সংসদে ধোঁয়া কাণ্ডের পর 'মূলচক্রী' ললিত ঝা-এর (Lalit Jha) সঙ্গে কলকাতা কানেকশন তো আগেই জানা গিয়েছে। এবারে পশ্চিম মেদিনীপুরের কানেকশনও খুঁজে পাওয়া গেল। পুলিস সূত্রে খবর, ললিত ঝা, নীলাক্ষ আইচ এর তৈরি করা 'সাম্যবাদী সুভাষ সভা'র সঙ্গে এবার যোগ পাওয়া গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের। তারা তাদের সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছিল বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো। এছাড়াও এই কাণ্ডে নাম উঠে এসেছে আরও এক ব্যক্তির।
সাম্যবাদী সুভাষ সভা- ললিত ঝা, নীলাক্ষ আইচদের এই সংগঠনই এখন দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার এই সংগঠন নিয়ে উঠে এলো আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিভিন্ন জেলায় সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করে সংগঠন বাড়ানোর কাজে নেমেছিল ললিত ঝা-রা। কীভাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর, মেদিনীপুর শহরেও থাবা বসিয়েছিল 'সাম্যবাদী সুভাষ সভা'। জানা গিয়েছে, মাস কয়েক আগে সমাজ মাধ্যমেই যোগাযোগ করা হয় দাসপুরের ল ক্লার্ক হিমাংশু শেখর মান্নার সঙ্গে। দাসপুর, ঘাটাল সহ আশেপাশের এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল হিমাংশুকে। এলাকায় সংগঠন তৈরি করারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে। রবিবার সকালে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে হিমাংশু জানায়, এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ফান্ড জমা করতে বলা হয়েছিল তাকে। ললিত ঝা-রা যে সংসদে হামলার মতো এত বড় ঘটনা ঘটাতে পারে তা একেবারেই টের পাননি হিমাংশু। টিভিতে সংসদ হামলার খবর দেখানোর পরেই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যায় হিমাংশু।
একইভাবে মেদিনীপুর শহরেও টার্গেট করা হয় মনীষ মাইতি নামে এক যুবককে। শনিবার রাতে মেদিনীপুর শহরে ডিরোজিও নগরে মনীষের বাড়িতে গেলেও দেখা মেলেনি। বাড়িতে তালা। ঠিক এই ভাবেই 'সাম্যবাদী সুভাষ সভা' নিজেদের জাল বিস্তারের চেষ্টা করছিল পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। যার মধ্যে বাদ যায়নি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাও। এই সংগঠনের আসল উদ্দেশ্য কী বা সমাজ সেবার আড়ালে কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য এই সংগঠনের ছিল কিনা তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
হাতির হানায় (Elephant Attack) গুরুতর জখম এক মহিলা-সহ দুই। পশ্চিম মেদিনীপুর (West Midnapur) বন বিভাগের ভাদুতলা রেঞ্জের কিসমত বনকাটি এলাকার ঘটনা। জানা গিয়েছে, বনকাটি এলাকায় রবিবার রাত থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে দলছুট একটি দাঁতাল হাতি। সোমবার ভোরে জঙ্গলে যায় মঞ্জু সিং নামের ওই মহিলা। তখনই হাতির সামনে পড়ে যান মঞ্জু। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের হাতির হামলার মুখে পড়েন মুক্তিপদ রায় নামে এলাকারই এক বাসিন্দা। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকেই স্থানীয়রা নিয়ে যান মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
উল্লেখ্য রবিবারই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় হাতির হানায় প্রাণ গিয়েছে দু'জনের। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের হাতির হানায় রীতিমতো উদ্বেগ বাড়ছে স্থানীয়দের। স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় এখন বন দফতরের কোনও আধিকারিক নেই। যার জেরে হাতির হামলা রুখতে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এবার দুষ্কৃতী তাণ্ডবের হাত থেকে রক্ষা পেল না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। বিদ্যালয় (school) জুড়ে রাতভর দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের অভিযোগ। অভিযোগ পেয়েই বৃহস্পতিবারের দুপুরে বিদ্যালয় চত্বর সরজমিনে তদন্তে যান স্বয়ং দাসপুর থানার ওসি অমিত মুখোপাধ্যায়। ঘটনাটি দাসপুর (Dashpur) থানার সুরতপুর শ্রী অরবিন্দ শতবার্ষিকী বিদ্যামন্দির বিদ্যালয়ের। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের তরফে শিক্ষক (teacher) শিক্ষিকাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে ঢুকতেই দেখা যায় বিদ্যালয়জুড়ে ভাঙচুরের ছবি। নোটিস বোর্ড, মেয়েদের শৌচালয়, বিদ্যালয়ের বাগান সব জায়গাতেই ভাঙচুর, তছনছ কাগজপত্র। বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক অমিত বাবু জানান, 'তাঁদের প্রাথমিক অনুমান বুধবার রাতের অন্ধকারে এই তাণ্ডব চালিয়েছে কেউ বা কারা।' স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে রাতে এই বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করেছিল কয়েকজন বহিরাগত। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই কাজ তাদের হতে পারে।
এদিকে, ঘটনার পরই বিদ্যালয়ের তরফ থেকে দাসপুর থানায় অভিযোগ জানানো হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে দাসপুর থানার ওসি অমিত মুখোপাধ্যায় বিদ্যালয়ে গিয়ে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখেন। দ্রুত ওই দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে পুলিস। তবে রাতদুপুরে এমন দুষ্কৃতী হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
সর্বসাকুল্যে বিদ্যালয়ে (school) সরকারি শিক্ষক মাত্র একজন। ছাত্র-ছাত্রীর (student) কথা ভেবে গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে একজন শিক্ষক (teacher) রেখেছেন বিদ্যালয়ে। একদিকে যখন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, তখনই জুনিয়ার হাইস্কুলের এমনই চিত্র উঠে আসায় হুলুস্থুলু কাণ্ড শিক্ষা মহলে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) সবয়ং-এর। বিদ্যালয়টি যেন একজন শিক্ষকেরই। শিক্ষার্থী প্রায় ৮০ জন বিদ্যালয়টি সরকারি তবুও নেই নজর। দিনে দিনে কমছে শিক্ষার্থী সংখ্যা। সবং ব্লকের মানিকড়া জুনিয়র হাইস্কুলে দীর্ঘদিন ধরে চলছে পাঠদান। এবার সেখানেও ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। অভিভাবকরা হতাশায় রয়েছেন। ধীরে ধীরে ভেস্তে যাচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। গত ৮ মাসেও সাড়া পড়েনি কোনও কর্মকর্তার। এমনকী ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও পরিদর্শনে যাননি কোনও শিক্ষা কর্মকর্তা এমনই অভিযোগ। বর্তমানে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।
জানা গিয়েছে, এই স্কুলে আগে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্য অনেক বেশি থাকলেও শিক্ষকের অভাবে আর কেউ ভর্তি হচ্ছে না। তাহলে কি আস্তে আস্তে বন্ধের পথে এই স্কুল? চিন্তায় এলাকাবাসী থেকে বর্তমান ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবকরা। ২০২২ সালে ওই স্কুলের দায়িত্ব পান সন্দীপ পতি। প্রথম থেকে স্কুলে ছিলেন মোট ৪ জন শিক্ষক। কিন্তু উৎসশ্রী প্রকল্পের মধ্যে ৩ জন শিক্ষক অন্য স্কুলে চলে যাওয়ায় দায়িত্বভার পড়ে সন্দীপবাবুর উপর। এরপর থেকে একাকেই সামলাতে হয় স্কুলের সব দায়িত্ব। পড়ুয়ারা জানায়, স্কুলে শিক্ষকের অভাবে পড়াশুনোয় অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তারা চায় দ্রুত স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। কিছু অবিভাবকরা বর্তমান সরকারের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের জন্য তাঁদের ছেলেমেয়ে পড়াশুনার ক্ষেত্রে ভীষণরকম সমস্যা হচ্ছে। তাঁরাও চান, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ হোক এবং প্রতিষ্ঠান আরও এগিয়ে যাক।
গ্রামবাসীদের দাবি, ছাত্র-ছাত্রীর কথা ভেবে মাত্র আড়াই হাজার টাকায় একজন গেস্ট টিচার রাখা হয়েছে। কবে পাবে নতুন শিক্ষক নাকি প্রতিষ্ঠান বন্ধের দিকে যাবে, সেদিকেই তাকিয়ে এলাকার বাসিন্দা, অভিভাবক ও ছাত্র ছাত্রীরা।
বাল্য বিবাহের (Child marriage) গোপন খবর পেয়ে একেবারে ছাদনাতলায় হাজির পুলিস (police)। পাত্র-সহ পাত্রের বাবা, কাকা ও পুরোহিতকে গ্রেফতার (arrest) করল ঘাটাল থানার পুলিস। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের (Ghatal)। জানা গিয়েছে, পার্থ গুছাইত নামে বনহরিসিংহপুর এলাকার এক পাত্রের সঙ্গে গোপমহল মনোহরপুর এলাকার এক নাবালিকার বিয়ের আয়োজন হয়েছিল। বিয়ে হচ্ছিল বাঘানালার সনৎ চক্রবর্তী নামে এক আত্মীয় বাড়িতে। এই সনৎবাবুই আবার ছিলেন এই বিয়ের পুরোহিত।
বিয়ের খবর পায় ঘাটাল থানার পুলিস। এরপর শনিবার রাতেই বাঘানালা এলাকায় বিয়ের আসরে গিয়ে হাজির হয় ঘাটাল থানার পুলিস। ছাদনাতলা থেকে পাত্র পার্থ গুছাইত-সহ পিতা অশোক গুছাইত, কাকা হারাধন গুছাইত এবং এই বিয়ের পুরোহিত অর্থাৎ সনৎ চক্রবর্তীকে পাকড়াও করে পুলিস। পাত্রীর প্রকৃত বয়স যাচাই করে ধৃত চারজনকে গ্রেফতার করে রবিবার ঘাটাল আদালতে তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, নাবালিকা বিয়ে বন্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে অপরাধ জেনেও মাঝে মধ্যেই ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় এই বিয়ের খবর শোনা যায়। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপও নিয়েছে পুলিস। এই নিয়ে দফায় দফায় ঘাটাল শহরজুড়ে সচেতনতা শিবির থেকে শুরু করে মাইক প্রচার চলছে।
তারপরেও এই নাবালিকা বিয়ের অভিযোগ শুনে চুপ করে বসে থাকেনি প্রশাসন। প্রশাসনের সাফ কথা, সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হবে নাবালিকা বিয়ে। আর বালিকা বিয়ের খবর পেলেই কড়া পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।
উৎসব শেষে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় (Tragic accident) বিষাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুড়ে। মাঠে পড়ে থাকা বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু (death) বাবা-ছেলের। শুক্রবার মোহনপুরের (Mohanpur) শিয়ালসাই পঞ্চায়েতের ধৌড়জামুয়া এলাকার এই ঘটনায় রীতিমতো শোকের ছায়া।
পুলিস সূত্রে খবর, মর্মান্তিক এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বছর ৬২ এর দুলালচন্দ্র কর ও ছেলে বছর ৩২-এর বিষ্ণুপদ করের। জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকালে বাড়ির গবাদি পশুর জন্য মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন দুলালচন্দ্র। তখনই মাথার ওপর দিয়ে যাওয়া হাইটেনশন বিদ্যুত্ লাইন হঠাৎই ছিঁড়ে পড়ে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। এরপর তিনি দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায়, তাঁর খোঁজ শুরু করে পরিবার। আচমকাই ছেলে বিষ্ণুপদ খুঁজতে বেড়িয়ে মাঠে বাবাকে পড়ে থাকতে দেখেন। কিছু না বুঝে বাবাকে তুলতে গিয়ে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। ঘটনার খবর পেতেই দু'জনকে উদ্ধার করে মোহনপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনার পরই ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির অভিযোগে সরব তাঁরা। পুলিস দেহ দু'টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে, নৈহাটি ফেরিঘাটে বিসর্জন দেখতে গিয়ে শুক্রবার কেওড়াপাড়ার বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডলের অস্বাভাবিক মৃত্যু। ফেরিঘাটে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে তাঁর মৃত্যু, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। যদিও প্রশাসনের তরফে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, ফেরিঘাটে থাকা একটি ল্যাম্পপোস্ট তরিদাহত হয়ে থাকায় সেখানে হাত পড়াতেই এই মৃত্যু। পরিবারের অভিযোগ, তরিদাহত হওয়ার পর অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন জয়দেব মণ্ডল। সেই সময় প্রশাসন তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিলে প্রাণ বেঁচে যেত। এই ঘটনায় আরও তিন জন আহত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সাতসকালেই হাতির মৃত্যু (death) ঘিরে চাঞ্চল্য নয়াগ্রামে। সোমবার সকালে গ্রামবাসীরা ধান জমিতে হাতিটিকে (elephant) মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপরই গ্রামবাসীরা ভিড় করতে থাকে সেখানে। ঘটনা জানতে পেরে বন দফতরের টিম (Forest department team) ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। চিকিৎসক এসে নমুনা সংগ্রহের পর হাতিটিকে পোড়ানোর জন্য অন্যত্র সরানো হয়। ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের তিন নম্বর বড়খাঁকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর এলাকার।
জানা যায়, যে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে সেটা একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি। সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিড়িবাড়িয়া জঙ্গল লাগোয়া রঘুনাথপুর এলাকার চাষের জমিতে পূর্ণবয়স্ক হাতিটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি ফোন করে স্থানীয় বন দফতরকে জানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বন দফতরের আধিকারিকরা। তবে কী কারণে ওই হাতির মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
বন দফতর সূত্রে খবর, বন দফতরের পক্ষ থেকে মৃত হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হবে। তারপর কী কারণে ওই হাতির মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে বলে বন দফতরের আধিকারিকরা জানান। তবে হাতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জঙ্গলমহলে হাতির তাণ্ডবে ফসল ঘরবাড়ির ক্ষতি হয় এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। তা সত্ত্বেও জঙ্গলমহলের মানুষ হাতি ঠাকুরকে দেবতা হিসেবে পুজো করেন। তাই এই হাতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে রঘুনাথপুর এলাকায়। বন দফতর সূত্রে আরও খবর, এই মুহুর্তে নয়াগ্রামে প্রায় ৩০টি হাতির একটি দল রয়েছে।
ফের হাতির হানায় মৃত্যু (death) হল এক ব্যক্তির। ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur) গোয়ালতোড় এলাকার। বন বিভাগ (Forest Department) সূত্রে জানা যায়, গোয়ালতোড় বন বিভাগের দুধপতি এলাকায় আচমকাই প্রবেশ করে একটি হাতি (elephant)। হাতি এলাকায় প্রবেশ করাতেই শয়ে শয়ে যুবক সেই হাতিটিকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। গোটা রাস্তাজুড়ে হাতিটিকে ঘিরে ধরে জনজোয়ার নামে। এরপরই ঘটে বিপত্তি। জানা যায়, ওই সময় মাধব মল্য নামে এক ব্যক্তি হাতির সামনে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে তাঁকে সুরে করে আছাড় মারে হাতিটি। এরপর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বন দফতরের কর্মীরা। এরপর বন দফতরের তত্পরতায় হাতিটিকে অন্যত্র সরিয়ে আনা হয়। তবে ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। হাতি উত্ত্যক্ত করার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বন দফতর।
যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে দাঁড়িয়ে নারীরা যে স্বনির্ভর এবং সংসার চালানোর জন্য প্রস্তুত তা প্রমাণ করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার (Debra) রেখা দাস। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর পরিবার সামলাতে ভরসা এখন কুলফির (Kulfi) দোকান।
এক অন্য দুর্গা (durga)! দশ বছর আগেই স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। নিজের হাতেই সংসারের ভার পড়েছে কুলপি বিক্রেতা রেখা দাসের। একা দুর্গা, পরিশ্রম ও জেদের বশে টেনে যাচ্ছেন সংসারের হাল। দলবতিপুরের বাসিন্দা রেখা দাস, নিজেই টলি ভ্যান চালিয়ে পাড়ায় পাড়ায় কুলফি বিক্রি করেন। আর তাঁর পয়সাতেই চলে সংসার। বাবা মায়ের দেখভালও করেন রেখা নিজেই। প্রতিদিন সকাল হলেই শাড়ি পরেই টলি ভ্যান নিয়ে রাস্তায়, পাড়ায়, ওলিতে-গলিতে ঘণ্টা বাজিয়ে কুলপি বিক্রি করে কাটছেন জীবন।
পরিবার সূত্রে খবর, স্বামী দশ বছর আগেই ছেড়েছেন। পরিবারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব এখন রেখার কাঁধেই৷ কিন্তু এতে রেখার কোনও আপসোস নেই। বেজায় খুশিতে রয়েছেন তিনি। তাঁর মা তো বলেই দিয়েছেন, "আমার মেয়ে আমার কাছে দুর্গা।" এখন ডেবরায় মুখে মুখে এই দুর্গার নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজ্যে বহু সংখ্যক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে। সম্প্রতি এক আরটিআই করে এমনই সব বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ২০২১ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে (West Medinipur) ১২২ জন কৃষক ও খেতমজুর আত্মহত্যা করেছেন। এমনটাই বলছে সেই আরটিআই (RTI) রিপোর্ট।
উল্লেখ্য, রাজ্যের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতেই পরিসংখ্যান তৈরি করে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি। ২৭ শে অগাষ্ট আরটিআই কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী আরটিআই করেন। অর্থাত্ তাঁর জবাবেই পশ্চিম মেদিনীপুরের স্টেট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার এন্ড ডেপুটি সুপারিটেনডেন্ট অফ পুলিসের তরফে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে গোটা দেশের বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে অন্য কয়েকটি রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গের নামের পাশেও কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত ক্ষেত্রে আত্মহত্যা দেখানো হয়েছে শূন্য। শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই ২৩ থানা এলাকায় তথ্য প্রদান করা হয়েছে। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে ৬৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। গোয়ালতোড়ে ১৪ ও আনন্দপুরে ১০ জনের আত্মহত্যার তথ্য রয়েছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গের তরফে এনসিআরবি-তে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে মিলছে না আরটিআই থেকে পাওয়া তথ্য। এনসিআরবি-তে দেওয়া তথ্য রাজ্যের তরফে ২০২১ সালে কোনও কৃষক আত্মহত্যা করেননি বলেই জানানো হয়। তবে কি সঠিক তথ্য গোপন করছে রাজ্য সরকার? আরটিআই থেকে পাওয়া তথ্য সঠিক হলে, তা কতটা চিন্তার?
ইতিহাস সমৃদ্ধ বাংলার পট (pot)। বিশ্ব দরবারে সমাদৃত পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur) নয়ার পটচিত্র। পিংলার পটচিত্র পরিদর্শনে এলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক আয়েশা রানী। পিংলা (pingla) ব্লকের একটি ছোট্ট গ্রাম নয়া। এই গ্রামের সঙ্গে মিশে আছে পশ্চিমবঙ্গের এক অন্যতম শিল্পমাধ্যমের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির ইতিহাস। যা শুধু রাজ্য নয় বিশ্বের দরবারে আজ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। পিংলা ব্লকের নয়া গ্রাম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে একমাত্র পটচিত্র গ্রাম। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে এবং উঠোনে এই পটচিত্রের ছাপ রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাড়ির সামনেই পটচিত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন, আবার কেউ কেউ ঘরের সামনে বসেই ছবি আঁকেন।
সংস্কৃতে ‘পট’ শব্দের অর্থ হল কাপড়, আর ‘চিত্র’ মানে ছবি অর্থাৎ পটচিত্র বলতে কাপড়ের উপর অঙ্কিত চিত্রকে বোঝানো হয়। এই চিত্র অঙ্কন করার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি সমস্ত রং ব্যবহার করা হয়। যেমন- গাছের সিম দিয়ে সবুজ রং, ভুসোকালি দিয়ে কালো রং, অপরাজিতা ফুল দিয়ে নীল রং, সেগুন গাছের পাতা দিয়ে মেরুন রং, পান-সুপারি চুন দিয়ে লাল রং, পুঁই ফল দিয়ে গোলাপি রং, কাঁচা হলুদ দিয়ে হলুদ রং, পুকুর খনন করে মাটি বের করে তা দিয়ে সাদা রং ইত্যাদি। সাধারণত এই সমস্ত প্রাকৃতিক রং দিয়ে ছাতা, হাতপাখা, হ্যান্ডব্যাগ, মোড়া, লন্ঠন, কেটলি ইত্যাদি আঁকা হলেও শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট-এ শিল্পীরা ফেব্রিক রং ব্যবহার করে থাকেন।
জানা যায়, এই গ্রামের বেশিরভাগ পটুয়ারাই মুসলিম ধর্মাবলম্বী। কিন্তু তবুও তাঁরা রামায়ণ, মহাভারত, দুর্গা কাহিনী মঙ্গলকাব্যের বিভিন্ন পটচিত্র এঁকে থাকেন। সে জন্যই হয়ত ধর্মীয় সম্প্রীতির মেলবন্ধনের ছবি এই গ্রামেই ধরা পরে। আর এমনই একটি গ্রামের পটচিত্র পরিদর্শনে এলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক আয়েশা রানী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পিংলা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তী, পিংলা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রশান্ত কীর্তনীয়া, পিংলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ মাইতি সহ প্রশাসনিক একাধিক কর্মকর্তারা। এদিন তাঁরা ঘুরে দেখেন প্রতিটি কার্যকলাপ। পরে পটুয়াদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন জেলাশাসক।