রাজ্য সরকারের 'পাড়ায় সমাধান' প্রকল্পের মাধ্যমে ৮৭ জন শিক্ষকের বদলির অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা পূজা মণ্ডল হাজরা। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে দায়ের হয়েছিল মামলা। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'পাড়ায় সমাধান-এর মাধ্যমে আর কোনও বদলি করা যাবে না। এই প্রকল্প আপনারা রাখতে পারেন, কিন্তু এর মাধ্যমে কোনও বদলি করা যাবে না। উৎসশ্রী পোর্টাল যদি এখন বন্ধ হয়ে থাকে, তাহলে কীভাবে এতজন বদলি পেল? এটা তো বিনা অনুমোদনে হচ্ছে। কী করে এটা হল? এর প্রয়োজনীয়তাই বা কী ছিল?' রাজ্যের কাছে এই বদলির দ্রুততার কারণ জানতে চায় আদালত। ১৩ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির নির্দেশ। সেদিন রাজ্যকে দিতে হবে উত্তর।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, 'দুয়ারে সরকার'-এর একটি স্কিম পাড়ায় সমাধান। এর মাধ্যম রাজ্য সরকার মানুষকে ঘরের কাছে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে। এটা জনকল্যাণমূলক প্রজেক্ট।
বিচারপতি জানান, এই স্কিম আইনবিরুদ্ধ। ৮৭ জনের ট্রান্সফার হয়ছে এই স্কিম-এ। কমিশন কীভাবে এটা করেছে? রাজ্য জানায়, বোর্ডের সম্মতিতে হয়ছে, নিয়ম মেনে। ১০০ জনের আবেদনের মধ্যে ৯৬ জনের বদলি হয়েছে। কমিশনের প্রতিনিধি ওখানে থাকত।
বিচারপতি জানতে চান, কী কারণে তাঁরা বদলি পেলেন? তাঁদের কী জরুরী ছিল? যদি এরকম হত, কোনও স্কুলে সত্যিই শিক্ষক নেই, এদিকে অন্য কোনও স্কুলে অনেক শিক্ষক, তার জন্যই এই বদলি হয়েছে, তাহলে ঠিক ছিল। কিন্তু একসঙ্গে ৯৬ জন? এর কারণ আদালতের জানা দরকার। রাজ্যকে জানাতে হবে এর কারণ। নির্দেশ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের কথা জানিয়েও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ তাঁর বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে মানিকের জামিনের আর্জি জানানো হয়নি। আপাতত তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক। পাশাপাশি শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত মামলার তদন্তেও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এ বিষয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানি হবে না আপাতত।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এই মুহূর্তে জেলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বারবার জামিন খারিজ হচ্ছে তাঁর। এমনকী মানিক ভট্টাচার্য স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের জন্য প্রস্তুত। তারপর এই মামলায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চান তাঁরা। বিচারক ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান, মানিক সংক্রান্ত মামলায় তাঁদের তদন্ত শেষ হয়েছে কি না। এর কিছু সময় পরেই দেখা যায়, আদালতে ইডি-র পক্ষ থেকে একটি নথি পেশ করা হয়। কিন্তু তা পেশ করার আগেই তারা আদালতকে জানায়, চার্জ গঠনের আবেদন তারা করছে না।