সোমবার এসএসসির রায় বেরোনোর পর, মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অভিযুক্তদের জামিন মামলার। শুনানিতে মুখ্য সচিবের ওপর চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ২ বছর আগে তদন্তকারী সংস্থা মুখ্যসচিবের কাছ থেকে অনুমোদন পত্র চেয়েছে। কিন্তু তা জমা তো পড়েনি, এমনকি অনুমোদন পত্র দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্তও জানানো সম্ভব হয়নি মুখ্যসচিবের।
যদিও শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, নির্বাচনের জন্য কমিশনের নিয়মাবলীর মধ্যে বিষয়টি পড়ে যাওয়ায় মুখ্যসচিব অনুমোদন পত্র তৈরি করতে পারেননি। ক্ষুব্ধ বিচারপতি বাগচী জানান, দেড় মাসে মুখ্যসচিবের একটা অনুমোদন পত্র তৈরি করার সময় হচ্ছে না! নির্বাচন কমিশনের নিশ্চই নির্বাচনে নির্দিষ্ট ভূমিকা আছে। তবে আদালত তো নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে কিছু করতে বলছে না। তাহলে সমস্যা কোথায়? বিচারপতির আরও মন্তব্য, রাজ্যের একজন উচ্চপদস্থ অফিসার এভাবে যুক্তি দেখিয়ে নিজের দায় এড়াচ্ছেন? আজ বলছেন নির্বাচন কাল বলবেন অন্য কাজ আছে। ক্রিমিনাল কোর্টের এত সময় কোথায়? সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদীও জানান, অনুমোদন পত্র পেলেই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। নিয়মের বন্ধনে আমাদের হাত বাঁধা। ট্রায়ালও চলছে শ্লথ গতিতে।
দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, মুখ্যসচিব এর হলফনামায় খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। মুখ্যসচিবকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আদালত দশদিন সময় দিল। তারপরেও যদি মুখ্য সচিব অনুমোদন পত্র না জমা দেন, সেক্ষেত্রে রুল ইস্যুর হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২ মে।
জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ-এর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় সিবিআই অনুসন্ধান হোক। অনুসন্ধানের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানান বিচারপতি।
পাহাড় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন মেনে আবেদন করেছিল রাজ্য। রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ, শুক্রবার তারই রায়দান হল। রায় দান করতে গিয়ে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ জানান, রাজ্যের আবেদনের কোনও গুরুত্ব নেই। সিবিআই অনুসন্ধান রিপোর্ট দেওয়ার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। আপাতত সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
সমতলের ধাঁচে এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ পাহাড়েও। সম্প্রতি জিটিএ তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআইকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অভিযোগ ২০১৯ সালে আপার প্রাইমারিতে ৩১৩ জন ও প্রাইমারিতে ১২১ জন শিক্ষক নিয়োগ হয়। যেখানে ভলেন্টিয়ার শিক্ষককে স্থায়ীকরণ করা হয়। অভিযোগ, এই নিয়োগ কোনও নিয়ম না মেনেই হয়েছে। এমনকি বহু এমন ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা কখনও ভলেন্টিয়ার শিক্ষকই ছিলেনই না। ইতিমধ্যেই ওই ৩১৩ জন শিক্ষকের তালিকা সিএন-এর হাতে ওই তালিকায় এরকম দুইজনের নাম উঠে আসছে।
ওই তালিকার ৮৩ নম্বর রয়েছে কেশব রাজ শর্মার নাম যিনি ওই ভলেন্টিয়ার শিক্ষক নিয়োগের ভেরিফিকেশন প্রসেসের সদস্য। অভিযোগ এই ব্যক্তি কখনও কোনও স্কুলে ভলেন্টিয়ার এর শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেননি। এমনকি পাহাড়ের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা দল যে দলটি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ দল নামে পরিচিত ওই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের আত্মীয়।
ঘটনায় অপর একজনের নাম উঠে আসছে, যার নাম সঞ্চাবির সুব্বা। অভিযোগ এই ব্যক্তি কোন স্কুলে প্যারা টিচার হিসেবে কাজ করেনি, এমনকি তার বিএড ডিগ্রিও নেই। এছাড়া এই ব্যক্তি বর্তমানে জিটিএ শিক্ষা বিভাগের ডেপুটি চিফ এক্সজিউটিভ। ফলে সে কিভাবে জিটিএ ৩১৩ জন শিক্ষক নিয়োগ তালিকায় এল তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে উঠছে প্রশ্ন।
রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় আজ, শুক্রবার তৃতীয় চার্জশিট পেশ করতে চলেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, তৃতীয় চার্জশিটে ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসের নাম থাকার সম্ভাবনা। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নগদ রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ৩৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের অনুমান জ্যোতপ্রিয়র সেই অর্থ এজেন্ট মারফত নগদে বিশ্বজিতের কাছে পৌঁছে যেত। এরপর তিনি সেই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে দিতেন। চার্জশিটে এই বিষয়ে উল্লেখ থাকতে চলেছে। এছাড়া বিশ্বজিৎ দাসের সোনার ব্যবসা ছাড়াও একাধিক ব্যবসার হদিশ মিলেছে নতুন করে, সেই সমস্ত বিষয় উল্লেখ করা থাকবে চার্জশিটে।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল ইডি। সেখানে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা রেশন দুর্নীতি মামলায় বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে ইডি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে। ইডি-র দাবি, সেই টাকা শঙ্কর আঢ্যের নামে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সেই সূত্রেই শঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। শঙ্করের নামও দ্বিতীয় চার্জশিটে উল্লেখ করে ইডি। এবার তৃতীয় চার্জশিটে জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসের নাম থাকবে বলেই খবর।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর ইডি। শুক্রবার সকালে থেকে কলকাতায় চলছে ইডির ম্য়ারাথন তল্লাশি। লেকটাউন সহ ৫ জায়গায় চলছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশি। জানা গিয়েছে, এদিন চেতলায় বিশ্বরূপ বসু নামক এক ব্য়বসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পরিবহন ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত তিনি। সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার 'মিডলম্য়ান' অর্থাৎ প্রসন্ন রায় ঘনিষ্ঠ এই বিশ্বরূপ বসু।
ইডি সূত্রে খবর, এদিন চেতলার ১৭৮ নম্বর পিয়ারী মোহন রায় রোডের বাড়িতে ছিলেন না বিশ্বরুপ বসু। সেখানে তাঁর দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্য়মে জানা যায়, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন বিশ্বরূপ বসু। অন্যদিকে চেতলা লকগেটের কাছে বিশ্বরূপ বসুর আরেকটি ফ্ল্যাট পাওয়া গিয়েছে। যদিও সেই ফ্ল্যাটটি তালা বন্ধ অবস্থায় ছিল। সেখানেও তাঁর বেশ কয়েকজন আত্মীয়কে পাওয়া গিয়েছে। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকেরা। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর প্রসন্ন কুমার-এর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বরূপ বসুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন ইডি আধিকারিকরা।
এরপর প্রসন্ন কুমার রায়ের সূত্র ধরে এস কে ঝুনঝুনওয়ালা ওরফে সত্যেন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার সন্ধান পান ইডি আধিকারিকেরা। এদিন সকালে ইডি আধিকারিকেরা তাঁর লেকটাউন বিরাটি অঞ্চলের বাড়িতে পৌঁছে যায়। সেখানে তাঁকে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে নিয়ে তাঁর ভাই বীরেন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার বাড়ি এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বিরাটি ৪ নম্বর মহাজাতি অঞ্চলের গৌরীপুর রোডের বাড়িতে যান ইডি আধিকারিকরা। সকাল ন'টা থেকে সেখানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি আধিকারিকেরা।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে তৎপর ইডি। গত বৃহস্পতিবার শাহজাহান ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বাড়ি সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সেই তল্লাশি অভিযানে বেশকিছু নথি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া নতুন বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে তিনটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থারা আধিকারিকরা। অভিযোগ, ওই গাড়িগুলি শাহজাহান ঘনিষ্ঠ মোসলেম শেখের গ্যারেজে রাখা ছিল।
সূত্রের খবর, বাজেয়াপ্ত গাড়িগুলির মধ্যে একটি শেখ শাহজাহানের, একটি গাড়ি তাঁর ভাইযের এবং অপর গাড়িটি এক ব্যবসায়ীর। এরপরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য মোসলেম শেখকে তলব করে ইডি। সেই তলবে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন মোসলেম শেখ। সেখানে তাঁকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। এরপর শনিবার তাঁকে ফের তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই তলবে সাড়া দিয়ে শনিবার সকালে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন মোসলেম শেখ। আগামী দিনে এই দুর্নীতির তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার।
প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মেরুন রঙের ডায়েরি থেকে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে ইডির কাছে। সূত্রের খবর, এই মেরুন ডায়েরিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পক্ষ থেকে অভিজিৎ দাসকে দেওয়া অর্থের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এছাড়াও, এই ডায়েরিতে হিতেশ চন্দক এবং অন্যান্য মিল মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া যাবতীয় অর্থের হিসাব রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, মেসার্স অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডের অন্যতম ডিরেক্টর হিতেশ চন্দক জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে তাঁর প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসকে অর্থ দিতেন। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক কাজের নাম করে মিল মালিকদের কাছ থেকে অর্থ চাওয়া হতো। অন্যদিকে, হিতেশ চন্দক সহ অন্যান্য মিল মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া নগদ অর্থ আবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাতে তুলে দিতেন অভিজিৎ দাস।
সম্প্রতি রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সেই তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার হয় মেরুন রংয়ের একটি ডায়েরি। এরপর সেই ডায়েরির রহস্য উন্মোচন করার জন্য একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিজিৎ দাসকে। তার বয়ানের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকেও। অবশেষে সেই মেরুন ডায়েরির রহস্যভেদে সমর্থ হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগামী দিনে রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে আর কোন কোন তথ্য উঠে আসে, সেটাই এখন দেখার।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ফের গ্রেফতার ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়ে তাঁকে। এরপর আজ, বৃহস্পতিবার সকালে প্রসন্ন কুমার রায়কে মেডিক্যাল চেকআপ করাতে নিয়ে যান ইডি আধিকারিকেরা। মেডিক্যাল চেকআপ করানোর পর তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।
জানা গিয়েছে, এর আগে এই একই মামলায় সিবিআই প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ‘নিয়োগ দুর্নীতির অন্য়তম মিডলম্যান’। এরপর চলতি সপ্তাহের সোমবার প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় ডাকা হয়েছিল ইডি দফতরে। সেখানে তাঁকে দিন-রাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।
গত জানুয়ারি মাসে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। প্রসন্ন রায়ের নিউটাউনের অফিস থেকে একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। সেই নথিপত্রের ভিত্তিতেই প্রসন্ন রায়কে ইডি দফতরে তলব করা হয়েছিল।
এবার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকা সত্ত্বেও হয়নি অপারেশন। এমনই অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালে সরব হন দীপালি দত্ত ও তাঁর ছেলে। অভিযোগ, বারংবার অপারেশনের কথা বলার পরেও সৌরভ দাস নামে এক ফিজিওথেরাপিস্ট করেননি সেই অপারেশন।
ওই ফিজিওথেরাপিস্ট জানান, উক্ত হাসপাতালে অপারেশন দেরি করে হবে। তাই সুশান্ত বাবু তাঁর মায়ের অপারেশন বাইরের এক প্রাইভেট নার্সিংহোমে করিয়ে নিতে পারেন। অপর দিকে কাল্লা হাসপাতালে ভর্তি দীপালি দত্ত জানান, ডাক্তারবাবু তাঁকে দেখে যাচ্ছেন। আর বলছেন অপারেশনের লাইন অনেক আছে। তাই দেরি হবে। ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। পরে আবার আসবেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে, ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডের সোনপুর প্রজেক্টের কর্মী সুশান্ত বাবু তাঁর মাকে কাল্লা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কয়লা খনি শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য কেন্দ্র সরকারের এই সেন্ট্রাল হাসপাতাল। সেখানে অপারেশনের দেরি হওয়ার নাম করে বাইরের নার্সিংহোমে অপারেশন করানোর কথা কীভাবে বলেন হাসপাতাল কর্মী?
যদিও সুশান্ত বাবু জানান, তিনি তাঁর মায়ের অপারেশন এখানে করাবেন না আর। তবে এই দুর্নীতির শেষ দেখে ছাড়বেন। বিষয়টি জানানো হয়েছে ইসিএল-এর কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালের সিএমও প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও সিএমও জানান, তাঁর হাসপাতালের ডাক্তারদের বাইরে চিকিৎসা করার অনুমতি নেই। তাঁর কর্মী ফোনে কি অফার দিচ্ছেন সেটা সেই কর্মীর ব্যাপার। তবে ইসিএল-এর হাসপাতালের কর্মীরা কোনরকম চক্র তৈরি করে ব্যবসা করছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ফের গ্রেফতার ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়ে তাঁকে। এর আগে এই একই মামলায় সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ‘নিয়োগ দুর্নীতির অন্য়তম মিডলম্যান’।
জানা গিয়েছে, সোমবার প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় ইডি দফতরে ডাকা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে দিন-রাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, এই প্রসন্ন রায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গত জানুয়ারি মাসে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। প্রসন্ন রায়ের নিউটাউনের অফিস থেকে একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। সেই নথিপত্রের ভিত্তিতে প্রসন্ন রায়কে ইডি দফতরে তলব করা হয়েছিল। সেই মত সোমবার ইডি দফতর যান তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে ইডির স্পেশাল কোর্টে পেশ করা হবে বলে সূত্রের খবর।
পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। সমাধানের নামে দুর্নীতি হয়েছিল, উঠেছিল এমনই অভিযোগ। জানা গিয়েছিল, পাড়ায় সমাধানের রেকমেন্ডেশনে একাধিক শিক্ষক বদলি করা হয়েছিল। তবে প্রশ্ন জেগেছিল, এই 'পাড়ায় সমাধান'-এর আইনি বৈধতা কী? কাদের সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষকদের বদলি? আগেও জানতে চেয়েছিল আদালত।
সম্প্রতি এই মামলায় বোর্ডের কাছে আদালত হলফনামা চাইলে, সেই হলফনামায় বোর্ডের উল্লেখ, কমিশনের নির্দেশেই ওই সকল বদলি করা হয়েছিল। শুধু তাই না, সেখানে সই ছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীরও। এরপরেই সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২১৬ জন শিক্ষকের বদলিতে মন্ত্রীর এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিচারপতির মন্তব্য, বোর্ডের হলফনামায় প্রকাশ, পাড়ায় সমাধান থেকে আসা রেকমেন্ডেশনের আবেদন গৃহীত হয়ে বদলি হয়েছে কমিশনের নির্দেশে। এরপরেই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কমিশনকে এই নির্দেশ কে দিল? মিনিস্টার ইন চার্জই বা কীভাবে সই করলেন? সেই রেকর্ড আদালতের কাছে পেশ করতে হবে বলেই মন্তব্য করেন বিচারপতি। শুধু তাই না, মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি হয়েছে সামনে এসেছে। এরপর রাজ্য ঠিক করুক, এই মামলার তদন্ত রাজ্য তার হাতে রাখবে, নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দেবে আদালত।
যদিও সমস্ত প্রশ্নের উত্তরেই রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার কিছু সময় লাগবে। তাঁকে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করতে হবে, আর তার জন্যই সময় চাওয়া বলে জানান আইনজীবী কিশোর দত্ত। সোমবার পাড়ায় সমাধান মামলার শুনানির শেষে বিচারপতির নির্দেশ, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যকে এই মর্মে তাদের সব বক্তব্য পেশ করতে হবে আদালতে। এখন দেখার পরবর্তী শুনানিতে কোন দিকে মোড় নেয় পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির মামলা।
১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে ফের অ্য়াকশনে ইডি। শুক্রবার WBCS আধিকারিক শুভ্রাংশু মন্ডলকে হাজিরার নির্দেশ কেন্দ্রীয় এজেন্সির। শুক্রবার ফের তলব করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ নওদা পঞ্চায়েত এর সহায়ক রথীন্দ্র কুমার দেকেও। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদে কর্মরত ছিলেন শুভ্রাংশু। এদিন সিজিওতে একসঙ্গে শুভ্রাংশু ও রথীন্দ্রকে তলব করা হয়েছে। সূত্রের খবর, দুই সন্দেহজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরার সিদ্ধান্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের।
প্রসঙ্গত, চার জেলার ছটি জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নেমে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতিতে মুর্শিদাবাদের জেলা প্রকল্প আধিকারিক সঞ্চয়ন পানের দুটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে ইডি। তাঁর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল, বেশকিছু নথি সহ পুরোনো একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন। ইডি সূত্রে খবর, ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা জব কার্ড তৈরী করে ১০০ দিনের কাজের টাকা তছরূপ করা হয়েছে। এরপরেই ইডির স্ক্যানারে পড়ে যায় একের পর এক সরকারি আমলাদের নাম। পাশাপাশি মনরেগা প্রকল্পের দুর্নীতিতে মুর্শিদাবাদের পঞ্চায়েতের একসময়ের নির্মাণ সহায়ক রথীন্দ্রনাথ দের নামও।
কিছুদিন আগেই রথীন্দ্রনাথ দের বাড়িতে ইডির তল্লাশিতে উঠে আসে একাধিক তথ্য সহ গুরুত্বপূর্ণ নথি। উদ্ধার হওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস দেখে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। তদন্তে জানা গিয়েছে, রথীন্দ্রনাথ দের বোন ইতি চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছিল ১৭ লক্ষ টাকা। কেন এই বিপুল অর্থের লেনদেন? তা খতিয়ে দেখতে সিজিওতে আবার তলব করা হয় রথীন্দ্রনাথ দে ও তাঁর বোন ইতি চট্টোপাধ্যায়কেও। সেই জেরা-তল্লাশিতেই এবার নাম উঠে এসেছে WBCS আধিকারিক শুভ্রাংশু মণ্ডলের।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ফের অ্যাকশনে নামল ইডি। শুক্রবার সকাল থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের পক্ষ থেকে শহরের পাঁচ জায়গায় শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এই ব্য়বসায়ীর নাম রাজিব দে।
জানা গিয়েছে, নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিক উল্টোদিকেই পাঁচতলা বাড়ি রাজীব দে-র। সেখানে তল্লাশি অভিযান ইডি-র। পাশাপাশি, রাজীব দে-র শ্রীরাম কনস্ট্রাকশনের অফিসেও তল্লাশিতে নামেন ইডি আধিকারিকরা। তারপর রাজীব দের দাদা সঞ্জীব দে-কে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন ইডি আধিকারিকেরা। বাড়ির পাশেই রয়েছে আরও এক প্রপার্টি। সেখানে গিয়ে খতিয়ে দেখলেন ইডির আধিকারিকরা।
রেশ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার শঙ্কর আঢ্যর ঘনিষ্ঠ বিশ্বজিৎ দাস। মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি আধিকারিকেরা। ২৪ ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর বুধবার সকালে তাকে গ্রেফতার করে ইডি।
ইডি সূত্রে খবর, এই বিশ্বজিৎ দাসের ইম্পোর্ট ও এক্সপোর্ট এর ব্যবসা রয়েছে। সেখানে এই রেশন দুর্নীতির টাকা খাটানো হয়েছে। এর পাশাপাশি বাড়ির সামনে রাখা বিলাস বহুল গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে প্লাস্টিক উদ্ধার করে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। ইডি আধিকারিকদের অনুমান, বেশ কিছু নথি থাকতে পারে। রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই ১০ হাজার কোটি টাকার হদিশ পেয়েছে ইডি।
ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন আরও ১০ হাজার কোটি টাকার এখনও রয়েছে অর্থাৎ কুড়ি হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। আরও দশ হাজার কোটি টাকা কোথায় আছে তারই খোঁজে রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের তেড়ে ফুঁড়ে উঠেছে ইডি। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। গত কয়েকদিনের তদন্তে বেশ কিছু নতুন তথ্য হাতে আসে ইডির হাতে। তারপরেই এই তল্লাশি অভিযান বলে জানা গিয়েছে। কীভাবে টাকা পাচার করা হয়েছে, কোন কোন ফরেন এক্সচেঞ্জ সংস্থা যুক্ত রয়েছে তা নিয়ে খোঁজ খবর করছে ইডি।
এদিন বিধাননগর আইবি ব্লকে বিশ্বজিৎ দাসের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সকাল সাতটা কুড়ি মিনিট নাগাদ ইডি আধিকারিকের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এসে পৌঁছয় মেট্রোপলিটনে বিশ্বজিৎ দাসের ফ্ল্যাটে। বিশ্বজিৎ দাসের যে ফ্ল্যাটে প্রথমে সকালবেলা আধিকারিকরা গিয়েছিলেন ওই ফ্ল্যাটটি মূলত ভাড়া দেওয়া। মেট্রোপলিটনের সেই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে পাশেই আরও একটি ফ্ল্যাটে এলেন আধিকারিকরা। সেই ফ্ল্যাটে বিশ্বজিৎ না থাকলেও তাঁর বাড়ির কর্মীরা রয়েছে, ফলে তাঁদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন আধিকারিকরা। ইডি আধিকারিকদের অনুমান, যেহেতু শঙ্কর আঢ্য এবং বিশ্বজিৎ অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল, ফলে রেশন বন্টন দুর্নীতির ক্ষেত্রে যে ১০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই বিশ্বজিৎ-এর ফরেক্স কোম্পানির।
এদিন ইডির আধিকারিকরা বিধাননগর ছাড়াও মেট্রোপলিটন, মধ্য কলকাতা, পোর্ট, বাগুইআটি এলাকায় তল্লাশি চালায়। উল্লেখ করা যেতে পারে, ইডির আধিকারিকরা এর মধ্যে জেল হেফাজতে থাকা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং শঙ্কর আঢ্যকেও জেরা করেন এবং তাদের হাতে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেন।