
এ যেন লুকোচুরি খেলা। এসএসকেএম ও কালীঘাটের কাকু যেন ইডির সঙ্গে একপ্রকার লুকোচুরি খেলায় নেমেছে। একদিকে যখন কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে তৎপর ইডির আধিকারিকরা। অন্যদিকে তখন যে কোনও উপায়ে ইডির চেষ্টাকে ব্যর্থ করার চেষ্টা এসএসকেমের। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে এমনই মনে হবে সাধারণের। এসএসকেএম ও কাকুর এহেন খেলায় গেরোয় কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ। এবার ফের ঠিক যেন কালীঘাটের কাকুকে আড়াল করতে ফের এসএসকেএমের জারিজুরি। জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে যেতে পারে ইডি, এমটাই জানিয়ে এসএসকেএমকে চিঠি লিখেছিল ইডি। কিন্তু ইডির পাল্টা চিঠিতে এসএসকেএম জানিয়েছে, কালীঘাটের কাকুর মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। অর্থাৎ অসস্তি ভাবে এসএসকেএম বুঝিয়ে দিল ইডিকে এ মুহূর্তে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ সম্ভব নয়।
পূর্বেই কালীঘাটের কাকু ও এসএসকেএমের উপর সন্দিহান প্রকাশ করে ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। ইডির আবেদনে সাড়া দিয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালত কাকুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য ইএসআই হাসপাতালকে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দেয়। এবার এসএসকেমেমকে পাল্টা চাপ ইডির, সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইডির তরফে চিঠি দেওয়া হলো এসএসকেএম হাসপাতাল, ই এস আই হাসপাতাল ও সিএফএসএল-কে। যদিও পাল্টা চিঠিতে এসএসকেএম জানিয়েছে কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। সে জন্যই তাকে মানসিক চিকিৎসার বিভাগ অর্থাৎ সাইক্রিয়াটিক বিভাগে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় অবশ্য ইডির আধিকারিকরা মনে করছেন নমুনা সংগ্রহে বিলম্বের চেষ্টাতেই এই রিপোর্ট এবং চিঠি এসএসকেএম হাসপাতালের। এঅবস্থায় কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে ইডি কোন পথে হাটবে সেটাই এখন দেখার।
এবার হয়ত শেষ হতে চলেছে কাকুর জারিজুরি , নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয় কালিঘাটের কাকু, অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। এরপরে সুজয় কৃষ্ণের অফিস ও ফোন ঘেটে রীতিমত চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় ইডির আধিকারিকরা। তদন্ত যত এগিয়েছে টোটো কাকুর কালো হাতের হদিশ মিলেছে। এরপরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে কালীঘাটের কাকু। এরপর তার চিকিৎসা হয় ,এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার হৃদরোগের অপারেশন ও করা হয়। তারপর থেকেই সরকারি হাসপাতাল অর্থাৎ এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন আছে কালীঘাটের কাকু। কিন্তু কালীঘাটের কাকুকে নিজের হেফাজতে নেওয়া কিংবা জেলে পাঠানো, বা কালীঘাটের কাকুর নমুনা সংগ্রহে একমাত্র বাধা এসএসকেএম। এবার এসএসকেএমের রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে সন্দিহান প্রকাশ করে আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। ওই শুনানিতে আজ অর্থাৎ শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশ, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা জন্য ইএসআই হাসপাতালকে চিকিৎসক দ্বারা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে, তাঁর সাস্থের একটি রিপোর্ট দিতে হবে।' কার্যত এবার হয়ত এসএসকেএমে শুয়ে আরাম করার দিন শেষ হয়ে আসছে কাকুর।
জানা গিয়েছে, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের চিকিৎসার জন্য এসএসকে এম হাসপাতাল দ্বারা গঠিত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে সন্তুষ্ট ছিল না ইডি। তদন্তকারী আধাকিরকরা মনে করছেন, রাজ্যে সরকারি হাসপাতাল সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের চিকিৎসা সংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্টে কিছু ত্রুটি থাকছে। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত ইএসআই হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। ইডির আবেদন মঞ্জুর করে জোকা ই এস আই হাসপাতালকে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা নির্দেশ দিল ইডির বিশেষ আদালত।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর, নানা সময়ে নানা জারিজুরি করেছেন কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তক্রমে ইডির কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয় ইডির।কিন্তু সেই পথে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়ায় এসএসকেএম। এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পেতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে ইডি। এমনকি বারবার চিঠি লিখেও মেলেনি কোনো সদুত্তর। সেজন্যই এবার আদালতের দ্বারস্থ ইডি। এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সময় আদালতে মুখ পুড়েছিল এসএসকেএমের। এবার কি ফের কালীঘাটের কাকুর সহায় থেকে এসএসকেমের মেডিকেল রিপোর্টে মুখ পুড়বে হাসপাতাল কতৃপক্ষের! সেটাই এখন দেখার।
'এ যেন খুল যা সিমসিম,' ইডির কাছে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর এখন কিছুটা সেরকমই। যেন কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণের কণ্ঠস্বর পেলেই সমাধান হয়ে যাবে অনেকটা। যেমনটা হয়েছিল সিনেমায়। 'খুল যা সিমসিম,' যা বলার পরই খুলে গিয়েছিল গুহার দরজা। জানা গিয়েছে, ইডির তরফে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের স্যাম্পেল নেওয়ার জন্য ফের এসএসকেএমকে চিঠি লিখল ইডি। সূত্রের খবর, ইডির তরফে চিঠি লিখে জানতে চাওয়া হয়েছে, কবে সুজয় কৃষ্ণ ভাদ্রের ভয়েস সাম্পেল নেওয়া সম্ভব হবে? এমনকি কবে সুজয় কৃষ্ণের কণ্ঠস্বর পাওয়া সম্ভব, সেই দিন-ক্ষণ জানানোর জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ইডি হাতে এক অডিও রয়েছে। যেখানে মোবাইলের কিছু তথ্য ডিলিট করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। অডিওর সঙ্গে কালীঘাটের কাকুর ভয়েস মেলানোর জন্য, তার ভয়েস স্যাম্পেল নিতে চায় ইডি। রাজ্য–রাজনীতিতে এখন বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে, ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বর। সূত্রের খবর, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র নাকি অডিয়ো মুছে ফেলতে বলেছিলেন তদন্তকারী অফিসারকে। তাই আদালতের নির্দেশের পরই সুজয়কৃষ্ণর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চেয়ে এসএসকেএম হাসপাতালকে চিঠি দিয়েছে ইডি। যে কোনও জায়গায় গিয়ে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যাবে বলে ইডিকে নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ আদালত। আর তারপর থেকে সক্রিয়তা তুঙ্গে উঠেছে।
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস মামলায় বারবার উঠে এসেছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। ইতিমধ্যেই বাইপাস সার্জারি হওয়ার ২ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও এসএসকেএম হাসপাতালে আছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে কয়েকদিন আগেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছয় ইডি অফিসাররা। এই কণ্ঠস্বর পেলেই অনেক তদন্ত সহজেই হয়ে যাবে বলে মনে করছেন অফিসাররা। সূত্রের খবর, এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি থাকার কারণে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারছে না ইডি। কেন এতদিন এসএসকেএম হাসপাতালে সুজয়কৃষ্ণ? কী চিকিৎসা চলছে? কী ওষুধ দেওয়া হচ্ছে কালীঘাটের কাকুকে? এইসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর এই প্রশ্নগুলি হাসপাতাল সুপারের কাছে জানতে চেয়ে বয়ান রেকর্ড করছে ইডি। দরকার পড়লে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হাসপাতালে সুজয়কৃষ্ণকে চিকিৎসা করানো হতে পারে। এমন ভাবনাও করা হয়েছে।
গত ১৪ জুলাই, আদালতের নির্দেশ ছিল তিন দিনের মধ্যে কালীঘাটের কাকুর গলার স্বরের নমুনা জমা দিতে হবে। এরপর দুমাস কেটে গিয়েছে। এখনও সেই নমুনা জমা দেওয়া অনেক দূর। সংগ্রহ করাই হয়নি।
ইডি সূত্রে অভিযোগ, আদালত ওই নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে সরকারিভাবে জেল হেফাজতে থাকলেও কার্যত টানা ২-৩ দিনও জেলে থাকেননি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। স্ত্রী মারা যাওয়ায় ১৭ দিন প্যারোলে মুক্ত ছিলেন। এরপর অসুস্থ ছিলেন তিনি। সেই কারণেই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
ইডি সূত্রে দাবি গত ৩০ মে গ্রেফতারির পর তাঁর দুটি মোবাইল থেকে একাধিক ভয়েস কল রেকর্ড পাওয়া যায়। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সেই ভয়েস কল গুরুত্বপূর্ণ বলে আদালতে দাবি করেন ইডির আইনজীবীরা। গত ৭ জুলাই, তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহের আবেদন করে ইডি। আদালতের নির্দেশের পর অসুস্থ হয়ে পড়েন কালীঘাটের কাকু। এরপর স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৭ দিনের প্যারোল পান তিনি। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ফিরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। জেলে ফিরলেও ফের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
এবার আরও বিপাকে 'কালীঘাটের কাকু'। বৃহস্পতিবার তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চের নির্দেশ, নিম্ন আদালতের নির্দেশে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে ইডি। ফলে এটা স্পষ্ট যে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আবেদন মঞ্জুর করল না কলকাতা হাই কোর্ট। কণ্ঠস্বর নমুনার পরীক্ষার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। তদন্তের স্বার্থে এখনই এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।
হাই কোর্টের মতে, তদন্তের এই পর্যায়ে এসে আদালত নমুনা সংগ্রহের উপর কোনও বাধা দিতে চাইছে না। তবে এই নমুনা তথ্যপ্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হবে কি না, পরবর্তী কালে আদালত তা বিবেচনা করবে।
বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, নমুনা পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে? কিন্তু নিম্ন আদালতের বিচারকের নির্দেশের উপর কেন হাই কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে, তা পরিষ্কার নয়! তদন্তের প্রয়োজনের স্বার্থে এই নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। বেআইনি ভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হলে তা নিয়ে এই আদালতের মতামত থাকতে পারে। কিন্তু তদন্তের প্রয়োজনে কোনও নমুনা সংগ্রহের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না। পাশাপাশি, বিচারপতি ঘোষ জানান, এটা তথ্যপ্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু ইডি কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে।
ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির সওয়াল, সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ কী ভাবে হবে, তা বোধগম্য নয়। প্যারোলে মুক্ত হওয়ার পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন। এসএসকেএম হাসপাতালে রয়েছেন। এই মামলায় এই নমুনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জেলের মধ্যে থাকলে নমুনা সংগ্রহের কাজ করতে পারবে ইডি। হাই কোর্ট জানায়, এ নিয়ে আদালত কোনও নির্দেশ দেবে না। নির্দিষ্ট বেঞ্চে গিয়ে আবেদন করতে পারবে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) ফোন ঘেঁটেই 'কালীঘাটের কাকু'-কে পেয়েছিল ইডি (ED)। সেই থেকেই ইডির নজরে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujoy Krishna Bhadra)। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর এমনই। মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছিল গত বছর অক্টোবর মাসে। সেইসময় মানিকের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তাঁর ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে 'কালীঘাটের কাকু'-র সন্ধান পান ইডি আধিকারিককরা। তারপর থেকেই সুজয়ের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছিল ইডি। উল্লেখ্য, বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালত সুজয়কৃষ্ণকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
সুজয় ইডিকে জানিয়েছেন, মানিকের সঙ্গে ২০২১ সাল থেকে তাঁর যোগাযোগ। কিন্তু, ইডি তদন্ত বলছে, ২০১৮ সাল থেকে তাঁদের একে অপরকে চিনতেন। মানিকের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন ঘেঁটে এমন দাবি করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ২০১৮ সাল থেকেই মানিককে বহু টেট প্রার্থীর নথি সুজয় পাঠিয়েছিলেন। মার্কশিট এবং অ্যাডমিট কার্ডও পাঠানো হয়। বুধবার ইডি আদালতে আরও দাবি করেছে, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলেছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু’। কুন্তল বয়ানে জানিয়েছেন, তিনি সুজয়কে ৭০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। তাঁর কথাতেই আরও ১০ লক্ষ টাকা দেন পার্থকেও।
এদিকে শোনা গিয়েছে, খাবার মুখে তুলছেন না সুজয়। সূত্রের খবর, অনশন শুরু করেছেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তিনি নিজে বুধবার আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছেন, "আমি হাঙ্গার স্ট্রাইক (অনশন) করব।" তবে ইডি আইনজীবীর দাবি, ইডির প্রশ্ন এড়ানোর জন্যই না খাওয়ার কৌশল নিচ্ছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র । এতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন তিনি।
কাজে এলো না কোনো জারি-জুরি। কালীঘাটের (Kalighat) কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে (Sujoy Krishna Bhadra) ১৪ দিনের ইডি (ED) হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। যদিও বুধবার তাঁর আইনজীবী অসুস্থতার দোহাই দিয়ে জামিন চেয়েছেন। সেই জামিন মঞ্জুর করেন নি বিচারক।
ওদিকে মঙ্গলবার রাত থেকে কিছু খাচ্ছেন না কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে তাঁর। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে এমনই দাবি করল ইডি। ইডি আইনজীবীর দাবি, ইডির প্রশ্ন এড়ানোর জন্যই না খাওয়ার কৌশল নিচ্ছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি চাইছেন, তিনি যেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন জানিয়েছে ইডি।
জানা গিয়েছে, অনশন শুরু করেছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি নিজে এদিন আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছেন, "আমি হাঙ্গার স্ট্রাইক (অনশন) করব।" এদিকে, সুজয়ের আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতারির কথা জানানো হয়নি । অন্যদিকে, সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী মক্কেল ও তাঁর স্ত্রীর অসুস্থতার নথি আদালতে পেশ করে সুজয়কৃষ্ণের জামিনের আবেদন করেছেন
ইডি (ED) দফতরে হাজিরা দিলেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র(Sujoy Krishna Bhadra)। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে তাঁকে ডেকে (Summon) পাঠানো হয়েছে। সকাল ১১টা ৫ নাগাদ তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকেন। গাড়ি থেকে নামতেই এদিন তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। প্রশ্ন করা হয় ইডির জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে কি ভয় পাচ্ছেন তিনি? দফতরে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তাঁর জবাব, বেরিয়ে বাকি কথা বলবেন। তাঁর কথায়, তিনি কতটা আত্মবিশ্বাসী, তা দফতর থেকে বেরোনোর সময়ই সবাই দেখতে পাবেন।
কালীঘাটের কাকুর কথা প্রথম শোনা গিয়েছিল তাপস মণ্ডলের মুখে। আগে গোপাল দলপতির কথায় ইঙ্গিত মিলেছিল তাঁর সম্পর্কে। এরপর নিয়োগকাণ্ডে একাধিক ধৃতের মুখ থেকে সুজয়কৃষ্ণের নাম উঠে আসে। এরপরই তিনি তদন্তকারীদের নজরে পড়েন। প্রথম তাঁকে তলব করেছিল সিবিআই। ‘কাকু’র বাড়িতে সিবিআই তল্লাশির সময় কয়েক লক্ষ নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তিনি তখন দাবি করেছিলেন, বোনের হাসপাতালের বিল মেটানোর জন্য ওই টাকা তুলেছিলেন। এছাড়া একটি অ্যাডমিট কার্ড ও ফোনও পাওয়ায় যায়। পরে ইডিও বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে।
সিবিআইয়ের পর দিন কয়েক আগে ইডি তাঁর বেহালার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায়। ইডি সূত্রে খবর, বেশ কিছু নথি মেলে। সেইসময় তাঁকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ১৫ ঘণ্টা ধরে চলেছিল জেরা। এবার ইডির নির্দেশ মেনেই সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন সুজয়কৃষ্ণ।