প্রসূন গুপ্তঃ ইদানিং বেশ কিছু সেলিব্রেটি বেশ বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। আসলে একটা বয়স আসে যখন মানুষ একাকিত্বে ভোগেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বেশ বয়স অবধি ব্রহ্মচার্য পালন করেও শেষ পর্যন্ত বয়স কালে বিয়ে করছেন। এ নিয়ে অসংখ্য সিনেমাও হয়েছে। বাস্তবেও তাই কিন্তু অনেকেরই বিয়ের পর হয় স্ত্রী গত হয়েছে কিংবা স্বামী। সংসারে ছেলে-মেয়েও আছে, কিন্তু তারা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকে ফলত পিতা বা মাতাকে সময় দিতে পারে না। একাকিত্ব আসে তখনই। মনে হয় কেউ পাশে থাকলে ভালো হতো।
আমাদের আজকের চরিত্ররা কিন্তু ঠিক তা নয়। ক্রিকেটার অরুনলাল দিল্লি ছেড়ে ১৯৮৮ পাকাপোক্ত কলকাতাবাসী। স্ত্রীও বাঙালি ছিলেন। সান্তানাদিও ছিল তাঁদের। কয়েক বছর আগে অরুন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। পরে সুস্থ হয় ওঠেন। এবারে ওই ধরণের রোগে আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রী। সম্প্রতি অরুন ৬০-এ পৌছিয়ে ফের বিবাহ করলেন। কিন্তু তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের পথে গেলেন না। অরুন জানালেন যে, এবারে তাঁর নতুন স্ত্রী তাঁর পুরাতনের দায়িত্ব নেবেন।
পরের ব্যক্তি আশিস বিদ্যার্থী। হিন্দি ছবির ভিলেন। ইদানিং হাতে খুব বেশি ছবি থাকায় নিজেই খাওয়া দাওয়ার একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে বেশ রোজগারপাতি করছেন। তাঁরও বাঙালি বৌ ছিল। অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়ার কন্যা। বেশ ভালো বাংলা বলতেন, ছবিও করেছেন বাংলায়। হঠাৎ কি হলো স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেলো। সম্প্রতি ফের এক অহমিয়া কন্যাকে বিয়ে করেছেন ৬০ বছর বয়সে। অনেকেই বলছেন এটা ঠিক একাকিত্ব নয় বরং নতুন প্রেম। অনেকেই বলেন খ্যাতনামা অর্থবান আশিসকে ওই কন্যা বিয়ে করেছে টাকার কারণে।
তৃতীয় চরিত্র প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রী ও সাংসদ লক্ষণ শেঠ। স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে ২০১৬ তে। স্ত্রীও ছিলেন দলের নেত্রী ও প্রাক্তন হলদিয়া পৌরসভার চেয়ারপার্সন। স্ত্রীর সঙ্গে যথেষ্ট সখ্যতা ছিল। এবারে মঙ্গলবার ফের ৭৭ বছর বয়সে ফের বিয়ে করলেন। পাত্রী ৪২ বছরের মানসী দে। কর্পোরেট দুনিয়ায় মোটা মাইনের চাকরি করেন। এই বয়সে কেন বিয়ে, উত্তরে লক্ষণ একাকীত্বর দোহাই দিয়েছেন। অর্থবান কমিউনিস্ট ব্যবসায়ী ছিলেন লক্ষণ। আজকেও যথেষ্ট ধনী। একমাত্র সময় বলবে কেন এই বিয়ে!
প্রসূন গুপ্ত: সিনেমা জগৎ বা ক্রীড়া জগতের কেউ রাজনীতিতে আসতে পারবেন না, এমন কোনও আইন নেই। বরং যারা ভোটদাতা তাদের অবশ্যই রাজনীতির মঞ্চে তথা ভোটের লড়াইতে আসার অধিকার আছে। ইন্দিরা যুগ থেকে এযাবৎকাল সেই প্রথা চলে আসছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যারা পাবলিক ফিগার বা পরিচিত মুখ, তাঁরা কতটা নিজের ইচ্ছায় রাজনীতিতে আসছেন। একবারে স্বাধীনতার পর থেকে খুব একটা সেলিব্রিটিরা রাজনীতিতে আসতেন না। যদিও বিজ্ঞানী বা স্বনামধন্য চিকিৎসক অথবা আইনজীবীরা এসেছেন, যাঁরা অনেকেই তার আগে রাজনীতির সঙ্গে কোনই যোগাযোগ রাখেননি।
ইন্দিরার আমলে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রী নার্গিস দত্ত। এরপর সুনীল দত্তকেও আমরা মুম্বইয়ের এক লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতে সাংসদ তিনি এক সময়ে কেন্দ্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হন। এরই মাঝে অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহা, বিনোদ খান্না, গোবিন্দা, হেমা মালিনী, জয়াপ্রদা, জয়া বচ্চনরাও রাজনীতিতে এসেছেন। শত্রুঘ্ন সিনহা এবং সুনীল দত্ত ব্যতীত উপরে উল্লিখিত কাউকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করতে দেখা যায়নি। শত্রুঘ্ন অবশ্য বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, বর্তমানে তৃণমূল দলের লোকসভার সদস্য। বাংলা থেকে কয়েক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী দিল্লি রাজনীতি অথবা রাজ্য রাজনীতিতে এসেছিলেন বা আছেন। বাম আমলে অনিল চট্টোপাধ্যায় বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। মমতা সরকারে বাবুল সুপ্রিয় বা মনোজ তিওয়ারি বর্তমান মন্ত্রিসভায় আছেন, তেমন লোকসভা বা রাজ্যসভা অথবা বিধানসভায় তৃণমূল বা বিজেপির অসংখ্য সিনেমা জগতের মানুষ রয়েছেন।
এদের কাজ কী? নিশ্চিত জন প্রতিনিধি হিসেবে এলাকা বা রাজ্যের হয়ে কাজ করা। কিন্তু এখানেই বিতর্কের সৃষ্টি, পূর্ণ সময়ের রাজনীতিবিদ না হলে এলাকার কাজ করবেন কী করে? সিনেমার আকর্ষণ মারাত্মক। এই জগৎ থেকে বিকাশ রায় ছাড়া কেউই বিদায় নেয়নি। অর্থাৎ অনেকেরই রাজনীতি দ্বিতীয় প্রেমে পরিণত হয়েছে। বেচারা এলাকার মানুষ, সেলিব্রেটি দেখে কি আর চিরকাল পেট ভরে। সর্বোচ্চ নেতারা জানেন কি?
একি! বুধবার সকাল থেকে তারকা-সহ আম নেটিজেনের ফেসবুকে (Facebook) ফলোয়ারের সংখ্যা (Follower) কমে যাওয়ায় হুলুস্থুলু কাণ্ড। অনেক তারকাকে দেখা গিয়েছে কীভাবে, কতটা তাঁর ফলোয়ার কমেছে, প্রোফাইলের সেই স্ক্রিনশট শেয়ার করতে। লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার, এমনকি যাঁদের ফলোয়ার সংখ্যা কোটি, সেখান থেকে ৮-৯ হাজারের ঘরে এসে দাঁড়িয়েছিল। কেবল বলি-টলি-হলি তারকাদের ক্ষেত্রে নেওয়, স্বয়ং মার্ক জুকারবার্গেরও একই দশা হয়েছিল। সকাল থেকে এই 'বিপত্তি'র জন্য ফেসবুককে কম গালমন্দ খেটে হয়নি।
কিন্তু বেলা একটু বাড়তেও স্বস্তির খবর। কোনওরকম পরিশ্রম ছাড়া ফের আগের ফলোয়ার ফিরে পান তারকা থেকে আম নেটিজেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাইরে থেকে সংখ্যা কম দেখালেও নিজেদের প্রোফাইলে ঢুকলে পুরোনো সংখ্যাই দেখতে পাচ্ছিলেন প্রোফাইল মালিকরা। এমনটাই মেটা সূত্রে খবর।
তবে প্রথম দিকে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন কম্যুনিটি স্ট্যান্ডার্ডের দোহাই দিয়ে ফলোয়ার কমিয়েছে জুকারবার্গের সংস্থা। অনেকেই মনে করছিলেন, কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমনটা ঘটেছে। পরে জানা যায়, ফেসবুকে নতুনত্ব কিছু করতে গিয়েই এমনটা হয়েছে। যবে থেকে নামবদল হয়ে 'মেটা' হয়েছে, তবে থেকে কিছু না কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা চলছে।