বন্যপ্রাণ হত্যা (Wild Life) এবং চোরাশিকার সবসময়ই বন দফতরের মাথাব্যথার কারণ। আর তাই চোরাশিকার (Poacher) রুখতে লাগাতার অভিযান চালিয়েছে বন দফতর। এমনই এক যৌথ অভিযানে দারুন সাফল্য পেল বন দফতর-আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিস। চলতি সপ্তাহে অসমের ডেরা থেকে গ্রেফতার কুখ্যাত চোরাশিকারি ও গণ্ডার (Rhino Poaching) হত্যার মূল পাণ্ডা লেকেন বসুমাতারি। এরপর অসমের চিরাঙ জেলা আদালতে তাকে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে বুধবার আলিপুরদুয়ারের নিয়ে আসা হয়েছে। বন দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকে গরুমারা ও জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে (National Forest) যত গণ্ডার হত্যা হয়েছে, সবগুলোর সঙ্গে জড়িত লেকেন।
২০২১-র এপ্রিল মাসে জলদাপাড়ার চিলাপাতা রেঞ্জের বানিয়া বিটে একটি পূর্ণ বয়স্ক মাদি গণ্ডার হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। তাতেও ধৃত এই ধৃত ব্যক্তির সরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে বন দফতর। সেই ঘটনায় তার এক সাগরেদ ধরা পড়েছিল। তার থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রাণী হত্যায় ব্যবহৃত একটি রাইফেল ও প্রচুর কার্তুজ।
সম্প্রতি গোপন সূত্রে বন দফতর খবর পায়, উত্তরের জঙ্গলে গণ্ডার হত্যার পরিকল্পনা করছে লেকেন। এরপরেই দল গড়ে যৌথ অভিযানে নামে বন দফতর ও পুলিস। অসম ও বাংলা মিলে প্রায় শতাধিক গণ্ডার-সহ অন্য বন্যপ্রাণ হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যার ফলে অসমের বন দফতর লেকেন বসুমাতারিকে দেখা মাত্রই গুলির নির্দেশ জারি করেছিল। আর এই কাজের ফলে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। যার ফলে চোরাশিকারের পর সে প্রতিবারই জঙ্গি ডেরায় আত্মগোপন করত।
কিন্তু এবার যৌথ বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যায়। এই প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন 'যৌথ অভিযানে ওই বড় সাফল্য মিলেছে।' জলদাপাড়া বন বিভাগের ডিএফও দীপক এম বলেন 'প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ওই কুখ্যাত চোরা শিকারি আমাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। শেষে পুলিসের সঙ্গে যৌথ অভিযানে আমরা ওই অপরাধীকে গ্রেফতার করেছি। আদালত ওকে ১৪ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।'
শিয়ালের কামড়ে (Fox Attack) আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা পিটিয়ে হত্যা করল এক শিয়াল। ঘটনাটি ঘটেছে হাবরার (Habra Incident) মহিষা এলাকায়। মঙ্গলবার বিকেলে দু'জন গ্রামবাসী বাইরে বেরোলো আচমকাই তাদের উপর হামলা করে এক শিয়াল। পরবর্তীকালে গ্রামবাসীরা সেই ঘাতক শিয়ালকে ধরে পিটিয়ে মারে এবং মাটির তলায় কবর দিয়ে দেয়। শিয়ালের (Wildlife) কামড়ে আহত এক গ্রামবাসীর নাম খিলাফত আলি মণ্ডল। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আচমকাই শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার মানুষ।
গ্রামবাসীরা বলেন, 'আগে কখনও এত শিয়ালের উপদ্রব চোখে পড়েনি। তবে শিয়াল থাকলেও তারা আগে কখনও এরকমভাবে মানুষের উপর আক্রমণ করেনি।' পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরে স্নান করতে গেলে আচমকাই এক আক্রান্তর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শিয়াল। গ্রামবাসীরা তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসে এবং লাঠি দিয়ে তাড়া করলে শিয়ালটি তখন পালিয়ে যায়। শিয়ালের কামড়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এরপর এক জখম ব্যক্তিকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বন্যপ্রাণকে আঘাত এবং হত্যা সিএন পোর্টাল সমর্থন করে না। শুধুমাত্র খবর পরিবেশনার স্বার্থে এই সংবাদ উপস্থাপন।
বিমানবন্দর মাদক চোরাচালানের ঘটনা একাধিকবার সামনে এসেছে। এছাড়াও সোনা, বিদেশী মুদ্রা পাচারের চেষ্টা বারবার হয়েছে। তবে এবার খানিকটা অন্যরকম ঘটনা প্রকাশ্যে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার চেন্নাই বিমানবন্দরে (Chennai Airport)। একটি ব্যাগ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বিমানবন্দরে, আর তা খুলতেই চক্ষুচড়কগাছ অভিবাসন দফতরের। কী ছিল ওই ব্যাগে?
ব্যাগের মধ্যে কোনও সোনা বা টাকা নয়, ছিল ৪৫টি ছোট অজগর। তিনটি মারমোসেট বাঁদর, তিনটি কচ্ছপ, আটটি কর্ন সাপ, যাদের বাজারমূল্য লক্ষাধিক টাকা। বিমানবন্দরে মালপত্র যেখানে চেক হয়, সেখানেই ব্যাগটি পড়ে ছিল। সন্দেহজনক লাগায় অভিবাসন দফতরের আধিকারিকরা ব্যাগটি খোলেন। তখনই উদ্ধারে হয় অজগর, বাঁদর, কচ্ছপ।
অভিবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার তদন্ত করছে পুলিস। ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, এই প্রাণীগুলি ব্যাঙ্কক থেকে আনা হয়েছিল। উদ্ধার করে সেখানেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর আগেও চেন্নাই বিমানবন্দরে বিরল প্রজাতির প্রাণী উদ্ধার হয়েছে। পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল তা স্পষ্ট। কারা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বাগনান চন্দ্রপুরে দামোদর নদীর (Damodar River) ধারে বেশ কয়েকদিন ধরেই একদল সাপুড়ে তাঁবু গেড়ে আস্তানা করেছিল। ওই এলাকার স্থানীয় এক যুবক ব্যাপারটি নজরে রাখেন। এরপর মঙ্গলবার এই ঘটনার কথা বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিককে জানান। ঘটনাস্থলে পৌঁছন চিত্রক প্রামাণিক-সহ তিনজন। তাঁরা গিয়ে প্রায় ১১ জন সাপুড়ে-সহ দুটি অজগর বা ইন্ডিয়ান রক পাইথন (python) সাপ উদ্ধার করেন। তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন অস্ত্র ও পাখি ধরার ফাঁদ আটক করা হয়। তার পাশাপাশি আটক করে রাখা হয় ১১ জন সাপুড়েকেও। তড়িঘড়ি বনদফতরে খবর দেওয়া হলে সাপুড়ে-সহ ও সাপগুলিকে (Snake) বন বিভাগের হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কিছু সাপুড়ে সাপ নিয়ে নদীর ধারে তাঁবু খাটিয়ে ছিলেন। সম্ভবত এসব সাপুড়েরা ওড়িশা থেকে এসেছেন। কয়েকদিন ধরেই বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারীদের কাছে খবর ছিল, এলাকায় কিছু সাপুড়ে সাপ দেখিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা তুলছেন ওই সাপুড়েরা। তাঁদেরকে আটকে রেখে সাপুড়ে ও সাপগুলিকে বন বিভাগের হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়।
ইন্ডিয়ান রক পাইথন ১৯৭২ ভারতীয় বন্যপ্রাণ আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংরক্ষণের আওতায় তফসিলি-১ এর অন্তর্ভুক্ত। সাপুড়েরা যেভাবে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি করে ও কুসংস্কার ছড়ায়, এর ফল মারাত্মক। তাই তড়িঘড়ি আটক করা হয় ওই সমস্ত সাপুড়েদের।
বন্যপ্রাণী শিকারের (Wildlife hunting) লক্ষ্যে মজুত করা হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র (firearms)। তবে সেই ছক ভেস্তে দিল বৈকুন্ঠপুর (Baikunthpur) বনবিভাগের ডাবগ্রাম রেঞ্জের বনকর্মীরা। সূত্র মারফৎ খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহ এক চোরা শিকারীকে গ্রেফতার (arrest) করল ডাবগ্রাম রেঞ্জের বনকর্মীরা। ধৃতের নাম অঞ্জোন মিশ্রা। তাঁর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, আলেকসজেন্দ্রিয়া প্যারাকিট প্রজাতির একটি টিয়া। ধৃতকে শুক্রবার আদালতে পেশ করা হয়।
সম্প্রতি, ডাবগ্রাম রেঞ্জের বনকর্মীদের জালে ধরা পড়েছিল শহর শিলিগুড়ি সংলগ্ন নেপালী বস্তি এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ ছেত্রী। আগ্নেয়াস্ত্র, তীর-ধনুক, ময়ূর এবং একটি কচ্ছপের খোল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল তাঁর কাছ থেকে থেকে। বনবিভাগ সূত্রে খবর, ধৃত কৃষ্ণ ছেত্রীকে জেরা করে অঞ্জন মিশ্রা সহ আরও দু'জনের নাম উঠে আসে। এরপরই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পৃথক তিনটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়। তবে বাকি দু'জন ধড়া না পড়লেও রাজ ফাঁপড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অঞ্জনকে গ্রেফতার করেন বনকর্মীরা।
বনকর্মীরা জানিয়েছেন, ধৃত অঞ্জনকে জেরা করে ইতিমধ্যে আরও বেশ কিছু নাম সামনে এসেছে। সেই সূত্র ধরে আগামীতে ফের অভিযান চালানো হবে।
ময়নাগুড়ির (Moynaguri) দেবীনগর পাড়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের এক গোডাউনে আগুন লাগে। সেই সময় আগুন নেভাতে আসা দমকল কর্মীরা লক্ষ্য করেন গোডাউনে একটি অজগর সাপ (Python Snake) এদিক ওদিক ছুটছে। আগুনের তাপ থেকে নিজেকে বাঁচতেই তার এই মরণপণ ছোটাছুটি। এই অবস্থায় দমকলকর্মীরা (Fire Brigade) অজগরটি উদ্ধার করতে গেলেও, সেই সরীসৃপ গুদামের পাশে থাকা জঞ্জালের ভিতরে ঢুকে যায়। এমন বন্য প্রাণের (Wild Life) প্রাণ বিপন্ন খবর পেয়ে ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশ কর্মী সংগঠনের সদস্যরা দ্রুত এসে সাপটি উদ্ধার করে। সংগঠনের সদস্য নন্দু রায় জানান, এটা একটি রক পাইথন। সাপটিকে উদ্ধার না করলে হয়তো আগুনে পুরো ঝলসে যেত। উদ্ধার হওয়া অজগরটি অগ্নিদগ্ধ, তাকে চিকিৎসার পর সুস্থ করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এমনটাই সংবাদ মাধ্যমকে জানান নন্দু বাবু।
এদিকে, জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে একটি হরিণ। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের পাতলাখাওয়া এলাকার। এদিন একটি হরিণ লোকালয়ে চলে আসে। তারপর ধানক্ষেতের পাশে থাকা একটি জালে আটকে যায়। সেই দৃশ্য দেখে গ্ৰামবাসীরা হরিণটি ধরে বন দফতরে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে বনকর্মীরা এসে হরিণটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
হাই সিকিওরিটি, ভিভিআইপি (VVIP) জোন, যেখানে মাছি গলার উপক্রম নেই। সেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) দিল্লির বাড়িতে ঢুকে পড়ল সাপ! বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনায় হুলস্থুল। চিহ্নিত বন্যপ্রাণকে (Snake Found) উদ্ধার করতে এবং আবাসিকদের নিরাপদে রাখতে বাড়ির নিরাপত্তার (Security) দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে শুরু তৎপরতা। পরে অবশ্য জানা যায়, পাঁচ ফুট দৈর্ঘ্যের ওই সাপ নির্বিষ ঢোঁড়া প্রজাতির। পোশাকি নাম ‘এশিয়াটিক ওয়াটার স্নেক’, কিন্তু বাংলায় এই সাপকে জলঢোঁড়া বলে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সূত্রে খবর, গায়ে ডোরাকাটা দাগ থাকায় সাপটিকে দেখেই মন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তাঁরা। খবর যায় বন্যপ্রাণ বিভাগে। বিভাগের দু’জন কর্মী এসে সাপটিকে উদ্ধার করেন। জানা গিয়েছে, সাপটি নিরাপত্তা আধিকারিকদের ঘরের সামনে একটি কাঠের প্যানেলে ঢুকে ছিল। এই ধরনের সাপ সচরাচর পুকুর, ডোবার মতো ছোট জলাশয়ে থাকে। ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে এই ধরনের সাপ সংরক্ষণে জোর দেওয়া হয়েছে।
বন্যপ্রাণ বিভাগের এক কর্তা জানান, আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তা আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁরা নিজেরা কোনও হঠকারি সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমাদের খবর দেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষজন মনে করেন সাপ বা অন্য কোনও সরীসৃপ নগরজীবনের কাছে হুমকি। তাদের মেরে ফেলা হয় সহজে। দিল্লি প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বর্ষার মরসুমে দিল্লির নানা প্রান্ত থেকে এমন ৭০টি সাপকে উদ্ধার করা হয়েছে।