মাধ্যমিকে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ১২ জন পড়ুয়া স্থান করে নিয়েছিলেন প্রথম দশে। উচ্চমাধ্যমিকেও মেধাতালিকায় জয়জয়কার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের। বুধবার দ্বাদশের ফলপ্রকাশ হলে দেখা যায়, এই স্কুল থেকে ৯ জন প্রথম দশে স্থান করে নিয়েছে। এবার রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম স্থানাধিকারীও এই স্কুলেরই। শুভ্রাংশু সর্দার। অঙ্কের সঙ্গে অর্থনীতি এবং স্ট্যাটিস্টিক্স নিয়ে পড়াশোনা করে ৪৯৬ নম্বর পেয়েছেন তিনি। তাঁর আরও ৮ সহপাঠী এবারে উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। স্কুলে দ্বিতীয় এবং রাজ্যে চতুর্থ হয়েছেন নরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভ্রাংশুর থেকে মাত্র তিন নম্বর কম পেয়েছেন তিনি। আর নরেন্দ্রনাথের থেকে দু'নম্বর কম পেয়ে ষষ্ঠ হয়েছেন অর্কদীপ ঘরা।
রাজ্যে সপ্তম হয়েছেন এই স্কুলেরই বিতান শাসমল, অর্ক ঘোষ এবং অভিরূপ পাল। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। ৪৮৯ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে অষ্টম হয়েছেন নরেন্দ্রপুরের সৈয়দ সাকলাইন কবির। তাঁর থেকে এক নম্বর পেয়ে নবম হয়ে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন সায়ন সাহা এবং অর্কপ্রতিম দে। এই ফলাফলে আপ্লুত নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী ইষ্টেশানন্দ। তিনি জানান, ২০১৫ সালের পর ফের উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছে স্কুলের পড়ুয়ারা। এদিকে শুভ্রাংশু যে ভালো ফল করবেন তা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন তিনি। তবে অঙ্ক, অর্থনীতি ও স্ট্যাট নিয়ে যে তিনি প্রথম হবেন, তা ভাবতে পারেননি স্বামী ইষ্টেশানন্দ।
এবছর ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি হলেও পাশের হারের নিরিখে মেয়েদের টেক্কা দিল ছেলেরা। গত ৬ বছরের মধ্যে প্রথম ছাত্রীদের পিছনে ফেলে এগিয়ে গেল ছাত্ররা। উচ্চ শিক্ষা সংসদের সভাপতি, চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এবছর ছাত্রদের পাশের হার ৯১.৮৬ শতাংশ। ছাত্রীদের পাশের হার ৮৭.২৬ শতাংশ। প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ কম।
উচ্চ মাধ্যমিকে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৪৪৪ জন। পরীক্ষায় বসেছিলেন ৮ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৯১ জন। পাশ করেছেন ৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৭ জন পরীক্ষার্থী। উল্লেখ্য, এবছর যাঁরা উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন, তাঁরা কেউই করোনার কারণে ২০২১-এ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেননি। তাই, উচ্চ-মাধ্যমিকই ছিল তাঁদের জীবনের বড় পরীক্ষা।
প্রসূন গুপ্ত: মহেন্দ্র সিং ধোনি, ভারতীয় ক্রিকেটের এক কিংবদন্তি। সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়কও বটে। তাঁর হাতেই উঠেছিল টি-২০ বিশ্বকাপ এবং সীমিত ৫০ ওভারের বিশ্বকাপও। আইপিএল ট্রফিও উঠেছে বেশ কয়েকবার তাঁর হাতে অর্থাৎ চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক হিসেবে। মাঝখানে ১ বছর চেন্নাই দল না থাকায় অন্য দলে খেললেও ফের ফিরেছেন শ্রীনিবাসনের চেন্নাইতে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে খেলা শুরু সেই ২০০৪-এ, আজকে ২০ বছর বাদেও খেলে চলেছেন মাহি। ভারতের হয়ে ধাপে-ধাপে খেলা ছেড়েছেন প্রায় ৩-৪ বছর। বর্তমানে ধোনির বয়স ৪১-এর বেশি।
এই বয়সে সকলেই ক্রিকেট ছেড়ে দেন এমন নয়। কিন্তু ভেবে দেখার বিষয় তিনি ব্যাটার-উইকেট রক্ষক, যা তাঁকে ভয়ঙ্কর ব্যস্ত রাখে মাঠে। অনেকেই ভেবেছিলেন গত বছর হয়তো ধোনি খেলা ছেড়ে কমেন্ট্রি বক্সে চলে যাবেন। কিন্তু তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন তিনি খেলবেন। ওই যে বার্তা আছে 'যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো'। এ বছর ধোনিকে মাঠে খুবই ক্লান্ত লেগেছে। প্রথম খেলা পড়েছিল গুজরাত দলের বিরুদ্ধে। উল্টো দিকের অধিনায়ক তথা ভারতীয় দলের তরুণ তুর্কি হার্দিক পান্ডিয়াকে যতটা চনমনে লেগেছিল, ততটাই ক্লান্তি ছিল গুরু ধোনির মধ্যে।
ওই ম্যাচে হেরেছিল কিন্তু সোমবারের লখনৌ ম্যাচে জিতেছে চেন্নাই। খেলাটি যারা দেখেছেন তারা নিশ্চিত বলবেন, ধোনি কেন ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নামলেন। এটা ঠিক তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিনিশার। কিন্তু ফিনিশার মানে অন্তত ২০ ওভার ম্যাচে ১৫ ওভারের মধ্যে নামা উচিত, যা আগে নামতেন। কিন্তু এ বছর কোথায় তাঁর অবস্থান। যদিও ১২ রান করলেন দু'বলে এবং শেষ বলে আউট হলেন। তাই আরও আগে নামলে কী হতো জানা গেল না। এছাড়া উইকেটরক্ষক উইকেটের পিছনে বারবার বসবেন-উঠবেন। কিন্তু দেখা গেল ধোনি মোটামুটি দাঁড়িয়ে কিপ করছেন। এটা থেকে মনে হওয়া স্বাভাবিক বয়স তো হলো এবার নোঙ্গর ফেলো ধোনি।
২০১৯ থেকে ২০২৩ চার চারটে বছর কেটে গিয়েছে। তবু হতাশা কাটেনি ভারতের। দু’বারই সেমিফাইনালে এসে স্বপ্নভঙ্গ হলো ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের (ICC Women’s World Cup T20)। টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল হরমনপ্রীত কৌররা (Harmanpreet Kaur)। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ছন্নছাড়া ছিল টিম ইন্ডিয়া। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে অজি বাহিনী ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে করে ১৭২। জবাবে ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ভারতীয় দলের রান ১৬৭। মাত্র ৫ রানে পরাজিত হলো ভারত।
অধিনায়ক হরমনপ্রীতের রান আউটের পরেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পরে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন। একা ২২ গজে দাঁড়িয়ে জেমাইমা রডরিগেজকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টানছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। ব্যক্তিগত রান করেন ৫২। কিন্তু রান আউটের পর আর খেলায় ফিরতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। নিজের রানআউট নিয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন হরমনপ্রীত।
ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি জানিয়েছেন, আরো একটু সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। এর আগে ২০২০ সালে মহিলা টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
এবার বাজেটে মধ্যবিত্তদের যেমন সুরাহা দিয়েছে মোদী সরকার, তেমনভাবেই বেড়েছে কিছু পণ্যের দাম। সেই তালিকায় একদম উপরে আছে সিগারেট। ধূমপায়ীদের জন্য দুঃসংবাদ দিয়ে সিগারেটের উপর ১৬ শতাংশ কর আরোপ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তবে স্মার্ট ফোনের যুগে মানুষের হাতে আরও বেশি করে ফোন তুলে দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মোবাইলের যন্ত্রাংশের উপর চাপানো অন্তঃশুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ফলে কমবে মোবাইলের দাম। একইভাবে টিভির যন্ত্রাংশের অন্তঃশুল্কেও ছাড় দিয়েছে সরকার। ফলে টিভির দামও কমবে। কিন্তু যারা একটু সৌখিন, তাঁদের কাছে হেঁশেলের জন্য দুঃসংবাদ। রান্নাঘরের ইলেকট্রিক চিমনির দাম বাড়বে। বাজেটে চিমনির অন্তঃশুল্ক বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করেছে মোদী সরকার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাড়তে চলেছে রুপোর দাম। রুপোর উপরে বসানো অন্তঃশুল্কের পরিমাণ বেড়েছে এই বাজেটে।
এদিকে, কমবে ক্যামেরার লেন্সের দামও। লেন্সের উপর চাপানো শুল্ক কমিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশি কমবে শিশুদের দেশি খেলনার দাম। বাজেটে খেলনার উপর শুল্কে ছাড় পাওয়া গিয়েছে। এমনকি, যারা এই মুহূর্তে সাইকেলের উপর নির্ভরশীল, তাঁদের জন্য সুখবর। দেশি সাইকেলের দামও কমবে বাজেটের পর। দেশে তৈরি সাইকেলের উপর কর কমিয়েছে সরকার।
কিন্তু বিদেশী ই-ভেহিকেল বা ইলেকট্রিক গাড়ির দাম বাড়বে। এই গাড়ির উপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু কমছে দেশে তৈরি ইলেকট্রিক গাড়ির দাম। কাঁচামালের উপর চাপানো শুল্ক কমানো হয়েছে।
অপরদিকে, কমছে হিরের দামও। বাজেটে হিরের উপর চাপানো শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এমনকি বাজেটের পর সস্তা হবে লিথিয়াম ব্যাটারি। ব্যাটারির দাম বেশ খানিকটা কমতে চলেছে শুল্ক ছাড়ের জেরে।
এছাড়া ইমিটেশন গয়নার দাম, প্ল্যাটিনাম ধাতুর যাবতীয় গয়নার দাম বাড়ার সঙ্গে কিছুটা বাড়তে পারে সোনার দামও। এমনকি, আমদানিকৃত রবারের উপর শুল্ক বাড়িয়ে ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করেছে সরকার। ফলে বাড়তে চলেছে টায়ার টিউবের দাম।
মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফুটিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৩-এ (Union Budget 2023) বড়সড় ঘোষণা অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের (Nirmala Sitharaman)। নতুন কর কাঠামো বুধবার ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বেতনভুকদের কাছে যে কাঠামো যথেষ্ট সাশ্রয়ী। নগদ অর্থের সংস্থানও করতে পারবেন মধ্যবিত্ত শ্রেণি, এমনটাই দাবি অর্থনীতিবিদদের। জানা গিয়েছে, বছরে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ছাড়। পাশাপাশি আয়কর ছাড়ের সীমা ৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। কারও বছরে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে ৪৫ হাজার টাকা আয়কর (Income Tax) দিতে হবে, যা আগের তুলনায় ২৫% কম। যাঁর ১৫ লক্ষ টাকা বাৎসরিক আয় তাঁকে দেড় লক্ষ টাকা কর দিতে হবে। আগে দিতে হত ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৪০ হাজার টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন একজন বেতনভুক।
জানা গিয়েছে, ০ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বছরে আয় করলে কোনও কর দিতে হবে না। ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক আয়ে কর দিতে হবে ৫ শতাংশ। বাৎসরিক আয় ৬ লক্ষ টাকা থেকে ৯ লক্ষ টাকা হলে কর দিতে হবে ১০ শতাংশ। বাৎসরিক আয় ৯ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে কর দিতে হবে ১৫ শতাংশ। ১২ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর দিতে হবে ২০ শতাংশ। বছরে আয় যদি ১৫ লক্ষ টাকার বেশি হয় তা হলে ৩০ শতাংশ হারে দিতে হবে কর। এভাবেই নতুন কর কাঠামো ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী।
সংসদে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Finance Minister) পেশ করলেন কেন্দ্রীয় বাজেট (Union Budget 2023)। দ্বিতীয় মোদী সরকারের পূর্ণাঙ্গ এই বাজেট বক্তৃতার দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। বুধবার সকাল থেকেই শেয়ার বাজার সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এদিন রাষ্ট্রপতির থেকে বাজেট বক্তৃতার অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার (Union Cabinet) বৈঠক বসে। সেখানেই অর্থ মন্ত্রকের তৈরি করা বাজেটে সিলমোহর বসানো হয়। প্রান্তিক এবং জনজাতি মানুষের উন্নয়নে এই বাজেটে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এদিন বক্তৃতার শুরুতেই এমনটাই জানান অর্থমন্ত্রী। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সারির শহরগুলোয় পরিকাঠামো উন্নয়নে এবং দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি ঘটাতে বিশেষ জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এযাবৎকাল বাজেটে ঘোষিত প্রকল্প এবং বরাদ্দ এক নজরে।
টেট ২০২২ (TET 2022) আয়োজনে পর্ষদের ভূমিকায় সন্তুষ্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবারের পর বুধবারেও তাঁর অবস্থান একই। এদিন বিচারপতি (Justice Ganguly) বলেন, "শিক্ষা পর্ষদ (Primary Board) যদি ভালো কাজ করে তার প্রশংসা আমি করবোই। সরকারের যদি সঠিক ভূমিকা থাকে তবে মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata) কাজের প্রশংসা করবো। আবার যদি দেখি শিক্ষা পর্ষদ কোনও ভুল কাজ করছে তবে তার সমালোচনাও আমি করবো। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই।"
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের একটি মামলা চলাকালীন এই মন্তব্য করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিকে, রবিবার রাজ্যজুড়ে হওয়া টেটে বসেন ৭ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী। এই বিরাট আয়োজনকে সুষ্ঠু রাখতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য প্রশাসন। রবিবার ছুটির দিনেও পথে ছিল পর্যাপ্ত বাস, ছিল অতিরিক্ত ট্রেন।
কিন্তু প্রশাসনিক এই তৎপরতার সঙ্গেই একাধিক অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। কোথাও বায়োমেট্রিক বিকল, কোথাও অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভুল ঠিকানার মতো অভিযোগ উঠেছে। তবে পরীক্ষার সন্ধ্যায় পর্ষদ সভাপতি দাবি করেছেন সুষ্ঠু হয়েছে চলতি বছরের টেট। এই আয়োজনের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
১১ নভেম্বর, ২০২২ আয়োজিত টেট (TET 2022) পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় সন্তোষপ্রকাশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly)। 'টেট হওয়ার পর কার্বন কপি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে কাজ ভালো হচ্ছে।' এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এহেন মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টেট-২০২২ ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা থাকবে। ৫.৫ লক্ষের বেশি ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আদালতে জানালের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। রবিবার রাজ্যজুড়ে টেটে বসেন ৭ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী। আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছিল রাজ্য প্রশাসন। ছুটির দিন হলেও পথে ছিল পর্যাপ্ত বাস, ছিল অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা।
যদিও একাধিক অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। কোথাও বায়োমেট্রিক বিকল, কোথাও অ্যাডমিট কার্ডের পরীক্ষা কেন্দ্রের ভুল ঠিকানার মতো অভিযোগ উঠেছে। যদিও পরীক্ষার সন্ধ্যায় পর্ষদ সভাপতি দাবি করেছেন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে চলতি বছরের টেট পরীক্ষা। এই আয়োজনের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময়ের অপেক্ষা, তার উপর লাগাতার আন্দোলন, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, আদালতের কড়া দাওয়াই, হাজার টানাপোড়েন, সব কাটিয়ে অবশেষে রবিবার রাজ্যে (West Bengal) হয়ে গেল প্রাথমিক টেট (Primary TET) পরীক্ষা। মোটের উপর রাজ্যজুড়ে শান্তিপূর্ণ ভাবেই টেট হয়েছে বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কিন্তু রাজ্যজুড়ে চালচিত্র বলছে অন্য কথা। শহর কলকাতা (Kolkata) থেকে জেলা, একাধিক জায়গায় উঠে এল চরম ভোগান্তি আর অব্যবস্থার ছবি। অনেক পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ পরিবহণ ব্যবস্থা ঠিক ছিল না, রবিবার বলে যানবাহন কম ছিল। ফলে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। টেট পরীক্ষা দিলে পরিবহণের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবকরা।
এদিকে শুধুমাত্র যানবাহন সমস্যাই নয়, পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজতে গিয়েও হাঁড়ির হাল পরীক্ষার্থীদের। টেট পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানা ভুল নিয়ে বিভ্রান্ত পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের এডমিট কার্ডে রয়েছে ভুল ঠিকানা। সল্টলেক লবণ হ্রদ বিদ্যাপীঠ এডি ব্লকে কিন্তু এডমিট কার্ডে লবণ হ্রদ বিদ্যাপীঠ বিডি ব্লক উল্লেখ করা রয়েছে। অভিযোগ, হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করলেও কোন রকম সহযোগিতা করা হয়নি। কোন্নগর বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে টেট পরীক্ষার সিট্ পড়ে। কিন্তু পিনকোডে ভুল থাকার জন্য অনেকেই পৌঁছন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কন্যা নগর স্কুলে। আবার এক স্কুলের বাইরে নোটিস দেখা যায় যে সেখানে নয়, পরীক্ষা রয়েছে সোদপুরের একটি স্কুলে। এরপরেই বিভ্রান্ত পরীক্ষার্থীদের গাড়ি করে নির্দিষ্ট স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে বিষয় থেমে থাকেনি এখানেই। অন্যান্য বিভ্রান্তির সঙ্গেই দেখা গেল হয়রানির আরও এক চিত্র। শাঁখা পলা খুলিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশের নির্দেশ, আর যার ফলে অগত্যা মহিলাদের সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে খুলতে হয় শাঁখা। এমনকি দূর দূরান্ত থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করতে পারেননি, অথচ ব্যাগ বাইরে কোথায় রাখবেন তাও কিছু নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। ফলে ব্যাগে ফোন, পার্স ফেলে মানসিক অশান্তির মধ্যে পরীক্ষা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ। কড়াকড়ি করতে গিয়ে সেটা বারাবারিতে পরিণত হয়েছে, দাবি পরীক্ষার্থীদের।
তবে টেট পরীক্ষা শেষ হলেও শেষ হয়নি অশান্তি। কলকাতার প্রখ্যাত দেশপ্রিয় পার্ক তীর্থপতি ইনস্টিটিউশনে বিক্ষোভে সামিল হলেন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা নির্দিষ্ট সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছিলেন। পরীক্ষা শুরুর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম বায়োমেট্রিক। কিন্তু তাঁদের সেই পদ্ধতি সম্পন্নই হয়নি বলে অভিযোগ। এদিকে বায়োমেট্রিক না হলে তাঁরা অনুপস্থিত বলে বিবেচিত হবেন বলে আশঙ্কা, আর তাতেই বিক্ষোভে সামিল পরীক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও খবর। যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হবে ততক্ষণ স্কুলেই অবস্থান করবেন বলে হুঁশিয়ারি পরীক্ষার্থীদের।
অপরদিকে দূর্ঘটনার কবলে টেট পরিক্ষার্থী। সিউড়ির মাঝি গ্রাম থেকে হেতমপুরে টেট পরিক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন পরীক্ষার্থী শুভশ্রী দে। সেই সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মারে চারচাকা গাড়ি। ঘটনায় আহত শিশু সহ তিনজন। এদিন সকালে বাঁকুড়ার কোতুলপুর থেকে একটি গাড়িতে চাতরা রামাই পন্ডিত কলেজে টেটের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গাড়িতে কলেজের একজন কর্মী ছাড়াও ছিলেন পুলিশকর্মীরা। সাঁইতাড়া ও মির্জাপুরের মাঝামাঝি গাড়িটি মুখোমুখি ধাক্কা মারে একটি পিক আপ ভ্যানে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কোতুলপুর থানার পুলিশ। এরপরই তড়িঘড়ি পুলিশের অপর একটি গাড়িতে করে প্রশ্নপত্র চাতরা রামাই পন্ডিত কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি দাবি করেন, সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে পরীক্ষা। এই আয়োজনকে সফল করার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ধন্যাব্দ জানান। পাশাপাশি পুলি প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসায় সরব ছিলেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল।
বিক্ষিপ্ত অভাব অভিযোগকে সঙ্গী করেই শেষ চলতি বছরের টেট পরীক্ষা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, প্রায় ৫ বছর পর রবিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়েছিল চলতি বছরের টেট পরীক্ষা (TET 2022)। নির্ঘণ্ট মিলিয়ে শেষ হয় আড়াইটের সময়। রাজ্যের ১,৪৫৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩১ জন পরীক্ষার্থী (Teacher Aspirants) বেলা আড়াইটে পর্যন্ত পরীক্ষা দেন। বহু প্রতীক্ষিত এই পরীক্ষার সুষ্ঠু আয়োজনের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Board) অন্দরে সাজোসাজো রব। খোলা হয়েছিল পর্ষদের কন্ট্রোলরুম, জারি একাধিক বিধিনিষেধ। প্রশাসনের দাবি ছুটির দিন হলেও রাস্তায় ছিল পর্যাপ্ত সরকারি এবং বেসরকারি বাস। কলকাতার-শহরতলির পরীক্ষাকেন্দ্রে সময়ে পৌঁছতে এদিন সাতসকাল থেকে শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনে ছিল পরীক্ষার্থীদের ভিড়।
ভিড় চোখে পড়েছে শহর লাগোয়া ফেরি ঘাটগুলোতেও। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশিকা দিয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু পরিবহণ না পেয়ে, ট্রেন মিস করে অনেকে ১১টার পরেও পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পর্ষদের বিশেষ অনুমতিক্রমে তাঁদের ঢুকতে অনুমতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্র। পৌনে বারোটা এমনকি পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট আগেও অনেক পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকতে দিয়েছে পর্ষদ। বায়োমেট্রিক পরিচয় সেরে তবেই আসনে বসার অনুমতি পেয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
জেলা এবং শহরের কিছু জায়গা থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিকানা ভুলের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রের বাইরে ব্যাগ রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, এই অভিযোগ অনেক স্কুল থেকে এসেছে। এমনকি বিবাহিত মহিলা পরীক্ষার্থীদের অলঙ্কার এবং শাঁখা-লোহা খুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হয়েছে বলেও অনেক জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছিল।
এদিকে, টেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে রাজ্যের ছয় জেলায় সাময়িকভাবে সাসপেন্ড ইন্টারনেট পরিষেবা। পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে সাময়িক অব্যবস্থার অভিযোগ উঠলেও সমস্যা সমাধানে সজাগ ও সতর্ক ছিলপর্ষদ, প্রশাসন বলে সূত্রের খবর।
প্রসূন গুপ্ত: সৌরভ গাঙ্গুলি এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে অতীত। তাঁর সভাপতিত্ব এক প্রকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং যুক্তি দেখানো হয়েছে, তিন বছরের বেশি কেউ বোর্ডের সভাপতি থাকেননি। অথচ অতীত ঘেঁটে দেখা যাবে জগমোহন ডালমিয়া টানা বহু বছর বিসিসিআই সভাপতি ছিলেন। এদিকে, সৌরভ সরে যাওয়ার পর তাঁর প্রিয়পাত্রদের সরানোর কি সূক্ষ্ম পরিকল্পনা চলছে? গুঞ্জন অবশ্য এমনটাই শোনা যাচ্ছে। সৌরভ সভাপতি থাকার আগে ভারতীয় দলের কোচ করতে চেয়েছিলেন বন্ধু অনিল কুম্বলেকে, হয়েও ছিলেন তিনি কিন্তু বিরাট কোহলিদের আস্থা অর্জন করতে না পারার জন্য তাঁকে দ্রুত সরে যেতে হয়।
কোচ হয় আসেন রবি শাস্ত্রী। সৌরভের অত্যন্ত অপছন্দের চরিত্র বরাবরই রবি। অন্যদিকে বিরাট কিন্তু একটা সময়ে সৌরভের প্রিয়পাত্র ছিলেন কিন্তু রবি-কোহলি জুটি অনেকটাই তাঁদের মতো করে দল চালাতে শুরু করেন। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ-সহ বহু আইসিসি ট্রফি হাতছাড়া হয় ভারতের। সৌরভ পুরো দায়িত্ব পাওয়ার পর ধীরে ধীরে অধিনায়কত্ব হারান বিরাট কোহলি এবং কোচিংয়ের দায়িত্ব থেকে সরানো হয় রবি শাস্ত্রীকে।
কোচিংয়ের দায়িত্ব এক প্রকার জোর করেই রাহুল দ্রাবিড়ের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়। সৌরভ চেয়েছিলেন বন্ধু রাহুল দায়িত্ব নিক। অন্যদিকে তিন ধরণের অর্থাৎ টেস্ট, ওয়ান ডে এবং টি২০-র অধিনায়কত্বের দায়িত্ব যাক রোহিত শর্মার কাছে। রোহিত, সৌরভ ও গাভাস্কারের প্রিয়পাত্র বলে গুঞ্জন। কথাতো বাস্তব সৌরভ এবং সানির সখ্যতা সর্বজনবিদিত। এবার টি-২০ বিশ্বকাপে ভারত বিদায় নেওয়ার পর টিম জয় শাহ সক্রিয় রোহিতকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর জন্য বলে সংবাদ।
অন্যদিকে ফের যদি সুযোগ আসে এই আশায় রবি শাস্ত্রী চরম সমালোচনা শুরু করেছেন রাহুল দ্রাবিড়ের। তিনি বলছেন কেন দ্রাবিড় নিউজিল্যান্ডে গেলেন না। তিনি আরও অনেক বিষয়ে দ্রাবিড়ের সমালোচনা করছেন। এদিকে সৌরভের আরেক প্রিয়পাত্র ভিভিএস লক্ষণ বর্তমানে সাময়িক কোচের দায়িত্ব নিয়ে নিউজিল্যান্ডে। কিছু একটা না দেখতে পারলে কে বলতে পারে তাঁর উপরও কোপ পড়তে পারে। রাজনীতির পাঁকচক্রে এখন ভারতীয় ক্রিকেট দল।
প্রসূন গুপ্ত: অস্ট্রেলিয়াতে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) শেষ হতে না হতেই ফের ক্রীড়াপ্রেমীদের নজরে ফুটবল বিশ্বকাপ (FIFA World Cup)। একটি সার্ভে রিপোর্ট জানাচ্ছে যে ফুটবল বিশ্বকাপ সারা বিশ্বের প্রায় সব দেশই উপভোগ করে থাকে। আরও আশ্চর্যের বিষয় ভারত (Indian Football) এই পর্যায়ে পৌঁছতে না পারলেও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দর্শক ভারতেরই। এরপর চিন, বাংলাদেশ ইত্যাদি। কাজেই না খেললেও ভারতীয় দর্শকদের অস্বীকার করতে পারে না ফিফা। দেখা যায় বিশ্বের যেকোনও দেশেই খেলা হোক না কেন ভারতে দর্শকের কথা মনে রেখেই ক্রীড়াসূচি (Fixture) করা হয়ে থাকে।
বিজ্ঞাপন বা বিপণনে এগিয়ে ভারত। ২০১৮ বিশ্বকাপ হয়েছিল রাশিয়াতে, ফাইনালের সময় ফেলা হয়েছিল স্থানীয় সময় দুপুর ২টোয়। ব্রাজিলও ওদের সময় দুপুরেই খেলা ফেলেছিল। লাতিন আমেরিকার সময় ধরে খেলা ফেললে খেলা পড়তো ভোররাতে। কাজেই ভারতীয় বিশেষ করে বাঙালি দর্শককে অগ্রাহ্য করে না ফুটবল বিশ্ব। এবারে খেলা এশিয়ার অন্যতম তেলসমৃদ্ধ দেশে কাতারে। কোটি কোটি ডলার খরচ করে বানানো হয়েছে স্টেডিয়াম।লাগোয়া অত্যাধুনিক হোটেল ইত্যাদি। যদিও ইউরোপ বা আমেরিকানদের জন্য প্রকাশ্যে সুরা বিক্রি নিষিদ্ধ করেও আমদানির কথা ভেবে অবশেষে বিয়ার অবধি ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এবার চলে আসি ফুটবল পাগলের শহর কলকাতা বা ঢাকায়। একদিকে লাগোয়া বাংলাদেশ, অন্যদিকে লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ। এই দু'স্থানের দর্শক কয়েক কোটি। এরা জানে ভারত বা বাংলাদেশ আগামী ৫০ নাকি ১০০ বছরেও বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে পারবে কিনা সন্দেহের। তবুও বিশ্বকাপ এলে এঁরাই হয়ে যাবে কেউ ব্রাজিল, কেউ আর্জেন্টিনা, কেউবা জার্মানি বা স্পেন অথবা ফ্রান্সের সমর্থক। এরাই পাড়াতে কিংবা বাড়ির ছাদে অথবা ক্লাবে ক্লাবে লাগবে কেউ হলুদ/সবুজ, কেউ নীল/সাদা পতাকা। গলা ফাটাবে তারা অন্য দেশের জন্য। আসলে অন্য দেশ নয় এই দেশগুলিই হয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান বা ঢাকা মহামেডান বা আবাহনী চক্র। এরাই মাতোয়ারা করে রাখবে আগামী দুটি মাস।
২০১৪-র টেট পরীক্ষা (TET 2014) দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) এবং শুভেন্দু অধিকারী! শুনতে বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্যি। ১১ নভেম্বর ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (Primary Board)। পাশ প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন "দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারীর" নাম। জেনারেলে ক্যাটাগরিতে নাম আছে শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তীর আর ওবিসি ক্যাটাগরিতে নাম দিলীপ ঘোষ।
সফল প্রার্থীতালিকার সঙ্গে রাজ্যের রাজনীতিবিদদের নাম এভাবে মিলে যাওয়া কি কাকতালীয়? এই নামে অন্য প্রার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁরাই কি ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার রাজনীতিতে। যদিও এবিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন একদল আইনজীবী।
তবে আইনজীবী তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারির মত, 'পুরোটাই অনুপ্রেরণা এবং জালিয়াতি। মানুষ যখন নকল বা জালিয়াতি করে তখন এভাবেই ভুল করে। কতটা জালিয়াতি আবার প্রমাণিত।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'আমার নামে আর কারও নাম থাকতেই পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, এঁরা সবাই নাকি ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের নামটা বাদ গেল কেন। উদোর পিন্ডির ভুঁদোর ঘাড়ে দেওয়া, দুর্নীতিকে স্পষ্ট করা। পথে বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ঠিক। এই তালিকার কোনও মূল্য নেই।'
শেষ ওভারে বেন স্টোকস মিডঅনের উপর দিয়ে বলটি তুলে দিতেই ১৯ ওভারেই বিশ্ব চ্যাম্পিও হলো ইংল্যান্ড দল। এবারের টি২০ বিশ্বকাপে ইংলিশম্যানেরাই ছিল চ্যাম্পিয়নের দাবিদার কিন্তু গ্রুপ লিগে আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর অনেকেই ভেবেছিলো হয়তো একটু বেশি ভাবা হয়েছিল তাদের নিয়ে। আসলে এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ব্যালেন্স দল ছিল ইংরেজরাই। বেশির ভাগ খেলোয়াড়রাই আইপিএলের নামি দামি খেলোয়াড়। সেই প্রমাণটিই আজ দিয়ে দিলো। একই সাথে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দিলো না তারা। ১৯৯২ এ এই মেলবোর্নেই হয়েছিল ইমরানের পাকিস্তানের সঙ্গে ইংল্যান্ডের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ফাইনাল। সেবারেও পাক দল নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল এবং হেরেছিল। ভাবা গিয়েছিলো হয়তো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে পারে কিন্তু হলো না শেষ হাসিটি ছিল বেন স্টোকের ব্যাটের ভরসায়।
ঠিক সময়ে রবিবাসরীয় মেলবোর্ন ফাইনাল শুরু হয়। ঝড়বৃষ্টির প্রবল সম্ভবনা যেমন ছিল তেমন ছিল খেলা না হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু ব্রিটিশদের কাছে আনলাকি ১৩ শেষ পর্যন্ত লাকি হয়ে উঠলো। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৩৭ এই গুটিয়ে যায় আজম বাবরদের পাকিস্তান। সর্বোচ্চ রান আসে শান মাসুদের ব্যাট থেকে মাত্র ৩৮। এরপরই বাবরের ৩২। মেলবোর্ন মাঠ কিন্তু আজ বোলারদের যথেষ্ট সাহায্য করেছে। দু দলের বোলাররাই দুর্দান্ত বল করেছেন। বিশ্বের সেরা টি২০ জুটি রিজওয়ান, বাবর আজ প্রথম থেকেই ঢিমে তালে খেলছিল। রান ওঠেনি কোনও দলেরই আশানুরূপ।
এরমধ্যে স্যাম কারেন সেরা বল করেন মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট দখল করেন তিনি। এরপরই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস বোলিংয়ের গোড়াপত্তন করতে এসে নেন একটি উইকেট। পরে ব্যাট করতে এসে ভারতের বিরুদ্ধে রেকর্ড করা বাটলার, হেলেস জুটি চলে যান বেশি রান করার আগেই। অধিনায়ক বাটলারের সংগ্রহ ২৬ এবং হেলেসের মাত্র ৭। একটা সময়ে দেখা যায় ৬০ বলে ৩ উইকেট এবং দরকার ৬১ রান। এই সময়ে স্টোকস খেলাটি ধরেন কিন্তু বড় শট নিতে দেখা যায় নি। নেবার মতো অবস্থায় মাঠ ছিল না। এরই মধ্যে আরও ৬ ওভারের মধ্যে আরও দুটি উইকেট পরে যায়। খেলা ধরেন অবশ্য মঈন খান। কোঠিন অবস্থায় ১৫ বলে ১৯ রান করে আউট হয়ে যান। এ সময়ে ১২ বলে ৭ রান দরকার ছিল যা আজকের সেরা স্টোকস তুলে নেন। পাক দলের দুর্ভাগ্য প্রথমে দুর্দান্ত বল করেও শাহীন আফ্রিদি তৃতীয় ওভার বল করতে এসে পায়ে পেশির টানে ম্যাথ থেকে বেরিয়ে যান সঙ্গে নিয়ে যান পাকিস্তানের ভাগ্য।
প্রসূন গুপ্ত: রবিবাসরীয় ফাইনাল, নিশ্চিত টানটান উত্তেজনা থাকবে খেলাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু তার আগেই দুঃসংবাদ ক্রীড়াপ্রেমী, বিশেষ করে পাক এবং ইংলিশ দলের কাছে। কারণ উলুউইড, উলুউইড আবার কী? প্রশ্ন জাগতেই পারে মানুষের মনে। এটা একটি ঝড়, যেমন আমাদের দেশে প্রায়ই বঙ্গোপসাগরে ঝড় ও নিম্নচাপ তৈরী হয়ে থাকে তেমন ওই দেশে, অস্ট্রেলিয়ায় উলুউইড। আবহাওয়ার খবর যা বলছে তাতে, মেলবোর্নে দুপুর থেকেই ঝড় ও বৃষ্টি আসার সম্ভবনা প্রবল। সারা দুপুর, বিকেল এবং রাত অবধি এই ঝড় থাকার সম্ভবনা।
এবারে ঝড় আসলে কী হতে পারে? অস্ট্রেলিয়া এই বিষয়ে আগেই কথা বলে নিয়েছে আইসিসির সঙ্গে। প্রথমে চেষ্টা হবে রবিবারেই খেলা করতে, যদি কয়েক ওভার হয়ে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায় তবে পরদিন অর্থাৎ সোমবার ঠিক যেখানে খেলা বন্ধ হবে ঠিক সেখান থেকেই খেলা শুরু হবে। যেমনটি হয়েছিল ইংল্যান্ডে ভারত-নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। এবারে যদি মোটেই রবিবার খেলা না হয়, তবে সোমবার প্রথম থেকে খেলা শুরু হবে। যদি বিক্ষিপ্ত ভাবে সোমবারও খেলা সময়ে শুরু না হয় তবে ১০ ওভারে খেলা নামিয়ে আনতে হবে। যদি তাতেও বাধা হয় তবে যুগ্ম বিজয়ী ঘোষিত হবে পাক/ইংল্যান্ড।
এরই মধ্যে মেলবোর্নে পৌঁছেছে পাক ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান রামিজ রাজা। তিনি ব্যাঙ্গ করে বলেছেন যে, আইপিএল না খেলেও পাকিস্তান ফাইনালে যেতে পারে। ইঙ্গিতনিশ্চিত ভারতের দিকে। রাজা বলেছেন, ১৯৯২ বিশ্বকাপ দলের অন্যতম সদস্য তিনিও ছিলেন। কিন্তু ফাইনালের আগে অধিনায়ক ইমরান জানিয়েছিলেন যে জিততে এসেছি, জিতে ফিরবো। এভাবে চাঙ্গা করেছিলেন দলকে। রাজা জানিয়েছেন, বাবরের টিমের মধ্যে কোনও টেনশন নেই। ওরা টগবগ করে ফুটছে।
অবশ্য তিনি এও বলেছেন, বাটলারের দলটির মধ্যেও সাম্যতা আছে। সেরা খেলা ওরাও খেলার চেষ্টা করবে।