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীদের তাই বাকসংযম, ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে বিরত থাকা, ভাষণে ভুয়ো তথ্য পরিবেশন না করা, ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার না করা, নারীর সম্মান-মর্যাদা বজায় রাখার মতো নানাবিধ নির্দেশিকা কঠোরভাবে পালনের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। আর এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন তাপপ্রবাহকে ঘিরে একাধিক সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের।
বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বৈশাখ এবং জ্যৈষ্ঠ মিলিয়ে গ্রীষ্মকাল। নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ৭ দফার ভোট নির্ঘন্ট অনুযায়ী, আগামী ১৯ শে এপ্রিল রাজ্যে প্রথম দফার ভোট, চলবে ১ লা জুন পর্যন্ত। গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে যাতে ভোটারদের প্রাণ ওষ্ঠাগত না হয় তার জন্য নেওয়া হল একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। কী আছে সেই নির্দেশিকায়?
১) ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের মাথার উপরে ত্রিপল অথবা শেডের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২) দুপুর ১২ টা- দুপুর ৩ টে পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রের বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে।
৩) বেশি করে জলপান।
৪) জামা-কাপড় থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া এমনকি ছাতা বা টুপি ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশিকায়। প্রার্থীদের জন্যও রয়েছে একগুচ্ছ উপদেশ।
অতীতে দীর্ঘক্ষণ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার মতো একাধিক উদাহরণ রয়েছে এ রাজ্যে। এবার তাই আগেভাগেই সতর্কতা অবলম্বনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে এই ব্যবস্থাপনা পালনের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। গত পুর নির্বাচনেও কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের লাইনে অসুস্থ হয়ে লক্ষ্মী সাহা নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর সামনে এসেছিলো। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই আগাম সতর্কতা নির্বাচন কমিশনের।
১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে CBSE বোর্ডের পরীক্ষা। আর সেই দিনই নির্দেশিকা দিয়ে পরীক্ষার্থীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন। বোর্ড পরীক্ষায় সিলেবাসের বাইরের প্রশ্ন এলে কী করণীয়? প্রশ্নপত্র ভুল থাকলে কোথায় জানাবে পড়ুয়ারা? দশম ও দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষার মধ্যেই এই নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করল CBSE।
এই ধরনের পরিস্থিতিতে সবার আগে বিষয়টি পরিদর্শকের নজরে আনতে বলেছে কেন্দ্রীয় বোর্ড। পাশাপাশি, পরিদর্শকদেরও বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে ইন্সট্রাকটারদের রিভিউ রিপোর্ট-সহ প্রশ্নপত্র কেন্দ্রীয় বোর্ডে পাঠাতে হবে। পরীক্ষার দিনেই এই রিভিউ রিপোর্টটি তৈরি করতে হবে তাঁদের। পরীক্ষার শেষের পরে এই রিপোর্ট পাঠালে তা গ্রহণ করবে না কেন্দ্রীয় বোর্ড।
প্রসঙ্গত, ওই রিপোর্টে প্রশ্নপত্রে কী ধরনের ভুল রয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে হবে। কেন কোনও প্রশ্নকে পাঠ্যসূচির বাইরে বলে মনে হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দেবেন ইন্সট্রাকটার। রিপোর্ট বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে CBSE। এই নির্দেশিকার ফলে পরীক্ষার্থীদের মনবল বাড়বে বলেই মনে করছে শিক্ষা মহল।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার সেলফি পয়েন্ট তৈরি করার নির্দেশ দিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি। ইউজিসির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রের থ্রিডি নকশা মেনে তৈরি করতে হবে সেলফি পয়েন্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপালদের এই নির্দেশিকা দিয়েছেন ইউজিসি সচিব মণীশ জোশী। শুক্রবার এই নির্দেশিকা জারি করেছে। এর পিছনে ইউজিসির যুক্তি, সেলফি পয়েন্ট ক্যাম্পাসে ভেদাভেদ বন্ধ করতে সাহায্য় করবে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির মাহাত্ম্য তুলে ধরতে সাহায্য় করবে।
কিন্তু প্রশ্ন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের কোথায় হবে সেলফি পয়েন্ট? যদিও নির্দেশিকায় থ্রিডি নকশার মাধ্যমে তা বলে দেওয়া হয়েছে। সেই মতোই সেলফি পয়েন্ট তৈরি করতে হবে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। কোনও কোনও সূত্র মারফত খবর, সেলফি জোনের পটভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি রাখতে বলা হয়েছে। তবে তার উল্লেখ নির্দেশিকায় কোথাও নেই।
আর ইউজিসির এই নির্দেশ সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের। এমনকি মোদীর প্রচারের ক্ষেত্রে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এক্ষেত্রে ইউজিসির মতো সংস্থাকে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির।
শুধু তাই নয়, দেশের তরুণ সমাজকে নিশানা করতেও এহেন কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রাজনৈতিকমহলের একাংশ। যদিও এই বিষয়ে ইউনির্ভাসিটি গ্রান্ট কমিশন অর্থাৎ ইউজিসির তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে যেভাবে বিতর্ক যেভাবে মাথা চাড়া দিচ্ছে তাতে এহেন নির্দেশ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত সরকার নেয় সেদিকেই নজর সবার।
পড়ুয়ার জীবনের বিনিময় অবশেষে টনক নড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। একাধিক নির্দেশ জারি করলেন রেজিস্ট্রর স্নেহমঞ্জু বসু। সূত্রের খবর, রাত ৮টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত কেউ যদি ক্যাম্পাসে ঢুকতে চায় তাহলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া পরিচয় পত্র দেখাতে হবে। যদি সে পরিচয় পত্র দেখাতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাকে জানাতে হবে কার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। কি কারণে সে দেখা করতে চায়। গেটে রাখা রেজিস্টার বুকে নাম ও ফোন নম্বর নথিভুক্ত করতে হবে।
দু চাকা ও চার চাকার গাড়ি ভিতরে প্রবেশ করলে তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার থাকতে হবে। যে গাড়িতে স্টিকার থাকবে না তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এটা জানাতে হবে। ড্রাইভারের পরিচয় পত্র দেখাতে হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে মাদক ও মদ নিয়ে প্রবেশ কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। যদি কেউ মাদক ও মদের সঙ্গে ধরা পরে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুধু গেটেই সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জানালেন রেজিস্ট্রার। আপাতত নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হস্টেলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসবে কবে। এখনও স্পষ্ট জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।