লোকসভা ভোট এগিয়ে আসতেই রক্তে রাঙা বাংলার মাটি। নদিয়ার থানাপাড়ায় খুন তৃণমূল কর্মী সাকিব মণ্ডল। কুপিয়ে খুনের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তারপরেই ধারালো অস্ত্রে হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রক্তাক্ত অবস্থায় সাকিব মণ্ডলকে উদ্ধার করে পুলিস। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব মৃতের পরিবার।
লোকসভা ভোটের আগে খুনের রাজনীতি করছে তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল, বলে দাবি কংগ্রেসের। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব মানতে নারাজ তৃণমূল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীই সুরক্ষিত নন, সেখানে অন্যরা কীভাবে সুরক্ষিত থাকবে? রাজ্যের পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিস্ফোরক বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
পঞ্চায়েত ভেটের প্রাক্কালে যে সন্ত্রাসের ছবি দেখেছে রাজ্যবাসী, লোকসভা ভোটের আগে তারই যেন পুনরাবৃত্তি। আগামীতে আরও কত রক্ত ঝরবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে বড় ধাক্কা। প্রায় ২৬ বছর পর তৃণমূল ছাড়লেন তাপস রায়। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এই বর্ষীয়ান সৈনিক। তীব্র অভিমানের থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। সোমবার সকালে বিধানসভায় স্পিকারের ঘরে গিয়ে সমস্ত পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তাপস রায়। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিলেন ইস্তফা পত্র। তাহলে কি এবার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন? জল্পনা তুঙ্গে।
সোমবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযানে আসে। কিন্তু দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। তাঁর পরিবারের কাউকে ফোন করেনি। একই সঙ্গে আরও বিস্ফোরক উক্তি,'এত দুর্নীতি, তারপর সন্দেশখালি, এগুলো আমাকে তাড়না দিয়েছে। আমাকে বোঝাতে আসার জন্য কুণালকে শোকজ করেছেন সুব্রত বক্সী। ৫২ দিন হল মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ডাক আসেনি। তৃণমূলের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের বাড়িতে ইডি গেলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। এমনকি ইডি অভিযানের পর শেখ শাহজাহানের কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় উল্লেখ করলেও তাঁর নামটুকুও বলেননি। এই ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত।'
উল্লেখ্য, ১২ জানুয়ারি ইডি অভিযান চালিয়েছিল তাপস রায়ের বাড়িতে। বাড়িতে ইডি হানার সময় তিনি একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সেই সময় প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, 'আমার বাড়িতে ইডি আসার পিছনে হাত সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।' এরপর বেশ কয়েকদিন কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া না গেলেও, রবিবার রাত থেকে তাঁর ইস্তফা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। সোমবার সকালেই সেই অনুমান সত্যি হয়।
এক্স হ্যান্ডেলে জল্পনার সূত্রপাত। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদের পাশাপাশি দলীয় মুখপাত্রের পদ ছাড়া নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে। তখনই নিরবতা ভাঙলেন অভিমানি কুণাল। দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে পদ ছাড়ার কথা শুত্রবার কুণাল ঘোষের তরফে অফিসিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে সামনে এসে যায়। তিনি লিখলেন, ‘আমি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদে থাকতে চাইছি না। সিস্টেমে আমি মিসফিট। আমার পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি দলের সৈনিক হিসেবেই থাকব। দয়া করে দলবদলের রটনা বরদাস্ত করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সেনাপতি। তৃণমূল কংগ্রেস আমার দল।’সরকারি নিরাপত্তার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রের whats app গ্রুপও ছাড়লেন কুণাল।
কুণাল ঘোষের এক্স হ্যান্ডেল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরক পোস্ট করা হয়। তখন থেকেই সকলের মনে দানা বাধছিল তৃণমূলের অন্দরে একটা কিছু চলছে। শুক্রবার সকালে আচমকাই দেখা গেল সেই পোস্টটি উধাও। এমনকী এক্স হ্যান্ডলের বায়ো থেকে রাজনীতিবিদ ও তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্রের পরিচয়ও মুছে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। এখন তাঁর পরিচয় শুধুই সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে কেন এমন করলেন কুণাল ?
বৃহস্পতিবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ পোস্ট করেছিলেন, ‘নেতা অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর। সারা বছর ছ্যাঁচড়ামি করবে আর ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক, তৃণমূল দলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার হতে পারে না।’ এই পোস্টে কারুর নাম উল্লেখ না করলেও কলকাতা উত্তর লোকসভার সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়কেই কটাক্ষ করে যে কুণালের এই পোস্ট তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারুর। পোষ্ট করে তিনি লেখেন নরেন্দ্র মোদীর কুৎসার বিরোধিতা যুক্তিতে ধুয়ে দেওয়া যায়।নাম না করে সুদীপকে কটাক্ষ করে লিখেছেন রোজভ্যালি থেকে বাঁচিয়ে গলায় বকলেস পড়িয়ে রেখেছেন মোদী। শুক্রবার সিএনকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে সুদীপকে নিয়ে বিস্ফোরক কুণাল।
অন্যদিকে সূত্রের খবর গত দু বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কাজ করছেন কুণাল ঘোষ।কাজে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তাই হলদিয়ায় অস্থায়ী বাড়িও নিয়েছেন তিনি। নন্দীগ্রামে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কোমর বেঁধে নেমেছেন কুণাল।পঞ্চায়েত ভোটের আগে চাটাই বৈঠক থেকে শুরু করে গ্রাম সভা সবটা করেছেন গোটা জেলা জুড়ে।দুই সাংগঠনিক জেলা কাঁথি এবং তমলুক ছুটে গিয়েছেন দলের প্রয়োজনে।আগামী ১০ মার্চ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর কলকাতার নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন সুদীপ। সেখানে ডাক পাননি কুণাল ঘোষ । শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের বৈঠকেও ডাক পাননি তিনি।যান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকশি। আর এরপরই ক্ষোভে বিস্ফোরক পোস্ট। অভিমানে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন কুণাল। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন ঘাসফুলের অন্দরে এই অশান্ত বাতাবরণ তৈরি হওয়ায় দলের অস্বস্তি যে আরও বাড়লো তা বলাইবাহুল্য।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা, বাঘের ঘরে এই মুহূর্তে ক্ষোভের বাসা। ঝুপখালিতে যে ক্ষোভের আগুন জ্বলেছিল ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই তার আঁচ এসে পড়ল বেড়মজুরে। সন্দেশখালির একাধিক প্রত্যন্ত এলাকা এখন ফুটছে। সকাল থেকে ছিল চাপা উত্তেজনা, বেলা গড়াতেই বিক্ষোভ আকার নিল জনরোষের।
রাজনৈতিক মহল বলছে, শাসক দলের অন্দরে সন্দেশখালির 'বাঘ' হিসেবে পরিচিত শাহজাহান। আর বেড়মজুরের কাছাড়িবাড়িতে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি, তৈয়ব মোল্লার মাছের ভেড়ির আলাঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। হাতে লাঠি, গাছের ডাল নিয়েও রাস্তায় নেমে পড়েন মহিলারাও। শাহজাহান, শিবু-উত্তমের পর বৃহস্পতিবার শাহজাহানের মেজোভাই সিরাজের বিরুদ্ধে ঝুপখালিতে সরব হয়েছিল গ্রামবাসীরা। এবার সামনে নয়া অভিযুক্ত বেড়মজুর অঞ্চলের তৃণমূলের সম্পাদক অজিত মাইতি।
জনবিস্ফোরণের মুখে পড়ে লেজে গোবরে অবস্থা হয় অজিত মাইতির। কিল, চড়, ঘুষি শুধু নয় ক্ষোভে বিস্ফোরণে চলে জুতো পেটা! ভাঙচুর চালানো হয় বাড়িতেও। গ্রামবাসীদের রোষে ভাঙল বাড়ির সীমানা, চুরমার হল বাইক। এতদিন ধরে অত্যাচারের যে অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা অত্যাচারিত হয়েছিলেন তারাই এখন সামনে সারিতে নেমে আন্দোলনে সরব হয়েছেন। জমি কেড়েছে, আমাদের টাকায় সম্পত্তি বানিয়েছে গ্রামবাসীদের মুখে মুখে এমনটাই অভিযোগ।
ঘটনার পরই মুখ খোলেন তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে, এমনটাই অভিযোগ অজিত মাইতির। ৩ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করছেন ওই তৃণমূল নেতা।
দখল হয়ে যাওয়া জমিজমা ফেরতের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বেড়মজুরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিস বাহিনী। তখন পুলিসের সামনেই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন গ্রামবাসীরা। এতদিন অত্যাচার চালিয়েছে, সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটনা নিয়ে মন্তব্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
এখন জমি ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে সন্দেশখালির আনাচে-কানাচে। শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠছে গ্রামবাসীরা। শাহজাহান এখনও ধরা পড়েনি।গারদে শিবু-উত্তম। এবার রোষে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ শাসকদলের আরও এক নেতা।
ফ্ল্যাট প্রতারণাকাণ্ডে ধাক্কা অভিনেত্রী নুসরত জাহানের। নিম্ন আদালতে তৃণমূলের সাংসদ নুসরত জাহানকে হাজিরা দিতেই হবে, এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর জজ কোর্ট। ইতিপূর্বে নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে, আলিপুরের জজ কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন নুসরত জাহান। নিম্ন আদালতের নির্দেশ মতো, মামলার শুরুর দিকে অন্তত একবার করে আদালতে এসে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই নির্দেশকেই কার্যকর করল আলিপুর জজ কোর্ট। মামলাটি ছিল ৬ জানুয়ারি। এক্ষেত্রে আলিপুর জাজেস কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর জানান নিম্ন আদালতের নির্দেশ একেবারেই সঠিক। সেই অর্ডারটি মঙ্গলবার আলিপুর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জমা দেওয়া হবে।
বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল। একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন অভিনেত্রী। সেই সংস্থা ক্রেতাদের ফ্ল্যাট কেনানোর টাকা নিয়ে ঠকিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। প্রতারিতদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু করেছে ইডি। এই প্রতারণা সংক্রান্ত মামলাটি বিচারাধীন ছিল আলিপুর আদালতে। সেই মামলায় এর আগে আলিপুর আদালতে যতবার শুনানি হয়েছে, ততবারই নানান কারণ দেখিয়ে নুসরত জাহান আদালতে হাজিরা দেননি। পরে আলিপুর আদালত এই মামলায় তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রীকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আলিপুর জজ কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নুসরত জাহান। শেষপর্যন্ত আলিপুর আদালতের নির্দেশ বহাল রাখল জজ কোর্ট। বিচারক জানান, নিম্ন আদালতের নির্দেশে কোনও ভুল নেই। ফলে ফ্ল্যাট প্রতারণার মামলায় হাজিরা দিতেই হবে নুসরতকে।
প্রসূন গুপ্তঃ বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এবারে হয়তো বিগত লোকসভা সাংসদের মধ্যে ১০০ জনের উপর বাদ পড়তে পারে। তাঁরা কারা তারও কিছুটা জানা যাচ্ছে যে, ৭৫ বছরের কাছাকাছি বা ঊর্ধ্বে যাঁরা তাদের নিয়ে ভাবনা কম। অবিশ্যি নরেন্দ্র মোদী তার মধ্যে পড়েন না। আন্দাজ যা পাওয়া যাচ্ছে, হেমা মালিনী থেকে মেনকা গান্ধীদের অনেকেরই বাদের খাতায় নাম আছে। কাজের নয় এমন অনেককেই বাদ দেওয়া হতে পারে, যেমন গৌতম গম্ভীর প্রমুখ। এ রাজ্যেও ওই ফর্মুলা চলবে। বাদের লিস্টে অনেক তাবড় তাবড় সাংসদ আছেন, দেবশ্রী চৌধুরী থেকে সৌমিত্র খাঁ ইত্যাদির টিকিট পাবেন কিনা প্রশ্নের মুখে আছে। স্বয়ং দিলীপ ঘোষও কি মেদিনীপুরে প্রার্থী হবেন, রয়েছে প্রশ্ন।
একই ভাবনা তৃণমূলে। ইতিমধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো জানিয়েছেন বয়স হয়ে গেলে কর্মক্ষমতা কমে যায় অনেক ক্ষেত্রে। মুখপাত্র কুনাল ঘোষ তো সোজাসুজি জানিয়েছেনই দলের হয়ে কাজ করতে হলে সাংসদ বা বিধায়ক হতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে ঠিক করবেন প্রার্থী তালিকা। আগে সমস্তই দেখতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও প্রথম দিকে অনেক সময়ে মুকুল রায় সহযোগিতা করতেন। দলের দীর্ঘদিনের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকেও উপদেষ্টা হতে দেখা গিয়েছে, ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু এই দু'জন জোর করে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করতেন না। মুকুল বিদায়ের পরপরেই ক্ষমতার অলিন্দে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরে অনেক পরিবর্তন এনেছেন। তরুণ প্রজন্ম সুযোগ পেয়েছে বিগত পঞ্চায়েত ভোটে অথবা পুরসভায়।
কিন্তু এবারে দেখার বিষয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেন। মমতা চট করে জয়ী প্রার্থীদের বাতিল করতে চান না, কিন্তু এবারে বাদের তালিকায় অনেকেই আছেন। অনেক সেলিব্রেটি যেমন বাদ যাবেন, তেমন অনেক নতুন সেলিব্রেটির কাছে সুযোগ আসতে পারে। তবে এটা বাস্তব প্রচন্ড টেনশনে আছেন কিন্তু বর্তমানের সাংসদরা। পুনশ্চ: শোনা যাচ্ছে সৌগত রায়ের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে যে তিনি এখনও যথেষ্ট কাজ করতে পারেন।
প্রসূন গুপ্তঃ কংগ্রেস এবং তৃণমূল কতটা কাছাকাছি এলো তাই নিয়ে চলেছে অনেক জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কি এই রাজ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট হচ্ছে? উত্তর নিশ্চই আছে, তবে তা ১৯ ডিসেম্বরের 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠকের পরে। আপাতত এই জোট বৈঠকে ২৬ দল ছাড়াও আরও নতুন দল যোগ দিতে পারে বলে খবর। নতুন বলতে ওই তারাই যারা এবারের তিন রাজ্যের কংগ্রেসের পরাজয়ের অন্যতম হোতা। তবে পশ্চিমবঙ্গে জোটের বিষয় যে, এই বৈঠকে দীর্ঘ সময়ের আলোচনার নয় তা এক প্রকার নিশ্চিত। কিছুদিন আগেই নাকি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টেলিফোনে কথা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কংগ্রেসকে দুটি আসন হয়তো ছাড়বে তৃণমূল, হয়তো তিনটিও হতে পারে। এই আসন অবশ্যই উত্তরবাংলায় কারণ দক্ষিণবঙ্গে তৃণমূল একাই লড়বে বলেই জানা গিয়েছে। আরও একটি বিষয় পরিষ্কার সিপিএমকে বা বামেদের কোনও আসন ছাড়বে না তৃণমূল। বামেরাও তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যেতে আগ্রহী নয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সিপিএম/ কংগ্রেসের জোটের কি হবে? এক দিল্লির কংগ্রেসি নেতা নাকি জানিয়েছেন যে এই রাজ্যে সিপিএমের এমন কোনও ভোট নেই যার উপর ভরসা করে তাদের সাথে জোট করতে হবে। আসলে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বামেদের উপর ভরসা হারিয়েছে।
এবারে মূল চমক কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি নাকি ফের এই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন থাকতেই পারে যেখানে বিধায়কদের ভোট রাজ্যসভার সদস্য হওয়া যায় সে ক্ষেত্রে বিধায়কহীন পশ্চিমবঙ্গ থেকে কি করে কংগ্রেসের কেউ রাজ্যসভায় যাবেন? উত্তরে জানা যাচ্ছে, স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি উদ্যোগ নিয়ে তৃণমূলের ভোট দিয়ে মনু সিংভিকে রাজ্যসভায় পাঠাতে আগ্রহী। যদিও এই বিষয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় নি। শোনা গেলো এটি নাকি তৃণমূলের তরফ থেকে কংগ্রেসকে 'উপহার'।
মনু সিংভি এই রাজ্য থেকে সংসদে গেলেও রাজ্য কংগ্রেস নিয়ে তাঁর কোনও উৎসাহ নেই। তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিখ্যাত আইনজীবী। তিনি এ রাজ্যের নানান প্রশাসনিক আইনি বিষয়টিতে রাজ্য সরকারের হয়ে সওয়াল করেন কোর্টে, তার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেস তো আছেই। সুতরাং ....
প্রসূন গুপ্তঃ গো-বলয়ের তিন রাজ্য হারানোর পরে কংগ্রেস অনেকটাই নমনীয়। রাহুল গান্ধী চাইছেন যা ভুল হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে, এবারে ছোট্ট দলগুলিকেও 'ইন্ডিয়া' জোটে সামিল করতে হবে। যদিও বিগত তিন রাজ্যের ভোটের সমীকরণে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের ভোট রাজস্থানে বেড়েছে, ঝাড়খণ্ডে সামান্য ফারাক বিজেপির সঙ্গে কিন্তু ভোট খুব না কমলেও মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ভোট শতাংশ বাড়িয়েছে। এর কারণ খতিয়ে দেখা যাচ্ছে ছোট দলগুলি ভোট কেটে নেওয়াতে অনেক ছোট দলের বিধায়ক হয়েছে এবং কংগ্রেসের আসন কমেছে। কাজেই দেশের আঞ্চলিক দলগুলিই নয় ছোট দলগুলিকেও সঙ্গে নিতে হবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে, ধারণা কংগ্রেস হাইকমান্ডার। এই নিয়ে অবিশ্যি আগামী ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর দিল্লিতে জোটের পরের সভা, যেখানে লোকসভার আসন সমঝোতার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
অন্যদিকে শোনা গেল, সোমবার ৪ ডিসেম্বর রাহুল গান্ধীর সঙ্গে নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক কথা হয়েছে। ঠিক হয়েছে বহরমপুর, দক্ষিণ মালদহ এবং রায়গঞ্জ আসন তিনটি তৃণমূল, কংগ্রেসকে ছাড়তে পারে। যদিও কংগ্রেস আরও একটি আসন দাবি করেছিল কিন্তু চতুর্থ আসন নিশ্চিত তৃণমূল আর ছাড়বে না।
প্রশ্ন থাকতে পারে তৃণমূল কেন কংগ্রেসকে আসন ছাড়বে? এই কংগ্রেসের রাজ্য নেতারা সারা বছর তৃণমূলের চরম বিরোধিতা করে থাকে। কিন্তু জানা যাচ্ছে সম্প্রতি 'মহুয়া কাণ্ডে' কংগ্রেসের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলকে খুশি করেছে। অন্যদিকে সম্প্রতি তেলেঙ্গানা জয়ের পরে সেখানকার নব্য মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি নাকি তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে মমতাকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। উত্তরবঙ্গে আগে থেকে অনুষ্ঠান ঠিক থাকায় মুখ্যমন্ত্রী যেতে পারেননি, কিন্তু প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যসভার পরিষদীয় নেতা ডেরেক ও'ব্রায়ানকে পাঠিয়েছিলেন। ডেরেক, রাহুলের খুবই সুসম্পর্ক। ডেরেককে সোনিয়া, রাহুল তাদের চাটার্ড ফ্লাইটে হায়দ্রাবাদে নিয়ে যান এবং সেখানে কংগ্রেসের তরফ থেকে ডেরেককে যথেষ্ট সম্মান জানানো হয়। এই ধরণের ঘটনাগুলিতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল অনেকটাই কাছাকাছি। চূড়ান্ত রূপ নেবে আগামী ১৮ থেকে ২০র সভায়।
আমডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডল খুনের ১৪ দিনের মাথায় গ্রেফতার অন্যতম অভিযুক্ত। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। মূল অভিযুক্তের পাশাপাশি আরও ৪ জনকে গ্রেফতার এদিন গ্রেফতার করেছে পুলিস। মোট ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৬। চার ধৃতদের নাম আলি আকবর মণ্ডল, কাজি আনোয়ার হোসেন, শামসুদ্দিন মণ্ডল ও গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল। প্রত্যেকেরই বাড়ি আমডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনাডাঙা এলাকায়। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠায় আমডাঙা থানার পুলিস।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ নভেম্বর। এদিন সন্ধ্যায় কামদেবপুর বাজার এলাকায় রূপচাঁদ মণ্ডলকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে অভিযুক্তরা। বোমার আঘাতে রূপচাঁদের ডান হাত উড়ে যায়। এ ঘটনা টের পেতেই তাঁকে উদ্ধার করে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ওইদিন রাতেই মৃত্যু হয় রূপচাঁদের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। চার জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার হয় আনোয়ার হোসেন নামে একজন। তার বেশ কয়েকদিন পর গ্রেফতার করা হয় আরেক অভিযুক্তকে। তবে অধরা ছিল অন্যতম অভিযুক্ত আলি আকবর মণ্ডল-সহ বেশ কয়েকজন।
অবশেষে গ্রেফতার করা হল অন্যতম অভিযুক্ত আলি আকবর মণ্ডল-সহ ৪ জনকে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আলি আকবর মণ্ডলই নাকি বোমা ছুঁড়েছিল রূপচাঁদ মণ্ডলকে লক্ষ্য করে। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।
জয়নগরের পর এবার আমডাঙা। তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের উপর বোমা বর্ষণ। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে নারায়ণা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর কিছু সঙ্গীও। আমডাঙা থানার পুলিস জানিয়েছে, আহত ওই পঞ্চায়েত প্রধানের নাম রূপচাঁদ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় কান্দেপপুর বাজারে দলীয় কাজে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে দুষ্কৃতীরা বোমা মারে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এ বিষয়ে আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান সিএন-কে জানিয়েছেন, ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমডাঙা থানার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
অবশেষে জট কাটিয়ে শপথ নিতে চলেছেন ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়। আজ অর্থাৎ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটেয় নির্মলচন্দ্রকে শপথগ্রহণ করাবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু এতেও মিটেছে না রাজ্য-রাজ্যপাল বিতর্ক। সূত্রের খবর, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকছেন না স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তার পরিবর্তে উপস্থিত থাকতে পারেন বিধানসভায় শাসকদলের উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়। ৮ সেপ্টেম্বর নির্মলচন্দ্র ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী হন। কিন্তু আটকে ছিল তাঁর শপথগ্রহণ। গত শনিবার নির্মলচন্দ্রকে শপথগ্রহণ করাতে চেয়ে তাঁর ধূপগুড়ির বাড়িতে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল রাজভবনের তরফে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিষদীয় দফতর সেই শপথগ্রহণের অনুমোদন না দেওয়ায় নতুন বিধায়কের শপথ আটকে যায়।
তার পরেও রাজ্যপাল স্বয়ং তফসিলি বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দেন। বিধানসভা সূত্রে খবর, রাজভবনের দরজা সব সম্প্রদায়ের জন্য খোলা, জনমানসে সেই বার্তা দিতেই তফসিলি বিধায়ককে রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করাতে চেযেছিলেন তিনি। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে পাল্টা চিঠিতে লেখেন, ‘‘বিধানসভায় সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত রয়েছেন। তাই প্রয়োজনে আপনি বিধানসভায় এসে ধূপগুড়ির বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে যান।’’ যদিও এই পর্বে পরিষদীয় দফতরও চেয়েছিল উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়ককে বিধানসভাতেই শপথগ্রহণ করান স্পিকার। নিজেদের সেই মনোভাবের কথা রাজভবনকেও বুঝিয়ে দিয়েছিল পরিষদীয় দফতর।
কিন্তু শেষমেশ বৃহস্পতিবার রাজভবন সূত্রে জানা যায়, রাজ্যপাল নিজেই ধূপগুড়ির তৃণমূল বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাবেন।
তৃণমূল শিবিরে বড় ধাক্কা! রাজ্যসভার (Rajya Sabha) বাদল অধিবেশন (Monsoon Session) থেকে সাসপেন্ড (Suspend) করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনকে (Derek O'brien)। কিছুদিন আগেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যসভায় বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর মঙ্গলবারও একই ঘটনাই ঘটে। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল থেকেই অধিবেশন শুরু হতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। এরপর 'উচ্ছৃঙ্খল আচরণ' ও 'চেয়ারম্যানের নির্দেশকে অবমাননা' করার কারণে ডেরেক ও'ব্রায়েনকে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করলেন রাজ্য়সভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)।
সংসদ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল রাজ্যসভাতে বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার পর মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার দাবি করেন ডেরেক ও'ব্রায়েন। তাঁকে একাধিকবার সতর্কও করেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেই বিজেপি সাংসদ পীযুষ গোয়াল তাঁকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব আনেন। অধিবেশনের কাজে বাধা দেওয়া, উচ্ছৃঙ্খল ব্যবহার ও চেয়ারম্যানের নির্দেশের না মানার অভিযোগ এনে ডেরেককে সাসপেন্ড করার প্রস্তান দেন। এরপরই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় 'অসংসদীয় আচরণ' ও 'চেয়ারম্য়ানের নির্দেশকে অবমাননা' করার কারণে ডেরেক ও'ব্রায়েনকে রাজ্যসভার বাদল অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করলেন। উল্লেখ্য, ১১ অগাস্টে বাদল অধিবেশন শেষ হতে চলেছে।
তৃণমূলের (TMC) প্রার্থী হলেও তাঁর বিশ্বাস নেই রাজ্য পুলিসে। বাবার মৃত্যু নিয়ে সিবিআই তদন্তের (CBI) কাতর আর্জি বাসন্তীতে (Basanti) নিহত যুব তৃণমূল কর্মী জহিরুল মোল্লার মেয়ে মনোয়ারা পিয়াদার। শেষমেশ রাজ্যপাল (Governor) সিভি আনন্দ বোসের (C. V. Ananda Bose) সঙ্গে দেখা করে বিচার চাইলেন তিনি। রাজ্যপালের পা জড়িয়ে তিনি জানালেন, রাজ্য পুলিস সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আবার এসেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানাতে মোটর বাইকে সওয়ারি হন বাসন্তীর নিহত তৃণমূল যুব নেতার মেয়ে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান। বাসন্তীর বাড়ি থেকে তাঁরা রওনা দেন ক্যানিংয়ে সেচ দফতরের বাংলোয়। সেখানেই রয়েছেন রাজ্যপাল। দুপুরে সেখানে পৌঁছে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন নিহত তৃণমূল কর্মীর মেয়ে। তিনি পুলিস প্রশাসন এবং দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার ঠিক আগে ওই তৃণমূল প্রার্থী জানান, তিনি নিজেও ভয়ে-আতঙ্কে আছেন। তিনি বাবার মৃত্যুর সুবিচার চাইবেন রাজ্যপালের কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘আার বাবার মৃত্যুর সুবিচার যেন পাইয়ে দেন রাজ্যপাল। এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। সেটা জানাব। আমার নিজেরও প্রাণ হারানোর আশঙ্কা আছে।'
নির্দল প্রার্থীর অনুগামীদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (Trinamool) বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন প্রভাস মণ্ডল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের আমতলি গ্রাম পঞ্চায়েত (Panchayat) এলাকার ১১৭ নম্বর বুথের নির্দল প্রার্থী প্রভাস মণ্ডল। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে কয়েকজন বাইক নিয়ে এসে প্রভাসের অনুগামীদের উপর হামলা (attack) চালায় বলে অভিযোগ। এছাড়াও মারধরের পাশাপাশি বাড়িঘর ভাঙচুর করারও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয়দের দাবি, প্রভাস মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল দল করে। গত ১০ বছর ধরে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তিনি। এবারও দলের হয়েই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল তাঁকে টিকিট না দিয়ে সদানন্দ রায়কে টিকিট দিয়েছে। ফলে প্রভাসকে নির্দল প্রার্থী হিসেবেই ভোটের লড়াইয়ে নামতে হয়েছে। এলাকার মানুষও তাঁর সঙ্গেই রয়েছে। ফলে অভিযোগ উঠছে, সেই ক্ষোভের কারণেই প্রভাসের অনুগামীদের উপর হামলা চালিয়েছে সদানন্দের লোকেরা।
স্থানীয়দের আরও দাবি, এই সদানন্দ রায় কয়েকদিন আগে পর্যন্তও বিজেপি দল করেছেন। তিনি টিকিট কীভাবে পেলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এ বিষয়ে সুন্দরবন কোস্টাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ঘটনায় আক্রান্তরা। অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস প্রশাসন।
পঞ্চায়েতের (Panchayat) মধ্যেই ফের খুন রাজ্যে, ফলে রাজ্যে বলির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৯। ভর সন্ধ্যায় খুন হয়ে শহর তৃণমূলের (Trinamool) সভাপতি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার (Purulia) আদ্রা শহর তৃণমূল সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে গুলি করে খুন করে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের আদ্রা শহর তৃণমূল সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীরা। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে বলে জানা গিয়েছে। তিনটি গুলি লাগে ধনঞ্জয়বাবুর দেহে। একটি গুলি লাগে তাঁর এক আত্মীয়ের দেহে। ১টি গুলি লাগে তাঁর দেহরক্ষীর দেহে। তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিস। ভর সন্ধ্যায় ব্যস্ত শহরে শহর তৃণমূল সভাপতিকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কে বা কারা গুলি চালিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনার পর আদ্রা শহরে ব্যাপক পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এই খুনের পিছনে রয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি বাইরে থেকে অস্ত্র মজুত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ওদিকে বিজেপির দাবি, তৃণমূলের কোন্দলের জন্যই এই খুন। এলাকা দখল নিয়ে লড়াইয়ের জেরেই খুন হয়েছেন ধনঞ্জয়বাবু।