মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে ৩ বারের প্রচেষ্টায় সন্দেশখালিতে প্রবেশ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর সন্দেশখালিতে পা রাখার আগেই যেন তৈরি ছিলেন বাসিন্দারা। কারও হাতে মালা, কারও হাতে ফুল, কারও হাতে রাখি। নদী পেরিয়ে সন্দেশখালির গ্রামে পা রাখতেই বাঁধ ভাঙে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস। কাঁসর-ঘণ্টা-শাঁখ বাজিয়ে, ফুল ছড়িয়ে, রাখি পরিয়ে সন্দেশখালির বাসিন্দারা বরণ করে নেন শুভেন্দু অধিকারীকে।
নদীময় এলাকা, কনভয় সেখানে দূরস্ত, রাস্তা এত সংকীর্ণ কোথাও টোটো পর্যন্ত ঢোকে না। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সেখানে যেন ঘরের ছেলে। পায়ে হেঁটেই ঘোরেন পুকুরপাড় পাড়া, পাত্রপাড়া, মাঝেরপাড়া, কলোনী পাড়া। সঙ্গে কাতারে কাতারে সন্দেশখালির বাসিন্দা। মাথা নত করবেন না তো? মহিলাদের অভয়বাণী দিতে দিতেই কারও ফোনে আবার টুকে দিলেন ফোন নম্বর।
অলিগলিতে, মোড়ে মোড়ে সাধারণ মানুষের জমায়েত। কেউ কাছে গিয়ে বলেছেন যন্ত্রণার কথা, আবার কারও কাছে গিয়ে শুভেন্দু শুনেছেন অভিযোগ। বুকে জড়িয়ে সাহজ জুগিয়েছেন, ভয় নেই।
এতদিন যাঁরা মুখ বুজে সয়ে গেছেন বহু অত্যাচার তাঁরাই আজ আন্দোলনের কাণ্ডারি। ঘরের মহিলারাই আজ পথে নেমে সরব। রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানানোর পর বহিরাগত তকমা জুটেছিল এই সন্দেশখালির মহিলাদের। তাঁদের সবার উদ্দেশে প্রণাম বিরোধী দলনেতার।
একের পর এক পুলিসি বাধা, বার বার আদালতের দ্বারস্থ। অবশেষে সন্দেশখালিতে যেন শুভেন্দু অধিকারী গেলেন, দেখলেন ও জয় করলেন ।
বাংলার একাধিক জেলায় হঠাৎই নিষ্ক্রিয় আধার কার্ড! এমন অভিযোগ উঠতেই মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-সহ কেন্দ্রীয় সরকার ডার্টি গেমস খেলছে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও ইতিমধ্যে আধার সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপরেও আধারকে ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করছেন মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। সংখ্যালঘু, তফশিলি তাস খেলে কি ভোটের আগে হাওয়া ঘোরানোর চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির। মতুয়া সম্প্রদায়কেও পাশে টানার চেষ্টায় মমতা। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, সন্দেশখালি-কাণ্ডে ভোটের আগে ব্যাকফুটে শাসক দল। তাই কি নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করছেন মুখ্যমন্ত্রী, উঠছে প্রশ্ন।
আধার-কাণ্ডে বিহিত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে, নবান্ন থেকে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আধার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই দাবি খোদ সামাজিক মাধ্যমে করছেন বিরোধী দলনেতা। তারপরেও কেন এত চড়া সুর মুখ্যমন্ত্রীর, বিরোধী মহলে উঠছে প্রশ্ন। সন্দেশখালি-কাণ্ডে কি পায়ের তলায় মাটি সরেছে শাসক দলের? তাই কি আধার নিয়ে সোচ্চার হয়ে পাশে থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, এই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই ইস্যুতে অভিযোগ আবার গুরুতর। তাঁর দাবি, ভোট পাগল মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের জন্য উন্মাদ হয়ে গিয়েছেন। নথি তুলে তাঁর দাবি, কোনও আধার কার্ড বাতিল হয়নি। টাকা দিয়ে এই কাজ রাঁচি থেকে করিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গুরুতর অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। এই কাজে রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমারের ভূমিকাও দেখছেন শুভেন্দু। মমতার প্রতিশ্রুতি আধারের বিকল্প কার্ড দেবে তাঁর সরকার। এই ঘোষণাকেও তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা।
এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় সন্দেশখালি ইস্যুতে। জাতীয় এসসি কমিশনের পর জাতীয় মহিলা কমিশনও বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে মুখ খুলেছেন। যদিও সন্দেশখালিকে গুরুত্বহীন বানাতে চক্রান্ত, বিরোধীদের উসকানি দাবি করে আসরে রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শাসক দলের নেতারা। তাই কি ঘুরিয়ে আধার কার্ডকে ইস্যু বানিয়ে ভোটার থুরি মানুষের মন জয়ের চেষ্টা, উঠছে প্রশ্ন।
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে যখন তোলপাড় গোটা রাজ্য। তারই মাঝে এবারে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে তিন জন বিজেপি কর্মী খুনের অভিযোগ উঠল। ফলে অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের দাবিতে এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জানা গিয়েছে, সন্দেশখালিতে ২০১৯ সালে খুন হন তিন জন বিজেপি কর্মী। কলকাতা হাইকোর্টে শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সমস্ত শুনানি শোনার পর বিস্মিত বিচারপতির মুখে শোনা যায়, 'এ ভয়ঙ্কর অভিযোগ।'
বুধবার বিচারপতির নির্দেশ, সন্দেশখালি তিনটি খুনের মামলায় নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত। আপাতত পুলিস তদন্ত করতে পারলেও এই মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিচার স্থগিত থাকবে। ২১ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি। সেদিন সব মামলার কেস ডাইরি পেশ করতে হবে। সব পক্ষকে হলফনামা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা মণ্ডল অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে শ দুয়েক লোক বেশ কিছু বাড়িতে হামলা চালায়। প্রদীপ মণ্ডলকে গুলি করে, চপার নিয়ে আক্রমণ করে। পরে সুকান্ত মণ্ডলকে এক দোকান ঘর থেকে বের করে গুলি করে। অন্য একজনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নদীর চর থেকে তার দেহাংশ পাওয়া যায়। খুন করা হয় একইভাবে। ন্যাজাট থানা দু'মাস তদন্ত করেও কিছু না করায় পরিবার মামলা করে হাইকোর্টে। দুটি ঘটনাতেই মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের নাম বাদ দেওয়া হয় চার্জশিট থেকে। FIR এ নাম না থাকা অন্য ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিস।
সবকিছু শোনার পর বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মন্তব্য করেন, 'খুব গুরুতর অভিযোগ। এই অভিযোগ নিয়ে এখনই নিম্ন আদালতের বিচার স্থগিত করে দিচ্ছি। তদন্ত ঠিক না হলে প্রয়োজনে নতুন করে তদন্ত হবে। এই মামলা এখনও পর্যন্ত যা শুনলাম অন্য যে কোনও এজেন্সির হাতে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ভয়ঙ্কর অভিযোগ।' এখন দেখার সমস্ত দিক বিচার করে অন্য কোনও এজেন্সির হাতে এই তিনটি খুনের মামলার তদন্ত ভার দেন কিনা বিচারপতি।
আর মাত্র ৫টা দিন। তারপরই ঐতিহাসিক মুহূর্ত! ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই নিয়েই সাজ সাজ রব অযোধ্যায়। শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। আর এরই মাঝে ওই দিনই কলকাতায় 'সংহতি মিছিলে'র ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, হাজরা থেকে এই মিছিল হবে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত। এরপরই বুধবার এই মিছিল বন্ধের দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামীকাল এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিনই বাংলায় 'সংহতি মিছিলে'র ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২ জানুয়ারি এই মিছিলের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই মিছিল পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। শুধু তাই নয়, রামপুজোর দিন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনেরও আর্জি জানালেন শুভেন্দু। তাঁকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে।
সন্দেশখালি আরেকটি শীতলকুচি হতে পারত। সেই ফাঁদই পেতেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তবে তাঁর পাতা ফাঁদে পা দেয়নি সিআরপিএফ জওয়ানরা। তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে শীতলকুচির কথা স্মরণ করিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট শুভেন্দু অধিকারীর।
বরাবরই রাজ্যে ঘটা যেকোনও বিশৃঙ্খলতা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, প্রয়োজন পড়লে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কড়া পোস্ট শুভেন্দুর। পোস্টে শুভেন্দু ধন্যবাদ দিলেন সিআরপিএফ জওয়ানদের। বিঁধলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। তাঁর পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে শুভেন্দু লেখেন, 'মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায়।' তাঁর সংযোজন, 'সাংবিধানিক নিয়ম অক্ষুন্ন রাখা, সাংবিধানিক পরিকাঠামোকে সম্মান এবং বিচার বিভাগীয় নির্দেশাবলী মেনে চলার বদলে তিনি দাঙ্গাকে আরও সমর্থন করছেন। তাঁর পার্টির কর্মীদের গুন্ডারাজের দিকেই ঠেলে দিচ্ছেন। তৃণমূল কর্মীরা রাজনৈতিক কম, মৌলবাদে বেশি বিশ্বাসী' বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন শুভেন্দু।
You @MamataOfficial, are the main reason for today's ghastly attack on the ED Officials and CRPF Jawans.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) January 5, 2024
Instead of upholding the Constitutional norms, respecting the Federal Structure and abiding by the Judicial directions, you have time and again tried to instigate your unruly… pic.twitter.com/3QuxNbGxtc
আর তারপরেই তিনি সিআরপিএফ জওয়ানদের ধন্যবাদ জানান। লেখেন, 'ওই পরিস্থিতিতেও গুলি না চালানোর জন্য সিআরপিএফ জওয়ানদের আমি ধন্যবাদ জানাই।' তাঁর সংযোজন, মমতা বন্দোপাধ্যায় এটাই চাইছিলেন, যদি ওই ভিড়ের মধ্যে কোনও একজনও মারা যেতেন, তাহলেই মুখ্যমন্ত্রী গোটা ঘটনার মনোযোগ দুর্নীতিবাজ ধরার থেকে সেই খুনের দিকে নিয়ে যেতে পারতেন। তবে তাঁর মতে, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পাতা সেই ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানালেন সিআরপিএফ জওয়ানদের। সন্দেশখালিকে আরেকটা শীতলকুচিতে পরিণত না করার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানালেন সিআরপিএফ জওয়ানদের। সঙ্গে একটি সভা থেকেও শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবারে সন্দেশখালির গোটা হামলায় দায়ী মমতা- বলেন একথাই।
সন্দেশখালি নিয়ে এমনিতেই সরগরম হয়ে আছে রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যে পুরো ঘটনা মমতা বন্দোপাধ্যায়েরই পরিকল্পনা বলে এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর এ নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা কোথায় গিয়ে পৌঁছয়, সেটাই দেখার।
এসএসকেএম-এ গিয়ে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নিয়ে আলোচনা, বালুর সঙ্গে ইন্টারকমেও কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। শুক্রবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এসএসকেএম যাত্রা নিয়েই বিরোধী দলনেতার দাবি, ২.৪৫ মিনিট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসকেএম সুপারের চেম্বারে ছিলেন। সেই চেম্বারে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার সিপি ও স্বাস্থ্যসচিব।
বিরোধী দলনেতার দাবি, সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত এসএসকেএম-এ বৈঠক চলে। তাঁর আরও অভিযোগ, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে। এখানেই ভর্তি রয়েছেন রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ইন্টারকমে নাকি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গেও কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বিরোধী দলনেতার। এখানেই শেষ নয়। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, আরও একটি বৈঠক হয়েছে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি রাজীব কুমার উপস্থিত ছিলেন। এক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, কীভাবে বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে লুঠ করা যায় দেড় ঘণ্টা ধরে আলোচনা হয়েছে তিন জনের মধ্যে।
এর আগে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর পরিবর্তনের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার জন্যও আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। তার পরেও এখনও সম্পন্ন হয়নি পরীক্ষা। অসুস্থ হয়ে এসএসকেএমকে চিকিৎসাধীন ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বিরোধীদের দাবি, গ্রেফতার হওয়া নেতা মন্ত্রীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে এই হাসপাতাল। এই আবহেই বিরোধী দলনেতার এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে পারদ চড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধী দলনেতার এই অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ইস্যুতে উত্তাল হবে বঙ্গের রাজনীতি, ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
আজ অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর বুধবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকের মাঝেই নবান্নে হঠাৎ হাজির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বিধায়কও। তবে কেন আচমকা নবান্নে গেলেন শুভেন্দু, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, মূলত ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার অর্থ, কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দের ক্ষতিয়ান নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে গিয়েছেন চন্দনা বাউড়ি ও শঙ্কর ঘোষ।
বিরোধী শিবিরের সভা-অনুষ্ঠানে শাসকদলের বাধা এই রাজ্যে নতুন কিছু নয়। এবারও হয়নি তার অন্যথা। হলদিয়ায় বিপ্লবীর সতীশ সামন্তের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভাতেও বাধা শাসকদলের কর্মী সদস্যের।সভায় থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পুলিস সেই সভার অনুমতি দিয়েছে। আবার ওই সভায় ঢোকার মূল ফটকের বাইরে তৃণমূলকে ধরনা করারও অনুমতি দিয়েছিল পুলিস। এমনকি বিজেপির ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়েছে বলেও তাদের বিরুদ্ধে উঠেছিল অভিযোগ।সভাকে কেন্দ্র করে তৈরি জটিলতা সম্পর্কিত সেই মামলায় শুক্রবার বিরোধী দলনেতাকে সভা করার অনুমতি দিল উচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশ মাফিক সভাস্থলে মোতায়েন থাকবে পুলিস। বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকবে সিআইএসএফ। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত উপস্থিত না থাকায় বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসেই হল এই মামলার শুনানি।
মূলত হলদিয়া হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে আয়োজিত এই সভার আগেই অনুমতি দিয়েছিল পুলিস। হলদিয়া বন্দর এলাকায় রয়েছে এই সভাস্থল। শহীদ স্মরণে আয়োজিত সভা প্রতিবছরই হয়। এবছরও অনুষ্ঠিত হবে। মামলার শুনানি চলাকালীন এমনটাই জানান, আবেদনকারী আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার। অন্যদিকে রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, সভায় যেমন পুলিসি অনুমতি আছে ঠিক তেমনই অনুমতি আছে তৃণমূলের ধরনা কর্মসূচিতেও। তবে পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে নিরাপত্তা দেবে পুলিস। বিরোধী দলনেতার নিরাপত্তায় থাকবে সিআইএসএফ।
ধরণা, সভা উভয়ই মানুষেরর গণতান্ত্রিক অধিকার। সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত।তবে পুলিসের ভূমিকায় খুশি বিচারপতি মান্থা। এতদিনে পুলিস বিরোধীদেরও সাহায্য করছে বলেও মন্তব্য বিচারপতির। আদালতের নির্দেশে হলদিয়া বন্দর এলাকায় বিজেপির এই সভায় শান্তি বজায় থাকে কিনা এখন সেটাই দেখার।
ফের রাজ্য পুলিসের বাধার মুখে রাজ্যের বিরোধী দলেনতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এবারে উত্তরবঙ্গে উত্তরকন্যা অভিযানের সময় শুভেন্দু সহ একাধিক বিজেপি বিধায়কদের বাধা দেয় পুলিস। কোচবিহারের বিধায়ক মিহির গোস্বামী এবং বিজেপির অন্যান্য সদস্যকে নিয়ে উত্তরকন্যা যাওয়ার পথে বাধা পেয়ে পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে প্রশ্ন করছেন যে, 'কেন যেতে দেওয়া হচ্ছে না উত্তরকন্যায়?' এছাড়াও পুলিসি বাধার মুখে পড়তেই হুঙ্কার দেন শুভেন্দু।
'উত্তরের উত্তরণের খোঁজে' উত্তরবঙ্গ সফরে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার উত্তরকন্যা পরিদর্শনে আসেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, সেখানে কতগুলো দফতর রয়েছে এবং আদৌ মানুষ সেখান থেকে পরিষেবা পান কিনা তা খতিয়ে দেখতেই এই উত্তরকন্যা পরিদর্শন। এদিকে শুভেন্দুর উত্তরকন্যা পরিদর্শনের বিষয় সামনে আসতেই পুলিস মহলেও তৎপরতা নজরে আসে। উত্তরকন্যার প্রধান গেটে পৌঁছনোর আগেই মাঝরাস্তায় বসে ব্যারিকেড। এর পর সেখানে পৌঁছতেই শুভেন্দু ও বিজেপি বিধায়কদের উত্তরকন্যায় প্রবেশ করার আগেই বাধা দেয় রাজ্য পুলিস। এরপরই পুলিসের সঙ্গে শুরু হয় বচসা।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি শুভেন্দু। তিনি বলেন, "এখানকার মানুষ তাঁর শঠতা ধরে ফেলায় রুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। তাই উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করেছেন তিনি। কী ভাষা দেখুন। বলছে, বিধায়কদের ঢুকতে দেবে না। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে বিয়েবাড়িতে এসেছিলেন। ছবি তুলতে এসেছিলেন। সচিবালয় কেমন চলছে, দেখতে এসেছিলাম। দেখলাম, মহিলা পুলিসকে নিয়ে এসে দাঁড় করিয়েছে। আমরা তাঁদের মায়ের চোখে দেখি। তাঁদের সঙ্গে যাতে ধাক্কাধাক্কি হয়, সে জন্য তাঁদের লাইন দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।"
অন্যদিকে তাঁদের কেন যেতে দেওয়া হচ্ছে না, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুলিসের তরফে জানানো হয়, ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। সেই কারণে উত্তরকন্যায় এই মুহূর্তে প্রবেশ নিষেধ। শুভেন্দু কটাক্ষ করে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও বলেন, "সুদে আসলে যদি এই বদলা না নিতে পারি আমার নাম শুভেন্দু নয়। আমি মমতাকে হারানো লোক। ওঁকে প্রাক্তন করে ছাড়ব। পৃথিবী গোল। সরকারে এলে দেখাব।"
নবান্নের ১৪ তলায় বৈঠকে ডাক পেলেন বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। নবান্ন সূত্রে খবর, আগামী ১৪ ডিসেম্বর রাজ্যের মানব অধিকার কমিশনের প্রশাসনিক সদস্য পদে নিয়োগ নিয়ে একটি বৈঠক রয়েছে। যেখানে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা। আর সেখানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। ইতিমধ্যে এই পদের জন্য তিন জন প্রাক্তন আমলা ও প্রাক্তন বিচারক নিয়োগের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দোপাধ্যয়। আরও দু'জন যার মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক অধীর শর্মা।
সূত্র মারফত আরও খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম পছন্দ বাসুদেব বন্দোপাধ্যায়। কারণ তাঁর মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়াও তিনি রাজ্যের তথ্য কমিশনের দায়িত্বও সামলেছেন। উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজ্যের মানব অধিকার কমিশনের প্রশাসনিক সদস্য পদ থেকে অবসর নিয়েছেন নপরাজিত মুখোপাধ্যায়। তারপর থেকেই সেই পদ শূন্য। আর তার জন্যই নবান্নে বৈঠকে ডাক পেলেন বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
প্রসঙ্গত, আগামী 8 ডিসেম্বর এই বৈঠক বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যয়ের ঘরে হাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি কর্মসূচি থাকার জন্যই বৈঠকের স্থান ও দিন পরিবর্তন হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। বৈঠকের বিষয়ে নবান্নের তরফ থেকে বিধানসভা অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায় ও বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে এই বৈঠকে বিরোধী দলের নেতা যোগ দেবেন কিনা। সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিরোধী দলের নেতা যাবেন কি যাবেন না সেই কথা তিনি ১৪ ডিসেম্বরের আগে জানিয়ে দেবেন বলেই জানিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, নবান্নে ডাকা এই বৈঠকে বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
শাসক দল কি কর্মসূচির ১৫ দিন আগে পুলিসকে জানায়? সবসময় কেন বিরোধী দলকে অনুমতির জন্য আদালতমুখী হতে হচ্ছে? খেজুরিতে সভা করতে চেয়ে শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় ঠিক এমন ভাবেই চড়া সুরে বিচারপতির ধমকের মুখে পড়ল রাজ্য পুলিস। এখানেই শেষ নয়, পুলিসের কাছে বিচারপতি জানতে চাইলেন, কেন খেজুরিতে বিরোধীদের সভার অনুমতি দিচ্ছে না পুলিস। শুনানি শেষে আদালতের রায়ে ফের মুখ পুড়ল পুলিসের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত স্পষ্ট নির্দেশ দেন, কিছু শর্তসাপেক্ষে আগামী ২ ডিসেম্বর শুভেন্দু খেজুরিতে সভা করতে পারবেন।
জানা গিয়েছে, খেজুরিতে শুভেন্দুর সভার দিনক্ষণ সব ঠিক হয়ে থাকলেও জেলা পুলিসের তরফে মিলছিল না সভার অনুমতি। অভিযোগ, সভার বেশ কিছুদিন আগেই অনুমতি চাওয়া হলেও পুলিস কোনও প্রত্যুত্তর করছে না। সে জন্যই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই মামলার শুনানিতে শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত রাজ্যের কাছে জানতে চান, বিরোধীদের থেকে মঞ্চের আয়তন জানতে চাইছেন কেন? শেষবার যখন শাসক দল সভা করেছিল তখন মঞ্চের আয়তন জানতে চেয়েছিলেন? এর সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য। এরপরই জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন, শব্দবিধি মেনে শান্তিপূর্ণ সভা করতে পারবে বিজেপি। এছাড়া কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা যাবে না।
ফলে ধর্মতলার পর খেজুরি। বিজেপির সভা করার আর কোনও বাধা রইল না। একদিকে ধর্মতলার সভায় পুলিসের অনুমতি না পাওয়া, অন্যদিকে খেজুরিতে শুভেন্দুর সভায় অনুমতি নিয়ে পুলিসের নিষ্ক্রিয়তা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রতার আভাস দিলেও, হাইকোর্টের অনুমতিতে বিজেপির সভা হচ্ছেই। এছাড়া বারবার হাইকোর্টে ধমকের মুখে পড়ে রাজ্য। ফলে বারবার হাইকোর্টে মুখ পুড়ছে রাজ্যের। এখন প্রশ্ন উঠছে কেন বারবার এই ঘটনা গুলো থেকে শিক্ষা নিচ্ছে না প্রশাসন! কেনই বা আদালতে বারবার মুখ পোড়াতে চাইছে রাজ্য।
ধর্মতলায় বিজেপির শাহী সভার পর এবার খেজুরিতে সভার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, খেজুরিতে শুভেন্দুর সভার দিনক্ষণ সব ঠিক হয়ে থাকলেও মিলছে না পুলিশি অনুমতি। ডিসেম্বরের ২ তারিখ অর্থাৎ শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে শুভেন্দু অধিকারী সভা করবেন। ২ ডিসেম্বর সভার জন্য নির্দিষ্ট জায়গাও বাছাই হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ জেলা পুলিশের কাছে সভার অনুমতির জন্য অনেক আগেই আবেদন করা হয়। কিন্তু পুলিশ কোনও প্রত্যুত্তর করছে না বলেই অভিযোগ। সে জন্যই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার এই মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
বুধবার ধর্মতলায় বিজেপির মেগা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই সভা ঘিরে রীতিমতো তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ওই সভার অনুমতি না দেওয়ায় পুলিশকে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ধমকের মুখে পড়তে হয়েছিল। কেবল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ নয়, ডিভিশন বেঞ্চও বিজেপির ধর্মতলার সভার অনুমতি দেয়।
কেবল ধর্মতলা নয়, হাওড়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনিপুর, ঝাড়গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় আদালতের অনুমতি নিয়েই সভা করতে হচ্ছে শুভেন্দুকে, আখেরে বিজেপিকে। খেজুরি বরাবর রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্জয় ঘাঁটি। এখন সেখানে গেরুয়া প্রভাব রয়েছে। এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। কাজেই সেখানে শুভেন্দু প্রভাব থাকবে। অথচ ফের শুভেন্দুর সভাকে ঘিরে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চাপানউতোড়। একদিকে যখন ধর্মতলায় বিজেপির সভার অনুমতি নিয়ে হাইকোর্টে মুখ পুড়েছে রাজ্যের ও পুলিসের। অন্যদিকে খেজুরিতে শুভেন্দুর সভাকে ঘিরে পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। এখন দেখার এই আবহে মুখ পোড়ানো আটকাতে পুলিস শুভানুর সভাকে ঘিরে কোন যুক্তি খাড়া করে। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই মামলা শুনবেন বলে খবর।
শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়েরের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ফলে পঞ্চমীর দিনই বিরাট স্বস্তির খবর পেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিসকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের অনুমতি চায় যাদবপুর থানা। কিন্তু এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এফআইআর দায়েরের আবেদন খারিজ করার নির্দেশ দিলেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বক্তব্য, 'ওইদিন তিনি যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন তা নির্দিষ্ট ভাবে কাউকে নয়, খুব সাধারণভাবে ব্যবহার করেছেন।' তবে এদিন বিরোধী দলনেতার উদ্দেশেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, 'এমন পদমর্যাদার মানুষদের পাবলিক প্লেসে এমন ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির পদের প্রতি মানুষের খারাপ ধারণা হতে পারে।' কিন্তু তারপরেও আদালত মনে করে শুভেন্দুর সেদিনের কুমন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কোনও ধারা প্রয়োগ করা যায় না। এর পাশাপাশি, শুভেন্দু অধিকারীকে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত, এ অবস্থায় স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে পুলিসের বাধার মুখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ অবস্থায় বিজেপি বিধায়করা পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন। ধস্তাধস্তি বেধে যায় বিরোধী দলনেতার সঙ্গেও।
সূত্রের খবর, এর আগে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিলেন। তবে মুখ্যসচিব অনুপস্থিত থাকায় দেখা হয়নি। এরপর আজ হঠাৎই স্বাস্থ্য ভবনে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে হাজির হন বিরোধী দলনেতা। ভিতরে ঢুকতে চান তিনি। অভিযোগ, স্বাস্থ্যভবনের নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিসকর্মীরা তাঁকে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেননি। তখনই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। বেধে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড। পুলিসকর্মীদের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়ান শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতা বলেন, “স্বাস্থ্য ভবন কি তৃণমূলের পৈত্রিক সম্পত্তি? এখানে ২০-২২ জন বিধায়ক আর বিরোধী দলনেতাকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূল আসার আগে এ বাড়ি হয়েছে। আর যাঁরা ভিতরে রয়েছে তাঁরা ট্যাক্সের টাকায় বেতন পান।” শুভেন্দু অভিযোগ করে বলেন, “ছোট শিশু মারা যাচ্ছে। সদ্যজাত মারা যাচ্ছে। প্রসূতি মা মারা যাচ্ছে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। হাসপাতালে বেড নেই। প্রাইভেট নার্সিংহোমে নো-এন্ট্রি বোর্ড লাগানো হয়েছে।
ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন বিজেপির যুব মোর্চার সঙ্গে অবস্থানে যোগ দেবেন তিনি। ১৮ অগাস্ট মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বগুলা যাওয়ার কথা শুভেন্দু অধিকারীর, তাঁর সঙ্গে যেতে পারেন আরও বিজেপির বিধায়করা। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে ইউজিসিকে চিঠি লিখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে হস্টেলের আরও ছাত্রদের। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রেজিস্টারকেও। যাদবপুরের হস্টেলে কারা থাকতে পারেন, আবাসিক হওয়ার পদ্ধতি কী, অতিথি হয়ে থাকা যায় কীভাবে তা জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা। কারা হস্টেলে ঢুকতে পারেন, প্রাক্তনীরা কেন হস্টেলে থাকতেন, ক্যাম্পাস ও হস্টেলে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে কিনা- এমনই সব প্রশ্ন করা হয়েছে স্নেহমঞ্জুকে৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়৷ ওই কমিটি থাকা সত্ত্বেও পড়ুয়ারা কেন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন তা জানতে চান তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিনতলা থেকে পড়ে যে পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে, তিনি অতিথি হিসাবেই হস্টেলে থাকছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে।