প্রসূন গুপ্ত: রাজনীতিতে সৌজন্য থাকাটা আবশ্যিক কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ভারতের রাজনীতির ধরণটি হয়েছে, কে কাকে কতটা কুবাক্য বলতে পারে তার নগ্ন প্রতিযোগিতা। এ বছর শেষের দিকে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ীর জন্ম শতবর্ষের শুরু। জানা নেই সরকার তাঁর বিষয়ে কি ভাবনা ভেবেছে। কয়েক বছর আগে আর এক প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জন্ম শতবর্ষ হয়ে গেলো নীরবেই। দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা প্রধানমন্ত্রীর জন্ম শতবর্ষ মানুষ জানতেই পারলো না। অথচ এই ইন্দিরার অবদান সর্বজন বিদিত। সরকারে অন্য দল থাকলে বিরোধিতার জন্য নিশ্চিত কিছু দল তো থাকবে কিন্তু এই বিরোধী বিষয়টিই তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের স্থানে চলে গিয়েছে। কোথায় হারিয়ে গিয়েছে সৌজন্যবোধ।
রবিবার ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন। বিশ্বকর্মা পূজোর দিন জন্মেছিলেন তিনি। ১৯৫০ এর আজকের দিনে। আজ ঘটনা চক্রে বিশ্বকর্মা পূজো নেই, হবে সোমবার। কিন্তু সাধারণত ১৭ সেপ্টেম্বরেই পূজো হয় কাজেই মোদীকে অনেকেই ভালোবেসে 'নব্য বিশ্বকর্মা' বলে থাকে। ৭৩ পূর্ণ করে প্রধানমন্ত্রী ৭৪ এ পা দিলেন। আগের দিন হলে বলা যেত মোদীজির আর এক বছর হাতে আছে কারণ তাঁদেরই নিয়ম ৭৫ এর পর প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে সরে যেতে হয়। কিন্তু তিনি হলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ক্ষেত্রে কোনও নিয়মই 'নিয়ম' নয়। কাজেই বিজেপির বিভিন্ন কর্মী সমর্থক এই জন্মদিনকে কেন্দ্র করে নিজ নিজ এলাকায় অনুষ্ঠান করছে।
বিরোধীদের দিক থেকে মোদী কত শুভেচ্ছা পেলেন জানা নেই কিন্তু আজকের রাজনীতির বুদ্ধিমান নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কয়েক মাস বাদে লোকসভা নির্বাচন। মোদী, অভিষেক দুজনই প্রার্থী হবেন এবং ভাষণে দুই ব্যক্তিত্ব পরস্পরকে ছেড়ে কথা বলবেন না কিন্তু জন্মদিন যে কোনও মানুষের কাছে একটি ব্যক্তিগত সুখের দিন কাজেই সৌজন্য দেখতে ক্ষতি কোথায়?
২০২২-কে পিছনে ফেলে ২০২৩-কে (New Year 2023) সাদরে বরণ করেছে ভারত-সহ গোটা বিশ্ব। এবার বছরের প্রথম দিনে দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানালেন রাষ্ট্রপতি (President Murmu Tweet) দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)-সহ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। রাষ্ট্রপতি ট্যুইট বার্তায় লেখেন, 'প্রত্যেককে শুভ নববর্ষ। দেশবাসী এবং প্রবাসী ভারতীয়দের নতুন বছরের শুভেচ্ছা এবং শুভ কামনা। এই নতুন বছর প্রত্যেকের জীবনে নতুন অনুপ্রেরণা, লক্ষ্য এবং সাফল্য নিয়ে আসুক। দেশের উন্নয়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।'
Happy New Year to all! Greetings and best wishes to all fellow citizens and Indians living abroad. May the Year 2023 bring new inspirations, goals and achievements in our lives. Let us resolve to rededicate ourselves to the unity, integrity and inclusive development of the nation
— President of India (@rashtrapatibhvn) January 1, 2023
প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'নতুন ২০২৩ ভালো কাটুক। গোটা বছর আশা, সুখ এবং সাফল্যের মধ্যে দিয়ে যাক। প্রত্যকের সুস্বাস্থ্য কামনা করি।' পিছিয়ে নেই কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও। নিজের ট্যুইটার প্রোফাইলে ভারত জোড়ো যাত্রার একটি ভিডিও পোস্ট করে রাহুল গান্ধী হিন্দিতে লেখেন, 'আশা করছি ২০২৩-এ ভারতের সব শহর, গলি এবং গ্রামে খুলবে ভালবাসার দোকান। প্রত্যেককে নববর্ষের শুভেচ্ছা।'
Have a great 2023! May it be filled with hope, happiness and lots of success. May everyone be blessed with wonderful health.
— Narendra Modi (@narendramodi) January 1, 2023
কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। এই দেশের ঐতিহ্যই বিশ্বাস। জীবনের সুখে দুঃখে ভগবানের প্রতি বিশ্বাস রাখে এ দেশের আপামর জনতা। কেন এবং কি জন্য ঈশ্বরের উপর তারা বিশ্বাস করে তাই ধাপে ধাপে তুলে ধরা হয়েছে এবারে ৮৬ তম বর্ষে শিবমন্দির সর্বজনীনের এবারের দুর্গোৎসবে।
মণ্ডপসজ্জার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে পরিবেশ বান্ধব উপকরণ। বিপদ দূর করতে লাল রঙের যে তাগা আমরা হাতে বাঁধি অথবা মনস্কামনা পূরণ করতে যেভাবে ঠাকুরবাড়ির গাছে সুতো, ঢিল বা হাঁড়ি বাঁধা হয়, সেই সকল ছবিই ফুটে উঠবে এই মণ্ডপে।
প্রতিমা নির্মাণেও রয়েছে বিশেষত্ব। বহু বছর আগে যে ভাবে তৈরি হত মা দুর্গার মূর্তি এবারে শীবমন্দির সার্বজনীননেও মায়ের আদি রূপকেই তুলে ধরা হবে।
রাখি বন্ধন অর্থাত্ সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন। আজ রাখি বন্ধন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কর্মরত কর্মচারীদের মেয়েরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে বেঁধে দিলেন রাখি। বৃহস্পতিবার সকালেই দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের দফতরের কর্মীদের মেয়েদের হাতে রাখি পরেন মোদি। পিএমও সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়ুদার, পিওন, বাগানের মালি, ড্রাইভারসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের মেয়েদের কাছ থেকে আজ রাখি পরেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখি বন্ধন উৎসবের ডাক দিয়েছিলেন। সম্প্রীতির বন্ধনে একতার প্রতীক হিসাবে রাখি বন্ধন উৎসব পালন ছিল কবিগুরুর মূল লক্ষ্য।
সেই ট্র্যাডিশন আজও চলছে। আজ এই দিনে বোনেরা তার ভাইয়েদের হাতে রাখি পরিয়ে শুভ কামনা জানিয়ে থাকেন। সঙ্গে চলে মিষ্টিমুখ ও দেদার আনন্দ।