প্রসূন গুপ্তঃ নীতীশ কুমারকে পিছনে ফেলে জোটের অন্যতম আইএসএফ ডিগবাজি খেলো একেবারে ভোটের প্রান্তে এসে। আইএসএফের প্রধান নওশাদ সিদ্দিকী নাকি তৃণমূল বিরোধীদের অন্যতম মুখ ছিলেন ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে। তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চাইছেন। তাঁর এই বার্তায় বিজেপি-কংগ্রেস এবং বাম তিন পক্ষই খুশি হয়েছিল। অনেকটা সাগরদিঘি মডেলে ভোটটি করতে চাইছিল বিরোধীরা। শুভেন্দুর ধারণা ছিল, নওশাদ দাঁড়ালে সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে ফায়দা বিজেপির। ওই কেন্দ্রে প্রায় ৪৫% মুসলিম ভোট আছে এবং ওই মোতাবেক চললে হিন্দু ভোটের বড় অংশ নিয়ে বিজেপি জিততেই পারে। ফলত বিজেপি গড়িমসি করেছিল প্রার্থী দিতে (এখনও ওই অবস্থায়)। অন্যদিকে বাম-কংগ্রেস নওশাদ দাঁড়ালে প্রার্থী দিতই না। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার নওশাদ জানালেন যে, দলের নির্দেশে তিনি দাঁড়াচ্ছেন না। এই খবরে অথৈ জলে পড়েছে বিরোধীরা।
একই সাথে জোট নিয়ে প্রবল জটিলতা বাম জোটের মধ্যে রয়েছে। আইএসএফ যত্রতত্র প্রার্থী দিয়ে বিপাকে ফেলেছে সিপিএমকে। ইতিমধ্যে কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি তুলোধনা করছে নওশাদকে। তিনি বলেছেন যে, এই দলটি নাকি বিজেপির সঙ্গে 'সেটিংয়ে' রয়েছে যা ধরা যায়নি। নওশাদকে প্রজেক্ট করা মহম্মদ সেলিম সরাসরি না বললেও প্রকারান্তে বলেছেন যে, আইএসএফ সঠিক ভাবে চলছে না। অন্যদিকে বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে নওশাদের সেটিং এর তত্ত্ব তুলেছে। এখানেই শেষ নয়, বহু কেন্দ্রে বাম ও কংগ্রেসের জোটে জোট পাকিয়েছে। কোচবিহার থেকে পুরুলিয়াতে।
তৃণমূল সুপ্রিম আগেই জেনেছিলেন, এই রাজ্যে তারাই 'ইন্ডিয়া'। এবারে কংগ্রেস ও বামেরা এই তথাকথিত ইন্ডিয়া জোট নামক জট থেকে বেরিয়ে জানাচ্ছে, এই রাজ্যে কোনও ইন্ডিয়া জোট নেই। কাজেই ভোটের দিন দশেক আগে পশ্চিমবঙ্গের ইন্ডিয়া জোটের গঙ্গা প্রাপ্তি হল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই লড়াই হবে তৃণমূল বনাম বিজেপির, বাকিরা ভোট কাটুয়ার ভূমিকাতেই থাকবে।
প্রসূন গুপ্ত: বিরোধী জোটের নিঃসন্দেহে সবথেকে শক্তিশালী দল কংগ্রেস। তবে এই কংগ্রেস ইন্দিরা বা রাজীবের কংগ্রেস নয়। ইন্দিরা গান্ধী বিরোধীদের আমলই দিতেন না ব্যতিক্রম একমাত্র সিপিআই। সিপিআই পাশে না থাকলে ইন্দিরার রাজনৈতিক জীবন কঠিন হতো ১৯৬৯ এ , যখন ইন্দিরা দলটাকেই চটিয়ে নব কংগ্রেস গঠন করলেন। তখন পুরাতনী কংগ্রেসি বা সিন্ডিকেট কংগ্রেস সরে যাওয়ার পরে ইন্দিরার সরকার পরে যাচ্ছিলো কিন্তু বন্ধু দেশ রাশিয়ার নির্দেশে সিপিআই কংগ্রেসকে সহযোগিতা করে এবং ৬৯ থেকে ১৯৭১ অবধি সরকার চালান ইন্দিরা। এরপর তো জোট ইত্যাদি হয়েও ভেঙে যায়। ফের ক্ষমতায় ইন্দিরা। ইন্দিরার মৃত্যুর পরে রাজীব গান্ধী ক্ষমতায় আসেন এবং প্রবল শক্তিশালী সরকার পান। কিন্তু পরেরবারের ভোটে রাজীব নিজে জিতলেও কংগ্রেস ক্ষমতা হারায়। ফের জোট ফের পতন। শেষ পর্যন্ত ১৯৯১ তে রাজীবের হত্যার পরে ক্ষমতায় আসে নরসিমা রাওয়ের সরকার। এবারে কিন্তু বামেদের ভোটের দরকার হতো পার্লামেন্টে , যা রাও পেয়েছিলেন।
আজকের কংগ্রেস কিন্তু জোট ছাড়া ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আজকের কংগ্রেস 'রাহুলের কংগ্রেস'। যদিও মলিকার্জুন খাড়গে বলে এক বৃদ্ধ আছেন নাম কি বাস্তে সভাপতির আসনে। দল চালাচ্ছেন কিন্তু রাহুল গান্ধী। সাম্প্রতিক ভোটে তিন রাজ্যে পরাজিত হওয়ার পরেও রাহুলই শেষ কথা। ইতিমধ্যে একটি জোট হয়েছে "ইন্ডিয়া' যেখানে ২৬ টির বেশি বিরোধী দল আছে। সব দলেরই ভোটে আসন নিয়ে আলোচনা রয়েছে। কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে বর্তমানের এই জোটের ডিএমকে ও আরজেডি বাদে প্রায় প্রতি দলের বিরুদ্ধে গত ১০/১৫ বছরে রাহুলের কংগ্রেস লড়াই করেছে। এই জোট বৈঠকে যা হোক না কেন, রাহুল অনেক বেশি ভরসা করছেন সিপিএমের উপর। অথচ এই সিপিএমের ক্ষমতা কমে এখন কেরালায় গিয়ে ঠেকেছে। আবার ওই কেরালায় সিপিএম কংগ্রেস পরস্পরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। রাহুল এই পরিসংখ্যান জানা সত্বেও সিপিএমের উপরে কেন এতো ভরসা রাখছেন তা বোঝা দুস্কর। এই ভরসার স্থান থেকে কংগ্রেস /বাম জোটের নিদারুন পরাজয় হয়েছে বাংলায় এবং ত্রিপুরায় | তবু রাহুল পুরাতন স্থানেই অবস্থান করছেন। জোটের মধ্যে তাই সৃষ্টি হয়েছে উপজোট যার নাম জিঞ্জার গ্রুপ।
২০২৪ সালেই লোকসভা নির্বাচন। ফলে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। আর এরই মধ্যে মঙ্গলবার নয়া দিল্লির অশোকা হোটেলে বৈঠকে বসল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠক। আর এদিন এক চমক দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসাবে প্রস্তাব দিলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম। আর এতে সম্মতি জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মঙ্গলের বৈঠকে মূলত ইভিএম, আসন ভাগাভাগি, যৌথ প্রচার পরিকল্পনা, ইতিবাচক এজেন্ডা তৈরি করার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের চতুর্থ বৈঠক সম্পন্ন হল। এদিন দুপুর ৩টের পরই শুরু হয় ইন্ডিয়ার বৈঠক। এতদিন বিরোধী জোটের মুখ হিসাবে রাহুল গান্ধীকেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু এদিন বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে সরাসরি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম প্রস্তাব করেন মমতা। তাঁকে সমর্থন করলেন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। তবে মমতার এই প্রস্তাবে বাকি দলগুলি খুব একটা উৎসাহ দেখায়নি। যদিও এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি মঙ্গলবারের জোট বৈঠকে। মমতার এমন প্রস্তাবের পরই খাড়্গে জানালেন, 'পরে আলোচনার মাধ্যমে তা ঠিক হবে।'
জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হলেও তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে ডেডলাইন বেঁধে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ এর মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে আসন সমঝোতার বিষয়টি। তৃণমূল নেতৃত্ব আজ এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্রের খবর। আগামী ২০ দিনের মধ্যেই ফের বিরোধী জোটের পঞ্চম বৈঠক বসতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
আর মাত্র কয়েক মাস। এরপর বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই ফের একবার একজোট বিরোধীরা। ইতিমধ্যে 'ইন্ডিয়া' জোট তৈরি করে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শক্তিগুলি। রণকৌশল ঠিক করতেই আজ, মঙ্গলবার ফের একবার বৈঠকে 'ইন্ডিয়া' জোটের সদস্যরা। দিল্লিতে এই বৈঠক হবে। অন্যদিকে, নজিরবিহীন ভাবে একের পর এক প্রায় ৭৮ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রাজ্যসভা এবং লোকসভার বিরোধী সাংসদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর এই ঘটনার পরেই বিরোধী সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গে। যেখানে একাধিক বিরোধী সাংসদ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এদিনের 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই জোটে মোট ২৮ টি বিজেপি বিরোধী দল যোগ দিয়েছে।
ইতিমধ্যে এই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এছাড়াও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, লালু প্রসাদ যাদব সহ একাধিক বিরোধী দলের নেতারা এদিনের বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন বলেই খবর। কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী উপস্থিত থাকতে পারেন।
প্রসূন গুপ্তঃ এই রাজ্যে সিপিএমের কোনও বিধায়ক বা সাংসদ নেই। ত্রিপুরাতে বিধায়ক আছে, কিন্তু সাংসদ নেই। আবার কেরলে দুইই আছে, কিন্তু কংগ্রেস বিরোধিতায়। অন্যদিকে, আজকের বামফ্রন্ট বলতেও তেমন কিছু নেই অর্থাৎ যা কিছু সিপিএম এবং সিপিআইয়ের। এবারে যদি ভারত জুড়ে সত্যিই কোনও জোট যার নাম 'ইন্ডিয়া' হয় তবে সিপিএম পরবে নানান সমস্যায়।
প্রথমত, এই ইন্ডিয়া জোট নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য একই সুরে কথা বলছে না। দিল্লিতে সিপিএমের সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি যেমন নিয়মিত ভাবে এই ইন্ডিয়ার বৈঠকগুলোতে অংশ নিচ্ছে তেমনটি কিন্তু রাজ্যের সম্পাদক সেলিমের ভূমিকা নয়। সেলিম রাজ্য প্রশাসনে থাকা তৃণমূলের ঘোরতর বিরোধী। প্রচার মাধ্যমের সামনে শুভেন্দু অধিকারী আর সেলিমের বক্তব্যের কোনও ফারাক নেই। তার উপরে আবার আইএসএফের সঙ্গে সেলিমের যথেষ্ট মধুর সম্পর্ক। এ রাজ্যে সেলিম থেকে শুরু করে দলের বাকি নেতাদের অবস্থান একই রকম। অবিশ্যি সেটাই রেজিমেন্টেড পার্টির বরাবরের নিয়ম তো বটেই।
সিপিএমের সাথে কেরালায় কোনও ভাবেই কংগ্রেসের জোট বাঁধা সম্ভব নয়। সিপিএম তো চাইছেই না, উল্টোদিকে কংগ্রেস যদি কোনও ভাবে জোটের কথা ভাবেও তবে দল ভেঙে যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে দলের কর্মী সমর্থকদের ত্রিপুরার মতো বিজেপিতে চলে যাওয়ার সম্ভবনা থাকবে। পশ্চিমবঙ্গে না তৃণমূল না বামেরা এক হতে পারে। মনে রাখতে হবে তৃণমূলের জন্মই সিপিএমের বিরোধিতা করে। যদিও একা বা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে এ রাজ্যে লড়লে কংগ্রেসের সুবিধা হয়তো হতে পারে কিন্তু সিপিএমের পকেটে শূন্যই জুটবে। সিপিএমে এখন যে ৭% ভোট অবশিষ্ট আছে তারাও বেরিয়ে যাবে যদি তৃণমূলের সঙ্গে জোট হয়।
সমস্ত বিষয়টি বোঝা যাবে ১৯ ডিসেম্বর, পরবর্তী 'ইন্ডিয়া'র বৈঠকে। তবুও খবর যতটুকু আপাতত দিল্লি কংগ্রেস চাইছে তৃণমূলের সঙ্গেই সম্পর্ক পোক্ত করতে। প্রয়োজনে শুধু ত্রিপুরাতেই এই দলের জোট অটুট থাকবে লোকসভা নির্বাচনে।
প্রসূন গুপ্তঃ গো-বলয়ের তিন রাজ্য হারানোর পরে কংগ্রেস অনেকটাই নমনীয়। রাহুল গান্ধী চাইছেন যা ভুল হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে, এবারে ছোট্ট দলগুলিকেও 'ইন্ডিয়া' জোটে সামিল করতে হবে। যদিও বিগত তিন রাজ্যের ভোটের সমীকরণে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের ভোট রাজস্থানে বেড়েছে, ঝাড়খণ্ডে সামান্য ফারাক বিজেপির সঙ্গে কিন্তু ভোট খুব না কমলেও মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ভোট শতাংশ বাড়িয়েছে। এর কারণ খতিয়ে দেখা যাচ্ছে ছোট দলগুলি ভোট কেটে নেওয়াতে অনেক ছোট দলের বিধায়ক হয়েছে এবং কংগ্রেসের আসন কমেছে। কাজেই দেশের আঞ্চলিক দলগুলিই নয় ছোট দলগুলিকেও সঙ্গে নিতে হবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে, ধারণা কংগ্রেস হাইকমান্ডার। এই নিয়ে অবিশ্যি আগামী ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর দিল্লিতে জোটের পরের সভা, যেখানে লোকসভার আসন সমঝোতার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
অন্যদিকে শোনা গেল, সোমবার ৪ ডিসেম্বর রাহুল গান্ধীর সঙ্গে নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক কথা হয়েছে। ঠিক হয়েছে বহরমপুর, দক্ষিণ মালদহ এবং রায়গঞ্জ আসন তিনটি তৃণমূল, কংগ্রেসকে ছাড়তে পারে। যদিও কংগ্রেস আরও একটি আসন দাবি করেছিল কিন্তু চতুর্থ আসন নিশ্চিত তৃণমূল আর ছাড়বে না।
প্রশ্ন থাকতে পারে তৃণমূল কেন কংগ্রেসকে আসন ছাড়বে? এই কংগ্রেসের রাজ্য নেতারা সারা বছর তৃণমূলের চরম বিরোধিতা করে থাকে। কিন্তু জানা যাচ্ছে সম্প্রতি 'মহুয়া কাণ্ডে' কংগ্রেসের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলকে খুশি করেছে। অন্যদিকে সম্প্রতি তেলেঙ্গানা জয়ের পরে সেখানকার নব্য মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি নাকি তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে মমতাকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। উত্তরবঙ্গে আগে থেকে অনুষ্ঠান ঠিক থাকায় মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারেননি, কিন্তু প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যসভার পরিষদীয় নেতা ডেরেক ও'ব্রায়ানকে পাঠিয়েছিলেন। ডেরেক, রাহুলের খুবই সুসম্পর্ক। ডেরেককে সোনিয়া, রাহুল তাদের চাটার্ড ফ্লাইটে হায়দ্রাবাদে নিয়ে যান এবং সেখানে কংগ্রেসের তরফ থেকে ডেরেককে যথেষ্ট সম্মান জানানো হয়। এই ধরণের ঘটনাগুলিতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল অনেকটাই কাছাকাছি। চূড়ান্ত রূপ নেবে আগামী ১৮ থেকে ২০র সভায়।
প্রসূন গুপ্ত: ৬ ডিসেম্বর পূর্বনির্ধারিত ছিল 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠক। স্থান, দিল্লির কংগ্রেস সভাপতি মালিকার্জুন খার্গের সরকারি ভবন। সাম্প্রতিক হয়ে যাওয়া ভোটের আগে এই বৈঠকের তেমন কোনও তাপ উত্তাপ ছিল না কিন্তু হঠাৎই উদ্যোগ নিয়েছেন খার্গে। শোনা গিয়েছে, তিনি নিজে ফোন করে জোট সঙ্গীদের নতুন করে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, তিনি বা অভিষেক যাচ্ছেন না এই বৈঠকে কারণ তাঁকে নাকি জানানোই হয় নি। অবিশ্যি তিনি কলকাতাতেও থাকছেন না, যাচ্ছেন উত্তরবঙ্গে। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে কোনও এক অনুষ্ঠানে রয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে তবে কি তৃণমূল থেকে কোনও প্রতিনিধিই থাকবে না।খবর যতদূর, থাকতে পারেন হয়তো ডেরেক ও'ব্রায়ান বা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এঁরা দুজনেই এখন শীতকালীন অধিবেশনের জন্য দিল্লিতে অবস্থান করছেন।
তিন গোবলয়ে পরাস্ত হওয়ার পর জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস এখন বেশ চাপে। কাজেই বুধবারের বৈঠকে এই নিয়ে বিস্তর আলোচনা হওয়ার কথা। অন্যদিকে, এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারেরও এই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার কথা। নীতীশ জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যের বিশেষ কাজ আছে। হয়তো প্রতিনিধি কেউ যেতে পারে একই সাথে অখিলেশের অবিশ্যি অন্য ক্ষোভ। মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনে কমলনাথের কোনও এক কথায় অখিলেশ অসম্মানিত। যদিও তিনি প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন সম্ভবত রামগোপাল যাদবকে। এছাড়া বাকি দলগুলি কি করবে তা বুধবারেই জানা যাবে। লক্ষ করার বিষয় আপ পার্টির প্রতিনিধি হিসাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কি করেন।
রাজনৈতিক উত্থান পতন থাকবেই, কিন্তু শরিকদের বক্তব্য এই হারিয়ে যাওয়া তিন রাজ্যের দায় কংগ্রেসের। ভোটের আগে কংগ্রেস এই পাঁচ রাজ্য নিয়ে কোনও সমঝোতার কথাই নাকি বলে নি শরিকদের সঙ্গে। বাস্তবিক ঘটনা এখনও পাঁচ মাস বাকি লোকসভা নির্বাচনের এবং এটাও বাস্তব উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের বড় অংশে বিজেপি প্রবল শক্তিধর কিন্তু এখন থেকেই যদি সদ্য তৈরী হওয়া জোটে কলহ লাগে, তবে তো ভোট কি দাঁড়াবে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।
মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনের নির্ঘন্ট ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এর মাঝেই প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। এদিকে ভোটের দিনক্ষণ সামনে আসতে ইন্ডিয়া জোটে ফাটল! টিকিট বণ্টন নিয়ে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে দড়ি টানাটানি অব্যাহত। মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৭ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা হবে ৩রা ডিসেম্বর। লোকসভা নির্বাচনের আগেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন যেন ইণ্ডিয়া জোট ও বিজেপির কাছে সেমিফাইনাল।
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টির (এসপি) মধ্যে জোটের সম্ভাবনা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশ সহ তিনটি রাজ্যের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। আসলে, মধ্যপ্রদেশের সাতটি আসনের মধ্যে যেগুলিতে সমাজবাদী পার্টি তাদের প্রার্থী দিয়েছে, কংগ্রেসও সেই আসনগুলির মধ্যে চারটিতে প্রার্থী দিয়েছে। এসপি আরও নয়জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। যে চারটি আসনে কংগ্রেস এবং সমাজবাদীপার্টি উভয়ই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে সেগুলি হল চিত্রাঙ্গী, মেহগাঁও, ভান্ডার এবং রাজনগর। গতবার চিত্রাঙ্গী ছাড়া তিনটি আসনেই জিতেছিল কংগ্রেস। ভোপাল এবং লখনউয়ের এসপি নেতৃত্বও ক্ষুব্ধ যে কংগ্রেসও ছতরপুর জেলার বিজাওয়ার থেকে প্রার্থী দিয়েছে, যেখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি জিতেছিল। যদিও এই আসন থেকে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি অখিলেশের দল।
মধ্যপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি প্রধান রামায়ণ সিং প্যাটেল বলেছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সব সম্ভাবনা শেষ। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের কিছু কথা হয়েছিল, কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল রবিবার। আমরা নিজেরাই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব এবং আগামী বছরের নির্বাচনেও ভাল পারফর্ম করব। অখিলেশ যাদবের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা একজন প্রবীণ নেতাও কংগ্রেস সম্পর্কে একই রকম মন্তব্য করেছেন এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অখিলেশের ঘনিষ্ঠ এক এসপি নেতা একটি বড় অভিযোগ করেছেন এবং বলেছেন যে কংগ্রেস বিজেপিকে হারাতে চায় না। তিনি বলেছেন যে সমাজবাদী পার্টি কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছে, কিন্তু তারা বিজেপিকে হারাতে জোট গঠনে আগ্রহী নয়। মনে হচ্ছে বিজেপি নয়, এসপিকে হারানোই কংগ্রেসের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, “মধ্যপ্রদেশে আমরা একাই নির্বাচনে লড়ব। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছিল এবং আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম ১০ টি আসন আমাদের চাই। কিন্তু কংগ্রেস আরও কম আসন রফা করে। তারপর হঠাৎ করে আমাদের না জানিয়ে কীভাবে প্রার্থীপদ ঘোষণা করল কংগ্রেস”? সমাজবাদী পার্টির আরেক নেতা বলেছেন, যে দল মধ্যপ্রদেশের ৩০ থেকে ৩৫টি আসনে প্রার্থী দিতে চলেছে। বিজাওয়ার আসন নিয়েই চিন্তায় রয়েছে দল। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস চরণ সিং যাদবকে সেই আসনের টিকিট দিয়েছে।
প্রসূন গুপ্তঃ এতো ঘটা করে সিপিএমের দেশজ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'তে উপস্থিত থেকে অনেক উপদেশ দিলেন। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন সীতারাম, তারপরেই যখন সমন্বয় কমিটি হলো তখনই সেই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলো সিপিএম। এখন শুধু এই নিয়ে প্রশ্ন নয় বিতর্ক হচ্ছে বিস্তর। তাদের ইঙ্গিত কেরালায় তারা কংগ্রেসের এবং বাংলায় তৃণমূলের বিরোধী কাজেই ওই সমন্বয় কমিটিতে নাকি তাদের প্রতিনিধি থাকলে জনতার কাছে ভুল বার্তা যাবে। কিন্তু এসব তো জোট গড়ার আগেই ভাবনার মধ্যে ছিল তবে এই জোট বৈঠকে যাওয়ার দরকার কি ছিল, উঠছে এমন প্রশ্ন।
এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের শক্তি বিলীন হয়ে গিয়েছে। ৩৪ বছর শাসনের পরে ১০ বছরের মাথায় বিধানসভা ভোটে তাদের অবস্থান শূন্য। লোকসভাতে এই রাজ্য থেকে বামেদের একজনও সাংসদ নেই। অন্যদিকে প্রায় একই অবস্থা অন্য প্রাক্তন বামদুর্গ ত্রিপুরাতেও। সেখানেও গত ভোটে বিরোধী হওয়ার যোগ্যতাও হারিয়েছে তারা। টিকে আছে কেরালাতে। আপাতত ওই রাজ্যের ক্ষমতায় বামেরা। বামেদের বিভিন্ন রাজ্যে প্রধান প্রতিপক্ষ একমাত্র ত্রিপুরায় বিজেপি। বাকি বাংলায় তৃণমূল এবং কেরালায় কংগ্রেস। সমস্যা তাদের এই দুই রাজ্য নিয়েই। কেরালাতে তাদের কংগ্রেসের সঙ্গে জোট মোটেই মেনে নেবে না সমর্থকরা। একই কথা বাংলাতেও। মূলত সিপিএমের বিরোধিতার জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলের উত্থান কাজেই তৃণমূলের আদি কর্মীরা যেমন মেনে নেবে না সিপিএমের সঙ্গে জোট, তেমনই সিপিএমের টিকে থাকা ভোটাররাও মেনে নেবে না তৃণমূলের সঙ্গে জোট। এই দুই রাজ্যেই জোট করলে আখেরে ক্ষতি সিপিএমের।
অবিশ্যি ব্যঙ্গক্তি আসছে তৃণমূলের তরফ থেকে। তাদের বক্তব্য, বিজেপির সঙ্গে আসল সেটিং সিপিএমেরই। আজ বাংলায় বিজেপির ভোট শতাংশের সিংহভাগই সিপিএমের। বিজেপির এই রাজ্যে নাকি কোনও দিনও ৬-৭ % বেশি ভোট ছিল না, তাহলে ৩৭/৩৮% ভোট তাদের বাক্সে পড়ছে কি ভাবে? একই সাথে তারা বলছে এতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির চাপ প্রতি বিরোধী দলের উপর অথচ সিপিএমের উপর কোনও চাপই নেই। তাদের বিস্ফোরক বক্তব্য, চিটফান্ডের জন্ম বাম জমানাতে এবং তাদের সেলিম সহ বহু নেতাকে ওই ব্যবসায়ীদের সাথে একই মঞ্চে বা অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে অথচ কি এমন ঘটনা যে, আজ অবধি সিপিএমের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকাও হলো না। রহস্যের এই সমস্ত উত্তর একমাত্র সিপিএমই দিতে পারবে।
শিয়রে লোকসভা ভোট। তার আগে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। কেন্দ্রীয় রাজনীতি থেকে বিজেপিকে হঠাতে এখন আদা-জল খেয়ে ময়দানে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। এই অবস্থায় রবিবার সিপিএম পলিটব্যুরো জানিয়ে দিল, তারা ইন্ডিয়ায় আছে। কিন্তু সমন্বয় কমিটিতে থাকবে না। রাজনৈতিক মহলের মতে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখার ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত হল দু দিনের সিপিএম পলিটব্যুরোর বৈঠকে।
সম্প্রতি ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, ১৪ নম্বর জায়গাটি ফাঁকা রাখা হয়েছে সিপিএমের জন্য। তা নিয়েই সিপিএমের অন্দরে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলেই খবর। দিল্লিতে এদিনের বৈঠক শেষে সিপিএম স্পষ্ট করেছে, জোট শক্তিশালী হোক তারা চায়। বিজেপি হঠাও লড়াইতেও তারা সামিল হবে। তার জন্য জোটকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তবে সিপিএমের আপত্তি জোটে সাংগঠনিক কাঠামোকে কেন্দ্র করে। সিপিএম মনে করে, তা সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে।
জোটে থাকলেও শুরু থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমন্বয় কমিটিতে সিপিএমের থেকে কেউ থাকুক, তাতে আপত্তির কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটি। পলিটব্যুরোতেও তার ভিন্নমত হল না। এমনিতেই আসন রফা নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা তুলেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এর আগেই তিনি জানিয়েছেন, সিপিএম চায় কেন্দ্রীয় ভাবে নয়, আসন সমঝোতা হোক রাজ্য ভিত্তিক।
দেশজুড়ে বেশ কিছু সঞ্চালক ও অনুষ্ঠান বয়কট করবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। বুধবার দিল্লির কো-অর্ডিনেশন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের বাসভবনে এই বৈঠকে হাজির ছিলেন ১৪টি দলের প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকে আগামী অক্টোবরে বিরোধী জোটের প্রথম কর্মসূচিও ঠিক করা হয়েছে।
ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের সংবাদমাধ্যমের একাংশ তাঁদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। তাই সেই সব সংবাদমাধ্যমকে বয়কট করবে এই জোটের নেতৃত্বরা। কোন কোন সঞ্চালক ও সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠান বয়কট করা হবে, সেই তালিকায় তাড়াতাড়ি জানাবে ইন্ডিয়া-জোটের সমন্বয় কমিটি।
বুধবার দিল্লিতে শরদ পাওয়ারের বাসভবনে দীর্ঘ আলোচনার পর সমন্বয় কমিটির প্রতিনিধিরা সিদ্ধান্ত নেন, ভোপালে ২ অক্টোবর তাঁদের প্রথম ব়্যালি হবে। এছাড়াও একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত হয় এই বৈঠকে। আসন সমঝোতা নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে, তা যদিও জানানো হয়নি।
বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার সমন্বয় বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন ছেড়ে রাখা হয়েছিল। বুধবার ইডির ম্যারাথন জেরা থেকে বেরিয়েই অভিষেক জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য এইদিন ইডি তলব করেছে তাঁকে।
অভিষেক বলেন, "একদিন আগে তাঁকে তলব করতে পারত। একদিন পরে তলব করতে পারত। আজ ২টোর মধ্যে দিল্লি যেতে হত। যদি বৈঠকে যোগ দিতাম। কিন্তু সকাল সাড়ে ১১টায় ডাকা হয় আমাকে। জেরার নির্যাস শূন্য নয়, মাইনাস ২।"
এদিন অভিষেক বলেন, "আমি আজ বৈঠকে সিনিয়র নেতৃত্ব শরদ পাওয়ারজি, সঞ্জয় রাউতজি, কেসি বেনুগোপালজি, আমি সকলকে নতমস্তকে বিনম্রচিত্তে সবাইকে কৃতজ্ঞতা প্রণাম জানাচ্ছি।"
১৪ জনের কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করল ইন্ডিয়া জোট। শুক্রবার দুপুরে ২৮টি বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতা-নেত্রীর বৈঠকে এই সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে তৃণমূলের প্রতিনিধি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধীর মতো শীর্ষ নেতারা।
পিটিআই সূত্রে খবর, এই কমিটিতে আছেন শরদ পাওয়ার, কেসি বেনুগোপাল, এমকে স্টালিন, তেজস্বী যাদব, হেমন্ত সোরেন, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি, সঞ্জয় রাউত, লালন সিং, জাভেদ আলি খান, ডি রাজা, রাঘব চাড্ডা। সিপিএমের কোনও নেতার নাম নেই এই কমিটিতে।
গত ২৩ জুন পটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের আহ্বানে ১৭টি বিরোধী দলের প্রথম বৈঠক হয়। বেঙ্গালুরুতে ছিল ২৬টি দল। শুক্রবার ২৮টি দল অংশ নেয় বৈঠকে। নতুন স্লোগান জুড়েগা ভারত, জিতেগা ইন্ডিয়া।
কেন্দ্রের বিরোধী জোট মঞ্চ ইন্ডিয়া-র বৈঠকে গৃহীত হল মোট তিনটি রেজলিউশন। ওই তিন রেজলিউশনকে মাথায় রেখে এখন থেকেই লোকসভা ভোটের লড়াইয়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি।
শুক্রবারের বিরোধী জোটের বৈঠকে যে তিনটি রেজলিউশন গৃহীত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে জোটে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আসন বণ্টন, নির্বাচনী প্রচার এবং নির্বাচনী স্লোগান। পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে স্লোগানও প্রকাশ করা হয়। লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের স্লোগান হতে হতে চলেছে জুড়েগা ভারত, জিতেগা ইন্ডিয়া। যদিও এই স্লোগান প্রতিটি স্থানীয় ভাষাতেই অনুবাদ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি শুক্রবারের বৈঠকে ইন্ডিয়া জোটের কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হল বিরোধী জোটের তরফে। মোট ১৩ জন সদস্য রয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার, কেসি বেনুগোপাল, সঞ্জয় রাউত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
দেশের যাতে ভাল হয়, সেই চেষ্টাই করা হবে। মুম্বইয়ে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে এমনই জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পটনা ও বেঙ্গালুরুর পর শুক্রবার মুম্বইয়ে বিরোধী জোটের তৃতীয় বৈঠক। একটি পাঁচতারা হোটেলে যোগ দিয়েছেন ২৮টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে যোগ দিয়েছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, লালুপ্রসাদ যাদব ও তাঁর ছেলে, নীতিশ কুমার, উদ্ধব ঠাকরের মতো নেতাদের।
বিরোধী সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীতিশ কুমার অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি ও রাজ্যে আসন বণ্টন নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি সূত্রের খবর, বিরোধী জোট প্রসঙ্গে সব জোট ই চান দ্রুত বিরোধী জোটের কর্মসূচি নেওয়া হোক।