ফের বড়সড় আবহাওয়ার বদল হতে পারে। আগামী বুধবার থেকে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আগামী ১২ ঘণ্টায় বঙ্গোপসাগরে দানা বাঁধতে পারে নিম্নচাপ। সেকারণেই বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলা এবং উত্তরবঙ্গে ভালোই ঠান্ডা পড়েছে। সকাল ও রাতের তাপমাত্রার পারদ ১৮ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। তবে মেঘলা আকাশের জেরে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়া দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার থেকে তৈরি হবে নিম্নচাপ। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
শহরজুড়ে শীতের আমেজ। বঙ্গে ঢুকতে শুরু করেছে উত্তুরে হাওয়া। তবে, জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়তে এখনও খানিকটা দেরি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার রাজ্যজুড়ে পারদ সামান্য নেমেছে। সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। তবে, এরই মধ্যে চোখ রাঙাচ্ছে দক্ষিণ আন্দামান সাগরের ঘূর্ণাবর্ত। তার প্রভাব কি বাংলায় পড়বে ?
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ওই ঘূর্ণাবর্তের অভিমুখ থাকবে অন্ধ্র উপকূলের দিকে। সেক্ষেত্রে, বাংলায় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে আপাতত কোনও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। মেঘমুক্ত, ঝলমলে পরিষ্কার আকাশ থাকবে। আগামী চার দিন রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমতে পারে। পশ্চিমের জেলাগুলিতে ভালই শীত শীতভাব। ওই জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ১৫-১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে থাকবে। সপ্তাহের শেষ পারদ আরও নামতে পারে।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে মনোরম আবহাওয়া থাকবে। আগামী তিন-চারদিন শীতের আমেজ বাড়বে পার্বত্য এলাকাগুলিতে। এদিন, কলকাতার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ২০ ডিগ্রির নীচে নেমেছে। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি বেশি।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে শনিবার। রবিবার, তা নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ২৭ নভেম্বর সোমবার তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। আপাতত এর অভিমুখ পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম অর্থাৎ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে । আর গভীর নিম্নচাপ যখন ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তার নাম হবে মিগজাউম।
ক্রমশ আরও শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপ পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এই নিম্নচাপ পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার নাম হবে ‘মিধিলি’।
নিম্নচাপের ভ্রুকুটি। বৃহস্পতিবার থেকেই বদলেছে আবহাওয়া। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বিশেষ করে দুই মেদিনীপুরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দিঘার সমুদ্রে পর্যটকদের নামতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই শুরু হয়েছে মাইকিং। শুক্রবার সকাল থেকে নুলিয়া ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সতর্কতা জারি থাকবে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমস্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্র থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই দিঘার বিচগুলিতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ।
দিঘার সমুদ্র আপাতত স্বাভাবিক আছে। তবে, নিম্নচাপের জেরে যে কোনও সময় পরিস্থিতি বদলাতে পারে। তাই কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, নিম্নচাপের কারণে দিঘা-সহ দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় আগামী দু’দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়াও বইবে। কলকাতাতেও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিরা খান (Mahira Khan), বলিউডে শাহরুখ খানের বিপরীতে 'রইস' ছবিতে ডেবিউ করেন। অভিনেত্রী প্রথম ছবিতেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ভারতীয় দর্শকদের কাছে। কিন্তু তারকাদের ভাগ্যে কয়েনের এপিঠ-ওপিঠের মতো জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বদনামও জোটে। মাহিরার সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছিল। পাকিস্তান-ভারতের দর্শকেরা যখন তাঁকে চেনেন, এমনই সাফল্যের সময় সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় একটি ছবি।
বিদেশের কোনও এক রাস্তায় সিগারেট খেতে দেখা গিয়েছিল বলিউড অভিনেতা রণবীর কাপুরকে। ছবিতে দেখা গিয়েছিল অভিনেতার পাশে বসে ধূমপান করছেন মাহিরা। এই ছবি অভিনেত্রীকে নিয়ে দর্শকদের ভাবমূর্তিতে আঘাত হেনেছিল। সামাজিক মাধ্যমে যখন নেটিজেনরা এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছিলেন, তখন কী অবস্থা হয়েছিল মাহিরার মনের? সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের কাছে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী।
অভিনেত্রী বলেছেন, 'সবার খারাপ সময় আসে, ভালো সময় আসে, সাফল্য ও ব্যর্থতার মতো। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবসাদ সত্যি। গত বছর আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম, শয্যাশায়ী ছিলাম। আমার মনে আছে আমি বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে যাওয়ার অবস্থায় ছিলাম না। খুব খারাপ সময় কেটেছে আমার। আমি আল্লাহকে বলেছিলাম, আলো দেখাতে। সত্যিই আল্লাহ আমার দিকে তাকালেন। আমি চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। এরপর সত্যিই মনে হয়েছিল আমি অনেক হালকা হয়ে গিয়েছি, হাসতে শুরু করেছি।'
দেনার দায়ে মানসিক অবসাদ (Depression), আর তার জেরেই আত্মঘাতী এক ব্যক্তি। রবিবার, সকালে এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার ধুসরীপাড়া কলোনী এলাকায়। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ওই ব্যক্তির নাম চন্ডী হালদার (৫০)। পেশায় তিনি একজন ফুচকা বিক্রেতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিস এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মাস চারেক আগেই বেশ ধূমধাম করে ছেলের বিয়ে দেন চন্ডী হালদার। আর তাতেই বেশ কয়েক হাজার টাকা দেনা হয়ে যায়। একদিকে শারীরিক অসুস্থতা, অন্যদিকে পাওনাদারদের চাপ। দেনার দায়ে মানসিক চাপ যেন ক্রমশ বাড়তেই থাকে। এই বিষয়টি নিয়ে রাতে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা অশান্তি হয়। সেই কারণে ভোর রাতে রাগ করে ফরাক্কায় মায়ের বাড়ি চলে যান চন্ডী হালদারের স্ত্রী।
মৃতের পরিবার জানিয়েছে, বাড়িতে লোকজন না থাকার সুবাধে সার্বিক চাপে এক পর্যায়ে বাড়ির পাশের একটি লিচু বাগানে গিয়ে গলায় ধুতি দিয়ে বেঁধে ফাঁস লাগিয়ে চন্ডী হালদার আত্মহত্যা করেন। স্থানীয়রা এদিন সকালে বাগানে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা মাত্রই খবর দেয় থানায়। তারপরে ঘটনাস্থল থেকে মৃত চন্ডী হালদারের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিস। দেনার দায়ে আত্মঘাতী না কি এর পিছনে অন্য় কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।
২০১৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল হৃত্বিক রোশন (Hrithik Roshan) অভিনীত সিনেমা 'ওয়ার' (War)। তাঁর অভিনীত সিনেমা গুলির মধ্যে অন্যতম সেরা সিনেমা বলা চলে। সারা দেশে বক্স অফিসে সিনেমার কালেকশন ছিল ৪৭৫ কোটি টাকা। টানটান অ্যাকশন এবং ড্রামায় ভরপুর ছিল সিনেমা। অভিনেতাকে এমনিই গ্রিক দেবতার তকমা দেওয়া হয়েছিল। সেই সিনেমায় বলিউডের হিরো বললেও ভুল হবে না। তবে এত জৌলুসের পিছনে হৃত্বিকের মনে কী চলছিল সেই খবর কেউ পাননি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা 'ওয়ার' শ্যুটিংয়ের সময় তাঁর মনের অন্দরে চলা যুদ্ধের কথা বলেছেন। হৃত্বিক বলেছেন, 'আমি এমন পরিপূর্ণতার কাছাকাছি পৌঁছাতে চেয়েছিলাম, যার জন্য আমি তৈরী ছিলাম না। সিনেমার শ্যুটিংয়ের পরে আমার অ্যাড্রিনাল অবসাদ হতে শুরু করেছিল। ৩-৪ মাসের জন্য আমি ঠিক করে ট্রেনিং নিতে পারিনি। কিছুই ভালো লাগত না।'
অভিনেতা আরও বলেছেন, তিনি মাঝে নিজের শরীরকে ছাড় দিয়েছিলেন। ফলে খানিকটা নিয়মের বাইরে বেরিয়েছিলেন, তাই 'ওয়ার' সিনেমার জন্য তৈরী হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। অভিনেতা স্বীকার করেছেন, তিনি টানা ৭ মাস কোনও ছুটি না নিয়ে কাজ করেছিলেন। অভিনেতা শারীরিকভাবে ফিট হয়েছিলেন ঠিকই। তবে কষ্টও পেয়েছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর ওই শারীরিক বদল কেবল সিনেমার জন্য ঘটাননি, বরং নিজের জন্যও ঘটিয়েছিলেন।'
মায়ের শাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় স্কুল শিক্ষক (school teacher) ছেলে ও মায়ের ঝুলন্ত দেহ (hanging body) উদ্ধার ঘর থেকে। মর্মান্তিক ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর (Ashokanagar) থানার বিড়া বান্ধব পল্লী এলাকার। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে (Mental depression) ভুগছিলেন তাঁরা বলেই পরিবার সূত্রে খবর। ঘটনার খবর পেয়ে অশোকনগর থানার পুলিস (police) দেহ দুটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
জানা যায়, মৃত ছেলে বছর ৪৮ এর প্রমিৎ বিশ্বাস, মা বছর ৬৮ এ সুনন্দা বিশ্বাস।রোজকার মতো রবিবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ির ছোট ছেলে পেশায় স্কুল শিক্ষক প্রমিৎ তাঁর মায়ের ঘরে ঘুমাতে যান। রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ পরিবারের সদস্যরা প্রমিৎকে ডাকতে গিয়ে দেখেন মায়ের ঘরের ভেতর জানালার সঙ্গে মায়ের শাড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন ছেলে প্রমিৎ ও মা সুনন্দা। তড়িঘরি খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিস ফাঁড়িতে। পুলিস পৌঁছে দুজনকে উদ্ধার করে অশোকনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ২৫ ধরে স্নায়ুরোগে ভুগছিলেন পেশায় প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক প্রমিৎ। ছেলের চিন্তায় মা সুনন্দা বেশ কয়েক বছর মানষিক অবসাদে ভুগছিলেন।সুনন্দা দেবীও একসময় স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তবে হঠাৎ করে মা এবং ছেলের এই ধরনের ঘটনায় অবাক প্রতিবেশীরা। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার সহ এলাকার। তবে আসলে ঠিক কী কারণে এই ঘটনা, বুঝতে পারছেনা কেউ। তবে অশোকনগর থানার পুলিসের পক্ষ থেকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
প্রসূন গুপ্ত: রবি সাহিত্যে বর্ণিত গ্রীষ্মের গরম প্রবল কিন্তু ভাদ্র মাসের গরমে পাগলের প্রতিক্রিয়া বাড়ে। এবার বর্ষাকালে বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে খুবই কম। ফসলের ক্ষতিও হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। পক্ষান্তরে বাংলার উত্তরভাগে বৃষ্টি ছিল স্বাভাবিক। ভাদ্র মাসে দক্ষিণবঙ্গে সাধারণত এতটাই বৃষ্টি হয়ে থাকে যে বর্ষাকালের কম বৃষ্টিকে অনেকটাই মেকআপ হয়ে যায়। করোনাকালের দু-তিন বছর কিন্তু শ্রাবণ ভাদ্রে বৃষ্টি হয়েছিল স্বাভাবিক বা কিছুটা বেশি, কিন্তু ব্যতিক্রম ২০২২। এ বছর গরম যথেষ্ট পড়েছে, পক্ষান্তরে বৃষ্টিও হয়নি স্বাভাবিক স্তরে। নিম্নচাপ এই বছর যা হয়েছে, তাতে কয়েকঘন্টা বৃষ্টি হয়েছে মাত্র কিন্তু টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতখামারে যথেষ্টও জল পায়নি। কর্ণাটক, মহারাষ্ট্রে যখন প্লাবন এসেছে, বাংলা থেকেছে শুকনো।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস মেলেনি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। সাধারণত কলকাতা লাগোয়া বাংলায় ভাদ্র মাসে প্রবল বৃষ্টি হয় এবং প্লাবিত হওয়ার ঘটনা যা কিছু হয়েছে। তা ওই পুজোর আগেভাগেই ১৯৬০-এ প্লাবিত হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। ১৯৭০-এ বন্যা এসেছিল এই ভাদ্রেই। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বন্যা বা প্লাবন কলকাতা লাগোয়া বাংলার মানুষ পেয়েছিলো ১৯৭৮-এ। কলকাতা-সহ উত্তর ২৪ পরগনা এবং বিস্তীর্ণ দক্ষিণবঙ্গ প্লাবিত হয়েছিল। এমনও দেখা গিয়েছিলো পুজোর সময়ে কলকাতার বিভিন্ন মণ্ডপের সামনে পা ডোবানো জল। দীর্ঘদিন লেগেছিল এই জল নামতে। প্রশ্ন এবার কী হতে পারে?
আবহাওয়াবিদদের বক্তব্য, রবিবার থেকে টানা বুধবার অবধি আকাশে সূর্যদেবের দর্শন পাওয়া যাবে না। অল্প থেকে ভারী বৃষ্টি হবে, মঙ্গলবার বৃষ্টি বাড়বে। জল দাঁড়াতে পারে কলকাতা হাওড়া-সহ বিভিন্ন স্থানে। পুজোর বাজারের অবস্থা এমনি খারাপ তার উপর আসন্ন কয়েক দিন যে বিক্রি কমবে তা বলাই বাহুল্য।
পুজোর আগেই কি ভাসবে দুই বঙ্গ? আবহাওয়া দফতর সূত্রে পাওয়া খবরে এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) সৃষ্ট নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে আরো গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গের (South Bengal) উপকূল এলাকা জুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর। সেইসঙ্গে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা জুড়ে দফায় দফায় বৃষ্টি সকাল থেকে শুরু হয়েছে। দীঘায় সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় পর্যটকদের সমুদ্রস্নানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্নানের ঘাটগুলিকে চারপাশ থেকে দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার ঝড়খালি কোস্টাল থানার উদ্যোগে মাইকিং-এর মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকায়। তাই ঝড়খালি কোস্টাল থানার ওসি প্রদীপ রায় সহ পুলিসকর্মীরা সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় মৎস্যজীবীদের নিষেধ করছেন।
এছাড়াও আজ সকাল থেকেই হাওয়া দফতর সুত্রে খবর জানা গিয়েছে, মেঘলা আকাশই থাকবে সারাদিন এবং ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও প্রবল। তাছাড়াও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে মালদা, দুই দিনাজপুর, ঝাড়গ্রাম, বর্ধমান, জলপাইগুড়ি প্রভৃতি জায়গায়। জানানো হয়েছে, বজ্রবিদ্যুত সহ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, আজ ১১ই সেপ্টেম্বর কলকাতার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩১ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ২৭ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকবে। বজ্রবিদ্যুত সহ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতাতেও।
সপ্তাহের শেষে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হবে নিম্নচাপ। রবিবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস। উপকূলবর্তী জেলা সহ বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে হাওয়া দফতর সূত্রে খবর।
সকাল ৬টায় আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জেলায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৮৬ শতাংশ। ১১ কিমি বেগে বইছে জেলার বাতাস। সাতসকালেই ২৮ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে উত্তরের তাপমাত্রা। আজ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে জেলায়। সেই ক্ষেত্রে বজ্রবিদ্যুত সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জেলার কিছু অংশে। তবে বেলা গড়ালে গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে আর্দ্রতাজনিত অস্বতি। তাই প্যাচপ্যাচে ঘামের সাক্ষী থাকতে পারে জেলা। শনিতে থাকছে ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্কেত, আজ আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিতে ভুগতে পারে উত্তরবঙ্গ। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ খুবই বেশি।
হাওয়া দফতর সুত্রে খবরে আরও জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা দার্জিলিং ও মালদাতে আজ সারাদিন মেঘলা আকাশ মাঝেমাঝে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিও হবে। ১৯ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকবে তাপমাত্রা। দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে।
রবি এবং সোমবার তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। বিশেষত, সোমবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে ওই দুই জেলায়। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে।