ফের শেখ শাহজাহানের স্ত্রীকে তলব করল ইডি। গতকাল অর্থাৎ সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় চলেছে তলব। আগামী বুধবার আবার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের স্ত্রীকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সূত্রের খবর, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে চলছে এই জিজ্ঞাসাবাদ।
গতকাল, সোমবার সকাল ১০ নাগাদ শেখ শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি তাঁর আইনজীবিকে নিয়ে ইডি দফতরে হাজির হন। প্রায় ১১ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ন'টা নাগাদ ইডির অফিস থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তারপর একদিন যেতে না যেতেই আবারও তলব করা হয়েছে শাহজাহান স্ত্রী তসলিমা বিবিকে। ইডি সূত্রে খবর, শাহজাহানের ব্যবসার গোপন তথ্য জানতেই স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডি অফিসাররা।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি করতে গিয়ে সন্দেশখালিতে আক্রান্ত হয় ইডি। সেই হামলা ঘটনার পর থেকে ৫৫ দিন বেপাত্তা ছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজাহান। তারপর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হয় তাঁকে গেফতার করা হয়। আদালতে হাজিরার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল শাহজাহানকে। তখন আদালতকে শাহজাহান জানিয়েছিলেন, স্ত্রীর অসুস্থতার জন্যই তিনি হাজিরা দিতে পারছেন না। সোমবার ইডির অফিসেই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে ফের এনআইএ-র পক্ষ থেকে তলব করা হল তিন তৃণমূল নেতাকে। আজ, সোমবার কলকাতায় এনআইএ-এর সদর দফতরে এসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ওই তিন তৃণমূল নেতাকে। যে তিনজনকে তলব করা হয়েছে, তাঁরা হলেন সুবীর মাইতি, নবকুমার পান্ডা ও মানব কুমার পয়রাকে।
গত শনিবার ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে দুই মূল ষড়যন্ত্রকারীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ধৃত ওই দু'জন হল বলাই চরণ মাইতি এবং মনোব্রত জানা। দুইজনেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। এনআইএ-এর আধিকারিকরা ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। জনরোষে আক্রান্ত হতে হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির সদস্য়দের। NIA-এর গাড়ি লক্ষ্য় করে ছোড়া হয় ইট পাথর। আর সেই ইটের আঘাতে আহত হন দুই এনআইএ আধিকারিক। এমনকি তাঁদের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে গ্রামবাসীরা। টায়ার জ্বালিয়ে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ অবরোধ। যদিও এখন পুরোপুরি শান্ত রয়েছে ভূপতিনগর।
গত ২০২২ এর ২রা ডিসেম্বর ভগবানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভূপতিনগর থানা এলাকার নাড়ুয়াবিলা গ্রামে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা ফেলা হয়। আর সেই বোমা বিস্ফোরণকাণ্ডে মৃত্য়ু তিনজনের। বোমার ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। নবকুমার পান্ডা, সুবীর মাইতি, মিলন বার, অরুন মাইতি ওরফে উত্তম মাইতি, বলাইচরণ মাইতি, শিবপ্রসাদ গায়েন, মানব কুমার পড়ুয়া এবং মনোব্রত জানা। এই ৮ তৃণমূল নেতা কর্মীকে বেশ কয়েকদিন আগেই এনআইএ-র পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছিল। এর মধ্য়ে আজ ফের তিনজনকে তলব করা হয় এনআইএয়ের তরফে।
ইডির হাজিরা এড়িয়ে নির্বাচনী প্রচারে মহুয়া মৈত্র। 'বিদেশ মুদ্রা লেনদেন' সংক্রান্ত মামলায় আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সকাল ১১ টার মধ্যে দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই তলবে সাড়া দিলেন না কৃষ্ণনগর তৃণমূল প্রার্থী। বরং নিজের কেন্দ্রেই প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন বলে তদন্তকারী সংস্থাকে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে এদিন শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দান্দিকেও তলব করেছে ইডি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তার ভিত্তিতেই মহুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল ইডি, এমনটাই সূত্র মারফর খবর।
গত কয়েকদিন আগেই কৃষ্ণনগরের বহিস্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। দিল্লির বিশেষ টিম কলকাতায় নেত্রীর বাবার ফ্ল্যাটে দীর্ঘ তল্লাশি চালান। তল্লাশি চলে কৃষ্ণনগরের একাধিক ঠিকানায়। এমনকি নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকেও দীর্ঘ তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন মামলায় এই তল্লাশি অভিযান চলে। যদিও দীর্ঘ র্তল্লাশি অভিযানে খালি হাতে ফিরতে হয় তদন্তকারী সংস্থাকে।
এরপরেই 'বিদেশ মুদ্রা লেনদেন' সংক্রান্ত মামলায় মহুয়া মৈত্রকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়। যদিও ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে তদন্তের মুখোমুখি তৃণমূল নেত্রী হবেন কিনা তা নিয়ে ছিল একাধিক প্রশ্ন। এর আগেও এই মামলায় তাঁকে নোটিশ দেয় ইডি। কিন্তু তদন্তকারী আধিকারিকদের মুখোমুখি হননি। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ইডির হাজিরা এড়ালেন মহুয়া। ভোট প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন বলে তদন্তকারী সংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
আবারও সিবিআইয়ের স্ক্যানারে নারদাকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল। ৪ঠা এপ্রিল সকাল ১১টায় নিজাম প্যালেসে তলব সংবাদমাধ্যম তেহলকার প্রাক্তন সম্পাদককে। ষড়যন্ত্র, নাকি দুর্নীতি, উত্তর কি সামনে আসবে এবার? ইমেল মারফত তাঁকে সিবিআই ডেকে পাঠালেও পাল্টা জবাব দেন ম্যাথু।
সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে স্যামুয়েল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এটা একটা রাজনৈতিক নাটকে পরিণত হয়েছে, পাল্টা জবাব তাঁর। দুই মাস আগেও এমন একটা চিঠি পেয়েছিলেন তিনি। তখন তাঁর জবাবে বলা ছিল, তিনি এখন বেঙ্গালুরুতে থাকেন আর এত কম সময়ে কলকাতা আসতে পারবেন না। তাঁকে যাতায়াত এবং থাকার খরচ দিতে হবে। গোটা ঘটনায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চান। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, কলকাতায় আসা-যাওয়ার খরচও জোগাতে হবে সিবিআইকে। ২০১৬ সাল থেকে সিবিআই এই মামলার তদন্ত করলেও এখনও রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ তারা। এদিকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তৎপর দুই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও সিবিআই। ফের নির্বাচনের আগে নারদ-কাণ্ড নিয়ে তৎপর সিবিআই। কিন্তু কে এই ম্যাথু স্যামুয়েল? কীভাবে তিনি যুক্ত নারদা-কাণ্ডের সঙ্গে।
ম্যাথু স্যামুয়েল একজন সাংবাদিক। তিনি সংবাদমাধ্যম তেহলকার প্রাক্তন সম্পাদকও। তিনিই নারদ ‘স্টিং অপারেশন’ চালিয়েছিলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বাছাই করা কিছু নেতা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ২০১৪ সালে হওয়া এই অভিযানে ক্যামেরার সামনেই টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল বাংলার শাসক দলের একাধিক সাংসদ, মন্ত্রীকে। অভিযোগ, তোয়ালে মুড়ে টাকা নিতে দেখা যায় তৎকালীন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে উত্থানও এই ২০১৪ সাল থেকেই। বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় এই সমস্ত নেতাদের সঙ্গে অভিষেকের সখ্যতা খুব একটা মধুর ছিল না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বারবার বলতে শোনা যায়, “এটি দুর্নীতি ছিল না, এটি ছিল ষড়যন্ত্র। কনস্পিরেসি মেড বাই ভাইপো। যাদের সহ্য করতে পারত না, যাদের মনে করত আগামী দিনে বাধা হতে পারে, তাদের বিরুদ্ধেই ম্যাথুকে কেডি সিং-এর মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়েছিল।" যদিও আট বছর পরেও এখনও অধরা নারদা রহস্য!
সন্দেশখালিতে রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে শাহজাহান অনুগামীদের হাতে মার খেতে হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। গত ৫ জানুয়ারির ওই ঘটনার মূল চক্রী শেখ শাহজাহান ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন তিনি। হামলার ওই ঘটনায় কারা কারা যুক্ত ছিল, তা জানতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সম্প্রতি ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ জিয়াউদ্দিন মোল্লাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই আবহে শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগীর সহ ১০ জনকে তলব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। বৃহস্পতিবারই নিজাম প্যালেসে তাদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। সিবিআইয়ের তলবে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে হাজির হন শাহজাহান ঘনিষ্ঠ ২ ব্যক্তি।
সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনার রহস্যভেদে ততপর সিবিআই। আগামী দিনে তদন্তে কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে কিনা, সেটাই এখন দেখার।
ইডির উপর হামলার ঘটনায় তিনজন তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গ্রেফতারির পর তাঁদের নিজাম প্য়ালেসেই রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে জিয়াউদ্দিন মোল্লা, দিদার বক্স মোল্লা ও ফারুক আকুঞ্জিকে নিজাম প্যালেস থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হল বসিরহাট আদালতের উদ্দেশ্যে। পাশাপাশি মঙ্গলবার আরও তিনজনকে তলব করল সিবিআই। তাঁরা হলেন সিদ্দিক মোল্লা, আবিবুর রহমান, রহমান আকুঞ্জি।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বেড়মজুরে সিদ্দিক মোল্লা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। সেখানেই জানা গিয়েছে, সিদ্দিক মোল্লা হলেন বেড়মজুরের পঞ্চায়েত প্রধান। গত ৫ জানুয়ারি ইডির উপর হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূলের এই পঞ্চায়েত প্রধানকে এদিন কলকাতার সিবিআই দফতরে আসতে বলা হয়েছে।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার ইডির উপর হামলার ঘটনায় তদন্তে নেমে সন্দেশখালির একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা। ন্যাজাট থানার অধীনস্থ ফাঁড়িতেও তদন্তের প্রয়োজনে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ধৃত শাহজাহান শেখের এক প্রতিবেশীর বাড়িতেও যান। রহমান আকুঞ্জি নামে এক ব্যক্তির খোঁজ না পেয়ে তাঁর বাড়ির এক সদস্যের হাতে নোটিশ দেন সিবিআই। কিন্তু রহমানের সৎ মা সিবিআইয়ের সামনেই তাঁদের দেওয়া নোটিশ ছিঁড়ে ফেলে দেন বলে অভিযোগ।
সন্দেশখালিকাণ্ডে ইডির উপর হামলার ঘটনায় এবার তিনজনকে তলব করল সিবিআই। তারমধ্য়ে শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ সরবেড়িয়া আগারহাটি অঞ্চলের প্রধান জিয়াউদ্দিন মোল্লাকে তলব করলেন সিবিআই আধিকারিকরা। ইতিমধ্য়ে নিজাম প্য়ালাসে যান জিয়াউদ্দিন।
সূত্রের খবর, আর বাকি দুই জন হলেন, দুরন্ত মোল্লা এবং শফিকুল রহমান। এর আগে এই দুই শাহজাহান ঘনিষ্ঠের বাড়িতেও সিবিআই হানা দিয়েছিল। তারপরে সোমবার তাঁদের তলব করা হয়।
গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছিল জিয়াউদ্দিন মোল্লাকে। ঘটনার তদন্তে নেমে শাহজাহান শেখের কললিস্টে জিয়াউদ্দিন মোল্লার নাম দেখা গিয়েছে। এই বিষয়ে এবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা জিয়াউদ্দিন মোল্লাকে তলব সিবিআই এর। জানা গিয়েছে, শাহজাহানের ডান হাত হিসেবে এলাকায় পরিচিত এই জিয়াউদ্দিন মোল্লা।
ইডির তলবে সাড়া দিলেন অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব। গরু পাচার মামলায় আজ, বুধবার দেবকে তলব করেছিল ইডি। এই নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য হাজিরা দিলেন দেব। দিল্লির ইডি দফতর অর্থাৎ প্রবর্তন ভবনে সকাল ১১টায় প্রবেশ করেন তিনি।
এর আগে যতবার তাঁকে তলব করা হয়েছে তিনি তদন্তে সহযোগীতা করেছেন। দেব নিজেও জানিয়েছেন, তাঁকে যতবার ডাকা হবে ততবারই তিনি হাজির হবেন। এর আগে ২০২২-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি, গরুপাচার মামলায় দেবকে নিজাম প্যালেসে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কয়েক মাসের ব্যবধানে ২২ জুন এই মামলাতেই দেবকে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর প্রায় দেড় বছর পর ফের দেবকে তলব করল তারা।
দেব আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। তাঁর কোনও ভয় নেই। তদন্তের স্বার্থে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যতবার তাঁকে ডাকবে ততবার তিনি যাবেন।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তলব করা হল কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ইডি দফতরে দফতরে আসেন বাপ্পাদিত্য। ইডি সূত্রে খবর, এই তৃণমূল কাউন্সিলরকে তাঁর ব্যাংকের পাসবুক, সমস্ত লেনদেন এবং আয়কর রিটার্নের সমস্ত কাগজপত্র সহ বেশ কয়েকটি নথি আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যা বৃহস্পতিবারই ইডি দফতরে জমা দেন বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। টানা ৬ ঘণ্টা ধরে চলছে জিজ্ঞাসাবাস।
প্রসঙ্গত, একসময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-এর সঙ্গে নিয়মিত ওঠাবসা ছিল বাপ্পাদিত্যের। সেই কারণে প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় পার্থের ভূমিকা সম্পর্কে বাপ্পাদিত্য অনেকটাই জানেন বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তবে পার্থর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই তাঁকে তলব, এমনটাই দাবি এদিন ইডির দফতরে হাজিরা দিতে আসা বাপ্পাদিত্যের। পাশাপাশি তাঁর সাফ দাবি প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে গত বছর প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের বাড়িতে উদ্ধার হয় প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত এবং এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি। প্রায় ১০০ পাতার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছিল বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এরপর বৃহস্পতিবার বাপ্পাদিত্যকে আবার তলব ইডির। এই বিষয়ে জল কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।
আবারও তলব এড়ালেন শেখ শাহজাহান। বুধবার ১১ টায় সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও এদিনও দেখা মিলল না সন্দেশখালির তৃণমূল নেতার। এবার কী পদক্ষেপ করবে ইডি? সেদিকেই নজর সকলের।
৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে সন্দেশখালির বেতাজ বাদশাহ শেখ শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকরা। তারপর থেকেই পলাতক এই তৃণমূল নেতা। ফের, ২৪ জানুয়ারি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এদিন শাহজাহানের বাড়িতে একটি নোটিশও টানিয়ে আসে ইডি। ২৯ জানুয়ারি তলব করা হয় শেখ শাহজাহানকে। কিন্তু তিনি আসেননি। উল্টে ৩০ শে জানুয়ারি আগাম জামিনের আবেদন করা হয় শাহজাহানের তরফে। সন্দেশখালির ঘটনায় ইডির পক্ষ থেকে ন্যাজাট থানায় এফআইআর দায়ের করা হলে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
এবার অলক্ষ্যে থেকেই বসিরহাট মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হলেন শেখ শাহজাহান। একদিকে ফের আগাম জামিনের আবেদন শেখ শাহজাহানের। অন্যদিকে শাহজাহানের আইনজীবীকে ইমেইলের মাধ্যমে সমন পাঠানো হয়েছে ইডির তরফে। আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি ফের শেখ শাহজাহানকে তলব করা হয়েছে। সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সন্দেশখালির ফেরার বাদশাকে।
আদৌ কি শেখ শাহজাহান হাজিরা দেবেন, না কি ফের নতুন কোনও ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে ইডি আধিকারিকদের, সে জবাব সময়ই দেবে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আবারও সঙ্গীত শিল্পী অদিতি মুন্সির স্বামী তথা বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীকে তলব করল সিবিআই। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকেও তলব করল সিবিআই। আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে ওই দুই তৃণমূল নেতাকে সিবিআই দফতর নিজাম প্য়ালেসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িত থাকায় এর আগেও তৃণমূলের ওই দুই নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। গতবছর অদিতি মুন্সির স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন সিবিআই-এর আধিকারিকেরা। এমনকি অদিতি মুন্সির গানের স্কুলেও তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। তল্লাশি চালিয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত কয়েকটি নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই নথির সূত্র ধরেই আবারও সিবিআই তলব করল কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীকে।
তারপর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তর বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেখান থেকেও কিছু নথি ও কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছিল সিবিআধিকারিকের তরফে।
মণি ভট্টাচার্য: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ইডির ডাকে বারবার ফাঁফরে পড়তে হয়েছে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারকেও। গতবার অর্থাৎ ১৩ই সেপ্টেম্বর এই একই মামলায় অভিষেককে তলব করা হয়। সেবার অভিষেক হাজিরাও দেয়। ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠকের দিন অভিষেককে সাড়ে ৯ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। ইডির জেরা সেরে বেরিয়ে অভিষেক জবাব দিয়েছিল, এই জেরার নির্যাস 'মাইনাস ২।' ক্রমিক হিসেবে ইডির জেরা সেরে এর পূর্বেও জেরাকে নম্বর দিয়েছিলেন, 'শুন্য।' এবং গতবার তিনি বলেছিলেন, 'আবার ডাকলে মাইনাস ফোর হবে।' কিন্তু আজ অর্থাৎ অভিষেকের গলায় শোনা গেল না এমন কোনও সুর। বরং মাত্র ১ ঘন্টার জেরা সেরে আরও শান্ত গলায় বললেন, 'সাড়ে ৫ হাজার পাতার নথি জমা দিয়েছি, যদি প্রয়োজনে তলব করে, তদন্তের স্বার্থে আবার আসবো।'
একদিকে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ এই তদন্ত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। অন্যদিকে তখন গোটা রাজ্য জুড়ে মুড়ি-মুড়কির মত সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। সেজন্যই বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তলব করা হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা, বাবা ও স্ত্রীকেও। প্রায় প্রতিবারই অভিষেক ও মমতার গলায় শোনা গিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর, শোনা গিয়েছে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগও। কিন্তু এদিনের চিত্রটা কিছুটা হলেও উল্টো। সকাল ১১টা ৫ মিনিটে অভিষেকের কনভয় এসে পৌঁছল সিজিওতে। এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায় ১ ঘন্টার মধ্যে বেরিয়ে আসেন। সেখানেই সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে অন্যদিনের তুলনায় অনেক শান্ত গলায় অভিষেক বলেন, 'যখন ওরা ডাকবে তখনই আসবো।' অথচ তিনি ইডির জেরাকে নম্বর দেওয়া নিয়ে একটি বাক্যও উচ্চারণ করলেন না।
বৃহস্পতিবার অভিষেক বলেন, 'চাইলে আমি ইডির হাজিরা এড়িয়ে যেতে পারতাম। ২২ সেপ্টেম্বর সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল নির্দিষ্ট তথ্য নথি নিয়ে অভিষেককে জেরা করতে পারবে। ইডি কোনও নথি আমার বিরুদ্ধে জমা দিতে পারেনি। সেজন্যই আদালত আমাকে রক্ষাকবচ দিয়েছে।' পাশাপাশি এদিন তিনি ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করার প্রসঙ্গও তোলেন। কিন্তু অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার অভিষেকের সুর ছিল অনেক নরম। পাশাপাশি তেমন কড়া আক্রমণ করলেন না বিজেপিকে। একদিকে রেশন দুর্নীতি কাণ্ড, শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড, কয়লা পাচার কাণ্ড, গরু পাচার কাণ্ড, যে ঘটনা গুলিতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে রাজ্যের তাবড় তাবড় নেতা, সে অবস্থায় একের পর এক দুর্নীতি নাম জড়াচ্ছে অভিষেকের। যেমন, কয়লা পাচার, শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি। এঅবস্থায় অভিষেক ও ইডির সম্পর্ক, অর্থাৎ শূন্য, মাইনাস ২ , মাইনাস ৪, এই অঙ্ক বোধহয় একটু গুলিয়েছে! সেরকমটাই মনে করছে বিরোধী মহল।
পুজো মিটতেই ফের সক্রিয় ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তলব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। তবে দলীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেবেন অভিষেক।
এর আগে কয়লা কেলেঙ্কারি ও পরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তলব করা হয় অভিষেককে। তাঁর পরিবারকেও ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তৃণমূলের দাবি রাজনৈতির উদ্দেশ্য নিয়েই অভিষেককে বারবার হেনস্থা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতেই অভিষেককে নোটিস পাঠিয়েছে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতারের পরই অভিষেকের নাম প্রকাশ্যে আসে। তাঁর সংস্থা লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডসের কর্মী ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই আপ প্রধান কেজরিওয়ালকে তলব করে ইডি। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় তাঁকে হাজির হতে বলা হয়, দিল্লির ইডি দফতরে। সূত্রের খবর, হাজিরা দেবেন না কেজরিওয়াল। পাশাপাশি ইডিকে চিঠি লিখে সমন ফেরাতে বললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ইডিকে পাঠানো চিঠিতে আপ সুপ্রিমো লিখেছেন, ইডির এই নোটিস রাজনৈতিক বেআইনি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। অবিলম্বে যেন এই নোটিস ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার বদলে তিনি মধ্য প্রদেশের সিঙ্গাউলিতে পথসভা করবেন তিনি। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও থাকবেন তাঁর সঙ্গে। আপের আশঙ্কা, আজই গ্রেফতার করা হতে পারে অরবিন্দ কেজরীবালকে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধের জন্য কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ।
রণবীর কাপুরের পর এবার ইডির স্ক্যানারে কপিল শর্মা, হুমা কুরেশি, হিনা খানও। মহাদেব বেটিং অ্যাপের (Mahadev Betting App) তদন্তেই এই তিন তারকাকেও সমন পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বুধবারই ইডি দফতরে তলব করা হয়েছিল অভিনেতা রণবীর কাপুরকে (Ranbir Kapoor)। ৬ অক্টোবর তাঁকে দিল্লির ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইডি। আর এবারে বৃহস্পতিবার ইডি তলব করল কমেডিয়ান কপিল শর্মা, অভিনেত্রী হুমা কুরেশি ও হিনা খানকে।
সূত্রের খবর, মহাদেব বেটিং অ্যাপকে প্রচার করার অভিযোগে সমন পাঠানো হয়েছে হুমা কুরেশি ও হিনা খানকে। অন্যদিকে, দুবাইয়ে মহাদেব বেটিং অ্যাপের এক গ্র্যান্ড পার্টিতে উপস্থিত থাকার জন্য কপিল শর্মাকে তলব করেছে ইডি। প্রসঙ্গত, মহাদেব বেটিং অ্যাপের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। এই অ্যাপের সঙ্গে শুধুমাত্র রণবীর নন, বলিউডের আরও তাবড় তাবড় তারকারা জড়িত। এবারে সেই তালিকায় নাম যুক্ত হল কপিল, হুমা ও হিনারও।