
প্রধান শিক্ষক নিয়োগে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া মানা হয়নি, এমনই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার শুনানিতে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল আদালত। জানা গিয়েছে, চলতি বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি স্কুলে নিয়ম না মেনে, কাউন্সেলিং ছাড়াই প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠে। বেশ কয়েকজন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। এরপর মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। এদিন ওই মামলার শুনানিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করল জাস্টিস গাঙ্গুলি। আগামী ২০ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি আছে।
এদিন এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, শুধুমাত্র বয়স এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জেলা স্কুল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অর্থাৎ DPSC রুলে প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হয়। সবল জবাবে রাজ্যের বক্তব্যের পাল্টা মামলাকারীর দাবি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কাউন্সেলিং হয়নি, বরং অন্যান্য কয়েকটি জেলা অর্থাৎ বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনায় নিয়ম মেনেই হয়েছে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কাঁটায় বিদ্ধ রাজ্য সরকার অর্থাৎ তৃণমূল। নিয়োগ দুর্নীতিতে ইতিমধ্যেই হাজতে আছেন তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়ক, সহ অন্তত হাফ ডজন নেতা। এরই পাশে বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রাজ্য জুড়ে সক্রিয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি রাজ্য সরকারের কাছে গোদের উপর বিষফোঁড়া সেটা বলা চলে।
ঝালদা পুরসভার কুরশি কার! কখনও তৃণমূলের, কখনও বা কংগ্রেসের। কিন্তু শেষমেশ এই কুর্শিতে কে বসবে সেটা ঠিক করতে হবে ৮ই ডিসেম্বরের মধ্যে, এমনটাই নির্দেশ হাইকোর্টের। বৃহস্পতিবার ঝালদা পুরসভার দুটি পৃথক মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এদিন জাস্টিস সিনহা নির্দেশ দেন, ৮ই ডিসেম্বরে মধ্যে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে ঝালদা পুরসভার আস্থা ভোট করতে হবে। এমনকি যাতে সাধারন মানুষের কোনও বিঘ্ন না ঘটে সেই জন্য বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ, এই আস্থা ভোট শেষ হবার আগে পুরসভা যেমন চলছে, তেমনই চলবে। এছাড়া তিনি আরও নির্দেশ দেন, এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে অর্থাৎ ১২ই ডিসেম্বর আস্থা ভোট সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে জেলা শাসককে।
২০২২ সালে পুরভোট শেষ হলেও, ঝালদা রাজ্যের একমাত্র পুরসভা যেখানে কুর্শির দখল নিয়ে লড়াই এখনও চলছে। কখনও মন, কখনও মতি, ঠিক সেরকম ভাবেই দল বদলান ঝালদার কাউন্সিলরদের কেউ কেউ। ফলে পুরসভার নিয়ন্ত্রক শক্তিও বদলে যায় যখন তখন। মোট ১২টি আসন এই ঝালদা পুরসভায়। গত পুরভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেস এখানে যথাক্রমে ৫টি করে আসনে জেতে। নির্দল পায় বাকি ২টো। এই নির্দলই বারবার খেলা ঘুরিয়েছে ঝালদার। বিশেষ করে শীলা চট্টোপাধ্যায় কখনও কংগ্রেসে সমর্থন দিয়েছেন, কখনও তৃণমূলে। হাইকোর্টের নির্দেশে গতবার আস্থা ভোটে এই শিলা চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে ৭-০তে জয় লাভ করে কংগ্রেস বোর্ড গঠন করে। কিন্তু শিলা ফের তৃণমূলে যোগদান করলে কংগ্রেস অনাস্থা আনে।
শীলা চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু ও বিপ্লব কয়াল। এদিন কংগ্রেস কাউন্সিলরদের পক্ষে আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সনের অপসারণ চেয়ে পাঁচজন তৃণমূল কাউন্সিলর ও দুই কংগ্রেস কাউন্সিলরের দু’টি পৃথক মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলাতেই এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ধর্মতলায় বিজেপির শাহী সভার পর এবার খেজুরিতে সভার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, খেজুরিতে শুভেন্দুর সভার দিনক্ষণ সব ঠিক হয়ে থাকলেও মিলছে না পুলিশি অনুমতি। ডিসেম্বরের ২ তারিখ অর্থাৎ শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে শুভেন্দু অধিকারী সভা করবেন। ২ ডিসেম্বর সভার জন্য নির্দিষ্ট জায়গাও বাছাই হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ জেলা পুলিশের কাছে সভার অনুমতির জন্য অনেক আগেই আবেদন করা হয়। কিন্তু পুলিশ কোনও প্রত্যুত্তর করছে না বলেই অভিযোগ। সে জন্যই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার এই মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
বুধবার ধর্মতলায় বিজেপির মেগা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই সভা ঘিরে রীতিমতো তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ওই সভার অনুমতি না দেওয়ায় পুলিশকে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ধমকের মুখে পড়তে হয়েছিল। কেবল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ নয়, ডিভিশন বেঞ্চও বিজেপির ধর্মতলার সভার অনুমতি দেয়।
কেবল ধর্মতলা নয়, হাওড়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনিপুর, ঝাড়গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় আদালতের অনুমতি নিয়েই সভা করতে হচ্ছে শুভেন্দুকে, আখেরে বিজেপিকে। খেজুরি বরাবর রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্জয় ঘাঁটি। এখন সেখানে গেরুয়া প্রভাব রয়েছে। এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। কাজেই সেখানে শুভেন্দু প্রভাব থাকবে। অথচ ফের শুভেন্দুর সভাকে ঘিরে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চাপানউতোড়। একদিকে যখন ধর্মতলায় বিজেপির সভার অনুমতি নিয়ে হাইকোর্টে মুখ পুড়েছে রাজ্যের ও পুলিসের। অন্যদিকে খেজুরিতে শুভেন্দুর সভাকে ঘিরে পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। এখন দেখার এই আবহে মুখ পোড়ানো আটকাতে পুলিস শুভানুর সভাকে ঘিরে কোন যুক্তি খাড়া করে। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই মামলা শুনবেন বলে খবর।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) এল নয়া মোড়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী জামিন পাওয়ার পর এবারে জামিন পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আজ অর্থাৎ বুধবার শর্তসাপেক্ষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ জামিন দিল।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু রয়েছে কিছু শর্ত। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের শর্ত অনুযায়ী, তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে কল্যাণময়কে। কলকাতার বাইরে তিনি যেতে পারবেন না। কল্যাণময় প্রবেশ করতে পারবেন না বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায়। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে পাসপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা রাখতে হবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃতীয় আধিকারিক ছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর টানা ছয় ঘণ্টা জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর পর টানা ১৪ মাস পরে কল্যাণময়ের জামিনের আবেদন শর্তসাপেক্ষে মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট।
এ যেন লুকোচুরি খেলা। এসএসকেএম ও কালীঘাটের কাকু যেন ইডির সঙ্গে একপ্রকার লুকোচুরি খেলায় নেমেছে। একদিকে যখন কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে তৎপর ইডির আধিকারিকরা। অন্যদিকে তখন যে কোনও উপায়ে ইডির চেষ্টাকে ব্যর্থ করার চেষ্টা এসএসকেমের। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে এমনই মনে হবে সাধারণের। এসএসকেএম ও কাকুর এহেন খেলায় গেরোয় কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ। এবার ফের ঠিক যেন কালীঘাটের কাকুকে আড়াল করতে ফের এসএসকেএমের জারিজুরি। জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে যেতে পারে ইডি, এমটাই জানিয়ে এসএসকেএমকে চিঠি লিখেছিল ইডি। কিন্তু ইডির পাল্টা চিঠিতে এসএসকেএম জানিয়েছে, কালীঘাটের কাকুর মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। অর্থাৎ অসস্তি ভাবে এসএসকেএম বুঝিয়ে দিল ইডিকে এ মুহূর্তে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ সম্ভব নয়।
পূর্বেই কালীঘাটের কাকু ও এসএসকেএমের উপর সন্দিহান প্রকাশ করে ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। ইডির আবেদনে সাড়া দিয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালত কাকুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য ইএসআই হাসপাতালকে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দেয়। এবার এসএসকেমেমকে পাল্টা চাপ ইডির, সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইডির তরফে চিঠি দেওয়া হলো এসএসকেএম হাসপাতাল, ই এস আই হাসপাতাল ও সিএফএসএল-কে। যদিও পাল্টা চিঠিতে এসএসকেএম জানিয়েছে কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। সে জন্যই তাকে মানসিক চিকিৎসার বিভাগ অর্থাৎ সাইক্রিয়াটিক বিভাগে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় অবশ্য ইডির আধিকারিকরা মনে করছেন নমুনা সংগ্রহে বিলম্বের চেষ্টাতেই এই রিপোর্ট এবং চিঠি এসএসকেএম হাসপাতালের। এঅবস্থায় কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে ইডি কোন পথে হাটবে সেটাই এখন দেখার।
এবার হয়ত শেষ হতে চলেছে কাকুর জারিজুরি , নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয় কালিঘাটের কাকু, অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। এরপরে সুজয় কৃষ্ণের অফিস ও ফোন ঘেটে রীতিমত চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় ইডির আধিকারিকরা। তদন্ত যত এগিয়েছে টোটো কাকুর কালো হাতের হদিশ মিলেছে। এরপরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে কালীঘাটের কাকু। এরপর তার চিকিৎসা হয় ,এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার হৃদরোগের অপারেশন ও করা হয়। তারপর থেকেই সরকারি হাসপাতাল অর্থাৎ এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন আছে কালীঘাটের কাকু। কিন্তু কালীঘাটের কাকুকে নিজের হেফাজতে নেওয়া কিংবা জেলে পাঠানো, বা কালীঘাটের কাকুর নমুনা সংগ্রহে একমাত্র বাধা এসএসকেএম। এবার এসএসকেএমের রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে সন্দিহান প্রকাশ করে আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। ওই শুনানিতে আজ অর্থাৎ শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশ, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা জন্য ইএসআই হাসপাতালকে চিকিৎসক দ্বারা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে, তাঁর সাস্থের একটি রিপোর্ট দিতে হবে।' কার্যত এবার হয়ত এসএসকেএমে শুয়ে আরাম করার দিন শেষ হয়ে আসছে কাকুর।
জানা গিয়েছে, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের চিকিৎসার জন্য এসএসকে এম হাসপাতাল দ্বারা গঠিত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে সন্তুষ্ট ছিল না ইডি। তদন্তকারী আধাকিরকরা মনে করছেন, রাজ্যে সরকারি হাসপাতাল সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের চিকিৎসা সংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্টে কিছু ত্রুটি থাকছে। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত ইএসআই হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। ইডির আবেদন মঞ্জুর করে জোকা ই এস আই হাসপাতালকে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা নির্দেশ দিল ইডির বিশেষ আদালত।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর, নানা সময়ে নানা জারিজুরি করেছেন কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তক্রমে ইডির কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয় ইডির।কিন্তু সেই পথে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়ায় এসএসকেএম। এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পেতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে ইডি। এমনকি বারবার চিঠি লিখেও মেলেনি কোনো সদুত্তর। সেজন্যই এবার আদালতের দ্বারস্থ ইডি। এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সময় আদালতে মুখ পুড়েছিল এসএসকেএমের। এবার কি ফের কালীঘাটের কাকুর সহায় থেকে এসএসকেমের মেডিকেল রিপোর্টে মুখ পুড়বে হাসপাতাল কতৃপক্ষের! সেটাই এখন দেখার।
ধর্মতলায় বিজেপিকে সভা করার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে রাজ্য। আর সেই আশঙ্কাতে আগেভাগে সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করে দিল রাজ্য বিজেপি।
শুক্রবার সকালে মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সব শর্ত মেনে বিজেপি ধর্মতলায় সভা করতে পারে। এই নির্দেশের পরই ক্যাভিয়েট দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় বিজেপি। যদিও, রাজ্য আদৌ সুপ্রিম কোর্টে যাবে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে, রাজ্য বিজেপি কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি। তাই আগাম সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন শুভেন্দুরা। এবার রাজ্য বিজেপির বক্তব্য না শুনে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, ২৯ নভেম্বর ধর্মতলায় বিজেপির সভা। কিন্তু, সভার জন্য রাস্তা স্তব্ধ হয়ে যাবে বলে যুক্তি ছিল রাজ্যের। তাঁদের সভার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। সিঙ্গল বেঞ্চ বিজেপিকে শর্তসাপেক্ষে সভা করার অনুমতি দেয়। এরপর ডিভিশন বেঞ্চে যায় মামলাটি। এবার ডিভিশন বেঞ্চও সভা করার অনুমতি দিল।
আদালতে ফের ধাক্কা রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের। রাজ্যের আবেদনের তোয়াক্কা না করে ধর্মতলায় বিজেপিকে সভা করার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ফলে এটা স্পষ্ট যে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। বিজেপিকে সভা করার অনুমতির পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, কর্মসূচির জন্য বিজেপিকে কলকাতা পুলিশের শর্ত মানতে হবে।' যদিও কলকাতা পুলিশের উদ্দেশ্যে পাল্টা নির্দেশ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, অতিরিক্ত কোনও শর্ত যোগ করা যাবে না।'
প্রসঙ্গত এই মামলার শুনানির সময় ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস কর্মসূচির প্রসঙ্গও ওঠে আসে। প্রধান বিচারপতি বলেন, '২১ জুলাই বাতিল করে দিচ্ছি। আমরা সব বন্ধ করে দিচ্ছি। কোনও মিটিং, মিছিল, সভা নয়। একটাই সমাধান, সবার জন্য সব কর্মসূচি বন্ধ করেছি। সেটা করলে কি ভাল হবে? রাজনৈতিক ভাবে অযথা সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। দু’সপ্তাহ আগে আবেদন করা যথেষ্ট।” প্রসঙ্গত, বিজেপির তরফেও রাজ্যের শাসকদলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির প্রসঙ্গ তোলা হয়েছিল। তৃণমূল ওই দিন ধর্মতলায় সভা করতে পারলে, তারা কেন পারবে না, আদালতে সেই প্রশ্নই তোলে বিজেপি। আগের দিনের শুনানিতে বিজেপির আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, ‘‘শাসকদল যেমন রাজনৈতিক কর্মসূচি করে। বিজেপিও তেমন করতে চায়। তা হলে অসুবিধার কী রয়েছে?’’
২০২১-এর পরবর্তী হিংসার স্মৃতি এখনও দগদগে রাজ্যবাসীর মনে। যা নিয়ে জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। সেই মামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ। ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানির জন্য পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট।
রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই মামলা শুনবে নতুন বৃহত্তর বেঞ্চে। এই বেঞ্চে হাইকোর্টের দুই প্রবীণ বিচারপতিকে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন বৃহত্তর বেঞ্চে থাকবেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ, বিচারপতি হরিশ টন্ডন, বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী। ক্ষতিপূরণ না মেলা পর্যন্ত আইনি লড়াই চলবে জানিয়ে দেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন পরে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে একগুচ্ছ জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ওই বছর ১৯ অগস্ট ওই মামলাগুলিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছিল, ভোট পরবর্তী হিংসা’র ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে। যদিও আদালতের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠে। ফের আদালতের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। সেই মামলাতেই নতুন বেঞ্চ গঠন কলকাতা হাইকোর্টের।
'যেখান থেকে পারুন হাজির করুন, নেতাজি ইন্দোরে খুজুন আজ, পাবেন তাঁকে।' হাওড়ার এক বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার প্রোমোটারকে হাজিরার নির্দেশ দেয় জাস্টিস গাঙ্গুলি। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন জাস্টিস গাঙ্গুলি। বৃহস্পতিবার জাস্টিস গাঙ্গুলি পুলিশকে নির্দেশ দেয় পুলিশ যেন অভিযুক্ত ওই প্রোমোটার পার্থ ঘোষকে বেলা ৩ টের মধ্যে আদালতে এনে হাজির করে। এরপরেই তিনি আরও বলেন, 'একটাও বেআইনি নির্মাণ কোথাও থাকবে না। হাওড়ায় আমার নিজের বাড়ি আছে সেটাও যদি বেআইনি হয় তাহলে সেটাও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিতে হবে।'
সম্প্রতি, হাওড়ার লিলুয়ায় বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেবার নির্দেশ ছিল কলকাতা হাইকোর্টের। অভিযোগ নির্দেশ কার্যকর করেনি বালি পৌরসভা, সেকারণেই ফের কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে আবেদন করে মামলাকারী সন্ধ্যা ঘোষ। সেই মামলার শুনানিতেই আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সাড়ে তিনটের সময় ওই প্রোমোটারকে হাজিরার নির্দেশ দেন জাস্টিস গাঙ্গুলি।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বহুবার সরব হয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।এবার বেআইনি নির্মাণে মামলায় সরব তিনি ।বৃহস্পতিবার একটি বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সরব বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ দিন তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন যে, অভিযুক্ত প্রোমোটারকে যেন নেতাজি ইনডোরে গিয়ে খোঁজে পুলিশ। বিচারপতির এমন মন্তব্যের পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রসঙ্গত আজ নেতাজি ইনডোরে তৃণমূলের মেগা সভা রয়েছে, তৃণমূলের রাজ্য স্তরের নেতাদের নিয়ে। সেখানে অভিযুক্ত প্রোমোটারকে খুঁজতে বলায় আপাতত তৃণমূলকেই ইশারা করছেন জাস্টিস গাঙ্গুলি এমনটাই ধারণা অভিজ্ঞ মহলের। পাশাপাশি এদিন তিনি তৃণমলের পাশাপাশি পুলিশকে টার্গেট করে বলেন, 'পুলিশ প্রোমোটারের দালালের কাজ করছে।'
রাজনৈতিক দল বা অন্য কেউ অর্থাৎ কোনও তৃতীয় ব্যক্তি নয়,মৃতের স্ত্রীকেই মামলায় যুক্ত করতে হবে। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ব্যবসায়ীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এমনই নির্দেশ হাইকোর্টের।বৃহস্পতিবার মৃত ব্যক্তির পরিবারের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান পুলিসকে, সিসিটিভি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিক আদালত। সিসিটিভির ফরেনসিকের পর জানা দরকার ঘটনাস্থলে সাউন্ড ছিলো কিনা। সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনের কথাও তিনি তুলে ধরেন আদালতের সামনে। তবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় মৃতের স্ত্রীকে এই মামলায় যুক্ত করে তাকেই হলফনামা জমা দিতে হবে আদালতে। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সম্প্রতি আমহার্স্ট থানায় অশোক সিং নামে এক পান বিক্রেতাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিজেপির ৫০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল এখনই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই। আপাতত সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে।মৃতের দেহ থাকবে এসএসকেএম হাসপাতালে। সেই সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের দায়িত্ব কলকাতার পুলিস কমিশনারকেও দিয়েছিল আদালত। এরই মাঝে শনিবার দেহ হস্তান্তরের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অশোকের পরিবার। তাঁরা দাবি করেছিলেন দেহ দিতে অস্বীকার করছে পুলিস।
শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল মৃতের প্রতি সম্মান জানানো উচিত আমাদের। দেহ হস্তান্তরে সমস্যা নেই। পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিতে হবে পুলিসকে। সরকারি তত্ত্বাবধানে দেহ বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। শনিবার আমহার্স্ট স্ট্রিট-কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল। শনিবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে পুলিশ মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেবে।তবে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে যাবে পুলিস। সরকারি গাড়িতে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে।একই ভাবে বাড়ি থেকে শশ্মানে নিয়ে যাওয়া হবে শেষকৃত্যের জন্য সেখানেও পুলিস সঙ্গে থাকবে। কোনওরকম বিশৃঙ্খলা এড়াতেই পুলিস নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাবে এখন দেখার আদালতের এই নির্দেশের পর অশোক সিংয়ের পরিবার কি পদক্ষেপ নেয়। এবং তার পর পরবর্তি শুনানিতে আদালত কি নির্দেশ দেয়।
ধর্মতলায় বিজেপির সভা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বিজেপির অভিযোগ ছিল, কোনও কারণ না দেখিয়েই ২৯ নভেম্বর বিজেপির ধর্মতলার সভাকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ কোনও কারণ না দেখিয়ে বিজেপির সভার অনুমতি না দিলে বিজেপির পক্ষ থেকেই হাইকোর্টে সভার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। এর পরিপেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এই সভার অনুমতি দেন। যদিও এই রায়ের পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। এবার ওই মামলার শুনানি দ্রুত করার আর্জি জানিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে একযোগে আবেদন জানায় রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত ও বিজেপির আইনজীবী বিল্লোদ্বল ভট্টাচার্য। এই আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলার শুনানি হবে।
সূত্রের খবর,আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, 'পূর্বে একক বেঞ্চে এই সভার অনুমতি দেওয়া হয়। আজ বেলা দুটোয় এই মামলার শুনানি আছে একক বেঞ্চে। আমরা একক বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের এর দ্বারস্থ হয়েছি। ডিভিশন বেঞ্চে আজ বেলা দুটোয় আমাদের আবেদনের শুনানি গ্রহণ করা হোক।
এর পাশাপাশি বিজেপির তরফে আইজনীবি বিল্লোদ্বল ভট্টাচার্য বলেন, 'এটা বিজেপির মিটিং। প্রতিবছরই এই মিটিং হয়ে থাকে। পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না তাই আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। ভিক্টোরিয়া হাউস এর সামনেই মিটিং হয়ে থাকে। শাসক দল প্রতিবছর একুশে জুলাই এইখানে মিটিং করে। মিটিং স্থল রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মিটিংকে সংগঠিত করতে গেলে দ্রুত শুনানির প্রয়োজন। আজ বেলা দুটোয় এই শুনানি গ্রহণ করা হোক। এরপর রাজ্য ও বিজেপি পক্ষের আইনজীবীর যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, 'আগামীকাল প্রথমেই আমি এই মামলার শুনানি গ্রহণ করব।' পাশাপাশি রাজ্য ও বিজেপির আইনজীবীদের নির্দেশ দেন, তারা যেন আজ একক বেঞ্চকে জানায় যে, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা শুনানির জন্য আগামীকাল ধার্য করেছেন।'
হাওড়ার ছাত্র নেতা আনিস খানের মৃত্যুতে সরগরম হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য রাজনীতি। হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্য মৃত্যুতে অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় প্রথম থেকেই আনিসের পরিবারের তরফে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়। যদিও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আনিসের পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেও সেই আর্জি খারিজ করে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। এবার ওই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে সিঙ্গেল বেঞ্চের দ্বারস্থ মৃত ছাত্র নেতা আনিসের পরিবার। জানা গিয়েছে, ১ ডিসেম্বর বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে শুনানির সম্ভাবনা।
অভিযোগ গভীর রাতে বাড়িতে পুলিশি অভিযানের মধ্যে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় হাওড়ার সারদা খাঁ পাড়ার ছাত্র নেতা আনিস খানের। এ ঘটনায় প্রথম থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে গোটা পরিবার। পরে অবশ্য এ ঘটনায় কতব্যে গাফিলতির অভিযোগে ৩ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। আনিসের মৃত্যুতে পরিবারের দায়ের মামলায় সিবিআই তদন্তের আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মান্থার বেঞ্চ। বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ ছিল এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই। এ ঘটনার তদন্ত করবে সিট। এরপর সিআইডি আনিসের মৃত্যুর তদন্ত করে চার্জশিট ফাইল করে। কিন্তু তদন্তে ত্রুটির যুক্তিতে পরিবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে পিটিশন দাখিল করে। কিন্তু নিম্ন আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। ফলে ফের হাইকোর্টে আসে পরিবার। আজ সেই মামলার শুনানির দিন ঠিক করে দিল আদালত।
নওশাদ সিদিক্কির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় হওয়া হুমকির মামলা নিস্পত্তি করল কলকাতা হাইকোর্ট। আবেদনকারী মনে করলে নতুন করে বিস্তারিত অভিযোগ জানিয়ে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করতে পারেন বুধবার জানিয়ে দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। পাশাপাশি ডোমকল থানাকে হুমকি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেশ করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। প্রসঙ্গত বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ ওঠে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে। জল গড়ায় আদালতেও। যদিও অভিযোগকারী মহিলার দাবি, অভিযোগ জানানোর পর থেকেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিসে অভিযোগ জানিয়েও মিলছে না সুরাহা। অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বুধবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত রাজ্যের উদ্দেশ্যে জানতে চান, পুলিস এখনও কেন নিরাপত্তা দেয়নি? তাদের কাছে আবেদন জানানোর পরেও পুলিস মনে করছে কি তার দরকার নেই? এর পরেই বিচারপতি বলেন, অভিযোগ যদি সত্যি না হয় তাহলে অভিযোগকারী বিপদে পড়বেন।
নওশাদ সিদ্দিকীর আইনজীবী রাজদীপ আদালতে জানান, তার মক্কেলের জামিন খারিজের চক্রান্ত চলছে। বিধানসভার একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক তিনি। তাঁকে ডায়মন্ড হারবার লোকসভায় প্রার্থী করার কথা চলছে। এই আবহে তার জামিন খারিজের চেষ্টায় এটা চক্রান্ত। একেবারে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পাঁচ বছর পরে অভিযোগ সামনে আনা হয়েছে।রাজ্যের আইনজীবী আদালতে বলেন, পুলিস নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
সব পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে, বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, অভিযোগকারী চাইলে নতুন করে বিস্তারিত জানিয়ে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই নির্দেশ দিয়ে মামলার নিস্পত্তি করেন বিচারপতি।
ধর্মতলায় বিজেপির সভা ঘিরে ফের জটিলতা। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বিজেপির সভার অনুমতি দিলেও এবার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ রাজ্য। লোকসভা ভোটের আগে অমিত শাহকে এনে বড় সভার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য বিজেপি। যদিও সেই সভার অনুমতি বাতিল করেছিল রাজ্য পুলিশ। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। এরপর সেই মামলার প্রেক্ষিতেই ২৯ তারিখ ধর্মতলায় বিজেপির সভার জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এবার ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য বিজেপি। জানা গিয়েছে, এই মামলা দায়ের করার অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
জানা গিয়েছে, ২৮ নভেম্বর ধর্মতলায় সভা করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। কিন্তু, ১৫ দিন আগে যদি আবেদন করা না হয় সেক্ষেত্রে অনুমতি নয়, জানানো হয়েছিল পুলিশের তরফে। এরপর ২৯ নভেম্বর নতুন করে সভার আবেদন করা হয়। কিন্তু, গেরুয়া শিবিরের দাবি, কোনও কারণ না দেখিয়েই সেই সভা বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ ছিল, 'এটা তো স্বাধীন রাষ্ট্র। একটি আবেদন কোনও কারণ না দেখিয়েই বাতিল করে দেওয়া হয়।' সেই সময় রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছিল, এই উত্তরগুলি কম্পিউটার জেনারেটেড।
এরপর বিচারপতি বলেছিলেন, ‘সভার অনুমতি দিতেই হবে। তবে এক্ষেত্রে শর্তাবলী ঠিক করে দিতে পারবে পুলিশ।’ সিঙ্গল বেঞ্চের অনুমতির পর তড়িঘড়ি প্রস্তুতি শুরু করেছিল গেরুয়া শিবিরও। কিন্তু, এই সভা ঠেকাতে এবার নতুন করে আদালতের দরজায় কড়া নাড়ল রাজ্য।