কংগ্রেসের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাণীনগরে স্থায়ী বোর্ড গঠনে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ সোমবার সকালে কংগ্রেসের করা একটি মামলায় এমন নির্দেশ দেয় বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের সভাপতি সহ- মোট ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে মামলা করে কংগ্রেস। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ই সেপ্টেম্বর।
পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতির ভোটাভুটি ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রানিনগর। গত ৮ সেপ্টেম্বর রানিনগরে একটি সমাবেশ করার কথা ছিল কংগ্রেসের। অভিযোগ, সমাবেশে আসা কংগ্রেস কর্মীদের বাধা দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। প্রতিরোধ গড়ে তুললেই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। থানায় চলে তাণ্ডব, তৃণমূল কার্যালয়ে আগুন ধরানোরও অভিযোগ ওঠে। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বেই কংগ্রেস সমর্থকরা রানিনগর থানায় হামলা চালানো হয় বলে পাল্টা অভিযোগ তোলে তৃণমূল।
সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ রানিনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি ভোটাভুটির প্রক্রিয়া শুরু হবার কথা। উপস্থিত থাকবেন রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন, জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুল রাজ্জাক, সাংসদ আবু তাহের খান। রানিনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ২৭ জন সদস্য, ৯ জন পঞ্চায়েত প্রধান, ৩ জন জেলা পরিষদ সদস্য, ২ জন বিধায়ক ও একজন সাংসদের উপস্থিতিতে স্থায়ী সমিতি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আদালতের এই নির্দেশের পর কার্যত স্থগিত হয়ে গেল স্থায়ী সমিতি গঠনের প্রক্রিয়া।
মুর্শিদাবাদের রানিনগরে বোর্ড গঠন করেছে কংগ্রেস। আর ২৭ আসনবিশিষ্ট রানিনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম-কংগ্রেস জোট জিতেছিল ১৪টি আসনে। তৃণমূলের দখলে ছিল ১৩টি। ৩ কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে বর্তমানে পরিসংখ্যান তৃণমূলের ১৬, বাম কংগ্রেসের ১১। এই পরিস্থিতি পঞ্চায়েত সমিতি ভোটাভুটিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই রানিনগর থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
'বিচারের বাণী যাতে নীরবে নিভৃতে না কাঁদে' দুয়ারে রেশন (Duare Ration) প্রকল্প নিয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার নবান্নকে স্বস্তি দিয়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্পে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) স্থগিতাদেশ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ (Stay Order) দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। মমতা সরকারের এই প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও অনিরুদ্ধ রায়ের সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
এই স্থগিতাদেশের ফলে রাজ্যে চলবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। সোমবার শীর্ষ আদালতের এই স্থগিতাদেশের ফলে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প চালাতে আর কোনও আইনি বাধা আপাতত রইলো না।
রাজ্যের এই প্রকল্প খাদ্য অধিকার আইনের পরিপন্থী, এই যুক্তি দেখিয়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। অবশেষে 'সুপ্রিম' স্বস্তি রাজ্যর।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য এই প্রকল্প চালু রাখতে 'কারও গায়ের জোরের কাছে মাথা নত করব না' বলে সম্প্রতি বিধানসভার অধিবেশনে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, 'মানুষের জন্য দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হয়েছিল। মানুষের স্বার্থেই দুয়ারে এই প্রকল্প চলবে।' তিনি এ-ও বলেছিলেন, 'দরকারে বিধানসভার মাধ্যমে কোর্টকে আবেদন করব। যাতে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে না কাঁদে।'
তৃণমূলের ১৯ রাজনীতিবিদের সম্পত্তি নিয়ে মামলায় দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের। তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা হাইকোর্টে দায়ের মামলার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে যান। তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিবাল এবং সুহান মুখোপাধ্যায়। সেই শুনানিতেই স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের বেঞ্চ। ফলে বড়সড় স্বস্তি তৃণমূলের ১৯ নেতামন্ত্রীর।
এই মামলা ৫ বছরের পুরনো হলেও কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি ওই মামলায় ইডি-কে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূল বিধায়ক। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানি। কলকাতা হাইকোর্টের ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়ায়, আপাতত ওই মামলায় কোনও শুনানি করা যাবে না।
এদিকে, যে ১৯ জন নেতামন্ত্রীর নাম রয়েছে, তাঁরা হলেন--
ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, অমিত মিত্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক,মলয় ঘটক, শিউলি সাহা, অরূপ রায়,সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বর্ণকমল সাহা, জাভেদ খান, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ। এছাড়াও নাম রয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও অর্জুন সিংয়ের। যাদের মধ্যে একজন বিজেপির টিকিটে লোকসভায় জিতে একুশের ভোটের পরে তৃণমূলে ফিরেছেন। অপরজন আপাতত রাজনীতিতে সক্রিয়। এঁদের পাশাপাশি প্রয়াত দুই নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডেরও নাম রয়েছে তালিকায়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাও রয়েছেন সেই তালিকায়।
অভিযোগ, ২০১১ সালের পর অর্থাৎ তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এসব নেতাদের সম্পত্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শীর্ষ আদালতে তৃণমূল দাবি করেছে, ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে।