বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে দেশের হার মেনে নিতে পারেননি আপাদমস্তক গোটা ভারতবাসী। স্টেডিয়ামেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হাজার হাজার ক্রিকেটভক্ত। কিন্তু বাঁকুড়া জেলার বেলিড়াতোড়ের এক যুবক বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের হার সহ্য করতে পারেননি। রবিবার রাতে নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আত্মঘাতী যুবকের নাম রাহুল লোহার (২৩)। পরিবারের দাবি, বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের হারে মানসিক অবসাদে ভোগেন। যার জেরেই আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নিলেন।
মৃতের আত্মীয় জানান, রাহুল লোহার ক্রিকেটের অন্ধ ভক্ত। সারা দেশের পাশাপাশি তাঁরও আশা ছিল দেশ এবার বিশ্বকাপ জিতবে। পেশায় শাড়ির দোকানের কর্মচারী রাহুল একবুক আশা নিয়ে রবিবার কাজে না গিয়ে বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে বেলিয়াতোড় সিনেমা হলের সামনে প্রোজেক্টারে খেলা দেখতে বসেছিলেন। খেলা শেষ হওয়ার পর স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে রাহুল বাড়ি ফিরে আসেন। এরপরই মানসিক অবসাদে নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন রাহুল। রাত এগারোটা নাগাদ রাহুলের ভাই বাড়িতে ফিরে দাদার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে বেলিয়াতোড় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, বেলিয়াতোড় থানার পুলিস মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়। খেলায় দেশের হারের কারণে মানসিক অবসাদ থেকে এই আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনো রহস্য, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (বিধায়ক/অভিনেতা): রবিবারের ফাইনালে শেষ পর্যন্ত সেই অস্ট্রেলিয়া? আমি সিএন পোর্টালে শুরুর দিকে লিখেছিলাম, অস্ট্রেলিয়া যা করছে তা আনপ্রেডেক্টিবল। কিন্তু একই সাথে শেষ ৮টি ম্যাচ জিতে তারা ফাইনালে গেলো। এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়া তুলনাহীন। বিশ্বের সর্বকালের সেরা কম্বিনেশন কিন্তু তা সত্ত্বেও বলবো লীগ একরকম আর ফাইনাল আরেক রকম। কাজেই অজিদের খাটো করা চলবে না। আবার অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে ঘাবড়ে যাওয়াও চলবে না। হতে পারে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া সাংঘাতিক কিন্তু পুরোনো ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন ১৯৯৬-এ টপ ফর্মে থাকা শ্রীলংকা অস্ট্রেলিয়াকে হেলায় হারিয়ে দিয়েছিলো। তা হলে ভারত পারবে না কেন। স্টিভ ওয়া বা রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার থেকে এই দল যথেষ্ট দুর্বল। এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত জিতেছে এমন উদাহরণ কই? আফগানিস্তানের দিন ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ ধরে নিলে বা দক্ষিণ আফ্রিকা আর ২০টি রান করলে তো অস্ট্রেলিয়া হারে। আরও একটি বিষয়ে এই দলে বয়স্ক খেলোয়াড় যথেষ্ট। কাজেই ভারত কয়েকটি স্ট্র্যাটেজি নিয়ে খেলুক। মনে রাখতে হবে এখনও পর্যন্ত ১০টি ম্যাচে ভারত কোনও চাপেই পরেনি সুতরাং ফাইনাল নিয়ে ভাবনা কিসের?
দুটি বিষয় বলতে চাই। আহমেদাবাদের পিচ বা উইকেট যেন স্পিনারদের অনুকূলে থাকে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে স্পিনে হাবুডুবু খাচ্ছিলো। অন্যদিকে ভারতীয় স্পিনাররা এই মুহূর্তে বিশ্ব সেরা। আমার মনে হয় অশ্মিনকে দলে নেওয়া উচিত। প্রশ্ন কার জায়গায়? আমি সিরাজকে বাদ দিতে বলবো। যদিও সিরাজ শুরুর বোলার কিন্তু এভারেজ বলছে যথেষ্ট রান দিচ্ছেন। তিনি পক্ষান্তরে উইকেট পেয়েছেন কম। বুমরা শামিকে দিয়ে পাওয়ার প্লের প্রথম দশ ওভার করিয়ে অশ্মিনকে বা জাদেজাকে নিয়ে আসুক যদি অস্ট্রেলিয়া প্রথম ব্যাট করে। পরে হলে ৭/৮ ওভারের মধ্যেই স্পিনার নিয়ে আসা হোক।
আমি কিন্তু অনেক বেশি আশা রাখছি রোহিতের উপর। ওর আরও একটা ভালো শুরু চাই। ইদানিং ওঁর পেটানোতেই কাহিল হয়েছে। শুরুতেই সমস্ত দল কাজেই আরও একটা হোক। আর রোহিত মোটেই ৫০ বা সেঞ্চুরির দিকে নজর দিচ্ছে না। ফাইনালে দিক। পিছনে কোহলি, শ্রেয়স, রাহুল, সূর্য জাদেজা ছিলই তার সঙ্গে যুক্ত হোক অশ্মিন। মনে রাখতে হবে যিনি টেস্টে প্রচুর রান করেন বা সেঞ্চুরি করেন বা টি-২০ তে ভালো ব্যাট চালান তাঁকে ব্যাটারই বলা হয়। তাই অশ্মিন। যদি অতিরিক্ত বোলার নেহাতই দরকার হয় তবে সূর্য অস্ত যাক। আলোর খেলায় সূর্য না থাকলেও চলবে। ইডেনে দেখলাম তো। পুরো খেলাটাই বিদ্যুতের আলোতেই হলো।
ইন্ডিয়া জিতে এস।
অবশেষে একযুগ পর ক্রিকেট বিশ্বকাপে ফাইনালে (World Cup final 2023) প্রবেশ ভারতের। আর নেপথ্যে বড় অবদান রয়েছে বিরাট কোহলির (Virat Kohli)। তিনি যেমন শতরান করেছেন, তেমনি গড়েছেন একের পর এক নজির। তবে মাঠে রেকর্ড গড়তেই ভোলেননি স্ত্রী অনুষ্কাকে। গ্যালারি থেকেই চুমু ছুড়ে দিলেন অনুষ্কা, আবার বিরাটও ফ্লাইং কিস দিলেন তাঁকে। এই দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে, কিন্তু এখন আরও এক ভিডিও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিরাট সাজঘরে পৌঁছতেই হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছেন তাঁর 'বেটার হাফ'কে।
একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিং মন জয় করে নিয়েছে প্রত্যেক ভারতীয়ের। এর মধ্যেই বিরুষ্কার কিছু কিউট মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হতেই ঝড়ের গতিতে ভাইরাল। মাঠে দাঁড়িয়ে চুম্বনের দৃশ্যের পর বিরাট যখন আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন, তখন তাঁকে দেখা যায়, বারবার উপরের গ্যালারির দিকে তাকাতে। তারপরই বোঝা যায়, তাঁর সাজঘরের উপরেই বসেছিলেন অনুষ্কা। তাঁকেই দেখার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাঁকে অবশেষে দেখতে না পেয়ে সাজঘরের ভিতরে চলে যান তিনি। আর এই কিউট মুহূর্তই ট্রেন্ডিং-এ।
অন্যদিকে বিরাটের কৃতিত্বে মুগ্ধ হয়ে অনুষ্কা ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে এক পোস্ট করেন, যেখানে তিনি লেখেন, 'বিরাট ঈশ্বরের সন্তান।' আবার ঈশ্বরকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে বিরাটকে দেওয়ার জন্য।
অবশেষে এক যুগ পর ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে (ICC World Cup Final 2023) উঠল ভারত। পুরো দেশ যেন উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা, আনন্দে ভাসছে। আর এই ক্রিকেট জ্বরে কাবু খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে (ICC World Cup Semi Final) ৭০ রানে কিউয়ি বধ করার পিছনে বড় অবদান রয়েছে মহম্মদ শামির (Mohammad Shami)। তিনি নিজেই ৭টি উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ জেতার পথ এক ধাপ এগিয়ে দেন 'মেন ইন ব্লু'-কে। ফলে পুরো ক্রিকেট টিমকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী, এর পাশাপাশি পৃথকভাবে শামির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বললেন, 'শামিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে।'
বুধবার নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত ফাইনালে উঠতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "অভিনন্দন টিম ইন্ডিয়া! অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে স্মরণীয়ভাবে ফাইনালে প্রবেশ করল ভারত। আমাদের টিমের অসাধারণ ব্যাটিং ও দারুণ বোলিংই ম্যাচ জিতিয়েছে। ফাইনালের জন্য শুভেচ্ছা রইল।" এর পরই শামিকে নিয়ে তিনি লেখেন, "আজকের এই সেমিফাইনাল ম্যাচটি আরও বিশেষ হয়ে উঠেছিল একক পারফরম্য়ান্সের জন্যও। এই ম্যাচে মহম্মদ সামির বোলিং এবং গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই তাঁর পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। ওয়েল প্লেড সামি!" প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছার উত্তর দিয়ে তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন শামি।
ক্রিকেট আর জুয়ার সম্পর্ক বহুদিনের। এবার ভারতের মাটিতে ওডিআই বিশ্বকাপ (ICC World Cup 2023) শুরু হতেই বেটিং চক্র আরও সক্রিয় হয়ে উঠল। রবিবার ইডেন গার্ডেন্সে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ক্রিকেট (Cricket) ম্যাচ চলাকালীন কলকাতার বুকে বড়সড় জুয়াচক্রের হদিশ পেল পুলিস। শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিসের অ্যান্টি রাউডি সেকশন। গিরিশ পার্ক, নারকেলডাঙা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার তাদের তোলা হবে আদালতে।
রবিবার সন্ধেবেলা গিরিশ পার্ক এলাকার একটি ক্যাফেতে বসে জুয়াচক্র চালাচ্ছিল অভিষেক জয়সওয়াল নামে বছর আঠাশের এক যুবক। মাস্টার আইডি দিয়ে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে তা চালানো হচ্ছে বলে খবর পায় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে হানা দিয়ে অভিষেককে গ্রেফতার করে পুলিস। তার কাছ থেকে একটি আইফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গিরিশ পার্ক থানায় বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে অভিষেকের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, অভিষেকের গ্রেফতারির পরই উঠে আসে বাকি দুজনের নাম। বউবাজার এলাকা থেকে অরুণ আগরওয়াল ও প্রদীপ বর্মাকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। তারাও বেটিং চক্র চালাচ্ছিল বলে খবর। এরপর গোপন সূত্রে পুলিসের কাছে আরও খবর আসে, নারকেলডাঙা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে জুয়াচক্র চলছে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে কালু সাউ এবং কেশবপ্রসাদ মুন্দ্রা নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিস। সবমিলিয়ে রবিবার কলকাতায় বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালীন মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জুয়াচক্র চালানোর অভিযোগে।
প্রসূন গুপ্ত: রবিবাসরীয় ইডেন ছিল সত্যিকারের স্বর্গ। অসাধারণ রূপে রূপসী হয়ে রয়েছিল সে। আজকেও বলতে দ্বিধা নেই দেশের সেরা দর্শক কিন্তু ইডেনেই। বঙ্গবাসীরা চেয়েছিলো কঠিন দল দক্ষিণ আফ্রিকা হারুক, বিরাট একটি সেঞ্চুরি করুক এবং বোলাররা ফের জাদু দেখাক। সবকটিই ফলেছে কিন্তু তাই বলে অন্যতম সেরা দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ৮৩?
বর্তমানে টিম ইন্ডিয়া ১ নম্বর স্থানে আছে এবং সেমিফাইনালে হয় নিউজিল্যান্ড অথবা পাকিস্তানের সাথে ফের মোলাকাত হবে। কেউ কেউ (পড়ুন রবি শাস্ত্রী ) বলছে ল অফ এভারেজ হবে নাতো অর্থাৎ তীরে গিয়ে তরী ডুববে না তো? দেখুন, এ যা ভারতীয় দল তাতে ওসব তুকতাক খাটা উচিত নয়। এই দল সর্বকালের সেরা একদিবসীয় দল, বিশ্বকাপে তো বটেই। ৭জন ব্যাটার এবং প্রত্যেকের বাটে রান এসেছে। দলনায়ক রোহিত নিয়মিত ওপেন করতে নেমে দুরমুশ করছে বিপক্ষের পেসারদের। বিরাট কোহলির কথা কি আর বলার। রবিবারের পরে বিশ্বের সর্বকালে শ্রেষ্ঠ ব্যাটার একদিবসীয়তে। জীবনের সেরা ফর্মে রয়েছে। ধীরস্থির ভাবে খেলা ধরছে এবং অন্তত ৪০ ওভার ব্যাট করছে। দুমদাম ছক্কা না হাঁকড়ালেও প্রচুর মাটিচেরা বাউন্ডারি এবং শেষ দিকে কিছু ওভার বাউন্ডারি। ভালো খেলেছেন শ্রেয়স, রাহুল। গিল বা সূর্য্যের উপরেও ভরসা করা যায়। জাদেজা তো শেষে নেমে অন্তত ৩০/৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলছে কাজেই এমন পোক্ত ব্যাটিং সাইট নেই কোনও দলে।
বোলিং যেন স্বপ্ন জগতের। ৫ জন বোলার, ষষ্ঠ বোলার নেই , দরকারও হচ্ছে না। ৫০ ওভার অবধি খেলাই গড়াচ্ছে না। শামি এসে যাওয়াতে আরও চমৎকার হয়েছে। ওকে প্রথমে খেলানো হচ্ছিলো না কেন রহস্য। বরং হার্দিক না থাকায় শাপে বর হয়েছে। দুই স্পিনার লাট্টুর মতো বল ঘোরাচ্ছে। এই মুহূর্তে এই বোলাররাই চ্যাম্পিয়নের ট্রফি আনার পক্ষে যথেষ্ট। সবথেকে বড় কথা রোহিতের নেতৃত্ব অসাধারণ। লোকে বলে রোহিত নাকি লাকি ক্যাপ্টেন। মুম্বই ইন্ডিয়ানদের কতবার চ্যাম্পিয়ন করেছে ওর নেতৃত্ব। এবারে ভারতকে করার পালা কারণ এটাতে ইন্ডিয়া কথাটাতো আছে।
প্রসূন গুপ্ত: দীপাবলির আগেই আলোকসজ্জায় সেজে রয়েছে ইডেন গার্ডেন। ব্রিটিশ আমল থেকেই এই মাঠ ক্রিকেটারদের বিশেষ পছন্দের। অনেকেই লর্ডস এবং মেলবোর্নের আগে সেরা দর্শকের উপস্থিতি ইডেনেই থাকে বলে দাবি করেছে। তবে এই ইডেন সবার পক্ষে লাকি হয় না। এ মাঠে এক সময়ে জনতার প্রাণের খেলোয়াড় ছিলেন মুস্তাক আলি, গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ, চন্দ্রশেখর,আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষণ, হরভজন সিং থেকে আজকের রোহিত শর্মা। এঁরা ইডেনে আসলেই সেরা পারফর্মেন্স বেরিয়ে আসতো। তবে ইডেন পাগলও ছিল সচিন তেন্ডুলকারের জন্য। একবার তাঁকে রানআউট দেওয়ার জন্য খেলাই বন্ধ করে দিয়েছিলো ক্ষিপ্ত দর্শক।
রবিবার সেই ইডেনেই ফের বিশ্বকাপের ম্যাচ। বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের টুর্নামেন্টে সেরা দুই দল। ভারত এখনও পর্যন্ত সব কটি ম্যাচে জিতেছে কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছে একটিতেই, তাও নেদারল্যান্ডের কাছে। কিন্তু ওই ভাবে বিচার করলে চলবে না। বাকি সব ম্যাচে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করেছে তারা। এবারে দক্ষিণ আফ্রিকার চেষ্টা থাকবে ভারতকে হারানোর। যদি তারা জিততে পারে এক নম্বর স্থানে চলে যাবে রানরেটে। ভারত নিশ্চই চাইবে তাদের জয়ের ধারা ধরে রাখতে। এ মুহূর্তে ব্যাটিংয়ে টপ ফর্মে রয়েছে রোহিত ও বিরাট কোহলি। নিয়মিত রান পাচ্ছে। রোহিতের প্রিয় মাঠ ইডেন কাজেই ফের একটি বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা থাকবে অন্যদিকে কোহলির বিশ্বের কোনও প্রিয় মাঠ নেই। এই মুহূর্তে তিনিই ব্যাটিংয়ে সেরা কাজেই সেই খেলাটি ধরে রাখার চেষ্টা থাকবে। তবে ভারতের প্রধান অস্ত্র বোলিং। ৫ বোলারই দুর্দান্ত খেলছে। শামির নিজের মাঠ নিজের দর্শক কাজেই এই সময়ে বিশ্বের বিস্ময় তিনি এবং তাঁর ইনকাটার ইয়র্কার। মুশকিল একটিই হার্দিক পাণ্ড্য আর এই বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারছেন না। দরকার একজন অতিরিক্ত বলার যা ভারতের বর্তমান জয়ী দলে নেই কাজেই ষষ্ঠ বোলার হিসাবে ভরসা করতে হবে কোহলির উপর।
মনে রাখতে হবে যে জিতবে সেই দল সেমিফাইনালে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের সম্মুখীন হবে। ভারত নিশ্চই অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে চাইবে না। সব শেষে একটি কথা মনে করিয়ে দিতেই হয় \ ২০০৫ এ সৌরভ গাঙ্গুলিকে দল থেকে বাদ দেওয়াতে ক্ষিপ্ত দর্শক সেবার ভারতের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সমর্থন করেছিল।
ভারতীয় পেস অ্যাটাকের দাপটে গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। একের পর এক পেস অ্যাটাক। শামি, বুমরা, সিরাজ এর দাপটে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ল শ্রীলঙ্কা। ভারতের পাহাড় সমান রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম দিকেই ছন্দপতন হয় শ্রীলংকান ব্যাটসম্যানদের। পরপর উইকেট পড়তে থাকে। ভারতীয় পেস অ্যাটাকের সামনে ওপেনার, মিডিল অর্ডার, কেউই টিকতে পারে নি। রীতিমত এই বিশ্বকাপের সর্বনিন্ম স্কোর করল শ্রীলঙ্কা। ভারতের ৩৫৮ রানের স্কোরের সামনে শ্রীলঙ্কা মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে যায়।
টসে জিতে প্রথম বল করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলংকা। প্রথম ওভারেই রোহিতের উইকেট পায় শ্রীলঙ্কা। এরপর গিল ও বিরাটের ১৮৯ রানের জুটিতে ভারত কিছুটা ধাক্কা সামলে নেয়, এরপর শ্রেয়স এর ব্যাটে আসে ৮২ রান। এরপর জাদেজা কিছুটা রান জুড়লে ভারত ৩৫৭ রান করে। ৩৫৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে রীতিমত দিশেহারা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সিরাজ ৩ উইকেট, শামি ৫ উইকেট বুমরা ১ উইকেট ও জাদেজা ১ টি উইকেট পায়। সব মিলিয়ে ৫৫ রানে শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেট হারায়।
শ্রীলঙ্কার এরকম ছন্দপতনে রীতিমত এ বিশ্বকাপের সর্বনিন্ম স্কোরের রেকর্ড গড়লো শ্রীলঙ্কা। ভারতের পেস অ্যাটাক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও জ্বলে ওঠে। মুম্বাইয়ের মাঠে শ্রীলঙ্কার এই লজ্জার হারে রেকর্ড হয়ে রইল এ বছরের বিশ্বকাপে। পাশাপাশি আগামী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেল সেটা বলাই বাহুল্য। এই নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে পরপর ৭টি ম্যাচ জিতল ভারত।
প্রসূন গুপ্ত: রবিবাসরীয় ভারত ইংল্যান্ডের খেলার দিকে ক্রীড়াপ্রেমীদের নজর থাকলেও কারুরই সাহেবদের দলকে পাত্তা দেয়নি। গতবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড এবারে ভারতে বাঘ থেকে বেড়ালে পরিণত হওয়া একটি দল। ইংলিশ সংস্কৃতিতে কোনও খেলাতেই দলগত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর কোনও দিনও থাকেনি। এরা ভীষণ রকম জাতীয়তাবাদী এবং মনে করে ব্রিটিশ মর্যাদার কাছে আজকেও কোনও দেশ নেই। সে অবিশ্যি অন্য প্রসঙ্গ কিন্তু যথার্থই এ বছর পুরো দলটাই ফর্মে নেই।
লখনউ-এর মাঠ বা তার উইকেট বা পিচ নিয়ে সংশয়ে ছিল ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা, আমরা শনিবারের প্রতিবেদনে পিচের একটা আভাস দিয়েছিলাম। উইকেটে নিয়মিত জল দিয়ে রোল করা হয়নি এবং ঘাস সমস্ত ছেঁটে ফেলা হয়েছিল। এই উইকেটে সাধারণত বোলাররা সুবিধা পায়। বলের গতি কমে যায়। কখনও থেমে থেমে বল আসে আবার কখনও বাউন্স করে আচমকাই।তার লক্ষণ কিন্তু সারা খেলায় দেখা গিয়েছে। এই উইকেটে যত বল গড়াবে তত ভয়ঙ্কর হবে বোলাররা। জানিনা টস জিতে ইংল্যান্ড কেন বোলিং নিলো রবিবার।
এই উইকেটে ২৫০ রান যথেষ্ট। ভারত প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২২৯ রান , যা কিনা লড়াইয়ের পক্ষে ভালো বলা যায়। সাধারণত রোহিত শর্মা শুরু থেকেই চালিয়ে খেলেন।চার ছয়ের টক্কর থাকে। শুরুও করেছিলেন রোহিত দুটি ছক্কা এবং একটি চার দিয়ে। কিন্তু পরপর তিন উইকেট পরে যাওয়ার পরে, বিশেষ করে কোহলি আউট হতেই খেলার ধরণ পাল্টিয়ে দেখে খেলতে শুরু করেন তিনি। অবিশ্যি রাহুল এবং সূর্যকুমারও সহযোগিতা করেন। ইংল্যান্ডের স্পিনারদের তখন ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যায়। ২২৯ এ শেষ হওয়ার পরে ইংল্যান্ড খেলতে নেমে বলের দিশাই খুঁজে পান না।
নিঃসন্দেহে বুমরা এবং শামি সেরা ফর্মে বল করেন সাথে স্পিনাররাও বিশেষ করে কুলদীপ। ১০০ রানের ফারাকে ইংল্যান্ডের এ বারের মতো বিশ্বকাপ থেকে তাদের ছিটকে দিলো। রোহিতকে ম্যান অফ দা ম্যাচ বেছে ঠিকই হয়েছে কারণ এই পিচে ৮৭ রান অসম্ভব ভালো। এবারে সেমিফাইনালে ভারত কি করে দেখার।
প্রসূন গুপ্তঃ একেবারে অন্দরের খবর যে বাংলাদেশ ম্যাচে পায়ে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান হার্দিক পাণ্ড্য। বিশ্বকাপে ভারতের পক্ষে এটি মোটেই সুবিধার বিষয় নয়। এখনও পর্যন্ত ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপের যে খেলা হয়েছে নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে টিম ইন্ডিয়াই সেরা। ৫টি ম্যাচের প্রতিটিতে জিতেছে ভারত এবং দাপটের সঙ্গে। কখনওই সমস্ত উইকেট হারায়নি তারা। এক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ৪৮ ওভার অবধি খেলা গড়িয়েছিল। ভারতের পরেই নিউজিল্যান্ডের অবস্থান। এবারে দুটি কঠিন দল অপেক্ষা করছে, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ঠিক এই সময়ে হার্দিকের প্রয়োজন ছিল দলে, কিন্তু জানা যাচ্ছে তাঁর পায়ের চোট অনেকটাই। সারতে অন্তত দিন কুড়ি সময় ন্যূনতম লাগা উচিত বলেই সূত্রের খবর।
যে কোনও দল কতটা শক্তিশালী তা নির্ণয় হয় দলে কতজন অলরাউন্ডার আছে তার উপরে। ১৯৮৩-তে ভারতীয় দল তেমন আহামরি ছিল না কিন্তু দলে নিয়মিত ৬জন অলরাউন্ডার ছিল। ২০১১ তে যুবরাজ সিং সহ বেশ কয়েকজন ব্যাটার বল করতে পারতেন। এবারের ভারতীয় দলে সঠিক অলরাউন্ডার রয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য ও জাদেজা। এর মধ্যে হার্দিক যদি মাঠের বাইরে থাকেন তবে তাঁর জায়গা নেবে কে? ৫জন বোলার কি যথেষ্ট? কোনও একজন ফ্লপ করলে ষষ্ঠ বোলার কোথায়? শার্দুল ঠাকুর অনেকটা দলের বোঝা। ব্যাট পরীক্ষিত নয়, বোলিং খুব কাজের নয় কাজেই হার্দিকের জায়গা নেবে কে। হার্দিক চোট পাওয়াতে দুটি পরিবর্তন করতে হয়েছিল কিউইদের সঙ্গে। মহম্মদ শামি এবং সূর্যকুমার যাদব। এবারে শামি অসাধারণ বল করতে ম্যাচ উৎরে গিয়েছিলো কিন্তু এরপর নকআউট পর্যায়ে ষষ্ঠ বোলার তো দরকার। ভারতীয় বোর্ড আরও অপেক্ষা করতে চাইছে। যদি আগামী সপ্তাহে ঠিক না হয় তবে হয়তো খেলোয়াড় বদল হতে পারে। কিন্তু কে হবেন সেই খেলোয়াড়? জানা যায়নি।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (বিধায়ক/অভিনেতা): ক্রিকেট ফুটবল আমার জীবনের চলার পথে অন্যতম সাথী। এক সময়ে ছেলেবেলায় দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে খেলেওছি। খেলা দেখা আমার একটা নেশা। বিশ্বকাপ ফুটবল হোক বা ক্রিকেট, দেখতে তো হবেই। পুজোর সময়ে আমার কেন্দ্রে যাওয়া আসা থাকবে কিন্তু তারই ফাঁকে আজকের অধিনায়ক মোবাইলে খেলায় চোখ রেখেছি। আমার কাছে সব ম্যাচই প্রাধান্য পায়। আমি আগের লিখনিতে লিখেছিলাম যে, দুরন্ত ফর্মে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। আমাদের প্রথম চার ব্যাটার অর্থাৎ রোহিত, গিল, কোহলি এবং রাহুল প্রায় প্রতিদিনই ভালো ব্যাট করে দিচ্ছে কিন্তু তার আগে বোলিংয়ে বুমরা, সিরাজ এবং জাড্ডু ও কুলদীপ এতটাই ভালো বল করছে যে ব্যাটারদের টেনশন নিতে হচ্ছে না। আমি একটা ব্যাপার দেখে অবাক হচ্ছি, চারটি ম্যাচেই উল্টোদিকের দল শুরুটা বেশ ভালো করেও শেষ পর্যন্ত হঠাৎ খেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশের একই ব্যাপার। দিব্বি শুরু করেছিল লিটন দাস। ৯০ রান উঠে যাওয়ার পরে মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশ আজ হয়তো ৩০০ পার করবে কিন্তু হঠাৎ গুটিয়ে গেলো। জাড্ডু বা জাদেজা যেমন ফিল্ডিং করেছে তেমনিই বোলিং কিন্তু ম্যাচের সেরা হলো সেঞ্চুরি করা কোহলি। ভারত ফের ৭ উইকেটে জিতলো। এখন এটা একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
ভারতের এখন যা দলগত অবস্থা, আমি বলবো সর্বকালের সেরা একদিবসীয় দল। ওপেনিংয়ে রোহিত নিয়মিত ভালো রান পাচ্ছে কিন্তু ওঁর একটাই সমস্যা, ছক্কা হাঁকাতে চায়। মারবে না কেন? মারার জন্যই তো স্বল্প ওভারের ক্রিকেট কিন্তু একেবারে অনসাইড হিটার। একটা সিক্সারের পর ফের পরের বলেও ওই চেষ্টা। কালকে আউটও হলো ওই ভাবেই। ও অধিনায়ক এটা ভুলে গেলে চলবে কেন? আমি বরং বলবো টপ ফর্মে খেলছে বিরাট কোহলি। জীবনের অন্যতম সেরা ফর্মে আছে। ফের বলতেই হয় সচিনের অভাব পেতে দিচ্ছে না বিরাট। অসাধারণ খেলা। কি ধৈর্য কি পরিশ্রম। মাঠ কামড়ানো স্ট্রোক। কিন্তু আমার চিন্তা হার্দিক প্যান্ডিয়াকে নিয়ে। কাল পায়ের গোড়ালিতে ছোট পেয়ে গেলো। দেখুন চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে মিডলে এমন একজন খেলোয়াড় দরকার যে ব্যাট করবে আবার বলটিও করবে। অর্থাৎ অলরাউন্ডার। দেখবেন অলরাউন্ডারদের জন্যই ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবার। ১৯৮৩-তে কপিল, মহিন্দার, ২০১১-তে যুবরাজ সিং। এবারে সেই কাজটিও করা দরকার এবং এক্সপার্ট হচ্ছে হার্দিক। আমি মনে করি শার্দুল ঠাকুর মোটেই সেই কাজটি করতে পারবে না। শ্রেয়স কিন্তু ভালো খেলছে না, আবার সে বোলারও নয়। সুতরাং হার্দিক ফিরে আসুক। (অনুলিখনঃ প্রসূন গুপ্ত)
ভারতের বিরুদ্ধে শাকিব না থাকলেও ভালো শুরু বাংলাদেশের। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে দুজন ওপেনারই হাফ সেঞ্চুরি করেন। এরপরে হাসান কুলদীপের বলে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘরে ফিরে যায়, ওদিকে শান্ত অর্থাৎ অধিনায়ককে লীগ বিফোর করে ঘরে পাঠায় জাদেজা। মিরাজকে ঘরে ফেরায় সিরাজ। ওদিকে লিটন ৬৩ রানে ব্যাট করছে। ২৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১২৯ রানে ৩ উইকেট। ভারতের বিরুদ্ধে খেলছেন না শাকিব-আল-হাসান। ভারতের বিরুদ্ধে পুণের ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত। টস জিতে এদিন ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ড ম্যাচে ঊরুতে চোট পেয়েছিলেন শাকিব। তখন থেকেই চলছিল টানাপোড়েন। তার ইতি পড়ল পুণেতে। এদিনের দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেছেন বাংলাদেশ।
পুণে রোহিতও জানালেন টস জিতলে, তিনি আগে বলই করতেন। এই ম্যাচে অপরিবর্তিত ভারতীয় দল। কারণ, অহেতুক দল পরিবর্তন করতে নারাজ ভারত অধিনায়ক। এদিনও রোহিতের গলায়, দীর্ঘ টুর্নামেন্টের কথা। একইসঙ্গে ফের জানালেন ভারতকে ঘুরে ঘুরে খেলতে হচ্ছে। তাই এত তাড়াহুড়ো করতে নারাজ তিনি।
প্রাক্তনদের মতে, এই মাঠে রান তাড়া করা একটু কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। সুনীল গাভাসকর এবং নাসের হুসেনের মতে, বাংলাদেশকে ২৫০ রানের মধ্যে আটকে জিতে পারলে এই ম্যাচেও এগিয়ে থাকবে ভারত।
৮-০! মহালয়ার দিন পাকিস্তান বধ। বিশ্বমঞ্চে রেকর্ড অব্যাহত। একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর স্বপ্ন অধরাই রইল পাকিস্তানের। শনিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম খড়কুটোর মতো বাবর আজমের দলকে উড়িয়ে দিল ভারত। ১৯.৩ ওভার বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জয় ভারতের। ৪২.৫ ওভারে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে ৩০.৩ ওভারেই জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় ভারত। ১১৭ বল বাকি থাকতেই অনায়াসে জয় তুলে নেয় ভারত। একইসঙ্গে রানরেট বাড়িয়ে নিলেন রোহিতরা। মহালয়ার দিন জয়ের হ্যাটট্রিক ভারতের। গ্যালারিতে বসে ঐতিহাসিক জয় দেখলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রেগন্যান্সি গুজবের মধ্যেই স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্কা শর্মা। দুর্দান্ত অধিনায়কত্বের পর ব্যাট হাতেও দুরন্ত রোহিত শর্মা। আগের দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে সর্বাধিক ছয়ের রেকর্ড করেন হিটম্যান। এদিনও নির্বিকার মুখে একের পর এক ছক্কা হাঁকালেন। একদিনের ক্রিকেটে ৩০০ ছয়ের গণ্ডি পেরিয়ে গেলেন। আফগানিস্তান ম্যাচের পর এদিন ব্যাক টু ব্যাক শতরানের হাতছানি ছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে ম্যাঞ্চেস্টারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪০ করেছিলেন রোহিত। শনি সন্ধেয়ও সেদিকেই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু একশো হাতছাড়া হল। ৬৩ বলে ৮৬ রানে আউট হন রোহিত। বিধ্বংসী ইনিংসে রয়েছে ৬টি ছয়, ৬টি চার। বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে বিশেষজ্ঞরা বিরাট কোহলি, শুভমন গিলকে রেখেছিলেন।
ফর্মের ধারেকাছে না থাকা রোহিতকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই ধরেনি। কিন্তু পরপর দুই ম্যাচে অনবদ্য ব্যাটিংয়ে একনম্বরের দৌড়ে শীর্ষস্থানে ভারতের নেতা।
১৯২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন রোহিত, শুভমন। ডেঙ্গি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই ম্যাচের গুরুত্ব বুঝে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয় গিলকে। পরপর ড্রাইভে তিনটে চার মেরে ইনিংসের সূচনা দারুণ করেন। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। চারটে চার মেরে ১১ বলে ১৬ রান করে আউট হন শুভমন। ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। তবে উইকেটের অন্য প্রান্তে স্বমহিমায় ছিলেন রোহিত। চার, ছয়ের বন্যা বইয়ে দেন। রান পাননি বিরাট কোহলি। ১৮ বলে ১৬ রানে ফেরেন। তবে এদিন রান পান শ্রেয়স আইয়ার। অর্ধশতরান করেন। ৬২ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত শ্রেয়স। শেষ বলে চার মেরে দলকে জয়সূচক রানে পৌঁছে দেন। ১৯ রানে অপরাজিত কেএল রাহুল।
পাকিস্তানের অপরিকল্পিত ব্যাটিং? না স্নায়ুর চাপ? মাত্র ৩৬ রানে ৮ উইকেট হারানোর কারণ কী? আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক ক্রিকেটপ্রেমীর গর্জন। গেরুয়া শহরে নীল ঝড়। তাতেই কি পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে ধস নামল? একটা সময় ২ উইকেটে ১৫৫ রান ছিল সবুজ আর্মির। ক্রিজে ছিলেন বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান। মনে হয়েছিল ৩০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু সেখান থেকে ১৯১ রানে অলআউট। ৩৬ রানে পড়ল ৮ উইকেট।
বাকিরা এলেন আর গেলেন। প্রথম চারজনকে বাদ দিলে, হাসান আলি ছাড়া কেউই দু'অক্ষরের রানে পৌঁছতে পারেনি। সৌজন্যে যশপ্রীত বুমরা এবং কুলদীপ যাদব। বড় রানের জন্য রিজওয়ানের দিকেই তাকিয়ে ছিল পাকিস্তান। ৪৯ রানে পাক উইকেটকিপার ব্যাটারকে বোল্ড করেন বুমরা। ৭টি চারের সাহায্যে ৬৯ বলে অর্ধশতরানের এক রান দূরে থামলেন। তবে প্রশংসা প্রাপ্য মহম্মদ সিরাজেরও। শুরুটা ভাল না হলেও প্রথমে আবদুল্লাহ শফিক এবং পরে বাবর আজমকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। পাকিস্তানের নেতা আউট হওয়ার পরই ব্যাটিংয়ে ধস নামে। অর্থাৎ এই একটা উইকেটই বদলে দিল গোটা চিত্র। পাকিস্তান যে এখনও বাবর এবং রিজওয়ানের ওপর নির্ভরশীল, সেটা আরও একবার প্রমাণিত। পাক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান অধিনায়কের। ৭টি চারের সাহায্যে ৫৮ বলে ৫০ রান করেন আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ে একনম্বর ব্যাটার। তবে বিশ্বমঞ্চে পাক ব্যাটারদের পারফরম্যান্স খুবই হতাশজনক। দিশাহীন ব্যাটিং। বাজে শট সিলেকশন। অন্যদিকে বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্ব রোহিতের। ডিআরএস নেওয়ার সঠিক সিদ্ধান্ত। সবমিলিয়ে সেভেন স্টার পারফরম্যান্স ভারতীয় দলের। যদিও শুরুটা আশানুরূপ হয়নি ভারতের। প্রথম উইকেটে ৪১ রান যোগ করেন আবদুল্লাহ শফিক (২০) এবং ইমাম উল হক (৩৬)। ৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে ৮২ রান যোগ করেন বাবর, রিজওয়ান। ৩০ ওভার পর্যন্ত সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছিল পাকিস্তান। দুই তারকা ব্যাটার আউট হতেই লাইনচ্যুত। শার্দূল ঠাকুর ছাড়া সবাই দুটো করে উইকেট নেয়।
মুখিয়ে ছিলেন প্রত্যেকের 'প্রিয়' গায়ক অরিজিতের (Arijit Singh) গান শোনার জন্য। কিন্তু অপেক্ষাই সার হল। টিভিতে অরিজিৎ সহ বাকি সংগীতশিল্পীদের পারফরম্যান্স দেখতেই পেলেন না সাধারণ মানুষ। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় প্রি-ম্যাচ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমে মনে করা হয়, হয়তো কিছুটা দেরিতে শুরু হবে অনুষ্ঠান। কিন্তু এর পরই আইসিসির তরফে দেওয়া হয় এক বিবৃতি। সেই বিবৃতিতে লেখা হয়, এই অনুষ্ঠান শুধুমাত্র ইনস্টেডিয়া ফ্যানদের জন্যই।
শনিবার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দুপুর ২টো ৩০ মিনিটে শুরু হয় ভারত-পাকের মহারণ। তার আগেই অরিজিৎ সিং, শঙ্কর মহাদেবন, সুনিধি চৌহান, সুখবিন্দর সিং-এর পারফর্ম করার কথা ঠিক ছিল। কিন্তু সাড়ে ১২ টার পরও টিভিতে দেখা যাচ্ছিল না অনুষ্ঠান। হতাশ হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। এর পরই আইসিসির তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, "নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি ইনস্টেডিয়া ফ্যানদের জন্য। ব্রডকাস্ট করা হবে না।" অর্থাৎ যারা ওখানে উপস্থিত হয়েছেন শুধুমাত্র তাঁদের জন্যই এই অনুষ্ঠান। টিভি বা ওটিটিতে দেখানো হবে না এই অনুষ্ঠান।
তবে মনে খারাপ করার দরকার নেই। এরই মধ্যে প্রি-ম্যাচ অনুষ্ঠানে সংগীতশিল্পীদের কিছু ঝলক সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে প্রকাশ্যে এসেছে। একটি ভাইরাল ভিডিও-তে চার জন সংগীতশিল্পীকেই একসঙ্গে গান করতে দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, সবার পছন্দের গায়ক অরিজিতকেও।
Listen to the loudness from Crowd at Narendra Modi Stadium When All the 4 musician Arijit Singh, Sunidhi Chauhan, Shankar Mahadevan and Sukhwinder Singh sang together to cheer the crowd at the last minute. #INDvsPAK #ArijitSingh pic.twitter.com/QMXHa92s9t
— Mufa Kohli (@MufaKohli) October 14, 2023
Credit - @AJpadhi
বিশ্বকাপের আগে বড় ধাক্কা টিম ইন্ডিয়ার। সূত্রের খবর, বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের ওপেনার ব্যাটার শুভমনের ডেঙ্গি হয়েছে। বর্তমানে সে কড়া নিরাপত্তা ও চিকিৎসায় আওতায় রয়েছে বলে খবর।
২২ গজের মহাযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচ রবিবার। তার আগেই টিম ইন্ডিয়ায় বিরাট ধাক্কা। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামতে চলেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে শুভমন গিলের খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
প্রথম ম্যাচে শুভমন না খেললে দলের কম্বিনেশনও বদলে যেতে বাধ্য। এই আবহে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে হবে মেন ইন ব্লুদের।বিশ্বকাপ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলা তিনটি একদিনের ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন শুভমন গিল। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তিনি জ্বরে কাবু। ফলে নতুন করে চিন্তা বাড়ল রোহিত শর্মাদের।