সোমবার এসএসসির রায় বেরোনোর পর, মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অভিযুক্তদের জামিন মামলার। শুনানিতে মুখ্য সচিবের ওপর চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ২ বছর আগে তদন্তকারী সংস্থা মুখ্যসচিবের কাছ থেকে অনুমোদন পত্র চেয়েছে। কিন্তু তা জমা তো পড়েনি, এমনকি অনুমোদন পত্র দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্তও জানানো সম্ভব হয়নি মুখ্যসচিবের।
যদিও শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, নির্বাচনের জন্য কমিশনের নিয়মাবলীর মধ্যে বিষয়টি পড়ে যাওয়ায় মুখ্যসচিব অনুমোদন পত্র তৈরি করতে পারেননি। ক্ষুব্ধ বিচারপতি বাগচী জানান, দেড় মাসে মুখ্যসচিবের একটা অনুমোদন পত্র তৈরি করার সময় হচ্ছে না! নির্বাচন কমিশনের নিশ্চই নির্বাচনে নির্দিষ্ট ভূমিকা আছে। তবে আদালত তো নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে কিছু করতে বলছে না। তাহলে সমস্যা কোথায়? বিচারপতির আরও মন্তব্য, রাজ্যের একজন উচ্চপদস্থ অফিসার এভাবে যুক্তি দেখিয়ে নিজের দায় এড়াচ্ছেন? আজ বলছেন নির্বাচন কাল বলবেন অন্য কাজ আছে। ক্রিমিনাল কোর্টের এত সময় কোথায়? সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদীও জানান, অনুমোদন পত্র পেলেই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। নিয়মের বন্ধনে আমাদের হাত বাঁধা। ট্রায়ালও চলছে শ্লথ গতিতে।
দীর্ঘ শুনানির পর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, মুখ্যসচিব এর হলফনামায় খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট। মুখ্যসচিবকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আদালত দশদিন সময় দিল। তারপরেও যদি মুখ্য সচিব অনুমোদন পত্র না জমা দেন, সেক্ষেত্রে রুল ইস্যুর হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২ মে।
জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ-এর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় সিবিআই অনুসন্ধান হোক। অনুসন্ধানের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানান বিচারপতি।
পাহাড় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন মেনে আবেদন করেছিল রাজ্য। রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ, শুক্রবার তারই রায়দান হল। রায় দান করতে গিয়ে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ জানান, রাজ্যের আবেদনের কোনও গুরুত্ব নেই। সিবিআই অনুসন্ধান রিপোর্ট দেওয়ার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। আপাতত সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
ভূপতিনগর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ধৃত মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতিকে ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ NIA-র বিশেষ আদালতের। সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য তাজা বোমা তৈরি ও বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ ছিল এই দু'জনের বিরুদ্ধে। এই মামলায় বৃহস্পতিবার ধৃত ২ জনকে পেশ করা হয় আদালতে। এরপরেই আদালতের নির্দেশে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের।
প্রসঙ্গত, ২০২২-র ডিসেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক তৃণমূল নেতা-সহ মৃত্যু হয় ৩ জনের। মৃত্যু হয়েছিল, তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না-সহ তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের। ঘটনার পর পোড়া দেহগুলি রাজকুমার মান্নার বাড়ির অনতিদূরে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। দানা বেঁধেছিল রহস্য। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। এছাড়াও এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অনিন্দ্যসুন্দর দাস নামে এক আইনজীবী। ঘটনার ৩ মাস পর ভুপতিনগর কাণ্ডে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তীতে চলতি মাসেই বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে আক্রান্ত হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। হামলা হয় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপরেও। যদিও শেষমেশ এতকিছুর পরেও শেষরক্ষা হয়নি। গ্রেফতার হয় বিস্ফোরণ কাণ্ডের ২ মূল অভিযুক্ত মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতি।
রাত পেরোলেই রাজ্যে শুরু প্রথম দফার নির্বাচন। আর এই নির্বাচনী আবহে যেভাবে শাসক ঘনিষ্ট নেতা-কর্মীদের নাম, দুর্নীতি, অপরাধ জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে, তাতে আখেরে মুখ পুড়ছে শাসকদলেরই। মত ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও এর প্রভাব ভোটবাক্সে আদৌ পড়বে কিনা বা পড়লেও তা কতটা এখন সেটাই দেখার।
সমতলের ধাঁচে এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ পাহাড়েও। সম্প্রতি জিটিএ তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআইকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অভিযোগ ২০১৯ সালে আপার প্রাইমারিতে ৩১৩ জন ও প্রাইমারিতে ১২১ জন শিক্ষক নিয়োগ হয়। যেখানে ভলেন্টিয়ার শিক্ষককে স্থায়ীকরণ করা হয়। অভিযোগ, এই নিয়োগ কোনও নিয়ম না মেনেই হয়েছে। এমনকি বহু এমন ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা কখনও ভলেন্টিয়ার শিক্ষকই ছিলেনই না। ইতিমধ্যেই ওই ৩১৩ জন শিক্ষকের তালিকা সিএন-এর হাতে ওই তালিকায় এরকম দুইজনের নাম উঠে আসছে।
ওই তালিকার ৮৩ নম্বর রয়েছে কেশব রাজ শর্মার নাম যিনি ওই ভলেন্টিয়ার শিক্ষক নিয়োগের ভেরিফিকেশন প্রসেসের সদস্য। অভিযোগ এই ব্যক্তি কখনও কোনও স্কুলে ভলেন্টিয়ার এর শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেননি। এমনকি পাহাড়ের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা দল যে দলটি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ দল নামে পরিচিত ওই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের আত্মীয়।
ঘটনায় অপর একজনের নাম উঠে আসছে, যার নাম সঞ্চাবির সুব্বা। অভিযোগ এই ব্যক্তি কোন স্কুলে প্যারা টিচার হিসেবে কাজ করেনি, এমনকি তার বিএড ডিগ্রিও নেই। এছাড়া এই ব্যক্তি বর্তমানে জিটিএ শিক্ষা বিভাগের ডেপুটি চিফ এক্সজিউটিভ। ফলে সে কিভাবে জিটিএ ৩১৩ জন শিক্ষক নিয়োগ তালিকায় এল তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে উঠছে প্রশ্ন।
রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় আজ, শুক্রবার তৃতীয় চার্জশিট পেশ করতে চলেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, তৃতীয় চার্জশিটে ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসের নাম থাকার সম্ভাবনা। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নগদ রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ৩৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের অনুমান জ্যোতপ্রিয়র সেই অর্থ এজেন্ট মারফত নগদে বিশ্বজিতের কাছে পৌঁছে যেত। এরপর তিনি সেই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে দিতেন। চার্জশিটে এই বিষয়ে উল্লেখ থাকতে চলেছে। এছাড়া বিশ্বজিৎ দাসের সোনার ব্যবসা ছাড়াও একাধিক ব্যবসার হদিশ মিলেছে নতুন করে, সেই সমস্ত বিষয় উল্লেখ করা থাকবে চার্জশিটে।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল ইডি। সেখানে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা রেশন দুর্নীতি মামলায় বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে ইডি চার্জশিটে উল্লেখ করেছে। ইডি-র দাবি, সেই টাকা শঙ্কর আঢ্যের নামে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সেই সূত্রেই শঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। শঙ্করের নামও দ্বিতীয় চার্জশিটে উল্লেখ করে ইডি। এবার তৃতীয় চার্জশিটে জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসের নাম থাকবে বলেই খবর।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ভূপতিনগরে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছিল এনআইএ আধিকারিকদের। এদিকে পুলিস এনআইএর বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই এফআইআর খারিজ করার আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার আদালতের দ্বারস্থ হল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এই মামলার আবেদন জানানো হয়েছে। আজই বেলা আড়াইটে নাগাদ এই মামলার শুনানি৷
সন্দেশখালিতে তদন্তে গিয়ে এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। আধিকারিকের মাথা ফাটে। প্রাণ নিয়ে পালিয়ে ফেরেন তদন্তকারীরা। এরপর দেখা গিয়েছিল ইডির বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ইডিকেও সেই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল। এবার একই পথে হেঁটে এনআইএও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল। ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তে গিয়েছিল এনআইএ। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন তারা। গ্রামবাসীদের মধ্যে মূলত মহিলারা পথ আটকান। লাঠি, বাঁশ নিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান। গাড়ির কাঁচ ভাঙা হয়৷
অভিযুক্তদের গ্রেফতারে বাধা দেওয়া হয়। একজন এনআইএ অফিসার জখম হন। সেই ঘটনায় এনআইএ অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু পরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ করা হয়। ভূপতিনগরের ঘটনায় রীতিমতো তরজা চলছে রাজনৈতিক শিবিরে।
শনিবার ভূপতিনগরের ঘটনায় এনআইএ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস মঙ্গলবার সকাল অবধি গ্রেফতার করেনি বলে খবর৷ এনআইএর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ে করা হয়েছে। ধৃত এক তৃণমূল নেতার পরিবার এই অঅভিযোগ দায়ের করেছে৷ এই অভিযোগের তদন্ত পুলিস করছে।
ভূপতিনগরে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ওপর হামলার ঘটনায় এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনে পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধে নালিশ বিজেপির। মূলত পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার গ্রামীণ পূর্ব মেদিনীপুর, মহকুমা পুলিস অফিসার কন্টাই এবং ভূপতিনগরের ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করছে পুলিস। কিন্ত পুলিসের এই পক্ষপাতিত্ব কাম্য নয়। তাই পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধে কমিশনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি বিজেপির।
প্রসঙ্গত, ভূপতিনগরকাণ্ডের তদন্তে অভিযোগ উঠেছিল অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে আটক করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিল এনআইএর তদন্তকারী আধিকারিকরা। বাঁশ-লাঠি নিয়ে সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর হামলার ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর শাসকদলের দুষ্কৃতিদের ধেয়ে আসার ঘটনা। কিন্তু বঙ্গে সত্য উদঘাটন করতে গেলে কেন বার বার আক্রান্ত হতে হবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকেই? স্থানীয় পুলিস প্রশাসন কেন নিরুত্তাপ এই ঘটনায়। তবে কি সত্যিই প্রশাসনের অঙ্গুলিহেলনেই চলে পুলিস? কমিশনের হস্তক্ষেপেই মিলবে সব প্রশ্নের জবাব তা বলাই বাহুল্য।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে ফের এনআইএ-র পক্ষ থেকে তলব করা হল তিন তৃণমূল নেতাকে। আজ, সোমবার কলকাতায় এনআইএ-এর সদর দফতরে এসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ওই তিন তৃণমূল নেতাকে। যে তিনজনকে তলব করা হয়েছে, তাঁরা হলেন সুবীর মাইতি, নবকুমার পান্ডা ও মানব কুমার পয়রাকে।
গত শনিবার ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে দুই মূল ষড়যন্ত্রকারীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ধৃত ওই দু'জন হল বলাই চরণ মাইতি এবং মনোব্রত জানা। দুইজনেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। এনআইএ-এর আধিকারিকরা ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। জনরোষে আক্রান্ত হতে হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির সদস্য়দের। NIA-এর গাড়ি লক্ষ্য় করে ছোড়া হয় ইট পাথর। আর সেই ইটের আঘাতে আহত হন দুই এনআইএ আধিকারিক। এমনকি তাঁদের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গ্রামবাসীরা। টায়ার জ্বালিয়ে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ অবরোধ। যদিও এখন পুরোপুরি শান্ত রয়েছে ভূপতিনগর।
গত ২০২২ এর ২রা ডিসেম্বর ভগবানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভূপতিনগর থানা এলাকার নাড়ুয়াবিলা গ্রামে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা ফেলা হয়। আর সেই বোমা বিস্ফোরণকাণ্ডে মৃত্য়ু তিনজনের। বোমার ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। নবকুমার পান্ডা, সুবীর মাইতি, মিলন বার, অরুন মাইতি ওরফে উত্তম মাইতি, বলাইচরণ মাইতি, শিবপ্রসাদ গায়েন, মানব কুমার পড়ুয়া এবং মনোব্রত জানা। এই ৮ তৃণমূল নেতা কর্মীকে বেশ কয়েকদিন আগেই এনআইএ-র পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছিল। এর মধ্য়ে আজ ফের তিনজনকে তলব করা হয় এনআইএয়ের তরফে।
ভূপতিনগরের বিস্ফোরণ মামলায় দুইজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে ওই দুটি মূল ষড়যন্ত্রকারীকে গ্রেফতার করতে গিয়ে অশান্ত পরিবেশ তৈরী হয়। জানা গিয়েছে, ধৃত ওই দু'জন, বলাই চরণ মাইতি এবং মনোব্রত জানা। দুইজনেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা। এমনকি সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বোমা তৈরি ও বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করেছিল ওই দুই ধৃত।
পূর্ব মেদিনীপুরের নারুয়াবিল্লা গ্রামে রাজকুমার মান্নার বাড়িতে গত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়। রাজ্য পুলিস প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণে নিহত তিনজনের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছিল। পরবর্তীকালে, কলকাতা হাইকোর্টে আইনের প্রাসঙ্গিক ধারাগুলি প্রয়োগ করার এবং মামলাটি NIA-তে স্থানান্তর করার জন্য একটি প্রার্থনা সহ একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। এরপর গত ২০২৩ সালে হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে NIA মামলাটি গ্রহণ করে।
বিস্ফোরনকাণ্ডের তদন্ত চলাকালীন এনআইএ এই মামলায় আরও বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের ভূমিকা উন্মোচন করেছেন। যার মধ্যে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত, নরুয়াবিলা গ্রামের মনোব্রত জানা এবং নিনরুয়া আনালবেরিয়ার বলাই চরণ মাইতি। এই দুই ব্যক্তি সক্রিয়ভাবে অপরিশোধিত বোমা তৈরির ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিল এবং এর জন্য সমর্থন বাড়িয়েছিল। এনআইএ আধিকারিকরা তা তদন্তে খুঁজে পেয়েছিল, যার ফলে আজকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
সন্দেশখালির পর ভূপতিনগর। ইডি হামলার পর এবার ভোটমুখে আক্রান্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সি। জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিষ্ফোরনকাণ্ডে তদন্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির সদস্য়দের। NIA-এর গাড়ি লক্ষ্য় করে ছোড়া হয় ইট পাথর। আর সেই ইটের আঘাতে আহত হন দুই এনআইএ আধিকারিক। ভাঙা হয় গাড়ির কাঁচ, এমনকি তাঁদের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গ্রামবাসীরা।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয় ইডিকে। সেই ঘটনায় আহত হয়েছিল একাধিক ইডি আধিকারিক সহ চিত্র সাংবাদিকও। ইডির উপর হামালা ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল গোটা রাজ্য়ে। এরপর ৬ এপ্রিল শনিবার ফের হামলার মুখে পড়েন এনআইএ। ইতিমধ্য়ে ভূপতিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এনআইএ আধিকারিকরা।
ভগবানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভূপতিনগর থানা এলাকার নাড়ুয়াবিলা গ্রামে গত ২০২২ এর ২রা ডিসেম্বর তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় মোট তিন জনের মৃত্যু হয়।কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী এনআইএ-এর প্রতিনিধি দল দুজনকে অ্যারেস্ট করেন। নবকুমার পান্ডা, সুবীর মাইতি, মিলন বার, অরুন মাইতি ওরফে উত্তম মাইতি, বলাইচরণ মাইতি, শিবপ্রসাদ গায়েন, মানব কুমার পড়ুয়া, এবং মনোব্রত জানা। এই ৮ তৃণমূল নেতা কর্মীকে বেশ কয়েকদিন আগেই এনআইএ-র পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছিল। এরমধ্য়ে মনব্রত জানা ও বলাইচরণ মাইতিকে আটক করে নিয়ে আসার সময় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গ্রামবাসীরা।
২০২১-এর বিধানসভা ভোটে হাইপ্রোফাইল ভবানীপুর আসনের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কৃষ্ণনগরের সম্ভাব্য বিজেপি প্রার্থী হিসেবে চব্বিশের ভোট আবহেও তিনি চর্চায় ছিলেন। কিন্তু দুই দফায় বাংলার মোট ৩৮ আসনের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে বিজেপি। কোথাও নেই অভিনেতা-রাজনীতিবিদ রুদ্রনীল ঘোষের নাম। এদিকে, রবিবার বাংলার জন্য বিজেপির দ্বিতীয় দফায় প্রার্থীতালিকা ঘোষিত হতেই প্রায় ৫০টির বেশি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়েন রুদ্রনীল। পুরোটাই কাকতালীয়, না অন্য উদ্দেশ্য? সিএন-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে কী বলছেন রুদ্রনীল ঘোষ, জানুন।
৭৭টি গ্রুপকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। অভিনেতা-রাজনীতিবিদ বলছেন, বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ভালোবেসে তাঁকে একাধিক গ্রুপে জুড়েছেন। এই গ্রুপগুলোর সঙ্গে সরাসরি দলের কোনও সংযোগ নেই। প্রতি গ্রুপের কনটেন্টও কমবেশি প্রায় এক। তাই তিনি বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সম্মান জানিয়েও গণহারে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন। দলের অফিসিয়াল গ্রুপগুলোতে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। সিএন-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান রুদ্রনীল। কিন্তু তাতেও ধোঁয়াশা সরছে না, কোথাও কি ক্ষুব্ধ তিনি, এই প্রশ্নও উঠছে।
শিবপুরের ছেলে হয়েও একুশের ভোটে তিনি ভবানীপুরের মতো হেভিওয়েট বিধানসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। দলই তাঁকে সেই সুযোগ করে দিয়েছিল, তিনি সাধ্যমতো লড়াইও করেছিলেন। দলের দেওয়া দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। সিএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবি করলেন রুদ্রনীল ঘোষ। ভোটের পরও তিনি এলাকায় ছিলেন এবং শারীরিক নিগ্রহেরও শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি, এই অভিযোগ তুললেন রুদ্রনীল ঘোষ। দলের প্রতি আনুগত্য বা সংকল্প থেকে তিনি এসব করেছেন, এমন সুরও ফুটেছে রুদ্রনীলের গলায়। একুশের ভোটের পর চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন, এবার কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম চর্চায় ছিল। কিন্তু আসন্ন লোকসভা ভোটে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি নয়, কেন? এবার সেই আসনে বিজেপির প্রার্থী অমৃতা রায়। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয় কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী, তাও দলের পছন্দের তালিকায় কেন তিনি? এসব প্রশ্ন ঘিরে চর্চা তুঙ্গে।
'দল আমার ভালো লাগা দিয়ে চলে না, একটা দল চলে অ্যাজেন্ডার উপর।' কৃষ্ণনগরে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম না থাকা ঘিরে শুরু হওয়া চর্চায় এভাবেই জল ঢালতে চেয়েছেন তিনি। এমনকী, কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থীকে নিয়েও কৌশলী রুদ্রনীল ঘোষ। তিনি বলছেন, সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্ত। শুধু রাজনৈতিক পরিচিতির বাইরেও প্রার্থীপদে থাকা ব্যক্তির পিছনে অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে। সিএন-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে এই দাবি করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ।
তাঁর মতে, যাঁদের যোগ্য মনে হয়েছে, যাঁদের মানুষ চাইছে তাঁদের প্রার্থী করা হয়েছে। এখনও চার আসনে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা বাকি, সেখানে কি নাম থাকবে রুদ্রনীল ঘোষের। তিনি বলছেন আশা তো রাখছি! মোটের উপর কৌশলী রুদ্রনীলের জবাব, তিনি বিজেপিতেই আছেন। কিন্তু তিনি উত্তর খুঁজছেন কোন কোন যোগ্যতায় বাকিরা প্রার্থী, আর তাঁর অযোগ্যতা কোথায়? যাঁরা বিজেপির টিকিটে লোকসভা ভোটে প্রার্থী, তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রুদ্রনীল ঘোষের সাফ মন্তব্য, আগামিতে দলের পতাকা ধরেই লড়াই জোরদার হবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর ইডি। শুক্রবার সকালে থেকে কলকাতায় চলছে ইডির ম্য়ারাথন তল্লাশি। লেকটাউন সহ ৫ জায়গায় চলছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশি। জানা গিয়েছে, এদিন চেতলায় বিশ্বরূপ বসু নামক এক ব্য়বসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। পরিবহন ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত তিনি। সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার 'মিডলম্য়ান' অর্থাৎ প্রসন্ন রায় ঘনিষ্ঠ এই বিশ্বরূপ বসু।
ইডি সূত্রে খবর, এদিন চেতলার ১৭৮ নম্বর পিয়ারী মোহন রায় রোডের বাড়িতে ছিলেন না বিশ্বরুপ বসু। সেখানে তাঁর দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্য়মে জানা যায়, কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন বিশ্বরূপ বসু। অন্যদিকে চেতলা লকগেটের কাছে বিশ্বরূপ বসুর আরেকটি ফ্ল্যাট পাওয়া গিয়েছে। যদিও সেই ফ্ল্যাটটি তালা বন্ধ অবস্থায় ছিল। সেখানেও তাঁর বেশ কয়েকজন আত্মীয়কে পাওয়া গিয়েছে। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকেরা। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর প্রসন্ন কুমার-এর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বরূপ বসুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন ইডি আধিকারিকরা।
এরপর প্রসন্ন কুমার রায়ের সূত্র ধরে এস কে ঝুনঝুনওয়ালা ওরফে সত্যেন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার সন্ধান পান ইডি আধিকারিকেরা। এদিন সকালে ইডি আধিকারিকেরা তাঁর লেকটাউন বিরাটি অঞ্চলের বাড়িতে পৌঁছে যায়। সেখানে তাঁকে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে নিয়ে তাঁর ভাই বীরেন্দ্র ঝুনঝুনওয়ালার বাড়ি এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বিরাটি ৪ নম্বর মহাজাতি অঞ্চলের গৌরীপুর রোডের বাড়িতে যান ইডি আধিকারিকরা। সকাল ন'টা থেকে সেখানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি আধিকারিকেরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কেজরিওয়ালের জামিনের আর্জি। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় শুনলেন না কেজরিওয়ালের জামিনের আর্জি। সেটি তিনি স্পেশাল বেঞ্চে রেফার করে দিয়েছেন। কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভি জামিনের আর্জি নিয়ে সাত সকালেই হাজির হয়েছিলেন।
কিন্তু প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, এই কাণ্ডে গ্রেফতার কবিতার সঙ্গে মামলার শুনানি করা হবে স্পেশাল বেঞ্চে। এদিকে সকাল থেকে ইডির দফতরে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে কেজরিওয়ালকে। সকালে মেডিকেল টিম গিয়ে কেজিওয়ালের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে।
ভিডিওগ্রাফি করে রাখা হচ্ছে কেজরিওয়ালের জেরার যাবতীয় তথ্য। আজ দুপুর আড়াইটে নাগাদ অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দিল্লির রাউস অ্যাভিিনউ আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। গতকাল রাতেই কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আর্জি জানিয়েছিল আম আদমি পার্টি। রাতেই জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি জানানো হয়। কিন্তু রাতে আদালত বসেনি।
সকালে তড়িঘড়ি তাই আপ আর্জি নিয়ে হাজির হয়েছিল। কিন্তু প্রধানবিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সেটি শুনতে রাজি হননি। তিনি ৩ বিচারপতির স্পেশাল বেঞ্চে সেটি রেফার করে দেন। এখন সেখান সেই বেঞ্চ কি নির্দেশ দেয়। এদিকে কেজরিওয়ালকে হাতে পেরে তৎপর ইডি। আজ আদালতে কেজরিওয়ালকে হেফাজতে চাইবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর থেকে উত্তাল হয়ে উঠেছে দিল্লি। আম আদমি দফতরের সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এমনকি সেই মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেজরিওয়ালের বাড়ির চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কোনও রকম জমায়েত হলেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এদিকে আজ দেশজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে আম আদমি পার্টি।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে তৎপর ইডি। গত বৃহস্পতিবার শাহজাহান ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বাড়ি সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সেই তল্লাশি অভিযানে বেশকিছু নথি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া নতুন বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে তিনটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থারা আধিকারিকরা। অভিযোগ, ওই গাড়িগুলি শাহজাহান ঘনিষ্ঠ মোসলেম শেখের গ্যারেজে রাখা ছিল।
সূত্রের খবর, বাজেয়াপ্ত গাড়িগুলির মধ্যে একটি শেখ শাহজাহানের, একটি গাড়ি তাঁর ভাইযের এবং অপর গাড়িটি এক ব্যবসায়ীর। এরপরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য মোসলেম শেখকে তলব করে ইডি। সেই তলবে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন মোসলেম শেখ। সেখানে তাঁকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। এরপর শনিবার তাঁকে ফের তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই তলবে সাড়া দিয়ে শনিবার সকালে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন মোসলেম শেখ। আগামী দিনে এই দুর্নীতির তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার।
প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মেরুন রঙের ডায়েরি থেকে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে ইডির কাছে। সূত্রের খবর, এই মেরুন ডায়েরিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পক্ষ থেকে অভিজিৎ দাসকে দেওয়া অর্থের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এছাড়াও, এই ডায়েরিতে হিতেশ চন্দক এবং অন্যান্য মিল মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া যাবতীয় অর্থের হিসাব রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, মেসার্স অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডের অন্যতম ডিরেক্টর হিতেশ চন্দক জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে তাঁর প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসকে অর্থ দিতেন। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক কাজের নাম করে মিল মালিকদের কাছ থেকে অর্থ চাওয়া হতো। অন্যদিকে, হিতেশ চন্দক সহ অন্যান্য মিল মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া নগদ অর্থ আবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাতে তুলে দিতেন অভিজিৎ দাস।
সম্প্রতি রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, সেই তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার হয় মেরুন রংয়ের একটি ডায়েরি। এরপর সেই ডায়েরির রহস্য উন্মোচন করার জন্য একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিজিৎ দাসকে। তার বয়ানের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকেও। অবশেষে সেই মেরুন ডায়েরির রহস্যভেদে সমর্থ হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগামী দিনে রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে আর কোন কোন তথ্য উঠে আসে, সেটাই এখন দেখার।