
ওড়িশায় মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনা (Rail Accident)। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ২৮৮ জন। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছে তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধি দল। বালাসোরে (Balasore) যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এরই মধ্যে শনিবার নবজোয়ার কর্মসূচি স্থগিত রাখলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বালাসোরে মৃত্যুমিছিল লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তাই জনসংযোগ যাত্রা স্থগিত রাখলেন তৃণমূল সাংসদ।
গত কয়েকমাস ধরেই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জনসংযোগ যাত্রা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে ওড়িশার মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার পর মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেন অভিষেক। শনিবার হাওড়ার বাগনানে পদযাত্রা করেন অভিষেক। সেখানে কালীবাড়িতে পুজোও দেন। এরপর দুপুরে ও রাতে অধিবেশন কর্মসূচি ছিল। তা বাতিল করা হয়। রবিবার ডোমজুড়েও কর্মসূচি আছে তাঁর। সেই সূচিতেও পরিবর্তন আনা হতে পারে।
মণি ভট্টাচার্যঃ আপাতত কালীঘাটের কাকুর ঠিকানা বেহালা (Behala) ফকির পাড়া নয়। আগামী ১৪ দিনের জন্য কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের ঠিকানা ইডির (ED) হেফাজত। শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অভিষেক-কুন্তলের একটা পৃথক মামলায় সিবিআই অস্বস্তিতে রয়েছেন অভিষেক। এবার কালীঘাটের কাকুর গ্রেফতারি। এতে কি কোনও ভাবে অস্বস্তি বাড়াবে যুবরাজ অর্থাৎ অভিষেকের। যদিও এ ঘটনায় বিজেপি সহ বাদবাকি বিরোধী দল গুলি কাকুকে কান স্বরূপ অভিষেককে মাথা হিসেবেই দাবি করছেন। তাঁদের মত কানে টান পড়ছে, এবার মাথার পালা। যদিও এসব তথ্য উড়িয়ে তৃণমূলের দাবি 'নবজোয়ার'কে ঢাকতেই এই চক্রান্ত।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে ইডির দফতরে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ইডি সূত্রে খবর, অভিযুক্ত এই কাকু তাঁর ফোন থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কিত সমস্ত চ্যাট তদন্তের গতি বুঝে উড়িয়ে ফেলতেই চেয়েছিলেন। কিন্তু আগেই তাঁর মোবাইল গুলি বাজেয়াপ্ত করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সেই মোবাইলের তথ্য নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা করে সমস্ত কথা তিনি অস্বীকার করেন। এই বিষয়ে উত্তর দিতে চান নি। এছাড়া ইডির সূত্রে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নাম উঠেছে কাকুর ৩ টি কোম্পানির নাম। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল লিপ্স এন্ড বাউন্স। অভিষেকের এই কোম্পানির সিইও ছিলেন কাকু। সে সঙ্গেই এই কোম্পানির জয়েন্ট ডিরেক্টর ছিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের পরিবার। অভিযোগ এই কোম্পানি থেকে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে।
যদিও কালীঘাটের কাকু বা কুন্তল এই প্রসঙ্গে অভিষেকের মুখে কিন্তু অন্য সুর। অভিষেক জানিয়েছেন তিনি কুন্তলকে চেনেনই না। চেনেন না কাকুকেও। সূত্রের খবর, কালীঘাটের কাকু এবং কুন্তল দুজনেই নিয়োগ দুর্নীতির টাকা লেনদেনে যুক্ত বলে দাবি ইডির। অভিযোগ কুন্তলকে পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড দিতেন কাকু। কুন্তল ওই তথ্য দিতেন মানিককে। ওই চাকরি বিক্রির টাকা পৌঁছে যেত পার্থ, মানিক ও কাকুর কাছে। গ্রেফতার হওয়ার পর বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তলের মুখে শোনা গিয়েছিল এই কালীঘাটের কাকুর নাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ঘটনায় কিভাবে জড়িয়ে গেল অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
পূর্বেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তলের চিঠি প্রসঙ্গে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। জেরা শেষে বেরিয়ে এসে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে তোপ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা উল্টো। বিজেপির আইনজীবী তরুণ জ্যোতি তিওয়ারির মতে, 'কালীঘাটের কাকু অভিষেকের যুবা দলের সংঘটক। এই কুন্তল, শান্তনু, এদেরকে বাছাই করে তুলে আনা। আর ওই কোম্পানির মাধ্যমে এই দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হত। আর ভাগ পৌঁছে যেত অভিষেকের কাছেও।' একই দাবি বাম নেতা শতরুপ ঘোষের। শতরুপের দাবি, 'কালীঘাটের কাকু নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম হোতা। মাথা কে সেটা সবাই জানে। তদন্ত ঠিক চললে এর পরে কালীঘাটের ভাইপো, তারপর কালীঘাটের পিসি সব গারদে যাবে।'
যদিও এমন দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের পক্ষে কুনাল ঘোষের দাবি, অভিষেকের নবজোয়ারে পরিকল্পিতভাবে হামলা আর এই হামলার দায় চাপতেই এই চক্রান্ত করেছে বিজেপি। পাশাপাশি 'নবজোয়ার' প্রকল্পকে ভয় পেয়েছে বিজেপি। কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে দলের বা অভিষেকের তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। তাও স্পষ্ট করেন তিনি।
প্রসূন গুপ্তঃ তিন মাস না যেতেই সদ্য সাগরদিঘি থেকে জিতে আসা বায়রন বিশ্বাস কংগ্রেস ছেড়ে চলে গেলেন তৃণমূলে। আজ মেদিনীপুরের এক সভার আগেই দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে "হাত" ছাড়লেন বায়রন। কিন্তু কেন? একান্ত ভাবে বায়রন কিছু কথা বলেছেন তার অংশ বিশেষ তুলে ধরা যাক।
৭০%-র উপর সংখ্যালঘু প্রধান স্থান সাগরদিঘি। এখানে বায়রনের বড় ব্যবসা। তিনি বরাবরই তৃণমূল সমর্থক ছিলেন। সুব্রত সাহা ছিলেন এলাকার দীর্ঘদিনের বিধায়ক। অঞ্চলে সংখ্যালঘুরা তাঁকে মসিহা বলতো। হঠাৎ তাঁর মৃত্যু হলে তৃণমূল এলাকার এক হিন্দু নেতাকে প্রার্থী করে, যার এলাকায় কোনও গ্রহনযোগ্যতাই ছিল না। ২০২১-এ এই নেতা বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিল বলে অভিযোগ আছে। সুব্রতবাবু মৃত্যুর পরে বায়রন কিন্তু প্রার্থী হতে চেয়েছিল কিন্তু তাঁকে আমল দেওয়া হয় নি। কংগ্রেস বায়রনকে প্রার্থী করে। বলা ভালো সিপিএম ও অধীর চৌধুরীর ইচ্ছাতেই প্রার্থী হন বায়রন। এরপর তো বিশাল জয়। ওদিন অধীরবাবু কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন, বাম ও বিজেপি ভোটারদের। বায়রন বলেছিলেন যে, তিনি তৃণমূলের ভোটেই জিতেছেন। পরে বিধানসভায় শপথ নিতে গিয়ে একই কথা বলেন বায়রন।
কিন্তু দিন এগিয়েছে আর হতাশ হয়েছেন রাজনীতির অনভিজ্ঞ বায়রন। তিনি দেখেছেন, বাংলায় কংগ্রেসের তেমন কিছু সংগঠনই নেই। দলটি অনেকটাই সিপিএমের উপর নির্ভরশীল। তিনি বরাবরই সিপিএম ও বিজেপি বিরোধী। তিনি দেখলেন অধীরবাবু অনেকটাই ব্যস্ত দিল্লি রাজনীতি নিয়ে বাকি যারা রয়েছে তাদের তেমন পরিচিতি নেই। কাজটা করবে কে, ভাবনায় একসা ছিলেন বায়রন।
এর মধ্যে অভিষেকের সঙ্গে তাঁর প্রাথমিক কথা হয় দলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করতে চান। ১১ মে নবান্নে বৈঠকের কথা ছিল কিন্তু তার আগেই অভিষেকের সাথে দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সায় ছিল মমতারও। সোমবার সেই কাজটি সেরে ফেললেন বায়রন বিশ্বাস। এবারে পুরস্কারের পালা। নিশ্চিত পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বিশেষ পদ পেতে চলেছেন বায়রন।
মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) পঞ্চায়েতের ভোটের (Panchayet Election) প্রার্থীপদ নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তাঁর জেরেই বোমাজিতে মৃত্যু হল তৃণমূল (TMC) সদস্যের ভাইয়ের। রবিবার রাতে এঘটনার পর এখনও উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের পাপড়দহ গ্রাম। পুলিস জনিয়েছে এ ঘটনায় বোমাবাজিতে প্রাণ হারিয়েছেন, তৃনমূল কর্মী আমির আলি শেখ (৫০)। পুলিস আরও জানিয়েছে এ ঘটনায় এখনও অবধি ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সফিরুল বাসার, বিরাজ আলম দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনা জানার চেষ্টা করছে পুলিস। ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে চার বালতি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিস। যদিও এ ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধেও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটার প্রার্থীপদ নিয়ে স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত আগেই ছিল। রবিবার ওই ঝামেলা আরও প্রকট হয়। এরপর একপক্ষ বোমাবাজি শুরু করে রবিবার সন্ধ্যা থেকেই। তৃণমূলের নব্য অঞ্চল সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে এই যুদ্ধ বেশ কয়েকদিন ধরেই। এমনটা জানাচ্ছেন স্থানীয়রাই। এই বোমাবাজিতে পাপড়দহ গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য জাহিরুদ্দিন শেখের ভাই আমির আলী শেখের মৃত্যু হয়। আর এই ঘটনায় অভিযোগের তীর উঠেছে বিপ্রসেখর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য নিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি গোলাম গাউসের বিরুদ্ধে। এঘটনায় স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ার ইব্রাহিম শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এলাকায় বোমা মজুত করতে সাহায্য করে ওই সিভিক।
এ ঘটনায় যেমন পুলিসের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠছে, তেমন প্রশ্ন উঠছে যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে অভিষেক ও মমতা বন্দোপাধ্যায় শান্তির বার্তা দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ভোট করার বার্তা দিচ্ছেন। তবে এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে? প্রশ্ন উঠছে পঞ্চায়েতের আগে যদি এ পরিস্থিতি হয় তবে ভোটের সময় রাজ্যের সন্ত্রাস কোন পর্যায়ে পৌঁছাবে?
প্রসূন গুপ্তঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ ছিল, বিরোধীদের বৈঠক হোক কিন্তু দিল্লিতে নয়, হোক পাটনায়। যেদিন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব নবান্নে এসেছিলেন সেদিনই এই প্রস্তাব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাছে রাখেন। পরে বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলে মূলত নীতীশের আয়োজনে পাটনায় এই বৈঠক হচ্ছে।
এবারে প্রশ্ন, উপস্থিত থাকছেন কারা? গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি যাবেন না। দেখা গেল আগে না জানালেও অধিকাংশ অ-বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাই গরহাজির। পরদিন রবিবার ছিল নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন। সেখানেও বিরোধী ২০টি বিরোধী দল অনুপস্থিত ছিল। যুক্তি ছিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ না জানানো। যদিও বাহানা রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতি কিন্তু ওই ঘটনার মাধ্যমে একটা বিরোধী ঐক্য গড়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য। একই সাথে ভারতের পদক জয়ী খেলোয়াড়দের গ্রেফতারির ঘটনাও তাঁদের নতুন তথ্য জোগান দিয়েছে।
বিরোধীদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী কংগ্রেস যেমন জোট হওয়ার কাজে উদ্যোগ নিয়েছে, তেমন রয়েছে নীতীশের জেডিইউ, লালুর আরজেডি, জেএমএম, ডিএমকে, এনসিপি, শিবসেনা (উদ্ধব) ইত্যাদি। তবে কংগ্রেসের বিরোধী হলেও থাকছে তৃণমূল কংগ্রেস, আপ, তেলেঙ্গানার টিআরএস।
তবে কি বিজেপি একা। না তার অনেক সমর্থক এসে গিয়েছে যাদের ঠিক জোটসঙ্গী বলা যায় না। আছে বিজেডি, এআইএডিএমকে, শিরোমনি আকালি দল। অন্ধ্রের চন্দ্রবাবুর দল বা জগন্ময় রেড্ডির দলও রয়েছে মোদীর পাশে। মজার বিষয় এক সময়ের মোদী বিরোধী দেবেগৌড়ার দল জেডিএস সম্প্রতি কর্ণাটকের ভোটে খুবই খারাপ ফল করেছে, কাজেই তাদের কোনও পছন্দ নেই। সুতরাং রবিবারে আসবো না বলেও সংসদ ভবনের উদ্বোধনে তারা উপস্থিত ছিল।
২০২৪-এর নির্বাচনের আগে সাভারকরের জন্মদিনে সংসদ ভবন উদ্বোধন করে প্রকারান্তে আরএসএস-কে বার্তা দিলেন নরেন্দ্র মোদী।
শালবনিতে (Salboni) তৃণমূলের (Tmc) নবজোয়ার কর্মসূচি। তার আগে আচমকাই শালবনি হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। শালবনির নতুন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সরজমিনে পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও অভিযোগ আছে কিনা জানতে চান। মায়েদের অনুরোধে সদ্যোজাতদের নামকরণও করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এক নবজাতিকার নাম করনের সময় বলেন, ওর নাম হবে সঙ্গীতা নাহলে সঞ্চিতা'
এদিন সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ে সব রকম অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে কিনা, তার খোঁজখবর নেন। এরপর প্রসূতি বিভাগে যান মুখ্যমন্ত্রী। বেডে বেডে গিয়ে মা এবং বাচ্চাদের দেখেন। কিছু সদ্যোজাতের বাবার নাম জিজ্ঞাসা করে নামকরণ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় খুশি সদ্যোজাতের পরিবার। বেরিয়ে আসার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান, কোনও সাহায্য লাগলে, তারা যেন সরকারকে জানায়।
হাসপাতাল পরিদর্শনের পরই শালবনিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
ফের কোটি কোটি টাকার (Money) দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ উঠল তৃণমূল (TMC) পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বিজেপির (BJP) তরফে এ অভিযোগ আনা হয়। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে ময়ূরেশ্বর (Birbhum) থানার অন্তর্গত ময়ূরেশ্বর এক নম্বর ব্লকে। ওইদিনই অভিযোগ জনানো হয় ময়ূরেশ্বর এক নম্বর ব্লকের বিডিও-র কাছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধান রথীন সরকার।
এই বিষয়ে রথীন সরকার দাবি করেন, তাঁর আমলে কোনও দুর্নীতি হয়নি। যা হয়েছে আগের পঞ্চায়েত প্রধান সায়েরা বিবির আমলেই এই দুর্নীতি হয়েছে। বর্তমানে পঞ্চায়েতে কোনও দুর্নীতি হয়নি। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ প্রাক্তন প্রধানের স্বামী নাসিম শেখ। এই ঘটনায় যে অভিযোগ জমা পড়েছে তা ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত। অভিযোগ, প্রায় দেড় কোটি টাকার গাছ বিক্রি করেছে। এছাড়াও রথীন সরকারের নামে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ করেন তৃণমূল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের স্বামী নাসিম শেখ।
এই ঘটনায় বিজেপি নেতা শ্যামল মণ্ডল জানান, গাছ চুরি থেকে আবাস যোজনার বাড়ি সহ বিভিন্ন দুর্নীতিতে এই পঞ্চায়েত জড়িত। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সমস্ত তথ্য ব্লক আধিকারিককে দেওয়া হয়েছে। যদি তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন হবে, এমনটাই জানান তিনি।
'পরের বার আমাকে গ্রেফতার করা হবে।' ঠিক এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন অভিষেকের। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের। এদিন তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।
তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, 'আমাকে বারবার তলব করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরার নামে হেনস্থা করা হচ্ছে। প্রতিবার নয় ঘণ্টা করে জেরা করা হচ্ছে।' এমনকী, অভিষেক জানাচ্ছেন, 'পরের বার আমাকে গ্রেফতার করা হবে। আমি প্রচার করছিলাম, সেই অবস্থায় সমন জারি করে। পরের দিন সকালে জেরায় তলব করা হয়েছে। আমি জেরায় যোগ দিয়েছি। তারপরও হেনস্থা করা হচ্ছে।' এই মামলা বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চে দ্রুত শুনানির আর্জি জানালেন অভিষেকের আইনজীবী।
পাশাপাশি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত কোনও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করারও আর্জি জানান আইনজীবী সিংভি। কিন্তু, এদিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চ অভিষেকের সুরক্ষাকবচের কোনও উল্লেখ করেনি। এজলাসে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে উপস্থিত এস ভি রাজু পরবর্তী শুনানির দিন জিজ্ঞাসা করেন। জানা যায়, আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায় ছিল, অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই বা ইডি। পাশাপাশি, তাঁকে ২৫ লক্ষ জরিমানা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন বলে সিবিআইকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন অভিষেক। যদিও অভিষেক সিবিআইয়ের দেওয়া সময়ে হাজির হয়েছিলেন। এবং তদন্তে পূর্ণ সহায়তা করেছেন বলে সাংবাদিক দের জানিয়েছেন।
পূর্বসূচি অনুযায়ী আজ অর্থাৎ সোমবার থেকে ফের 'নবজোয়ার' (Nabajoar) যাত্রা শুরু করবেন তৃণমূলের (TMC) সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সিবিআইয়ের তলবে হাজিরা দিতে বাঁকুড়া থেকে কলকাতা আসেন তিনি। সিবিআইয়ের অফিসে হাজিরা দেওয়ার পর অভিষেককে যে আরও উৎফুল্ল দেখিয়েছে সেটা গোটা রাজ্যই দেখেছে। যদিও রাজনৈতিক মহলের দাবি সিবিআইয়ের হাজিরার পর অভিষেকের ও তৃণমূলের পালে আরও হাওয়া লাগবে। পাশাপাশি তৃণমূলের সিংহভাগ নেতৃত্বের অবশ্য দাবি 'নবজোয়ার' সফলই ছিল, এই ঘটনার পর আরও বৃহৎ চেহারা নেবে এই 'নবজোয়ার।'
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ চপারে ইন্দাসে পৌঁছবেন অভিষেক। প্রথমে সেখানে বজ্রপাতে মৃত এবং আহত তৃণমূল কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর জয়পুর এবং বিষ্ণুপুরে কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। তার আগে বিষ্ণুপুরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। ইন্দাসের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন খোদ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের দাবি, সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচিতে জনপ্লাবন হবে।
শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের তলব পেয়ে, রাতে বাঁকুড়া থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন রবিবার হাজিরা দিয়ে ফের সোমবার থেকে নবজোয়ার যাত্রা শুরু হবে। শনিবার রাতে সিবিআইয়ের এই তলব প্রসঙ্গে বিজেপিকে মূলত টার্গেট করেন অভিষেক। জেরা শেষে বেরিয়ে অভিষেক স্পষ্ট বলেন, 'নবজোয়ার যাত্রা দেখে বিজেপি সহ্য করতে পারছে না, তাই চক্রান্ত করে বিজেপি এই যাত্রাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তোপ দাগেন মোদি ও অমিত শাহকেও।' এই বিষয়ে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সিবিআইয়ের এই তলব প্রসঙ্গে বিজেপিকেই দুষছেন। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের দাবি মানতে নারাজ। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, 'চোর চুরি করেছে, সিবিআই তদন্ত করছে, এত ভয় পাওয়ার কী আছে।'
দীর্ঘ ১২ বছর পর শাসনের (Shasan) মাটিতে লাল পতাকা উড়েছিল। পুরনো দলীয় কার্যালয় আবার রং করে পাটিকর্মীরা সমাদরে বসতে শুরু করেছিল। তবে সেই খুশিটা ছিল শুধু ক্ষণিকের। শনিবার রাত ১২ টা নাগাদ শাসনের একমাত্র সিপিআইএম-র (CPIM) দলীয় কার্যালয়ে হামলা করে তৃণমূল (TMC) আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গা হয় দরজা-জানালা, চেয়ার-টেবিল। এমনকি মাটিতে ছুঁড়ে ফলে দেওয়া হয় সিপিআরএম-র দলীয় লাল পতাকাও।
সূত্রের খবর, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার পথ অবরোধ করে বামপন্থীরা। প্রায় ২০ মিনিট ধরে রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন বামপন্থীরা। যার ফলে ওই রাস্তায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিস (Police)। এমনকি দুষ্কৃতীদেরকে গ্রেফতার করার আশ্বাস দেয় পুলিস। আর পুলিসের এই আশ্বাস পাওয়ার পরেই সিপিএম নেতৃত্ব অবরোধ তুলে নেন।
এই ঘটনায় সিপিআইএম-র নেতৃত্বদের দাবি, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সিপিআইএম-র এই কার্যালয়টি বন্ধ হয়েছিল। তবে প্রায় দু আড়াই মাস আগে এই কার্যালয়টি আবার খোলা হয়। সেই নিয়ে বেশ খুশিতেই ছিলেই বামপন্থীর সদস্যরা। তবে এই দু আড়াই মাসে সিপিআইএম-এ তৃণমূল থেকে দলে দলে লোক এসে যোগ দেয় এই কার্যালয়ে। আর তা নিয়েই দু দলের মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হয়। আর তার জন্যই শনিবার গভীর রাতে সিপিআইএম-র দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা, এমনটাই দাবি সিপিআইএম-র নেতৃত্বদের।
প্রসূন গুপ্তঃ একটা সময়ে যখন প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়া আর তেমন কিছুই ছিল না। বৈদ্যুতিন মাধ্যম, সরকারি চ্যানেল এসেছিলো অনেক পরে। ওই সময়ে 'ঘোড়ার মুখের খবর' বলতে যা হত তা নেহাতই মামুলি। ঘোড়ার মুখ বলতে কোনও রাজনৈতিক থেকে শুরু করে কোনও কিছুর গোপন খবর। তবে অনেক সময়ে অনেক প্রাজ্ঞ সাংবাদিক খবর করতেন সোর্স এবং অভিজ্ঞতা মিলিয়ে। আজকের দিনে বৈদ্যুতিন মাধ্যম অনেক শক্তিশালী, তার অন্যতম কারণ তারা সরাসরি দর্শককে দেখিয়ে দিচ্ছে। অবিশ্যি তাঁর সঙ্গে অভিজ্ঞতারও একটি মূল্য আছে।
শনিবার কেউ কেউ বলেই দিয়েছিলেন যে, অভিষেক যাচ্ছেন কিন্তু সন্ধ্যার মধ্যে ফিরেও আসবেন। যুক্তিতে বুঝিয়েছিলেন, এটি মামুলি সাক্ষ্য দিতেই সিবিআই অভিষেককে ডেকেছিল। অভিষেক যখন হাসিমুখে সিবিআই দফতরে প্রবেশ করলেন এবং মিডিয়াকে দেখে হাত নাড়ালেন, তখনই বোঝা উচিত ছিল তাঁর বেরিয়ে আসাটা শুধু সময়ের অপেক্ষো। এর আগে যারা যখনই এই দফতরে এসেছেন, তাদের মুখেচোখে দেখা গিয়েছিলো আতঙ্ক যা অভিষেকের কোনও বারও দেখা যায় নি।
খবর দুই, মদন মিত্র। হঠাৎই দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রকাশ করলেন। তাঁর ব্যঙ্গোক্তি শোনা গেলো শুক্রবার রাত থেকেই। কারণ তাঁর পরিচিত কোনও অসুস্থ ব্যক্তিকে এসএসকেএম হাসপাতালে নাকি ভর্তি নেওয়া হয় নি। ওই অসুস্থ ব্যক্তিকে নাকি আইসিসিইউতে ভর্তির আবেদন করেছিলেন মদন। এই সরকারি হাসপাতালে বরাবরই মদনের একটা যোগাযোগ ছিল। এমনকি বাম জমানাতেও মদনের কাছে উপকৃত হয়েছে বহু মানুষ। এ হেন মদন মিত্র বিদ্রোহী হলেন কেন?
মনে রাখতে হবে সিবিআই যখন মদনকে গ্রেফতার করে আড়াই বছর জেলে রেখেছিলো, তখনও মদন দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। অনেকেই বলেন মদন একেবারে গোড়ার দিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন অনুগত সৈনিক হিসাবে। সেই মদন হঠাৎ বিদ্রোহী হলেন কেন। প্রাজ্ঞ সাংবাদিক বলছেন, একেবারে মিডিয়াকে বোকা বানিয়েছেন মদন। অভিষেকের দিক থেকে খবর সরিয়ে নেওয়ার জন্যই নাকি 'গেম মদন'। এবারে বিবেচনার বিষয় জনতার। [সব জায়গায় এমনই গুঞ্জন ছড়িয়েছে]
সকাল থেকেই কিন্তু অভিষেককে (Abhishek Banerjee) চাঙ্গাই লেগেছে। যদিও বেশি চাঙ্গা লাগলো সিবিআই (CBI) জেরা সেরে বেরিয়ে যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টার সিবিআই জেরা সেরে বেরিয়ে তুলোধনা করলেন বিজেপিকে (BJP)। নিশানায় থাকলেন বাম-কংগ্রেস ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। শুক্রবার কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার বেলা ১১ টায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি দিল্লির কাছে হার মানিনি তাই আমার বিরুদ্ধে এজেন্সি লাগানো হয়েছে। দিল্লির পোষা কুকুর হবো না, বাংলার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হয়ে থাকব।'
নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এসে অভিষেক বিজেপিকে তীরে বিঁধলেন ও হাঁটলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়য়ের পথে, বললেন, 'বিজেপি নবজোয়ার যাত্রায় লোকের উন্মাদনা সহ্য করতে পারছে না, তাই এই নবজোয়ার যাত্রা বানচাল করার জন্য এত কিছু।' যেমনটা শুক্রবার মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেরার শেষে বেরিয়ে এসে প্রথমেই বললেন, 'যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাদের সময় নষ্ট। আর আমারও সময় নষ্ট।' একার্থে তিনি বুঝিয়ে দিলেন এই জিজ্ঞসাবাদের ফলাফল শূন্য। এমনকি মুখেও তিনি বললেন এই ফলাফলের কথা। বললেন, 'এই জেরার নির্যাস শুন্য। একটি অস্টডিম্ব বেরিয়েছে।'
মোটের উপর সিবিআইয়ের এই হাজিরার পর যে অভিষেকের নবজোয়ারে নতুন পাল এলো সেটা কিন্তু তিনি বুঝিয়েই দিলেন। শনিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও তুলোধনা করতে ছাড়েন নি অভিষেক। অভিষেক সিবিআইকে টার্গেট করে বলেন, '৩ বছর আগে আমাকে ডেকেছিল, আমি আগে যা বলেছি তিন চার বছর পরে তাই-ই বলব। সিবিআই তো গরু পাচার, কয়লা পাচার, শিক্ষায় দুর্নীতির তদন্ত করছে ফলাফল কি?' তিনি আরও বলেন, 'সিবিআই তো জ্ঞানেশ্বরীর তদন্ত করছে, ১৫ বছর ধরে নোবেল চুরির তদন্ত করছে ফলাফল কি?' সব শেষে হুঙ্কারের সুরেই বললেন, 'ইডি-সিবিআই লাগবে না, অভিযোগ থাকলে তথ্য প্রমান আনুন অন্যদিকে ফাঁসির মঞ্চ তৈরী করুন।'
শনিবার অভিষেক মোদী ও অমিত শাহকেও ছাড়েন নি। নিজের দলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'তৃণমূল একমাত্র দল যে দলের মন্ত্রী থাকা কালীন গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বহিস্কার করেছে,আর চোর ও দুষ্কৃতীরা বিজেপির সম্পদ।' মোটের উপর গোটা ঘটনায় বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে তৃণমূল সেটা কিছুটা স্পষ্ট শনির সন্ধ্যার পর। '
তৃণমূল (TMC) নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল বসিরহাটে। তবে অল্পের জন্য প্রাণ বাঁচলেন তৃণমূল নেতা। শুক্রবার রাতে বসিরহাট (Basirhat) থানার গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তেঘরিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বসিরহাট থানা পুলিস (Police)। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিস। তবে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি ওই তৃণমূল নেতার তরফে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জানা গিয়েছে, ওই তৃণমূল সদস্যের নাম মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার। তিনি গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তেঘরিয়া গ্রামের তৃণমূলের সদস্য। তাঁর বাড়িতেই শুক্রবার রাতের অন্ধকারে গুলি হামলা চালায় দুষ্কৃতিরা।
তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্য মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার জানান, রাতের অন্ধকারে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির সামনে এসে তিনটি ছেলে আচমকাই তাঁকে ডাকাডাকি শুরু করে। ডাকাডাকির কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার। তখনই দুষ্কৃতিরা তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ঘিরে ফেলে। তবে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি বাড়ির দিকে ফিরে গেলেই দুষ্কৃতিরা গুলি চালাতে শুরু করে। অভিযোগ, মৃত্যুঞ্জয় কর্মকারকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতিরা মোট দুই রাউণ্ড গুলি চালায়। তবে অন্ধকারের জেরে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় দুষ্কৃতিরা। তিনি আরও দাবি করেন, দুষ্কৃতিদের কাছে মোট তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। যা দিয়েই তাঁরা দু-রাউণ্ড গুলি চালিয়েছে। আর এই ঘটনার পরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতিরা।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পরেই খবর দেওয়া হয় পুলিসকে এবং দলের সদস্যদের। পরে পুলিস ঘটনাস্থলে এসে গুলির খলপাগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যান। তিনি বলেন, 'আমি একজন জন প্রতিনিধি হয়েও যদি আমারই কোনও নিরাপত্তা না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষেরও কোনও নিরাপত্তা থাকছে না। প্রশাসনের কাছে শুধু একটাই দাবি, দুষ্কৃতিদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।'
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় (Egra) গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধি দল। বুধবার সাহারা গ্রামে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়লেন রাজ্যের মন্ত্রী (Minister) মানস ভুঁইঞা-সহ তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। কার্যত বাধ্য হয়েই গ্রামে ঢোকার আগে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। এই ঘটনায় বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ মানস ভুইঞার। এর পিছনে সিপিএম এবং বিজেপি দুয়ের মদত রয়েছে বলেই অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী দোলা সেন।
এদিনই বিস্ফোরণের গ্রামে গিয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দলবিজেপি। গোটা ঘটনার জন্য পুলিশকেই দায়ী করেন তারা। দাবি করেন এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের। এই ব্যাপারে এদিনই তাঁকে মামলা করার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই অবস্থাতেই এগরার গ্রামে গিয়েছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। খানিকক্ষণ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পরেই অভিযোগ কার্যত তাঁদের ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। চোর চোর স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় তৃণমূল প্রতিনিধিদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিক্রিয়ায় মানস ভুঁইঞা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁরা এসেছিলেন। কিন্তু কিছু বিজেপির গুন্ডা এখানে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করে।
প্রসূন গুপ্তঃ দল বদল করাটা মহাপাপ নয়। কিন্তু দেখার বিষয় কী হেতু দলটি বদলাচ্ছে ব্যক্তি বিশেষ। ইন্দিরা গান্ধী দুবার দল ভেঙে নতুন দল গড়েছিলেন। প্রথমে নব কংগ্রেস পরে ইন্দিরা কংগ্রেস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা যেখানে কংগ্রেসও সেখানেই প্রমাণিত হয়েছে। দলের সঙ্গে সিম্বলটিও বদলেছিলেন ইন্দিরা। প্রথমে জোড়া বলদ, পরে গাই বাছুর এবং শেষে হাত চিহ্ন। দল ছেড়ে নতুন দল গড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। সারা ভারতে এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে। কমিউনিস্টরা ভারতে বারবার দল ভেঙে দল গড়েছে। একেবারে প্রথম ছিল কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া বা সিপিআই, যার চিহ্ন ছিল কাস্তে ধানের শীষ। পরে ভেঙে হয়েছে সিপিএম, আরএসপি, এসইউসি ইত্যাদি। নকশালদের জন্মও ওই কাস্তে ধানের শীষের থেকেই।
এতো গেলো দল ভেঙে দল গড়া। কিন্তু দল ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার ইতিহাসও কম কিছু নয়। এও চলেছে দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার একটা চল শুরু হয়েছিল ২০১৯ থেকে ২০২১ অবধি। অবশ্য তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুকুল রায়ের হাত ধরে বাম দলগুলি থেকে বহু কর্মী দলে যোগ দেন। আজ তার খেসারত দিতে হচ্ছে পার্টিকে।
আবার তৃণমূল থেকে বহু নেতা দল থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভোটে ফের পায়ে ধরে ফিরেছে দলে, যথা সব্যসাচী দত্ত বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি। টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছিলেন এক সময়ে মমতার ছায়াসঙ্গী সোনালী গুহ। যতদিন তৃণমূলে ছিলেন এবং যত মমতার নাম ছড়িয়েছিলো, তত পথেঘাটে রোয়াবি দেখিয়েছিলেন সোনালী। হাওড়ার পুলিস স্টেশনে ঢুকে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন পুলিস কর্তাকে। দাপট কী প্রচন্ড ছিল তাঁর। পরে টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যান এবং বিজেপি ক্ষমতায় না আসার পর ফের মমতাকে হাতে পায়ে ধরে ফিরতে চান। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য ফেরত নেওয়া হয়নি। এখন ফের তিনি ফিরতে চাইছেন বিজেপিতে। এবারে কিন্তু অধিকাংশ বিজেপি নেতা কর্মীরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন সোনালী নিয়ে। কাজেই? আসলে এই সোনালী গুহরা আদৌ বদলায় কি? সোনালীরা বদলায় না।