পানীয় জলের পাইপ লাইন (Water Pipe Line) বসাতে মাটি খুঁড়তেই অবাক কাণ্ড বসিরহাটের গ্রামে। জেসিবিতে উঠে এসেছে শতাব্দী প্রাচীন রুপোর মুদ্রা। জানা গিয়েছে, সেই মুদ্রাগুলোয় ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়া (Queen Victoria) এডওয়ার্ড সেভেনের প্রতিকৃতি রয়েছে। ঐতিহাসিক এই ঘটনার সাক্ষী থাকতে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়ে খনন এলাকায়। অনেকে কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন কয়েকটি মুদ্রা (SilverCoin)। তবে কে বা কারা এই মুদ্রা এভাবে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছে, খোলসা করতে পারেননি গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জেসিবি দিয়ে মাটি কাটার সময় বস্তা সমেত কলসিভর্তি কয়েন উঠে এসেছে। কয়েকটি মুদ্রা গ্রামবাসীরাও নিয়ে গিয়েছে। আমাদের পূর্ব পুরুষদের সম্পত্তি বলেই মনে হচ্ছে। এছাড়া আর কী হবে! অপর এক স্থানীয় জানান, জলের পাইপ বসানোর জন্য মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে টাকা পেয়েছে। আমি যতটা শুনেছি একশো-দেড়শো পিস পেয়েছে। আগেকার দিনে লোকে ব্যাঙ্কে টাকা রাখতো না, এভাবেই মাটির ভাঁড়ে টাকা রাখতো। সেই টাকাগুলো কিনা ঠিক বলতে পারব না।
বেহাল রাস্তা (road) মেরামতের কাজ শুরুই হয়নি। উল্টে গ্রামের মধ্যে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফলক বসিয়ে দেখানো হয়েছে ঝামা ইট দিয়ে রাস্তা সারাই ও পাইলিংয়ের কাজ শেষ। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বারুইপুরের (Baruipur) বেগমপুর পঞ্চায়েতের কামরা তেঁতুলিয়া এলাকায়। এলাকার মানুষজন এই কাজে ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, রাস্তা মেরামত না করে শুধু রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় লক্ষাধিক টাকা খরচের ফলক বসানো হয়েছে। যদিও বেগমপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রেখা সরদার বলেন, 'কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা এখনও শেষ হয়নি। যেহেতু বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতি কাজটা করছে, তাই যা উত্তর দেওয়ার তাঁরাই দেবেন।' যদিও কাজ শেষের ফলকের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। এদিকে, বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কানন দাস বলেন, 'খোঁজ নিয়ে দেখব।'
কামরা তেঁতুলিয়া এলাকার রাস্তায় এক জায়গায় ফলকে দেওয়া শিবতলা থেকে শচীন নস্করের বাড়ি পর্যন্ত পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে রাস্তা সারাই ও পাইলিং করতে। যা চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ১৮ নভেম্বর। আবার আর একটি জায়গায় ফলক বসিয়ে দেখানো হয়েছে সনৎ নস্করের বাড়ি থেকে ছোট পোল ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে দেড় লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাস্তা সারাই ও পাইলিং। যার কাজ শেষ হয়েছে ১৮ নভেম্বর।
বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছু জায়গায় শুধু রাস্তা সারাই ও পাইলিংয়ের খরচ দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, 'এত বেহাল রাস্তা, চলাচল করা যাচ্ছে না। লক্ষাধিক টাকা খরচের নামে দুর্নীতি হয়েছে। উত্তর পূড়ির বটগাছ থেকে কামরা বামনের দোকান পর্যন্ত গোটা রাস্তাই বেহাল হয়ে পড়ে আছে। তাও বছরের পর বছর। কবে মেরামত হবে জানেন না কেউই।'
গ্রামের এক প্রান্তে বিদ্যুতের (electricity) অপচয় বাড়িয়ে দিনের আলোতে জ্বলছে রাস্তার আলো। আর অন্যপ্রান্তে বিদ্যুৎ খুটি পুজোর আগে লাগানোর পরও আজও জ্বলেনি আলো। নীল সাদা রঙের বিদ্যুতের খুটি শুধু দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছবিটা তৃণমূল পরিচালিত খোদ জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষর গ্রামের। গ্রামের নাম শঙ্করপুর (Shankarpur)। দুর্গাপুরের (Durgapur) জেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন এই গ্রাম। শুধু এখানেই নয়, এই গ্রামের আশপাশেও বেশ কিছু অংশের বেহাল ছবি ধরা পড়েছে।
ইতিমধ্যেই রাস্তার (road) আলোকীকরণের কাজ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল অন্ধকারময় গ্রামগুলির রাস্তাগুলিকে আলোকীকরণ করা। সেই মোতাবেক এই বছর বিশ্বকর্মা পুজোর সময় নীল সাদা রঙের বিদ্যুতের খুটি বসিয়ে ছিলেন খোদ তৃণমূল পরিচালিত পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ স্বাধীন ঘোষ। কিন্তু অভিযোগ, পুজোর আগে যে খুটি বসেছিল আলোকিকরণের জন্য সেই খুঁটির এল.ই.ডি আলো আজও জ্বলেনি। ফলে রাতের অন্ধকারে সমস্যায় পড়ে যান গ্রামবাসীরা।
সাপ খোপের উৎপাত রয়েছে গ্রামে। অন্ধকারে জীবন হাতে নিয়ে গ্রামের মানুষজন চলাচল করছেন। স্থানীয়রা জানান, মাঝে একবার রাস্তার আলো জ্বলেছিল, কিন্তু ওই একদিনের জন্যই। তারপর থেকেই বন্ধ আলো। তবে অন্যদিকে, শঙ্করপুর গ্রামের এক কোনে থাকা বর্জ্য ফেলার ডাম্পিং স্টেশন যাওয়ার রাস্তায় গুটি কয়েক আলো দিনের বেলাতেও জ্বলছে বিদ্যুতের অপচয় বাড়িয়ে। ছবিটা শুধু শঙ্করপুর গ্রামের নয়, জেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আরও বেশ কিছু গ্রামের ছবি একই রকম।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভোটের সময় ভোট নেয় নেতারা। এরপর আর পাত্তা দেওয়া হয় না ভোটারদের। এছাড়াও ১০০ দিনের কাজ করিয়ে নেওয়ার পর টাকা না দেওয়ার অভিযোগও করেন তাঁরা। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ।
তবে এই ঘটনার পর জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ দফতরের কর্মাধক্ষ স্বাধীন ঘোষ জানান, 'স্থানীয় বিধায়ক ব্যস্ত বিভিন্ন কাজে। তাই উদ্বোধন সম্ভব হচ্ছে না। খুব তাড়াতাড়ি আলো জ্বলবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।'