এক ব্রাজিলিওর পায়ে স্বস্তি পেলেন এক স্প্যানিশ। শনিবার যুবভারতীতে আইএসএল-এর ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল ইস্টবেঙ্গল। এই প্রথম তাঁরা হারাল হায়দরাবাদ এফসি-কে। ম্যাচের ফল ২-১। জোড়া গোলের নায়ক ক্লেটন সিলভা।
এদিন আইএসএল-এর দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছিল লাল হলুদ , প্রথম ম্যাচে জামশেদপুরের সঙ্গে ড্র। এই অবস্থায় নিজেদের ডিফেন্সের ভুলে গোল খেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল , ম্যাচের ৮ মিনিটে হায়দ্রাবাদকে এগিয়ে দেন হিতেশ শর্মা। ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। গোলদাতা ক্লেটন।
এরপর ৯৩ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া ক্লেটনের ফ্রিকিক থেকে এই আইএসএল-এ প্রথম ৩ পয়েন্ট পেল ইস্টবেঙ্গল। মাঝের সময়টুকু শুধু ‘ওঠা আর নামা’ আর ‘বিরক্তিকর’ ফুটবলের নমুনা রাখল দুই দল।ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্স।
সুযোগ এসেছিল একগুচ্ছ। কিন্তু গোল হল না। ফলে ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারিয়ে এই মরশুমে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের অভিযান শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। জামশেদপুরকে অচেনা শক্র বলেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। কিন্তু যুবভারতীতে দেখে মনে হল এ যেন অচেনা ইস্টবেঙ্গল।
তাই ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল কোচ জানালেন, এখনও দল তৈরি নয়। আরও উন্নতি চান কুয়াদ্রাত। তবে কী ভাবে, তা স্পষ্ট করতে পারলেন না। শুধু এইটুকু দাবি করলেন, আগামী দিনে এই দলই জয়ের রাস্তায় ফিরবে। তবে হতাশ পরপর গোলের সুযোগ নষ্ঠের জন্য।
লাল-হলুদ সমর্থকদের আশা ছিল প্রথম ম্যাচ থেকেই এবার আইএসএল মশাল জ্বলবে। কিন্তু সোমবারের যুবভারতীতে তা হল না। অনেকেই মনে করছিলেন, গত তিন মরশুমের পর এবার হয়তো নতুন কিছু পাওয়া যাবে। কিন্তু এবার সেই ছবির পুনরাবৃত্তিই হল।
সোম সন্ধ্যায় যুবভারতী থেকে এই মরশুমের ইন্ডিয়ান সুপার লিগের অভিযান শুরু করছে ইস্টবেঙ্গল। একে দলের মধ্যে সমস্যা। অন্যদিকে পড়শি জামশেদপুর সম্পর্কে কোনও তথ্য না থাকা, এই দুটো বিষয় মাঠে নামার আগে ভাবচ্ছে লাল-হলুদ কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাতকে। তবুও, তিনি আশাবাদী প্রথম ম্যাচ থেকে তাঁর দল তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়বেন।
গত তিন মরশুমে ট্রফি খরার পাশাপাশি আইএসএলে হতাশজনক পারফরম্যান্স ইস্টবেঙ্গলের। ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গল কোচ জানিয়েছেন, এটা ঠিক যে তাঁদের কাছে জামশেদপুর সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য নেই। তবে তাঁরা তিন পয়েন্টের জন্যই মাঠে নামবেন। কারণ, এবার প্রথম ম্যাচ জিততেই হবে ইস্টবেঙ্গলকে।
এই ম্যাচে কম্বিনেশন বদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। কারণ মরশুমের শুরুতেই এক বিদেশি ছিটকে গিয়েছেন। আর এক ডিফেন্ডার রয়েছেন ভারতীয় দল। তাই জামশেদপুর ম্যাচে বেশ কিছু বদলের কথাও ভাবছেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ।
সাত বছর পর আবার ইস্টবেঙ্গলে ফিরেছেন হরমনজ্যোত খাবরা। এবার তিনি অধিনায়ক। তাঁর মতে, আইএসএলের প্রথম ম্যাচে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সমর্থকদের জন্য এই ম্যাচ তাঁরা জিততে চান। এই মাঠেই গত শনিবার পঞ্জাবকে তিন-এক গোলে হারিয়ে আইএসএল শুরু করেছে মোহনবাগান।
দশম আইএসএল-এর (Indian Super League) আগে নতুন রূপে ইস্টবেঙ্গল। নয়া জার্সি প্রকাশ্যে আনল লাল-হলুদ শিবির। পুরনো রং, নতুন নকশায় তৈরি হল ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) আইএসএল-এর জার্সি।
সম্প্রতি, ইস্টবেঙ্গলের তরফে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। ওই ভিডিওর মাধ্যমে নতুন জার্সি প্রকাশ্যে এনেছে লাল-হলুদ। যেখানে, দেখা গেল আলো-আঁধারিতে নতুন জার্সির যেন আগুনের মতো তেজ। নতুনত্ব কী রয়েছে জার্সিতে? দেখা গেল, রং একই আছে, ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। হাতের অংশে দু’রকম রং-ই ব্যবহার করা হয়েছে। জার্সির দু’পাশের নকশাতেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। নতুন স্পনসর ‘ব্যাটারি’র নাম লেখা থাকছে। জার্সির পিছনে স্পনসর হিসেবে থাকছে ইমামির নাম।
ঘোষণা হল আইএসএলের প্রথম পর্বের সূচি। লক্ষ্মীপুজোর দিন মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। ২৮ অক্টোবর আইএসএলের প্রথম লেগের ডার্বি। এদিন বিশ্বকাপে ইডেন গার্ডেন্সেও ম্যাচ আছে। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে নামবে বাংলাদেশ। যুবভারতীতে রাত ৮টা থেকে শুরু হবে কলকাতা ডার্বির এই হাইভোল্টেজ ম্যাচ।
আইএসএলে ২৩ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচ খেলবে মোহনবাগাান। এবার আইএসএলে অভিষেক হয়েছে পঞ্জাব এফসি। তাঁদের বিরুদ্ধেই নামবে মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে। ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁদের প্রথম ম্যাচ।
আইএসএলে মোহনবাগানের সূচি
১. মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস বনাম পঞ্জাব এফসি – ২৩ সেপ্টেম্বর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
২. মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস বনাম বেঙ্গালুরু এফসি – ২৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৩. মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস বনাম চেন্নায়িন এফসি – ৭ অক্টোবর (শনিবার), জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম, সময় – রাত – ৮।
৪. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম ইস্টবেঙ্গল এফসি – ২৮ অক্টোবর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৫. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম জামশেদপুর এফসি – ১ নভেম্বর (বুধবার), জেআরডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স, সময় – রাত – ৮।
৬. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম হায়দরাবাদ এফসি – ২ ডিসেম্বর (শনিবার), বালাযোগী অ্যাথলেটিক স্টেডিয়াম, সময় – রাত – ৮।
৭. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম ওড়িশা এফসি – ৬ ডিসেম্বর (বুধবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৮. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি – ১৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার), ইন্দিরা গান্ধী অ্যাথলেটিক স্টেডিয়াম, সময় – রাত – ৮।
৯. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম মুম্বই সিটি এফসি – ২০ ডিসেম্বর (বুধবার), মুম্বই ফুটবল এরিনা, সময় – রাত – ৮।
১০. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম এফসি গোয়া – ২৩ ডিসেম্বর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
১১. মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি – ২৭ ডিসেম্বর, বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের সূচি
১. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম জামশেদপুর এফসি – ২৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
২. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম হায়দরাবাদ এফসি – ৩০ সেপ্টেম্বর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৩. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম বেঙ্গালুরু এফসি – ৪ অক্টোবর (বুধবার), শ্রী কান্তারাভা স্টেডিয়াম, সময় – রাত – ৮।
৪. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম এফসি গোয়া – ২১ অক্টোবর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – বিকেল ৫.৩০।
৫. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট – ২৮ অক্টোবর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৬. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি – ৪ নভেম্বর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৭. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম চেন্নায়িন এফসি – ২৫ নভেম্বর (শনিবার), জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম, সময় – বিকেল – ৫.৩০।
৮. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি – ৪ ডিসেম্বর (সোমবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
৯. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম মুম্বই সিটি এফসি – ১৬ ডিসেম্বর (শনিবার), মুম্বই ফুটবল এরিনা, সময় – রাত – ৮।
১০. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম পঞ্জাব এফসি – ৯ ডিসেম্বর (শনিবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
১১. ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম ওড়িশা এফসি – ২২ ডিসেম্বর (শুক্রবার), বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, সময় – রাত – ৮।
প্রয়াত ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের স্বর্ণযুগের ফুটবলসচিব অজয় শ্রীমানি। বুধবার বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয় এই প্রবাদপ্রতিম ফুটবলপ্রেমীর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তাঁর প্রয়াণে ময়দানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ইস্টবেঙ্গলের স্বর্ণযুগের কর্তা জ্যোতিষ গুহের স্নেহধন্য ছিলেন অজয় শ্রীমানি। ১৯৭২-১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের সচিব ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে ১৯৮০ সালে সুধীর কর্মকার, পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্টবেঙ্গলে ফেরানো হয়। দায়িত্বে ছিলেন অজয় শ্রীমানি। সেবারই মজিদ বিসকর, জামশেদ নাসিরি, মাহমুদ খাবাজিকে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ক্লাব। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়েছে। শোকস্তব্ধ পরিবারকে সমবেদনা জানাই।
চেক মেট। ৭১ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতোসের বাঁ-পায়ের শটে ২৩ বছর পর ডুরান্ড কাপ ঘরে তুলল মোহনবাগান। ৬১ মিনিট দুটি হলুদ কার্ড দেখার জন্য লাল কার্ড দেখেন মোহনবাগানের অনিরুদ্ধ থাপা। ১০ জন হয়ে যাওয়ার গোল পায় সবুজ-মেরুন। নিজেদের বক্স থেকে বল পেয়ে বাঁ-দিক থেকে ডান দিকে কাট করেন পেত্রাতোস। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া তাঁর বাঁ-পায়ের শটে ১৯ বছর পর ডুরান্ড এল কলকাতায়।
দিন কয়েক আগেই ডুরান্ড কাপের গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতার দুই প্রধান। সেই ম্যাচে নায়ক হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমার। সেই ম্যাচে বেশ ফ্যাকাশে দেখিয়েছিল দ্রিমিকে। কিন্তু রবিসারয়ীয় যুবভারতীতে দিমিত্রি পেত্রাতোস দেখিয়ে দিলেন বড় ম্যাচে বড়রাই খেলেন।
কেমন হল ডুরান্ড ফাইনালের ডার্বি? এক কথায়, ভীষণ এলোমেলো। প্রথম ৪৫ মিনিটে দু দলই দাঁড়িয়ে ছিল এক সারিতে। এর মধ্যে শেষ বেলায় একসঙ্গে চার ফুটবলারের হলুদ কার্ড দেখা ছাড়া তেমন কোনও উত্তেজনা ছিল না।
১৯ বছর পর ডুরান্ড ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই বড় ক্লাব। ২০০৪ সালের ফাইনালে দিল্লি আম্বেদকর স্টেডিয়ামে এক বঙ্গসন্তানের জোড়া গোলে ডুরান্ড জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। ১৯ বছর পর চন্দন দাসকে ম্লান করে যুবভারতীতে নায়ক হলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।
শনিবার ইন্ডিয়া-পাক ম্যাচের পর, রবিবার তিলোত্তমায় মহারণ। ময়দানে ডুরান্ড ফাইনালে কলকাতা ডার্বির ম্যাচ। বৃহস্পতিবার মোহনবাগান ফাইনালে উঠতেই টিকিট কাটার হিড়িক শুরু হয়ে যায়। ক্লাবের সামনে টিকিট কাটার জন্য ভিড় জমতে থাকে। রোদ ,বৃষ্টি মাথায় নিয়ে লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়েও টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ উঠছিল।
ডুরান্ডে অনলাইনে টিকিট কাটা যায় না , তাই ভরসা অফলাইন। এদিকে দুই ক্লাবই টিকিট ‘সোল্ড আউট’ এর নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছে। এর জেরে ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও দেখান ইস্ট-বাগান সমর্থকেরা। আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত বিক্রি হবে কিছু টিকিট। ফার্স্ট কম ফার্স্ট সার্ভ ভিত্তিতে টিকিট বিক্রি হবে। আজও চিত্রটা একই হয় কিনা সেটাই দেখার।
এদিকে, ১৯ বছর পর ডুরান্ড কাপের ডার্বিতে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। পারদ চড়ছে। খৈয়ের মতো উড়ে গিয়েছে টিকিট ক্লাবের দাবি এমনটাই। কিন্তু সমর্থকেরা তা মানতে নারাজ। আজ বিকেল ৩ টা পর্যন্ত কিছু টিকিট পাওয়া যাবে।
প্রসূন গুপ্ত: মাঝে মাঝে জমজমাট খবর উধাও হয়ে যায় আবার এমন ভাবে কখনও ফিরে আসে যার দিশা পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। এখন বার্তা হলো, দুটি বড় প্রেস্টিজ গেম রয়েছে, ধূপগুড়ি এবং রবিবারের সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের ডুরান্ড কাপ ফাইনাল। যদিও দুটিকেই খেলা বলা উচিত নয়, বিশেষ করে ধূপগুড়ি উপনির্বাচন। তবে বলতেই হয় ১৯৬৬ অবধি পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও ভোট ছিল খুবই স্পোর্টিং অর্থাৎ ভোটে হারজিত তো থাকেই কিন্তু তা বলে ভোট কেন্দ্রে লড়াই গন্ডগোল বা জিতে দেখে নেওয়ার আক্রোশ কোনও দলের ছিল না। বরং দেখা যেত ভোটের দিন সকাল থেকে যে যার টেন্টে গিয়ে বসতো এবং যারা বুথ এজেন্ট তারা বুথে ঢুকে পাশাপাশি বসে এক প্রকার গল্পগুজব করতো। সময়ে চা আসলে বা খাবার আসলে একেবারে ভাগাভাগি করে খেত। পরে ভোটের ফল বেরোলে জয়ী প্রার্থী পরাজিতের বাড়িতে গিয়ে চা খেয়ে আসত। সেসব দিন স্বপ্নের। অন্যদিকে ৬০, ৭০ বা ৮০র দশকের দর্শক মানেই ভয়ঙ্কর উগ্র বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গলের। খেলা শুরু থেকেই উত্তেজনা এবং খেলা শেষে 'বাড়ি যাবো কি করে' পরিস্থিতি দাঁড়াতো। ব্যাপারটা যেন দুই দেশের যুদ্ধ।
আজ সেই দিন গিয়েছে। আজকের ভোট মানেই জিততেই হবে। প্রচার ইত্যাদির উপর ভরসা না রেখে যে ভাবেই হোক প্রার্থীকে জেতাও। আর ভাগাভাগি করে খাওয়া দাওয়া তো কবেই বিদায় নিয়েছে। দুপুরে কোনও বুথে ঢুকলে দেখা যায় যে কোনও একটি দলের এজেন্ট লাঞ্চ সারছে অন্য জনের দেখাই নেই। এই সংস্কৃতি জোরদার হয় বাম আমলে। আজকে তার কপি বিদ্যমান। পক্ষান্তরে ইস্টমোহনের সেই উগ্র দর্শক আজ আর নেই। তবে এটা ঠিক যে আজকের দিনেও ট্রাক বা বাস ভাড়া করে দলীয় পতাকা লাগিয়ে মাঠে আসে দর্শকরা। খেলা চলাকালীন হৈচৈও রয়েছে কিন্তু খেলা শেষে দেখা যায় যে যার মতো বাড়ি চলে যাচ্ছে এবং এলাকায় এলাকায় ইলিশ চিংড়ির দেখাও পাওয়া যায় না। কর্পোরেট যুগ, টিভি বা ইন্টারনেট খুললেই বিদেশী খেলা দেখা যায়, কাজেই সময় কোথায় ?
সেমিফাইনালে বিতর্কিত পেনাল্টি। রবিবার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে নামার আগে সেসব নিয়ে ভাবতে নারাজ মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো। ডুরান্ডের প্রথম ডার্বিতে হারের ক্ষত এখনও টাটকা। টিমের অন্যতম ফুটবলার আর্মান্দো সাদিকু জানিয়ে দিলেন, এবার তাঁদের মাথায় প্রতিশোধই ঘুরছে।
কোয়ার্টার ফাইনালে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে পেনাল্টি পায়নি। সেমিফাইনালে পেনাল্টি থেকে গোল পান জেসন কামিংস। সেই পেনাল্টি নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু তা পাত্তা দিতে নারাজ মোহনবাগান কোচ ফেরান্দো। গত ডার্বিই তাঁর প্রথম ম্যাচ ছিল। খারাপ খেলেছিলেন তিনি। এবার গোল করে টিমকে ট্রফি জেতাতে চান। জানালেন সাদিকু।
প্রাক মরশুমের ম্যাচে টিমকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন কোচ ফেরান্দো। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের অধীনে ইস্টবেঙ্গল দারুণ ফর্মে আছে। তাই সতর্ক সবুজ-মেরুন কোচ। এবার আর কোনও সুযোগ দিতে চান না ইস্টবেঙ্গলকে।
১৯ বছর পর ফের কলকাতা ডার্বি। ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। সেমিফাইনালে পিছিয়ে পড়েও এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয়। প্রথমার্ধের দুর্বলতা কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ছন্দে সবুজ-মেরুন। বল পজিশন কম নিয়েও গোয়াকে হারিয়ে ডুরান্ডের ফাইনালে উঠল মোহনবাগান।
সেমিফাইনালের মতো হাই ভোল্টেজ ম্যাচে মোহনবাগান প্রথম থেকেই একেবারেই ছন্দ পায়নি। গোয়া বরং পাসিং ফুটবলে মোহনবাগানকে চাপে রেখেছিল। হুগো বুমোর ভুলে ২২ মিনিটে গোয়ার হয়ে প্রথম গোল করেন নোয়া সাদিকু। বারবার আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করলেও, ব্যর্থ হয় ফেরান্দোর স্ট্র্যাটেজি। ৪২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান মোহনবাগান। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেনি। বক্সের লাইনে ফাউল করে এফসি গোয়া। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে গোয়ার আপত্তি ছিল। কিন্তু ভুল করেননি জেসন কামিংস। দ্বিতীয়ার্ধে হুগো বুমোর পরিবর্তে নামেন সাদিকু। মোহনবাগানের আক্রমণে বদল আসে। পরিবর্ত ফুটবলার হয়ে নেমেই ৬০ মিনিটের মাথায় গোল পান সাদিকু।
শেষদিকে কামিংসকে তুলে মনবীরকেও নামান কোচ ফেরান্দো। ততক্ষণে গোয়া চাপে পড়ায় মোহনবাগানের কাছে খেলাও সহজ হয়ে যায়। ব্রেন্ডল হামিলকেও মাঠে নামান ফেরান্দো। নামান লিস্টন কোলাসোকেও। আর গোল শোধ করতে পারেনি এফসি গোয়া।
প্রুসূন গুপ্তঃ বেশ কয়েক বছর বাদে ইস্টবেঙ্গল ও তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি। ডুরান্ড কাপে এর আগে যতবার ফাইনালে এই দুই দলের দেখা হয়েছে তার মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের জয় বেশি, কিন্তু সেটা বড় কথা নয়, এবারে দেখার কে ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়।
এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার বর্তমান নাম 'ডার্বি'। ইস্ট-মোহনের ইদানিংকালে মানে বিগত কয়েক বছরে যতবার এই ডার্বি ভারতের যতগুলি স্টেডিয়ামে হয়েছে, তাতে বেশ বিক্রমেই জিতেছে মোহনবাগান। অনেক কারণ ছিলও বটে। প্রথমত, আজকের দিনে দেশের সমস্ত বড় ফুটবল ক্লাব কিনে নিয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থা। এর ফলে দেশের আদি ক্লাবগুলির কোনও অস্তিত্বই নেই। কোথায় গেলো মফতলাল, পঞ্জাব পুলিস, কেরালা পুলিস, ডেম্পো ভাস্কো বা ওরকে মিলসের মতো দলগুলি? এগুলোও তো অফিস টিম ছিল। কিন্তু বর্তমানের কোটি কোটি টাকার তৈরি দলগুলির কাছে এদের কোনও বাজেটই নেই। অফিসে চাকরি করো বা কিছু টাকা নিয়ে খেলে দাও গোছের অনুরোধ আজকে আর চলে না। আজ যারা দাপিয়ে আইএসএল, আই লীগ বা ন্যাশনাল টুর্নামেন্টগুলি খেলছে তাদের অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ একটিই তাদের পেশা, তা খেলো বা দুর্দান্ত খেলে টাকা কামাও। একেবারে বিদেশের মতো পেশাদারিত্ব এসে গিয়েছে ফুটবলে, যা কিনা বহু বছর আগে এসেছে ক্রিকেটে।
সে যাই হোক নানান টুর্নামেন্টে বহুবার দেখা হলেও একেবারে ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান মুখোমুখি হচ্ছে বহুদিন বাদে। এবারে প্রশ্ন দুটি, কোন দল কেমন এবং কিভাবে খেলবে ফাইনালে। ফুটবল নিশ্চিত টিম গেম। ডিফেন্স, মিডফিল্ড এবং অফেন্স এই তিন সূত্রে গাঁথা ফুটবল। আজকের দিনে ডিফেন্স আলগা রেখে আক্রমণে কেউ যায় না, তা কলকাতা হোক বা বিশ্বকাপ।
নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে, ধারে ও ভারে মোহনবাগান অনেকটাই এগিয়ে। শোনা গিয়েছে, প্রায় ৭০ কোটি টাকার দল। বিশ্বকাপের থেকে বিদেশি খেলোয়াড়ে সমৃদ্ধ মোহনবাগান। পক্ষান্তরে ইস্টবেঙ্গল দলটিও এবারে মন্দ নয়। প্রকারান্তে বলা যেতে পারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরোক্ষ প্রয়াসে এই ইস্টবেঙ্গল দল। ফাইনালের আগে লীগ পর্যায়ে এই দুই দলের একবার দেখা হয়েছিল এবং বহুদিন বাদে ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল। খেলা প্রিয় মানুষের নজর সে দিকেই। শুধু একটি বিষয়ে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে তিনি কোচ কার্লেস কুয়াদ্রত। এতো ধূর্ত কোচ এর আগে কোনও ভারতীয় দল পায়নি। তাই বলা যেতে পারে শক্তিশালী মোহনবাগান বনাম কুয়াদ্রাতের খেলা রবিবার।
উনিশ বছর পর ডুরান্ডের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার যুবভারতীতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে টাইব্রেকারে পাঁচ-তিন গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠল লাল-হলুদ। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচে দুই শূন্য গোলে পিছিয়ে থেকে মহেশ এবং নন্দকুমারের গোলে সমতায় ফেরে ইস্টবেঙ্গ। ম্যাচে ছিয়ানব্বই মিনিটে লাল কার্ড দেখেই নর্থইস্টের জাবোকা।
টাইব্রেকার ক্লেটন সিলভার গোলে লিড পায় ইস্টবেঙ্গল। ৩১ তারিখ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামবে মোহবাগান। ইস্টবেঙ্গলের এদিনের জয়ের ফলে, উনিশ বছর পর ডুরান্ড ফাইনালে ডার্বি দেখতে এখন মরিয়া কলকাতা।
এদিন শুরু থেকেই ছন্নছাড়া দেখায় ইস্টবেঙ্গলকে। তার সুযোগ নিয়ে ম্যাচে ২২ মিনিটে নর্থইস্টকে এগিয়ে দেন জাবাকো। এক গোলে পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে লাল-হলুদ। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শুরু আবার গোল হজম করতে হয়। এবার নর্থইস্টকে এগিয়ে দেন ফাল্গুনী সিং। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ব্যবধান কমান মহেশ সিং। ৯৭ মিনিটে লাল-হলুদ সমতায় ফেরে আর এক ভারতীয় নন্দকুমারের গোলে।
বল এখন সবুজজ-মেরুনের কোর্টে। বৃহস্পতিবার এই মাঠেই ডুরান্ডের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামবে মোহনবাগান। সুপার জায়েন্টের প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া। ওই ম্যাচ মোহনবাগান জিততে পারলে, স্বপ্ন সফল হবে কলকাতার। মরশুমের প্রথম ট্রফির ফাইনাল হবে ডার্বি।
শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে গোকুলম কেরলের বিরুদ্ধে নামবে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে লাল-হলুদের বাধা কেরলের ক্লাব। লড়াই সহজ নয় ইস্টবেঙ্গলের। ইস্টবেঙ্গল পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকলেও যুবভারতীতে (Yuva Bharati) লড়াই সহজ হবে না।
ইস্টবেঙ্গল টিমে গ্রুপ লিগে গোল পেয়েছে সিভেরিয়ো। ক্রেসপো, ক্লেটন সিলভারাও ছন্দে আছেন। ডুরান্ডে এখনও পর্যন্ত হারেনি দল। দীর্ঘদিন পর ডার্বি জিতিয়েছেন কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। এবার মরশুম শুরুর আগে ঘরে একটা ট্রফি চাইছে সমর্থকরাও।
ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান দুই ক্লাবই ১৬ বার করে ডুরান্ড জয় করেছে। কিন্তু এই ডুরান্ড ইস্টবেঙ্গলের পথে আগেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার সেই পুরনো পরিসংখ্যান ভুলে নতুন রূপে নামতে চাইছে লাল-হলুদ। ভুলে জয়ের হাসি নিয়েই সেমিফাইনালে যেতে চাইছে লাল-হলুদ।
এরিয়ানকে হারিয়ে সিংহাসন দখল ইস্টবেঙ্গলের। শনিবার সিএফএল ২০২৩-এ নিজেদের ১০ নম্বর ম্যাচে এরিয়ান ক্লাবের মুখোমুখি হয় ইমামি ইস্টবেঙ্গল। এই ম্যাচেই ২-০ গোলে এরিয়ানকে হারিয়ে কলকাতা লিগের শীর্ষে উঠে এল লাল হলুদ।
শনিবারও নৈহাটি স্টেডিয়ামে এরিয়ান বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলা শুরু করে। সমান লড়াই চালাচ্ছিল লাল হলুদ ব্রিগেডও।
শেষ পর্যন্ত প্রথম হাফের চার মিনিট ইনজুরি টাইমে দু'গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদের হয়ে প্রথম গোল করেন জেসিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয় গোলটি করেন আমন।