হাওড়ার দাসনগরে এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। সোমবার ভোর রাতে দাসনগর থানার অন্তর্গত বিরাজময়ী রোডে রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিস এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দাসনগর থানার পুলিস।
জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম রাজকুমার রাম (৫৫)। তিনি দাসনগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পেশায় ট্রলি ভ্যান চালক। ক্যাটারিং-এর বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যেতেন। রবিবার রাতে জন্মদিন উপলক্ষে একটি বাড়িতে অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের পর সেখান থেকে বাসনপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যান নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর সোমবার ভোর রাতে স্থানীয়দের থেকে তাঁর স্ত্রী খবর পান যে রাজকুমার সিড়ির পাশে পড়ে রয়েছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর স্ত্রী।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দাসনগর থানার পুলিস। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে পুলিস উদ্ধার করে হাওড়া হাসপতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে পুলিস একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা নাকি এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিস জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
ভূপতিনগর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ধৃত মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতিকে ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ NIA-র বিশেষ আদালতের। সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য তাজা বোমা তৈরি ও বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ ছিল এই দু'জনের বিরুদ্ধে। এই মামলায় বৃহস্পতিবার ধৃত ২ জনকে পেশ করা হয় আদালতে। এরপরেই আদালতের নির্দেশে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের।
প্রসঙ্গত, ২০২২-র ডিসেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক তৃণমূল নেতা-সহ মৃত্যু হয় ৩ জনের। মৃত্যু হয়েছিল, তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না-সহ তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের। ঘটনার পর পোড়া দেহগুলি রাজকুমার মান্নার বাড়ির অনতিদূরে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। দানা বেঁধেছিল রহস্য। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। এছাড়াও এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অনিন্দ্যসুন্দর দাস নামে এক আইনজীবী। ঘটনার ৩ মাস পর ভুপতিনগর কাণ্ডে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তীতে চলতি মাসেই বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে আক্রান্ত হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। হামলা হয় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপরেও। যদিও শেষমেশ এতকিছুর পরেও শেষরক্ষা হয়নি। গ্রেফতার হয় বিস্ফোরণ কাণ্ডের ২ মূল অভিযুক্ত মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতি।
রাত পেরোলেই রাজ্যে শুরু প্রথম দফার নির্বাচন। আর এই নির্বাচনী আবহে যেভাবে শাসক ঘনিষ্ট নেতা-কর্মীদের নাম, দুর্নীতি, অপরাধ জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে, তাতে আখেরে মুখ পুড়ছে শাসকদলেরই। মত ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও এর প্রভাব ভোটবাক্সে আদৌ পড়বে কিনা বা পড়লেও তা কতটা এখন সেটাই দেখার।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই ফের আসানসোলের কুলটিতে চলল গুলি। অফিসে ঢুকে গুলি করা হয় এক ব্য়বসায়ী। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মৃত্য়ু হয় তাঁর। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ব্য়ক্তির নাম উমাশঙ্কর চৌহান। সোমবার দুপুরে ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে আসানসোলের কুলটি থানার চিনাকুড়ি এলাকায়।
জানা গিয়েছে, এদিন বেলা ১২ টা নাগাদ প্রকাশ্য দিবালোকে অফিসে ঢুকে গুলি চালানো হয় ওই ব্য়বসায়ীর উপর। গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্য়ু হয় তাঁর। খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। অফিসের কর্মীরা বলেন, এক দুষ্কৃতী এসে উমাশঙ্কর চৌহানকে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি করে খুন করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের পুলিস আধিকারিকরা। পৌঁছয় গোয়েন্দা বিভাগ।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যক্ষদর্শীদের আটক করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে প্রকাশ্য দিবালোকে দুপুর বারোটা নাগাদ বাজার এলাকায় এমন ঘটনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। নির্বাচনের আগে এইরকম অস্ত্রের ব্যবহার, গুলি চালানোর ঘটনায় পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার দিকে আঙ্গুল তুলছে সাধারণ মানুষেরা।
ফের পণের দাবিতে প্রাণ গেল এক গৃহবধূর। পরিকল্পনামাফিক খুনের অভিযোগ মৃতার পরিবারের। ইতিমধ্য়েই পুলিসের হাতে গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত স্বামী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে জিয়াগঞ্জ থানার আমিনা বাজার এলাকায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম রকসেনা খাতুন (১৯)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মেয়ের উপর তাঁর স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানানভাবে অত্যাচার করত। প্রায়শই জিনিসপত্রের দাবিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য়ে ঝামেলা অশান্তি চলত। এরপর গতকাল অর্থাৎ রবিবার ওই গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্য়ে থানায় গিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিস মৃতার স্বামী মিসকাতুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
ভরা বাজারে ব্য়বসায়ীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ তুফানগঞ্জ-১ নং ব্লকের মারুগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের মারুগঞ্জ বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যায় তুফানগঞ্জ থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্য়বসায়ীর নাম সজল সাহা (৩৫)। যদিও পুলিস আসার আগেই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
প্রত্য়ক্ষদর্শী সূত্রে খবর, মারুগঞ্জ বাজারের ওপরেই মুদিখানার দোকান ব্য়বসায়ী সজলের। প্রতিদিনের মতোই রাতে কাজ সেরে দোকানের শাটার বন্ধ করছিলেন ওই ব্যবসায়ী। সেই সময় আচমকা এক যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর মাথায় ও বুকে এলোপাথারি কোপাতে শুরু করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় দোকানের সামনেই লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যবসায়ী। এরপর খবর দেওয়া হয় পুলিসকে।
এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্য়ু হয় তাঁর। গোটা ঘটনা ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ইতিমধ্য়ে গোটা ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তে খোঁজ শুরু করেছে পুলিস।
মাকে ফোন করেও মেলেনি উত্তর। বাড়ি ফিরে বাবার ঝুলন্ত দেহ আর মায়ের মৃতদেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে তাজ্জব ছেলে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে অন্ডালের উখড়ার শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারির ভুয়াপাড়ায়। পুলিস সূত্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম নীলকন্ঠ বাউরী (৪২) এবং মৃত মহিলার নাম লিলি বাউরী (৩৫)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অন্ডাল থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহ দুটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
ছেলে রোহিত বাউরীর দাবি, "পাশেই মামার বাড়ি। সেখানে রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। এরপর এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই মায়ের ফোনে ফোন করলেও উত্তর না মেলায় বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরেও সারা না মেলায় দরজা ভেঙে দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায় বাবার দেহ এবং মায়ের দেহ বিছানায় পড়ে থাকতে।" যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত স্বামী-স্ত্রীর মধ্য়ে প্রায়শই ঝামেলা অশান্তি হত।
পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, দীর্ঘদিন ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ লেগেই ছিল। গত কয়েকদিনে সেই বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। তখনই নীলকন্ঠ বাউরী দেওয়ালে 'আমরা একসঙ্গে যাব' লিখে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজের গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন স্বামী। তবে কি পারিবারিক বিবাদের জের নাকি অন্য় কোনও কারণ রয়েছে এই ঘটনার পিছনে? ইতিমধ্য়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে অন্ডাল থানার পুলিস।
লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে তৃণমূলে অভিমানী মুখের সংখ্যা যেন তত বাড়ছে। এবার মালদহ উত্তর থেকে টিকিট না পেয়ে মুখ খুললেন রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। দলের সিদ্ধান্তে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
১০ মার্চ ব্রিগেডে দলের জনগর্জন সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সবাইকে টিকিট দেওয়া গেল না। তারপরেই বিজেপিতে ফিরেছেন অর্জুন সিং, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন ওরফে বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডলরা। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মৌসম বেনজির নূর।
সাংবাদিক বৈঠকে মৌসম বলেছেন, তিনি মালদহের দুই বারের সাংসদ। দলের জেলা সভাপতি। আগেরবার হেরে গিয়েছিলেন। একই পরিবার থেকে দুই দলের দুই প্রার্থী থাকার কারণে ভোট ভাগ হয়েছিল। তারপরেও এবার ভেবেছিলেন টিকিট পাবেন এবং জেতার ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলেন। বিজেপিকে হারানোর আশা তৈরি হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন মৌসম। যাইহোক দলনেত্রী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপযুক্ত বলে মনে করেছেন, তাই টিকিট দিয়েছেন। তাঁকে সমর্থন করার কথাও সংবাদ মাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন রাজ্যসভার বর্তমান সাংসদ।
মৌসম যে অভিমানী তাঁর বক্তব্য থেকে তা স্পষ্ট। যদিও তিনি সরাসরি দল বা দলনেত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। তাঁর কথায়, দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তিনি অনুগত সৈনিক হিসেবে মেনে নিচ্ছেন। যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চয়ই ভেবে নেওয়া হয়েছে।
ত্রিকোণ প্রেমের জেরে চলন্ত বাসের মধ্য়ে স্ত্রীর প্রেমিকের গলায় ছুরি চালিয়ে খুনের চেষ্টা স্বামীর। বাধা দিতে গেলে আক্রান্ত হন স্ত্রীও। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার মল্লেশ্বরের কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। বর্তমানে আহত দুইজনকে ভর্তি করা হয়েছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছয়েক আগে মালদহের হবিবপুরের বাসিন্দা নমিতার সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার অলকাধড়া গ্রামের বাসিন্দা সৌরভ সিংহবাবুর। তাঁদের একটি মেয়েও হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী থেকে হঠাৎ শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়ে সহ নিখোঁজ হয়ে যান নমিতা। এরপর নমিতার শাশুড়ি সিমলাপাল থানায় লিখিত অভিযোগে জানান ময়ূরেশ্বরের যুবক শেখ ঔরঙ্গজেব তাঁর পুত্রবধু নমিতা ও নাতনিকে অপহরণ করে লুকিয়ে রেখেছে।
গতকাল, মঙ্গলবার বিশেষ সূত্রে নমিতার স্বামী সৌরভ খবর পান খাতড়া আদালতে প্রেমিক শেখ ঔরঙ্গজেবকে নিয়ে খাতড়া আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসেছেন নমিতা। এরপর থেকেই নমিতাকে অনুসরণ করতে শুরু করে তাঁর স্বামী সৌরভ। নমিতা তাঁর মেয়ে ও প্রেমিক শেখ ঔরঙ্গজেবকে সঙ্গে নিয়ে বাঁকুড়া থেকে দুর্গাপুরগামী বাসে উঠলে কেরানীবাঁধ এলাকায় সেই বাসে উঠে পড়ে তাঁর স্বামীও।
অভিযোগ, চলন্ত বাসের মধ্য়েই সৌরভ হাতে ছুরি নিয়ে ঔরঙ্গজেবের উপর হামলা চালায়। তাঁকে আটকাতে গেলে আহত হন নমিতাও। ঘটনার পরই বাস থেকে নেমে রাতের অন্ধকারে চম্পট দেয় সৌরভ। ঘটনায় হতচকিত বাস চালক বাস ঘুরিয়ে সোজা বাঁকুড়া সদর থানার উদ্দেশ্য়ে রওনা দেয়। ইতিমধ্য়েই অভিযুক্ত সৌরভের খোঁজে তল্লাশি শুরু করছে পুলিস।
পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ। অভিযোগ বেআইনি নির্মাণের। যার ফলে চলে গেল কিছু অসহায় মানুষের প্রাণ। নির্মীয়মাণ ইমারত ভেঙে পড়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বাড়ছে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ, জমছে অভিযোগের পাহাড়। বেআইনি নির্মাণের কথা মেনে নিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং। স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিয়েছেন আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু ততক্ষণে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে কীভাবে মিললো বেআইনি নির্মাণের ছাড়পত্র? ইতিমধ্যে ঘটনায় কলকাতা পুরসভা শোকজ করেছে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার- কে।
রবিবার রাতে পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বহুতলের একাংশ ভেঙে পড়ে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকাদের উদ্ধার এখনও জারি। ২০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে খবর। ওই এলাকাটি ১৫ নম্বর বোরো এলাকার অন্তর্গত। গার্ডেনরিচের ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জন প্রোমোটারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, এই ঘটনায় প্রোমোটার-সহ অন্যান্য জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর সোমবার সকালে এক্স হ্যান্ডেল দীর্ঘ পোস্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, এটা তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়। তিনি পোস্টে স্পষ্টভাবে লিখেছেন গার্ডেনরিচ এলাকায় ২০১০ সাল থেকে ৫ হাজারে বেশি এরকম বেআইনিভাবে জলাজমি ভরাট করে অন্তত ৮০০টি বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। যার নেপথ্যে সরাসরি তিনি কলকাতা পুরসভা ও মেয়রকেই দায়ী করেছেন। তৃণমূল ও পুলিসের যোগসাজশেই ভরাটের অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা। ফিরহাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুভেন্দু প্রশ্ন ছুঁড়ে দিযেছেন। গোটা এলাকায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হোম টার্ফ। ফিরহাদ হাকিম কি এর দায় এড়াতে পারেন? মেয়রের নাকের নিচে অবৈধ নির্মাণের ধারণা ছিল না? এদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে। এখানেই থামেননি শুভেন্দু। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
মৃতদের ৫ লক্ষ, আহতদের ১ লক্ষ ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয়। কারণ এটি একটি TMC-র তৈরী বিপর্যয়। মৃতদের ৫০লক্ষ, আহতদের ১০ লক্ষ ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ও মেয়রের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনবিধি ভঙ্গের অভিযোগও আনেন শুভেন্দু। তিনি প্রশ্ন তোলেন ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে আদর্শ নির্বাচন বিধি। মুখ্যমন্ত্রী বা মেয়র প্রত্যেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও কীভাবে প্রকাশ্যে তাঁরা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন? তাই এ ব্যাপারে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিরোধী দলনেতা।
গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের দুর্ঘটনাকে ‘তৃণমূলের তৈরি বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করে এভাবেই মেয়র, মুখ্যমন্ত্রী, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতা সরব হন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে।
কপালে চারটে সেলাই নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসএসকেম হাসপাতালে চিকিৎসকরা মুখ্যমন্ত্রীর এই পড়ে যাওয়ার নেপথ্যে ‘পুশ ফ্রম বিহাইন্ড' কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ পিছন থেকে ধাক্কা। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল বিভিন্ন মহলে। বাড়িতে কীভাবে এই ঘটনা ঘটতে পারে, তা নিয়ে নানামহলে নানা প্রশ্ন। এরই মাঝে ‘পুশ ফ্রম বিহাইন্ড’-এর ব্যাখ্যা দিল এসএসকেএম।
এসএসকেএম-এর ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিষয়টা আদতে পিছন থেকে কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন তা একেবারেই নয়। উনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছেন। সেই সময় কেউ ধাক্কা দিলে যেমন অনুভূত হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সেরকম মনে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকদের। সেটাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু সেটা কোনওভাবেই কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন তেমনটা নয়।
পুলিস সূত্রে খবর, চিকিৎসকের তরফে কোনও ধাক্কা দেওয়া হয়নি জানানোই, আপাতত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ধাক্কা তথ্য না থাকলে অভিযোগ দায়ের করবে না পুলিস। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এসেছিলেন কলকাতা পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয়েছিল হাসপাতালে। তাঁর কপালে গুরুতর আঘাত ছিল। কপাল ফেটে রক্ত বেরোয়। হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এমআরআই, সিটিস্ক্যান করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই হইহই পড়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি শেয়ার করে তাঁর আরোগ্য কামনা করতে অনুরোধ জানিয়েছিল অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী সকলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর আরোগ্য কামনা করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই তাঁর চিকিৎসায় কার্ডিও,মেডিসিন, সহ আরও বেশ কয়েকটি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। আপাতত শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল মুখ্যমন্ত্রীর। তবে আজ, শুক্রবার ফের শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।
নিমতায় খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা শহর কলকাতা। ওষুধ ব্য়বসায়ীকে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে যেভাবে, তা সিনামার থেকে কম কিছু নয়। এবার সেই খুনের ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্য়কর তথ্য়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যবসায়ীয় নাম ভব্য লাখানিয়া। গত ১০ তারিখ সোমবার তিনি তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী নিমতার বাসিন্দা অনির্বাণ গুপ্তার সঙ্গে দেখা নিমতার প্রবোধ মিত্র লেনের বাড়িতে যান তাঁর প্রাপ্য় ৫০ লক্ষ টাকা বুঝে নিতে। এরপরেই টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিষয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়। হঠাৎ তা বচসায় পরিণত হয়। বচসা চলকালীন আচমকা অনির্বাণ ভব্য লাখানিয়ার উপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভব্য লাখানিয়া নামে ওই ব্যবসায়ীর।
এরপর অভিযুক্ত অনির্বাণ গুপ্তা এবং তাঁর সাহায্যকারী সুমন দাসকে সঙ্গে নিয়ে ওই ওষুধ ব্য়বসায়ীর দেহ লুকোনো ব্য়বস্থা শুরু করেন। যদিও খুন করার অভিযোগে পুলিসের হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত অনির্বাণ গুপ্তা ও সুমন দাস। এমনকি খুনের কথা স্বীকারও করে নেয় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী। এরপর তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্রেস করে নিমতার প্রমোদ মিত্র লেনের গিয়ে জলের ট্যাঙ্কের নিচ থেকে ভব্য লাখানিয়ার দেহ উদ্ধার করে পুলিস।
অভিযুক্ত অনির্বাণ গুপ্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, ব্য়বসায়ী খুনের ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড হলেন এই অনির্বাণ। কিন্তু তিনি কোথায় রেখেছে ৫০ লক্ষ টাকা? আর সেই টাকার হদিশ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বালিগঞ্জ গোয়ান্দা বিভাগ। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ব্য়বসায়ীকে ভুয়ো মেল পাঠিয়ে টাকা নিজের অ্য়াকাউন্টে নিয়েছে অভিযুক্ত। তারমধ্য়ে ২০ লক্ষ টাকা গিয়েছে অনির্বাণ-এর এক বান্ধবীর অ্য়াকাউন্টে। আর ১০ লক্ষ টাকা গিয়েছে অনির্বাণ-এর নিজের অ্য়াকাউন্টে। কিন্তু আর বাকি ২০ লক্ষ টাকা কোথায়? তারই খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস।
প্রাপ্য লক্ষাধিক টাকা নিতে নিমতায় এসে ব্যবসায়িক সঙ্গীর হাতে খুন ভবানীপুরের বাসিন্দা ভব্য লাখানি। প্রাপ্য নিতে এসে এভাবে মৃত্যু, ভাবতেই পারছে না ব্যবসায়িক মহল। প্রশ্ন উঠছে, ঠাণ্ডা মাথায় এই খুন, তাহলে কি কোনওরকম ভয়ডর নেই অভিযুক্তের মনে। স্পষ্টতই ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক, আশঙ্কার ছাপ স্পষ্ট! ওয়াকিবহাল মহলে জোর চর্চা, ব্যবসায় আর্থিক লেনদেন ঘিরে বিবাদে নৃশংস হত্যাকাণ্ড! কোথাও কি নিরাপত্তাহীনতা, সুরক্ষিত নয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা?
গত একবছরে রোমহর্ষক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে এই বাংলায়। একই দিনে পুরুলিয়া এবং নদিয়ায় সোনার দোকানে ডাকাতি। পালানোর সময় পুলিসের উদ্দেশে গুলি চালনার ঘটনাও নদিয়ার ডাকাতির ঘটনায় ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। মালদহে ফিল্মি কায়দায় সোনার দোকানে ডাকাতি, এসব দৃশ্য খুবই পরিচিত এ বাংলায়। গত ১৩ বছর শাসক দলের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, সিন্ডিকেট রাজের ভুরি ভুরি অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। যার সাম্প্রতিক সংযোজনে সখেরবাজারে ৩ডি ও ৩ডি/১ বাসের স্টার্টার রুমে তালা লাগানোর ঘটনা। ব্রিগেডের জন্য বাস চেয়ে না পেয়ে বাসস্ট্যান্ডের স্টার্টার রুমের তালা লাগানোর অভিযোগে কাঠগড়ায় খোদ তৃণমূল কাউন্সিলর। ব্যাহত বাস পরিষেবা, বিপাকে পরিবহণ ব্যবসায়ী, বাস শ্রমিকরা। কোথাও কি একটা অদ্ভূত নৈরাজ্য, অরাজকতা, প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল।
ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম নিরাপত্তা, সুরক্ষা না থাকলে এত লক্ষ-কোটি খরচ করে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মলেন আয়োজনের মানে কি, প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির। ক্ষুদ্র ব্যবাসীয়রা পড়ে পড়ে মার খাবেন আর বৃহত্ লগ্নিকারীরা কি নিজেদের সুরক্ষিত মনে করবেন এ বাংলায়? এই প্রশ্ন ঘিরে চর্চা তুঙ্গে নাগরিক সমাজে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সিন্ডিকেটরাজ, তোলাবাজি বন্ধ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে ভব্য লাখানির মতো ঘটনা আরও ঘটবে। ক্রমেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন বাংলার ব্যবসায়ীরা। আর ক্রমেই বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি থেকে কয়েক যোজন দূরে সরবে বাংলা।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির পরতে পরতে রহস্য। সেই রহস্যের পর্দাফাঁস করতে জোরকদমে তদন্তে নেমেছে ইডি। সূত্রের খবর, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কালিদাস সাহা নামে এক ব্যক্তি জ্যোতিপ্রিয়র তিনটি কোম্পানিতে ৫০ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করেছিলেন। পাশাপাশি, শহিদুল রহমানের স্বীকারোক্তি থেকে জানা গিয়েছে যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যখন West Bengal Essential Commodities Supply Corporation লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন তাঁকে এই রাইস মিল থেকেই নগদ অর্থ দেওয়া হতো।
উল্লেখ্য, রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমানের সূত্র ধরেই গত অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখে জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করে ইডি। এরপর গত ডিসেম্বর মাসে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে চার্জশিট পেশ করেছিল ইডি। তাতে তৎকালীন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে কাঠগড়ায় তুলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এমনকি, এই দুর্নীতিতে মদত দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়, চার্জশিটে এমনটাই দাবি করেছিল ইডি। আগামী দিনে এই দুর্নীতির তদন্তে কোনও রাঘব বোয়ালের নাম উঠে আসে কিনা, সেটাই এখন দেখার।
টাকা-পয়সা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে খুন ব্যবসায়ী! ভবানীপুরের ওষুধ ব্যবসায়ীকে খুনের পর দেহ লোপাট করতে জলের ট্যাঙ্কের নিচে দেহ বস্তাবন্দি করে পুঁতে রাখা হয়েছিল। তারপরে সেখানে পাঁচিল তুলে তা প্লাস্টার করে দেয় বলে অভিযোগ। হাড়হিম করা এই ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা। ইতিমধ্যে ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুইজনকে।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ব্যবসায়ীয় নাম ভব্য লাখানিয়া। গত ১০ তারিখ তিনি তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী নিমতার বাসিন্দা অনির্বাণ গুপ্তার সঙ্গে দেখা করতে নিমতার প্রবোধ মিত্র লেনের বাড়িতে আসেন। এরপরেই টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হয়। আচমকা তা বচসায় পরিণত হয়। অনির্বাণ ভব্য লাখানিয়ার উপর হামলা চালায়। সেই ঘটনাতেই মৃত্যু হয় ভব্য লাখানিয়া নামে ওই ব্যবসায়ীর। অনির্বাণ গুপ্তা এবং দেহ লোপাটে অনির্বাণকে সাহায্যকারী সুমন দাসকে গ্রেফতার করে পুলিস।
এরপরে ব্যবসায়ীর দেহ লোপাট করতে অনির্বাণ বাড়ির জলের ট্যাঙ্কের নিচে দেহ লুকিয়ে দেয়। তারপরেই সেখানে দেওয়াল তুলে তা প্লাস্টার করে দেয়। এদিকে ভব্য লাখানিয়া বাড়ি না ফেরায় তাঁর পরিবারের তরফ থেকে ভবানীপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করা হয়। পরিবারের তরফে অভিযোগ, ২৯- এ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে ভব্য লাখানিকে অপহরণ করা হয়। বালিগঞ্জ থানা, অ্যান্টি রাউডি সেকশন ও ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট এবং হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে এই রহস্যজনক খুনের।
তদন্ত নেমে অনির্বাণ গুপ্তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। শেষমেশ খুনের কথা স্বীকার করে নেয় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী। এরপরেই তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্রেস করে নিমতার প্রমোদ মিত্র লেনের ঠিকানা পায়। সেখানে হানা দিয়ে জলের ট্যাঙ্কের নিচ থেকে ভব্য লাখানিয়ার দেহ উদ্ধার করে। পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এর পাশাপাশি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের কাছ থেকে রক্ত মাখা জামা সহ বেশ কিছু সামগ্রী উদ্ধার করে। সেগুলো সব ফরেন্সি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ভব্য লাখানিয়ার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে পাঠানো হয়।