প্রথম স্ত্রীকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে স্বামীর! স্বামীর গ্রেফতারের দাবিতে থানার সামনে ধর্নায় আমিনা বেগম নামে বধূ। হাতে পোষ্টার নিয়ে ধর্নায় ওই গৃহবধূ-সহ তাঁর পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার গোঘাটে। পুলিসের বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ তোলেন ওই গৃহবধূ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তর নাম শেখ সাইফুল। আমিনা এবং সাইফুল দুজনেই গোঘাট থানার সানবাঁদি এলাকার বাসিন্দা। প্রায় দশ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়, এক সন্তানও আছে।
কর্মসূত্রে শেখ সাইফুল মুম্বইয়ে থাকেন। নানা অনুষ্ঠানে বাড়িতে আসা যাওয়ার সূত্রে অন্য এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় সাইফুলের। ওই গৃহবধূরও এক সন্তান আছে, যার হৃদযন্ত্রের সমস্যা আছে। তাই সাইফুল ওই মহিলা-সহ তাঁর সন্তানকে মুম্বইয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
সেই সময়ই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বলে অভিযোগ প্রতিবাদী বধূর। তিনি আরও জানান, 'সাইফুল মুম্বই থেকে সানবাঁদিতে ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসত। তবে সেই যাতায়াতের বিষয়ে কিছুই জানতেন না আমিনা।'
শুক্রবার সাইফুল এবং তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে থানায় এসেছিল পুলিস। কিন্তু পুলিস তাঁদের কোন শাস্তি না দিয়েই ছেড়ে দিয়েছে। সাইফুল আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেনি, এমনটাই অভিযোগ আমিনার। তাহলে এখন আমাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব কে নেবে? তাই ভরণপোষণের দায়িত্ব ও স্বামীর শাস্তির দাবিতে এই ধর্না, জানান অসহায় গৃহবধু আমিনা।
গৃহবধুর এক আত্মীয় আবেদা বিবি বলেন, 'জামাইকে ফিরে পেতে চেয়ে ধর্নায় বসেছি। এখন পর্যন্ত কোনও শাস্তি হয়নি। জামাই ও ওই অভিযুক্ত গৃহবধূকে থানায় আটক করে নিয়ে আসার পরেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাইছি আমিনার ছেলে ও আমিনার ভরণপোষনের দায়িত্ব জামাই নিক।'
দাবি না মেটা পর্যন্ত চলবে আন্দোলন, বাড়বে প্রতিবাদের ঝাঁঝ। এই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন ডিএ-র (DA Agitation) দাবিতে আন্দোলনরত সরকারী কর্মীরা। এবার ধর্মঘটের ডাক সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। আগামি ৯ মার্চ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সরকার পোষিত অফিসে এই ধর্মঘটের (Bandh in Government office) ডাক দেওয়া হয়েছে। মূলত বকেয়া ডিএ প্রদান, কেন্দ্র-রাজ্যের ডিএ ফারাক কমানো এবং শূন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে শহিদ মিনারের (Sahid Minar) পাদদেশে চলছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অবস্থান বিক্ষোভ।
পাশাপাশি তাঁরা অনশন আন্দোলন করছেন। এবার সরকারের উপর আরও চাপ বাড়াতে ধর্মঘটের পথে হাঁটছেন তাঁরা। এমনটাই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি। তাঁরা জানান, 'ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ে এভাবে আন্দোলনের পথে হাঁটতেই হবে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কিছু করতেই হবে। আমরা যা করছি গণতান্ত্রিক পরিসরে থেকেই করছি।' ইতিমধ্যে রাজ্য বাজেটে ৩% ডিএ ঘোষণা করেছে সরকার, মার্চ থেকেই কার্যকর সেই মহার্ঘ ভাতা।
কিন্তু তারপরেও ডিএ প্রদানের শতাংশ নিয়ে অসন্তোষ সরকারি কর্মীদের মধ্যে। তাই দাবি আদায়ে শহিদ মিনারে অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চ থেকেই আরও বড় আন্দোলনের ডাক সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। ৯ মার্চ ধর্মঘট কী আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়ানোর প্রথম ধাপ? এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে রাজনৈতিক মহলে।
উৎসব আবহে এবার ধর্নাস্থলে (Sit in protest) ভাইফোঁটা (Bhai Phota) পালন স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র চাকরিপ্রার্থীদের। বুধবার কলকাতার মেয়ো রোডে ভাইফোঁটা পালন করেন তাঁরা। চাকরিপ্রার্থীদের (SSC Candidate) থেকে ফোঁটা নিয়েছেন সিপিএম (CPM) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ধর্নাস্থল থেকে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে সরব তিনি। অন্য দিকে, মাতঙ্গিনী হাজরার পাদদেশে ধর্নাস্থলে যান বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি চাকরিপ্রার্থীদের মিষ্টি এবং বস্ত্র বিতরণ করেছেন।
স্কুলে চাকরির দাবিতে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না বুধবার ৫৯১ দিনে পড়ল। রাজ্যজুড়ে এখন উৎসবের মরশুম। দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো পেরিয়ে কালীপুজো এবং দীপাবলি, ভাইফোঁটা। কিন্তু গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে রাজপথে ধর্নায় চাকরিপ্রার্থীরা।
সেলিমকে ফোঁটা দিয়ে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, 'চাকরি পেয়ে আমাদের এখন বাড়িতে থাকার কথা। নিজের দাদা ও ভাইকে ফোঁটা দিতাম। কিন্তু এই অপদার্থ সরকারের জন্য তা সম্ভবপর হল না। তবে এত দিনের এই লড়াইয়ে আমরা অনেকের সাহায্য পেয়েছি। তাঁরা আমাদের দাদা-ভাইয়ের মতো। সেলিমদাও সে রকম এক জন। তিনি বহু বার চাকরিপ্রার্থীদের পাশে থেকেছেন। ভাইফোঁটার দিনেও তিনি আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতে এসেছেন। আমরা তাঁকে ফোঁটা দিলাম।'
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, 'এটা একটা মিষ্টি অনুষ্ঠান। যারা যোগ্য প্রমাণ করে হকের লড়াই লড়ছে, এঁদের সকলের নিয়োগ হোক। কোনও বাহানা চাই না। আর যাঁদের জন্য এই চাকরিপ্রার্থীরা বঞ্চিত, তাঁদের শাস্তি হোক।'
মেয়ো রোডে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের হাতে সেলিম যখন ভাইফোঁটা নিচ্ছেন, সেই একই সময়ে মাতঙ্গিনী হাজরার পাদদেশের ধর্না-অবস্থানে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। সেখানে আবার উচ্চ প্রথামিকে নিয়োগের দাবিতে ধর্না। দিলীপ অবস্থানকারীদের মধ্যে মিষ্টি এবং জামাকাপড় বিতরণ করে বলেন, 'সরকার ৮ বছর ধরে স্বচ্ছ নিয়োগ করতে পারেনি। ভাইফোঁটার দিনেও ছেলেমেয়েদের রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের পাশে একটু সময় কাটাতে এলাম।'
প্রাথমিকের (Primary Board) ধর্নার বিরোধিতা করে হাইকোর্টে প্রাথমিক বোর্ড। আন্দোলনের জেরে কোনও কর্মী ঢুকতে পারছেন না। ফলে কোন কাজ করা যাচ্ছে না। কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদন। পর্ষদকে লিখিত আবেদন করতে নির্দেশ হাইকোর্টের (High Court)। পর্ষদের আবেদন শুনে বিচারপতির প্রশ্ন, 'এতদিন ধরে আন্দোলন (Sit in Protest) চলছে, আজ কেন হঠাৎ অফিসে ঢুকতে পারছেন না বলে আবেদন?' আদালত জানিয়েছে, মৌখিক আবেদন করলে চলবে না, লিখিত আবেদন করতে হবে। এভাবে দ্রুত শুনানি করানো যায় না। তার একটা প্রসিডিওর রয়েছে। আদালতের নিয়ম মেনে লিখিত আবেদন করুন। এভাবেই পর্ষদ আইনজীবীকে নির্দেশ বিচারপতির।
এদিকে, করুণাময়ীতে এপিসি ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ ২০১৪ টেটের নন ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের। ৫২ ঘণ্টা হতে চলল তাঁরা অবস্থানে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরণ অনশন চালু করেছেন তাঁরা। বুধবার চাকরিপ্রার্থীরা জানান, পর্ষদ সভাপতির উপর ভরসা নেই। ভরসা নেই শিক্ষা দফতরের কোনও আধিকারিকের উপরেও। আমরা একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর মুখাপেক্ষী। অন্তত একবার অবস্থান মঞ্চে আসুন মুখ্যমন্ত্রী, কাতর আবেদন চাকরিপ্রার্থীদের।
অপরদিকে, অবস্থান বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে করুণাময়ী আসেন কামদুনি-কাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল। কামদুনি হাইস্কুলের শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায় দেখা করেন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। এসেছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল এবং বিজেপি মহিলা মোর্চা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বায়ো টয়লেট এবং মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা করা হবে আশ্বাস দিয়েছে বিজেপি মহিলা মোর্চা।