হোয়াটসঅ্য়াপ কল এবং মেসেজের ভয়েস রেকর্ডের সঙ্গে মিলে গেল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বর। কাকুর সেই ভয়েজ স্য়াম্পল রিপোর্ট এখন ইডির হাতে। সূত্রের খবর, ২২ তারিখ অর্থাৎ সোমবার হাইকোর্টে সেই রিপোর্ট জমা দিতে পারে ইডি। সাড়ে তিন মাস পর কালীঘাটের কাকুর ভয়েজ স্য়াম্পল টেস্টের রিপোর্ট এখন ইডির হাতে। যা নিয়ে ইতিমধ্য়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক সমালোচনা। লোকসভা নির্বাচনের আবহে এই রিপোর্ট খানিকটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে শাসকদলকে, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।
প্রসঙ্গত, রাজ্যবাসীর সকলেরই জানা, কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে কম বেগ পেতে হয়নি তদন্তকারী আধিকারিকদের। নমুনা সংগ্রহ আটকাতে অতীতে একাধিকবার কাকু দেখিয়েছেন তাঁর শারীরিক অসুস্থতার দোহাই। কাঠগড়ায় উঠেছিল এসএসকেএম-এর ভূমিকাও। কখনও আবার সেই দোহাই নিশ্চিত করতে একেবারে শিশুদের জন্য সংরক্ষিত বেড দখল করে ভর্তি হয়ে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন তিনি। তারপর অবশেষে গত জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ মধ্যরাতে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে জোকা ইএসই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে করানো হয়েছিল কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা। খানিক আশ্বস্ত হয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
কেন, কারণ, তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, এই কণ্ঠস্বরের নমুনার ওপর নির্ভর করেছে শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির গোপন রহস্যভেদ। ২ বছর হয়ে গেল এই দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারি। একে একে জট খুলতে খুলতে গ্রেফতার হয়েছেন কালীঘাটের কাকুও। যে চ্যাট এবং কলের হদিশ চাইছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা, সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই, এমনটাই সূত্রের খবর। এখন আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হলেই বোঝা যাবে, কার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কথোপকথন হয়েছিল কাকুর? তিনি কোন মধ্যস্থতাকারী প্রভাবশালী, যিনি ২ বছরেও তদন্ত ধরা পড়লেন না একবারের জন্যেও? ঠিক কত গুলো বেআইনি নিয়োগ হয়েছিল? গোটা প্রক্রিয়া কার নির্দেশে চলত?
প্রসূন গুপ্তঃ স্বাধীনতা উত্তর যুগে যে কয়েকটি এলাকা লাল দুর্গ হিসাবে খ্যাত হয়েছিল তার অন্যতম যাদবপুর। এর কারণও ছিল। অঞ্চলের বিশাল স্থানে এসেছিলো উদ্বাস্তুরা এবং ইতিহাস বলে বাম বা সিপিএম বা নক্সালরা যেখানে সংগঠন পোক্ত করেছিল তার বেশির ভাগই উদ্বাস্তু এলাকা ছিল। কিন্তু এই মিথটি ভেঙে দিয়েছিলেন ১৯৮৪/৮৫ তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের এই লোকসভা সিপিএমের হাতে চলে যায় ১৯৮৯ তে। ফের তৃণমূল দল তৈরি হলে এই যাদবপুর থেকে জিতে আসেন কৃষ্ণা বসু। ফের ২০০৪-এ ফের সিপিএমের হাতে আসে এই লোকসভা। কিন্তু ২০০৯ থেকে এই লোকসভা ফের চলে আসে তৃণমূলের হাতে।
যাদবপুর লোকসভায় ৭টি বিধানসভা আছে। টালিগঞ্জ, যাদবপুর, সোনারপুর ১ ও ২, বারুইপুর ১ ও ২ এবং ভাঙ্গর। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ৭টির মধ্যে ৬টি বিধানসভা যেতে তৃণমূল। একমাত্র ভাঙ্গরে আইএসএফ এর প্রার্থী নৌশাদ সিদ্দিকী জেতেন। গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী বিজেপির অনুপম হাজরাকে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটে পরাজিত করেন। এবারে কিন্তু মিমি আর লড়াইয়ে নেই, এসেছেন আর এক গ্ল্যামার দুনিয়ার অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। বিরুদ্ধে বিজেপির উচ্চ শিক্ষিত অনির্বান গাঙ্গুলি এবং সিপিএমের সৃজন ভট্টাচার্য।
লড়াইটা কেমন হবে উঠেছে প্রশ্ন? প্রথমত এবারে লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি নাকি তৃণমূলের লড়াই সিপিএমের সঙ্গে? বাম প্রার্থী সৃজন নব্য যুবা। জনপ্রিয়তা আছে তাঁর। একই সাথে জানতে হবে যে গতবারে লড়াই কিন্তু ত্রিমুখী হয়েছিল এই যাদবপুরেই। একমাত্র সিপিএম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য সারা বাংলায় নিজের জামানত রাখতে পেরেছিলেন। যদি সেই মোতাবেক ভোট হয় তবে সায়নীর বড়সড় ভোট জিতে আসাটা সমস্যার হবে না। কিন্তু যদি সৃজনকে খোদ সিপিএম ভোট না দিয়ে অনির্বাণকে দেয় তবে লড়াই জোরদার। আবার যদি সিপিএমের পুরাতন ভোট দলেই ফিরে আসে তবে লড়াই জোরদার তৃণমূলের সঙ্গে তাদের। সে যাই হোক না কেন কলকাতা, বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতা লাগোয়া যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র কিন্তু তৃণমূলের অন্যতম খাসতালুক ফলে অনেকটাই পা বাড়িয়ে খেলছেন সায়নী।
প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা বর্তমানে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে ইডি। এই প্রেক্ষিতে মহুয়া মৈত্র সংসদে টাকার বদলে প্রশ্ন কাণ্ডে কটাক্ষপূর্ণ পোস্ট করলেন সমাজমাধ্যমে। এর আগে সিবিআই মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁর নিউ আলিপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ইডি মহুয়া মৈত্রকে এর আগে তিনটি সমন পাঠালেও, তিনি হাজিরা দেননি।
বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে মহুয়া পোস্ট করে লেখেন, 'খুলে হ্যায় বিজেপি কে দ্বার/ আ যাও নহি তো অব কে বার— তিহাড়।' যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, 'বিজেপির দরজা খোলা আছে। চলে এস, নইলে এই বার ঠিকানা তিহাড়।' অর্থাৎ, বিজেপির বিরুদ্ধে ফের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির অভিযোগ তুললেন মহুয়া।
ইডির অভিযোগ, তৃণমূল নেত্রী ফেমার নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। এর আগে ইডি মহুয়া মৈত্রকে ফেমা সম্পর্কিত একটি মামলায় সমন পাঠিয়ে ২৮ মার্চ হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সময় মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত থাাকায় তিনি হাজির হতে পারবেন না।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সংসদে টাকার বদলে প্রশ্ন মামলায় লোকপালের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। লোকপালের তরফে এব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। লোকপাল সিবিআইকে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ছয় মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল লোকপাল। লোকপাল তার আদেশে বলেছিল মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মূল্যায়নের পরে দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রমাণ রয়েছে এবং তা খুবই গুরুতর প্রকৃতির। ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছিলেন, শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে দুবাই ভিত্তিক ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নগদ ও উপহারের বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। যদিও মহুয়া মৈত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছিলেন, মহুয়া মৈত্র লোকসভা সদস্য হিসেবে পোর্টালের লগইন পাসোয়ার্ড দর্শন হিরানন্দানিকে শেয়ার করেছিলেন। নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ অনুযায়ী, মহুয়া মৈত্র লোকসভায় অন্তত ৫০ টি এমন প্রশ্ন করেছিলেন, যা হিরানন্দানি ও তার পরিবারের ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। বিজেপি সাংসদ আরও অভিযোগ করেছিলেন, এই প্রশ্ন করার পরিবর্তে মহুয়া মৈত্র নগদে দুই কোটি টাকা পেয়েছিলেন। মহুয়া মৈত্র নিজের লোকসভার পোর্টালের লগইন পাসোয়ার্ড শেয়ার করার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অভিযোগ ওঠার পরে লোকসভার অধ্যক্ষ এম বিড়লা একটি কমিটি গঠন করেন। সেখানে নিশিকান্ত দুবে, মহুয়া মৈত্র-সহ অনেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়।
এরপর গত নয় নভেম্বর ক্যাশ ফর কোয়ারির অভিযোগে মহুয়া মৈত্রের লোকসভা সদস্যপদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়। কমিটির ছয় সদস্য রিপোর্টের পক্ষে ভোট দেন এবং গত ডিসেম্বরে মহুয়া মৈত্রের লোকসভা সদস্যপদ খারিজ করা হয়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস কৃষ্ণনগর আসন থেকে মহুয়া মৈত্রকে ফের মনোনয়ন দিয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী আবারও তাঁর জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।
লোকসভা নির্বাচনে তিনি টিকিট পাননি। অভিমান করেছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে হতাশ করেননি। এবার উপ নির্বাচনে তিনি লড়াই করবেন। বরাহনগর কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আর ভগবানগোলায় উপনির্বাচনের প্রার্থী করা হয়েছে রেহাত হোসেন সরকারকে।
শুক্রবার বিকেলের পর প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হল। বরাহনগর ও ভগবান গোলা দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন। বিজেপি দুটি কেন্দ্রেই প্রার্থী দিয়েছে। এবার তৃণমূলও তাঁদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল। লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি উপ নির্বাচনে বরাহনগর কেন্দ্রেও নজর থাকবে।
অন্য়দিকে বিজেপিতে উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরে উপনির্বাচনের প্রার্থী কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষকে। সেই সঙ্গে ভগবানগোলা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন শ্রী ভাস্কর সরকার।
উল্লেখ্য়, বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় ইস্তফা দেওয়ায় ওই আসনটি শূন্য হয়। সেখানে এবার বিজেপি প্রার্থী করেছে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষকে।
ভোটপ্রচারে বেরিয়ে ক্ষোভের মুখে যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। রোড শো চলাকালীন উপস্থিত মহিলাদের থেকে কোথাও নিকাশি নিয়ে অভিযোগ শুনতে হল, কোথাও আবার রাস্তা কিংবা পানীয় জল নিয়ে ক্ষোভ।
রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে শুক্রবার রোড শো করছিলেন সায়নী। সঙ্গে ছিলেন সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম। তৃণমূল প্রার্থীকে সামনে পেয়ে অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মহিলারা।
উল্লেখ্য, গত ১৫ বছর ধরে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে। বিধায়ক শাসকদলের, পুরসভাও। তারপরেও কেন কাজ হয়নি? কেন ইচ্ছে করে গড়িমসি করা হয়েছে? ২০০৯ থেকেই যাদবপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কোনও তারকাকে প্রার্থী করেছে। কবীর সুমন, সুগত বসু এবং মিমি চক্রবর্তী এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তারকারা জয়ী হওয়ায় কি মাটির সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না। সেই জন্যই কি ন্যূনতম কাজও হয়নি? এমন ঘটনায় তৃণমূলকে পাল্টা জমিদার কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি।
বস্তুত, ভোটের আগে বিক্ষোভে রীতিমতো অস্বস্তিতে শাসকদল। বিরোধীরা ক্ষোভের ফায়দা তুলতে পারে কি না সেটাই এখন দেখার।
বৃহস্পতিবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে বিস্ফোরক বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি ইউসুফ পাঠান ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। যদিও ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন আক্রমণের জন্য দিলীপ ঘোষকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূল এবার রেকর্ড গড়ার আশায় বহরমপুরে প্রার্থী করেছে ইউসুফ পাঠানকে। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেন, ইউসুফ পাঠান থাকেন গুজরাতে। একটা শব্দ বোঝেন না, বাংলায় তাঁকে নিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের টিকিটে কেউ দাঁড়াতে চাইছে না। প্রার্থী পাচ্ছে না শাসক দল।
দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন, পুরনোরা রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে তাও কিছু লোককে পাল্টাতে পারেনি, রেখেছে। তাঁদের হোয়াইটওয়াশ করার চেষ্টা হচ্ছে। আর প্রার্থী খুঁজতে খুঁজতে বিহার পার হয়ে গুজরাত চলে গিয়েছে। তৃণমূলের অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে, যার টিকিট কেউ দাঁড়াতে চায় না, তারা জিতবে টা কী করে! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ডায়মন্ড হারবারে হাই প্রোফাইল দলীয় বৈঠক করেছেন। সেখানে একলক্ষের বেশি ভোটে জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ওখানে সবার সব সময় হাই প্রোফাইল থাকে, লো প্রোফাইল হয় না। ওখানে একটা আলাদা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চলে, ওয়েস্ট বেঙ্গল গর্ভমেন্টের থেকে আলাদা।
নাম না করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রকে উনিও আলাদা দেখাতে চান। তিনি বলেন, সরকারের টাকা নেই, ওখানে বিলিয়ে দেয় কী করে? এত খরচা করেছেন। একটাই লোকসভা আছে নাকি? বাকি ৪১ টার কী হয়েছে, কেন সরকার দেখে না। এদিক ওদিক লুটপাট করে সব লোককে দেখাচ্ছেন! দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, ডায়মন্ড হারবারের মানুষের জীবনে কী উন্নতি হয়েছে, সামাজিক কি পরিবর্তন হয়েছে, বড় বড় কথা বলেন।
শান্তনু ঠাকুর, রেখা পাত্রকে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাধা দেওয়া ছাড়া কী করবে তারা? রেখা পাত্রকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছিল, সন্দেশখালি তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। রেখা পাত্রকে বুকে টেনে নিয়েছে। এই ধরনের রাজনীতি এবার বাংলা থেকে বিদায় নেবে, বলেছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিরোধী প্রার্থী, কর্মী ও সমর্থকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কাঠগড়ায় শাসকদল। নির্বাচন চলাকালীন সময় রাজ্যের ছবিটা কেমন হতে পারে, এ যেন তারই পূর্বাভাস। এবার দলীয় পতাকা লাগানোকে ঘিরে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে, শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বৈকুণ্ঠপুর মোড়ে। অভিযোগ, এলাকায় দলীয় পতাকা লাগানোর সময় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাধা দেয় তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা। এরপরই বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যায় সোনারপুর থানার পুলিস। হিংসার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে তৃণমূল, তোপ বিজেপির। এরপর ঘটনাস্থল থেকে সোনারপুর মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।
অন্যদিকে, উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং। বৈঠক চলাকালীন বিজেপির উপর হামলার অভিযোগ। রক্তারক্তি কাণ্ড। কাঠগড়ায় তৃণমূল। ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার মাঠেরদিঘি এলাকায় মণ্ডল সভাপতি সুব্রত দাসের বাড়িতে রবিবার বৈঠক ছিল বিজেপির। অভিযোগ, সেই সময় ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার অনুগামীরা রড, লাঠি নিয়ে আচমকাই হামলা চালায়। বেধড়ক মারধর করা হয় মণ্ডল সভাপতি, বুথ সভাপতি সহ বিজেপির একাধিক নেতা-কর্মীকে। জখম বিজেপি কর্মীদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ রাজ্যে বিরোধী দল করাই যেন গুরুতর অপরাধ। আর সেই অপরাধের মাশুল প্রতিনিয়ত রক্ত দিয়ে দিতে হচ্ছে বিরোধীদের। এ ছবিটাই যেন ক্রমশ চেনা হয়ে উঠছে বঙ্গ রাজনীতিতে। কবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে পুলিস-প্রশাসন? সেইদিকেই তাকিয়ে সাধারণ।
তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের লোকসভার প্রার্থী মহুয়া মৈত্রর কলকাতার ফ্ল্যাটে সিবিআই হানা। শনিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ দিল্লি থেকে সিবিআই-এর একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল মহুয়া মৈত্রের কলকাতার ফ্ল্যাটে এসে পৌঁছয়। সেখানেই থাকেন মহুয়া মৈত্রের বাবা এবং মা। তবে সিবিআই আধিকারিকরা যখন সেখানে এসে পৌঁছন সেই সময় তাঁরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। সিবিআই আসার খবর পেয়ে সেখানে এসে পৌঁছন মহুয়া মৈত্রর মা মঞ্জু মৈত্র।
এর আগে গত সোমবার ক্যাশ ফর কোয়ারি কাণ্ডে মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল। পাশাপাশি, এই মামলায় ৬ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্যও বলা হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। এরপর শনিবার মহুয়া মৈত্রর ফ্ল্যাট সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটে থাকা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি খতিয়ে দেখেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। শেষ কবে মহুয়া মৈত্র বিদেশ সফর করেছিলেন, প্রায় সাত ঘণ্টা সেখানে তল্লাশি চালানোর পর বেলা ২টো নাগাদ ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, মহুয়ার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল, শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্যই সংসদে প্রশ্নগুলি করেছিলেন মহুয়া। এই ঘটনায় মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে চিঠি লিখেছিলেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার এথিক্স কমিটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। কমিটি নিশিকান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মহুয়াকেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে মহুয়া ওই কমিটির বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপরই সাংসদ পদ থেকে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল এথিক্স কমিটি। সেই সুপারিশ মোতাবেক মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করেন লোকসভার অধ্যক্ষ। লোকসভা ভোটের মুখে সিবিআই-এর এই তৎপরতায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছেন, তা বলাই বাহুল্য।
লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে তৃণমূলে অভিমানী মুখের সংখ্যা যেন তত বাড়ছে। এবার মালদহ উত্তর থেকে টিকিট না পেয়ে মুখ খুললেন রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। দলের সিদ্ধান্তে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
১০ মার্চ ব্রিগেডে দলের জনগর্জন সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সবাইকে টিকিট দেওয়া গেল না। তারপরেই বিজেপিতে ফিরেছেন অর্জুন সিং, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন ওরফে বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডলরা। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মৌসম বেনজির নূর।
সাংবাদিক বৈঠকে মৌসম বলেছেন, তিনি মালদহের দুই বারের সাংসদ। দলের জেলা সভাপতি। আগেরবার হেরে গিয়েছিলেন। একই পরিবার থেকে দুই দলের দুই প্রার্থী থাকার কারণে ভোট ভাগ হয়েছিল। তারপরেও এবার ভেবেছিলেন টিকিট পাবেন এবং জেতার ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলেন। বিজেপিকে হারানোর আশা তৈরি হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন মৌসম। যাইহোক দলনেত্রী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপযুক্ত বলে মনে করেছেন, তাই টিকিট দিয়েছেন। তাঁকে সমর্থন করার কথাও সংবাদ মাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন রাজ্যসভার বর্তমান সাংসদ।
মৌসম যে অভিমানী তাঁর বক্তব্য থেকে তা স্পষ্ট। যদিও তিনি সরাসরি দল বা দলনেত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। তাঁর কথায়, দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তিনি অনুগত সৈনিক হিসেবে মেনে নিচ্ছেন। যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চয়ই ভেবে নেওয়া হয়েছে।
ভোটের মুখে ফের ধাক্কা তৃণমূলে। তাপসের পর এবার অর্জুন। বিজেপিতে যাওয়ার ঘোষণা ব্যারাকপুরের সাংসদের। দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন অর্জুন সিং। এবারও তিনি ব্য়ারাকপুরে বিজেপির টিকিটে লড়তে চলেছেন। তাঁর সঙ্গে দিল্লি যান দিব্য়েন্দু অধিকারীও।
উল্লেখ্য, বিকেল ৩টের সময় দিল্লি বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে বিজেপিতে যোগদান। তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। লোকসভা ভোটের প্রার্থী ঘোষণার পরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তারপরই জল্পনা চলছিল তাঁর বিজেপি যোগ নিয়ে।
বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন, শুক্রবার বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তিনি। সঙ্গে আরও এক বড় নেতা যোগ দেবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অর্জুন। বলা যায়, বিজেপিতে ‘ঘর ওয়াপসি’ হল অর্জুনের।
বর্তমানে অর্জুন রয়েছেন সাংসদ পদে। আর বিজেপির টিকিটে জিতেই এই পদে আসীন হয়েছিলেন অর্জুন। পরে দল বদলে ফেরেন তৃণমূলে। ৫ বছরের মধ্যে আবার পাল্টি! ফের গেরুয়া শিবিরেই যাচ্ছেন তিনি। তিনি বৃহস্পতিবার জানালেন, ‘আমি আমৃত্যু বিজেপি করব।’
প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী সমর্থক নয়ন সাহা। তাঁর মৃত্যুর পর ২২ দিন কেটে গিয়েছে। অবশেষে এই ঘটনায় প্রথম কাউকে গ্রেফতার করল দমদম থানার পুলিস। জানা গিয়েছে, ঘটনাতে মূল অভিযুক্ত স্বপন মাকাল ওরফে বিদেশকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাঘাট থেকে গ্রেফতার করে দমদম থানার পুলিস।
ধৃতকে ১০ দিনের পুলিসি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হবে। ধৃত বিদেশকে হেফাজতে নিয়ে পুলিস সন্ধান চালাবে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বাকি অভিযুক্তদের, এমনটাই খবর। কেন নয়ন সাহাকে খুন করা হল? এর নেপথ্যে কার বা কাদের ষড়যন্ত্র কাজ করছে? এই সবটাই পুলিস খতিয়ে দেখবে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নয়ন সাহার খুনের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অভিযোগ ওঠে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঊষা দেবনাথের স্বামী অভি দেবনাথ ও তার ঘনিষ্ঠ কর্মীদের বিরুদ্ধে। অবশেষে এক জন গ্রেফতার হল। তবে যেভাবে দিকে দিকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জেঁকে বসেছে, তাতে এই খুনে কোন রহস্য উদ্ঘাটিত হয় তদন্তে, সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্য রাজনীতি।
১০ তারিখ জনগর্জন সভায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা প্রকাশের পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে ব্যারাকপুর। অপমানিত হয়েছেন অর্জুন সিং, বলছে ব্যারাকপুরবাসী। মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন, বলছেন অর্জুন সিং নিজেই। এমনকি সোমবার সকাল থেকেই ভাটপাড়ার মজদুর ভবন থেকে খুলে ফেলা হয় দলীয় পতাকা।
এমনকি এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলা হলে তাঁরাও কার্যত জানান, তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তে ব্যারাকপুর লোকসভাটাই হাতছাড়া হল। তাঁরা জানাচ্ছেন, অপমানিত হয়েছেন অর্জুন সিং।
অপরদিকে অর্জুন সিং কী বলছেন? সেদিকে নজর ছিলই রাজ্যবাসীর। তবে সাংবাদিক বৈঠকে সোমবার অর্জুন সিং জানালেন, আমাকে টিকিট দেওয়া হবে বলেই ডাকা হয়েছিল। তবে তালিকা ঘোষণার দিন সেখানে হাজির হয়ে জানতে পারেন, তাঁকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। মানসিক ভাবে আঘাত পেয়েছিলাম। তবে তা অনেকটা কেটেছে আজ।
ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস। বেশ কয়েকটি আসনে বদলানো হলো প্রার্থী। ফলে বিদায়ী অনেক সাংসদই টিকিট পেলেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় একঝাঁক নতুন মুখ। নজিরবিহীনভাবে লোকসভার ৪২ প্রার্থী নিয়ে র্যাম্পে হাঁটলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রার্থী তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, দেখে নিন একনজরে-
কোচবিহার থেকে লড়বেন- জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া
আলিপুরদুয়ার- রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বড়াইক
জলপাইগুড়ি- সাংসদ নির্মল চন্দ্র রায়
দার্জিলিং- গোপাল লামা
রায়গঞ্জ- কৃষ্ণ কল্যানী
বালুরঘাট- মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র
মালদা উত্তর- প্রাক্তন আইপিএস প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়
মালদা দক্ষিণ- শানোয়াজ আলী রেহান
জঙ্গিপুর- খলিলুর রহমান
বহরমপুর- ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান
মুর্শিদাবাদ- আবু তাহের খান
কৃষ্ণনগর- মহুয়া মৈত্র
রানাঘাট- মুকুটমণি অধিকারী
বনগাঁ- বিশ্বজিৎ দাস
ব্যারাকপুর- পার্থ ভৌমিক
দমদম- প্রফেসর সৌগত রায়
বারাসত- ডক্টর কাকলি ঘোষ দস্তিদার
বসিরহাট- হাজী নুরুল ইসলাম
জয়নগর- প্রতিমা মণ্ডল
মথুরাপুর- যুবনেতা বাপি হালদার
ডায়মন্ড হারবার- তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
যাদবপুর- সায়নী ঘোষ
কলকাতা দক্ষিণ- মালা রায়
কলকাতা উত্তর- সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
হাওড়া- ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়
হুগলি- অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরামবাগ- মিতালী বাগ
তমলুক- আইটি সেলের রাজ্যের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য
কাঁথি- উত্তম বারিক
ঘাটাল- দীপক অধিকারী (দেব)
মেদিনীপুর- জুন মালিয়া
ঝাড়গ্রাম- কালিপদ সরেন
পুরুলিয়া- শান্তি রাম মাহাতো
বর্ধমান-দুর্গাপুর- কীর্তি আজাদ
আসানসোল- শত্রুঘ্ন সিনহা
বাঁকুড়া- অরূপ চক্রবর্তী
বোলপুর- অসিতকুমার মাল
বীরভূম- শতাব্দী রায়
বিষ্ণুপুর- সুজাতা খাঁ
“জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন।” ব্রিগেড গ্রাউন্ডের মঞ্চে নতজানু হয়ে, মাথা ঠেকিয়ে উপস্থিত সাধারণ মানুষকে প্রণাম করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর কণ্ঠেই শোনা যায় এমন শ্লোগান।
গর্জে ওঠেন অভিষেক। ১২ দিনের মধ্যে ব্রিগেড করে দেখিয়ে দিলাম। কেউ বলেছিল একে একে দল ছাড়ছে, তৃণমূল দলটা উঠে যাবে। কিন্তু এই ব্রিগেড থেকেই বিজেপির বিদায়ের সূচনা হয়ে গেল। মঞ্চে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমাণ্ডের। শুধু তাই নয়, বাংলা বিরোধী বিজেপি, ইডি-সিবিআই ভোট দেবে না। তা বলেও আক্রমণ শানান তিনি।
আরও বলেন, 'জনগর্জন কী আজকে তো ট্রেলার দেখালাম। আসল সিনেমা নির্বাচনের দিন আপামর বাংলা দেখাবে বিজেপিকে।' একইসঙ্গে দিল্লিতে ‘ভূমিকম্পে’র ডাক দেন তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদ ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে গর্জনের ডাক তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’ থেকে। আজই, তৃণমূল ৪২টি আসনেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিতে চলেছে, এমনটাই সূত্র মারফত খবর। তারকা, প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে প্রাক্তন আইপিএস সহ হেভিওয়েট নেতাদের নাম থাকতে চলেছে এই প্রার্থী তালিকায়। ইতিমধ্যে বিজেপিকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটে হুগলি থেকে তৃণমূলের টিকিটে রাজনীতির ময়দানে পদাপর্ণ করতে চলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জী। বালুরঘাট থেকে ঘাসফুলের হয়ে লড়তে পারেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত রায়গঞ্জে ডিআইজি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। ব্যারাকপুর থেকে পরিচালক তথা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী, বারাসত থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার, কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্র। এছাড়াও মালা রায়, শতাব্দী রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া (মেদিনীপুর) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাজদা আহমেদ, সৌগত রায়ও (দমদম) টিকিট পাবেন বলেই খবর।
উল্লেখ্য, বিশেষ চমক থাকছে আজকের ব্রিগেড মঞ্চে। তৃণমূল সুপ্রিমোর হাত ধরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন হেভিওয়েট নেতারা। এই বার ব্রিগেডে মঞ্চ সজ্জায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তিনটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। দুটি অপেক্ষাকৃত ছোট এবং একটি বড়। তৈরি করা হয়েছে র্যাম্পও। এদিনের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কী বার্তা দেন, সেই দিকে সব নজর।