সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এবার সাত দফায় চলবে ভোটগ্রহণ পর্ব। আর সেই ভোট পর্ব চলবে বেশিরভাগ স্কুলে। সেই উপলক্ষ্য়ে সংশ্লিষ্ট জেলার স্কুলগুলিতে ছুটির নির্দেশিকা জারি করল স্কুল শিক্ষা দফতর। ৬ই মে থেকে ২রা জুন পর্যন্ত ছুটির নোটিশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর।
সোমবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাশাপাশি প্রাইমারি পর্ষদেও ছুটির ঘোষণা করা হল। লোকসভা ভোটের দিনগুলিতে সংশ্লিষ্ট জেলায় প্রাইমারি স্কুলগুলি ছুটি থাকবে। সেখানেও গরমের ছুটি বাড়িয়ে ৬ মে থেকে ২ জুন অবধি ছুটি ঘোষণা করে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
চলতি মাসের ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে লোকসভা ভোটপর্ব। আর ভোট শেষ হবে আগামী ১ জুন। ৪ জুন হবে ভোটগণনা। সেক্ষেত্রে প্রথম দফার ইলেকশনের জন্য ১৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির জেলার স্কুল বন্ধ থাকবে। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন পর্বের জন্য ২৪ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দার্জিলিং, কালিম্পং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার স্কুলগুলি বন্ধ থাকবে।
ডিএ-র (Da) দাবিতে কর্মবিরতিতে কড়া নবান্ন (Nabanna)। সূত্রের খবর, নজিরবিহীন ভাবে রাজ্যর একসঙ্গে প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে (Teacher) শোকজ করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। জানা গিয়েছে, ১০ মার্চ ধর্মঘটে অনুপস্থিতির কারণে মোট ২২ হাজার ৮৫৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শোকজ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মঘটের কারণে অনুপস্থিতির জন্য এত সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শোকজ করার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলেই দাবি পর্ষদ আধিকারিকদের।
জানা গিয়েছে, সাত দিনের মধ্যে অনুপস্থিতির কারণ উল্লেখ করে উত্তরে চেয়েছে পর্ষদ। এর মধ্যে নদীয়া জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সবথেকে বেশি শোকজ করা হয়েছে। নদীয়ার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শোকজ করা হয়েছে। ১০ মার্চের ধর্মঘটে অনুপস্থিতির তালিকা বিভিন্ন জেলার ডিআইরা পাঠিয়েছে পর্ষদকে। তার ভিত্তিতেই রাজ্যজুড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শো-কজ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের।
নদিয়া জেলার পাশাপাশি উত্তর চব্বিশ পরগনা, মুর্শিদাবাদ জেলাতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষিকাদের শো-কজ করল পর্ষদ। এর আগে গত ২৩ মার্চ খবর পাওয়া গিয়েছিল, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নিচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সে দিনই ১০ মার্চ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকা ধর্মঘটের দিন অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শো কজের প্রক্রিয়া শুরু করে পর্ষদ।
রাজ্যের ২১টি জেলায় অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকা তার মধ্যেই পাঠান সংশ্লিষ্ট জেলার স্কুল বিদ্যালয় পরিদর্শকরা। সেদিন দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার সব শিক্ষক-শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন। তাই বাকি জেলাগুলোর ডিআই-দের পক্ষ থেকে আসা রিপোর্টের ভিত্তিতেই শোকজের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
শুরু চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2023)। প্রশ্ন ফাঁস ও অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে পর্ষদ (WBBSE)। এবছর পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে অভিভাবকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ২০২৩-র মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭২৪ জন পরীক্ষার্থী। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫।
জানা গিয়েছে, ২৮৬৭ সেন্টারে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। ৪০ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী সুষ্ঠু পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। ৯৯% বেশি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা। যে সমস্ত সেন্টারে বা বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে না তাকে স্পর্শকাতর বুথ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এবছর পাহাড়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯০০০। সেখানে ৬০টি সেন্টারে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, অ্যাডিনো ভাইরাসের কথা মাথায় রেখে স্কুলগুলিতে করা হয়েছে সিক রুমের ব্যবস্থা। স্কুলগুলিতে থাকছে স্পেশাল চাইল্ডদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও। বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি পর্ষদের অফিসে বসে কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি। এমনকি পর্ষদের অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।
অতিরিক্ত ভেনু সুপারভাইজার অ্যাপ মাধ্যমে চালাবেন নজরদারি। প্রত্যেক ভেনুতে থাকবে কড়া পুলিসি ব্যবস্থা। মোবাইল ইলেকট্রনিক্স গেজেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। ১১টার সময় প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে কন্ট্রোলরুমে। সাড়ে ১১ নাগাদ ক্লাসরুমে পৌঁছবে প্রশ্নপত্র। ১১:৪৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে পরীক্ষার্থীদের।
এদিকে, সম্প্রতি পর্ষদ সভাপতি পরীক্ষার্থীদের জানান, 'মাধ্যমিক পরীক্ষা ছাত্র জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু শেষ পরীক্ষা নয়।' তাই মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি মে মাসের শেষ সপ্তাহে ফল ঘোষণার সম্ভাবনা বলেও জানান পর্ষদ সভাপতি।