ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে কার্যত প্রলয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সহ ওমান এবং বেহরিনে। বড় রাস্তা থেকে শুরু করে বিমানবন্দর সর্বত্র জলে ডুবে গিয়েছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার অতিভারী বৃষ্টিতেই এই অবস্থা দেশের। এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এখনও বহু জায়গা জলে ডুবে রয়েছে। ছুটি দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ এবং অফিসগুলিতে। একেবারে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বেনজির পরিস্থিতি দুবাইয়ে।
গত কয়েক দশকে এমন বর্ষণের সাক্ষী থাকেননি দুবাই বাসী। রাস্তা দিয়ে বয়ে চলেছে স্রোতের মতো জল। শপিং মলের ছাদ বেয়ে নামছে জলের ধারা। উঁচু উঁচু হাইরাইজ বিল্ডিং ঝড়ের দাপটে অস্থির। সেখানকার বাসিন্দারা রীতিমতো থরহরি কম্প অবস্থায় রয়েছে।
বিমানবন্দরের রানওয়ে পর্যন্ত ডুবে গিয়েছে দুবাইয়ে। এতটাই বর্ষণ হয়েছে সেখানে। এর আগে কখনও এমন বৃষ্টির কথা ভাবতেই পারেনি দুবাই। রুক্ষ-শুষ্ক মরু অঞ্চল দুবাই। কর্মসূত্রে দুবাইয়ে অসংখ্য ভারতীয় থাকেন। প্রবল বর্ষণে বিমানবন্দরে জল জমে যাওয়া বহু বিমান উড়তে পারছে না। অনেকেই দেশে ফিরতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। ভারতে আসার জন্য যাঁরা বিমানবন্দরে আটকে রয়ছেন তাঁদের সুবিধার্থেই এই হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যেসব ভারতীয় পর্যটকরা আটকে রয়েছেন সেখানে তাঁদের জন্য ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে এই ত্রাণ তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এক খুদের আশ্চর্য কীর্তি শুনে অবাক হবেন আপনিও। মাত্র ৪ বছর বয়সে একটা আস্ত বই লিখে ফেলল সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর এক খুদে। তার নাম সঈদ রশিদ আলমেহেরি (Saeed Rashed Mehri)। সে শুধু বই লেখেনি, সেটি ছাপাও হয়েছে ও ইতিমধ্যে এই বইয়ের এক হাজার কপি বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। এত কম বয়সে বই লিখে জায়গা করে নিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে (Guinness World Record)। বই প্রকাশ করে বিশ্বের কনিষ্ঠতম পুরুষ হয়ে এই খুদে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
সঈদের বয়স মাত্র ৪ বছর ২১৮ দিন। তার বাড়ি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর আবুধাবিতে। তার লেখা বইয়ের নাম 'দ্য এলিফ্যান্ট সঈদ অ্যান্ড দ্য বিয়ার' (The Elephant Saeed and the Bear)। চলতি বছরের ৯ মার্চই রেকর্ড যাচাই করে দেখা গেছে যে ইতিমধ্যেই সঈদের লেখা বই 'দ্য এলিফ্যান্ট সাইদ অ্যান্ড দ্য বিয়ার'-এর ১০০০ কপি বিক্রি হয়ে গেছে। জানা গিয়েছে, এই বইটিতে দুটি প্রাণীর মধ্যের বন্ধুত্ব ও উদারতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
তবে পুরো কথা জানলে আরও অবাক হবেন, শুধুমাত্র সঈদই তার পরিবারে এমন রেকর্ড গড়ে তোলেনি, তার দিদি আলধাবিও বই লিখে নজির গড়েছে। আলধাবিরও গিনেস বুকে নাম উঠেছে। এমনকি সঈদের বই লেখার জন্য বড় অনুপ্রেরণা ছিল তার বড় দিদিই। সূত্রের খবর, ৮ বছর বয়সি আলধাবিই ছিল সঈদের সবচেয়ে বড় সমর্থক এবং মেন্টর। পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ মানুষ (মহিলা) হিসেবে দ্বিভাষী বইয়ের সিরিজ প্রকাশ করার রেকর্ড রয়েছে তার। আবুধাবিতে তার একটি ছোট্ট পাবলিশিং হাউজও রয়েছে,যার নাম 'রেইনবো চিমনি এডুকেশনাল এইডস'।
সঈদ বলেছে, 'আমি আমার দিদিকে খুব ভালোবাসি। আমার ওর সঙ্গে সারাক্ষণ খেলতে ভালো লাগে। আমরা একসঙ্গে বই পড়ি লিখি ছবি আঁকি এবং আরও অনেক কাজ করি। আমি বই লিখেছি, কারণ আমার মনে হয়েছিল আমার নিজেরও বই থাকতে পারে।' দুই দিদি-ভাইয়ের এমন কীর্তি দেখেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, সাফল্য পেতে গেলে বয়স কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।