মণি ভট্টাচার্য: সিঙ্গুর এলাকায় বহাল তবিয়তে চলছিল চোলাই তৈরির কারবার। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিপুল পরিমান এই চোলাই তৈরী রুখলো আবগারি দফতর। ফলে ভোটের আগে এই অভিযান আবগারি দফতরের বড়সড় সাফল্য বলা চলে। জানা গিয়েছে, সিঙ্গুর এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার চোলাই ও চোলাই তৈরির সামগ্রী নষ্ট করল আবগারি দফতর।
সূত্রের খবর, চলতি মাসে ৫ ও ৬ তারিখ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিঙ্গুর থানা এলাকার বারুইপাড়া বা পলতা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অভিযান চালায় আবগারি দফতর।
অভিযানে নেমে বিপুল পরিমাণ মদ তৈরীর সামগ্রী হদিস পায় আবগারি দফতর। কোথাও মাটির নিচে, কিংবা কোথাও পুকুরের তলায়, কোথাও আবার ড্রেনের মধ্যে প্লাস্টিকের ড্রামে বা কোথাও প্লাস্টিকের মধ্যেই লুকিয়ে রাখা ছিল চোলাই ও চোলাই তৈরির সামগ্রী। সেগুলিকে উদ্ধার করে নষ্ট করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
এ ঘটনায় সিঙ্গুর এলাকার আবগারি দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, 'আবগারি দফতর দফায় দফায় ওই এলাকা গুলিতে অভিযান চালায়, এরপরেই ৫ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার ২২ হাজার লিটার ও ৬ তারিখ অর্থাৎ বুধবার ১৪ হাজার লিটার চোলাই ও চোলাই তৈরির সামগ্রী উদ্ধার করে। এই ঘটনায় বিমল রুইদাস, প্রশান্ত রুইদাস নামের ২ ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া এই বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ কারা জমিয়ে রেখেছিল! তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।'
বুধবার বাঁকুড়ায় খাতরার সভা থেকে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি সন্দেশখালি নিয়ে কথা না বললেও, খাতরা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, নন্দীগ্রাম আলাদা, সিঙ্গুর আলাদা। একটার সঙ্গে আরেকটার তুলনা করে হিংসা না ছড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, 'সিঙ্গুর সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নন্দীগ্রাম, খাতরা খাতরা, বিষ্ণুপুর বিষ্ণুপুর । এক এক জায়গার আলাদা আলাদা চেহারা। একটার সঙ্গে আর একটার তুলনা করে দাঙ্গা বাঁধিয়ে দিয়ে ভুল করবেন না। কোথাও রক্ত ঝরুক আমি চাই না। কোথাও অত্যাচার হোক চাই না ।'
তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, 'যারা যারা বড় কথা বলে বেড়াচ্ছে, খুলব ভান্ডার? ভান্ডারে কিন্তু অনেক কিছু জমা আছে। ভান্ডার যখন খুলব তখন বুঝতে পারবেন কোনটা ভুল কোনটা ঠিক। আমি জ্ঞানত কোনও ভুলকে প্রশ্রয় দিই না।' জঙ্গলমহল সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় সভা করেছেন । বুধবার বাঁকুড়ার সভার পর বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে সভা করে কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
সিঙ্গুর মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও সিঙ্গুরের জমিহারাদের এখনও কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল না। জমি ফেরতের বিষয়টিও কেন এখনও সম্পন্ন করা হয়নি। এ ব্যাপারে রাজ্যের অবস্থান কী? সিঙ্গুরের জমি ফেরত নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে চায় হাইকোর্ট। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যকে জানাতে হবে।
সিঙ্গুরের জমি ফেরত চেয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। জমি শুধু ফেরতই নয়, ফিরিয়ে দিতে হবে আগের অবস্থাতে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল। পূর্বে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, জমিদাতা কৃষকদের ক্ষতিপূরণ সহ জমি ফেরত এর বিষয় বিবেচনা করবে রাজ্য। কিন্তু আবেদনকারীদের দাবি, রাজ্যের কাছে বহুবার আবেদন করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে জমি ফেরতের দাবি নিয়ে এবারে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে ভারতীয় শান্তি দল নামে একটি সংগঠন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও সিঙ্গুরের জমিহারাদের ক্ষতিপূরণ ও জমি ফেরত দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ফলে উদ্বিগ্ন প্রধান বিচারপতি জানতে চান রাজ্যের অবস্থান। আগামী চার সপ্তাহ পর রাজ্যকে জানাতে হবে তার উত্তর। রাজ্যকে জানাতে হবে সিঙ্গুরের জমি ফেরত ও ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কি ভাবছে তারা। আগামী চার সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সিঙ্গুরের জমি মামলায় সালিশি আদালত রায় নির্দেশ দিয়েছে টাটাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে। ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৭৬৬ কোটি টাকা টাটাদের দিতে হবে রাজ্যের শিল্প নিগমকে। এরমধ্যেই সোমবার সিঙ্গুর নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন ভবানীপুরে বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সালিশি আদালতের নির্দেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। এমনকী রাজ্যের তরফে ৭৬৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হবে কীনা, তাও স্পষ্ট করেননি। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, জমিহারাদের মাসিক ২ হাজার টাকা দেয় রাজ্য। দেওয়া হয় চালও। অর্থাৎ রাজ্য তাঁদের পরিবারকে প্রতিপালন করার ব্যবস্থা করেছে জানান মমতা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, সিঙ্গুর প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সিঙ্গুরবাসী এতদিন তাঁর এই কথার অপেক্ষাতেই ছিলেন। পাশাপাশি এদিন নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর অভিযোগ, নিজের নামে স্টেডিয়াম তৈরি করে তিনি কখনও প্রচার চান না।
সিঙ্গুর নিয়ে টাটা গোষ্ঠীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সেই নির্দেশ দিয়েছে আর্বিট্রাল ট্রাইব্যুনাল। সূত্রের খবর, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে রাজ্য সরকার। এবং তারজন্য ইতিমধ্যে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের একাধিক শীর্ষ আমলা একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে এবিষয়ে কথাও বলেছেন।
উল্লেখ্য টাটা মোটরসকে ৭৫৬.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আর্বিট্রাল ট্রাইব্যুনাল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট না সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হবে সেনিয়েও আইনজীবী সঙ্গে রাজ্যের আলোচনা চলছে বলে সূত্রের খবর।
অর্বিট্রাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুযায়ী,টাটা মোটরসকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো ক্ষতিপূরণ শোধ না হওয়া পর্যন্ত ১১ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গুর মামলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের মূল্য চোকাতে হবে গোটা রাজ্যকে। কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের মূল্য চোকাবে রাজ্য! প্রশ্ন উঠছে বিরোধী মহলে। আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালে ন্যানো কারখানার ক্ষতিপূরণ মামলার রায় গিয়েছে টাটা মোটরসের পক্ষে। ট্রাইবুনালের নির্দেশ, রাজ্য ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে টাটা মোটরসকে। সঙ্গে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদও যুক্ত হবে। সব মিলিয়ে সুদ-সহ প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে।
এরপরই কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ জানান, 'সিঙ্গুর আন্দোলন করে লাভ হয়েছে মমতার, এখন রাজ্যবাসীর করের টাকায় কেন এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ মমতা দিক।' সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছেন। বলছেন, “রাজ্য সরকার তো দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। এবার তো রাস্তার ভিক্ষার পাত্র নিয়ে বসতে হবে। রাজ্য সরকারের অবিমৃষ্যকারিতার দায় এখন পশ্চিমবঙ্গবাসীকে দিতে হবে। এত কোটি কোটি টাকা কোথায় পাবে! এ তো সাংঘাতিক অবস্থা। অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে চালু হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি হয়ে যাবে। নবান্ন বিক্রি হয়ে যাবে।'
ট্রাইবুনালের এই নির্দেশের পর কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন বঙ্গ বিজেপি নেতা অনুপম পাত্র জানাচ্ছেন, জমি অধিগ্রহণ যেভাবে করা হয়েছিল তার বিরোধিতা করেছিল বঙ্গ বিজেপি। তবে যেহেতু জমির চরিত্র বদলে গিয়েছিল, তাই জমি মালিক ও ভাগচাষিদের যাতে স্বার্থরক্ষা হয়, সেই ব্যবস্থা করে প্রকল্প চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি।
টাটা মোটরস-এর (Tata Motors) ন্যানো মামলায় জোর ধাক্কা রাজ্যের। অবশেষে এই মামলায় জয় পেল টাটা মোটরস। টাটা মোটরস সংস্থাকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে। ৩০ অক্টোবর, মঙ্গলবার সিঙ্গুরে (Singur) ন্যানো গাড়ির কারখানা বন্ধের প্রেক্ষিতে এই রায় দিল তিন সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে এবং মামলার প্রক্রিয়ার জন্য আরও ১ কোটি টাকা দিতে হবে। ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যই এই রায়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার জানা গিয়েছে, সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ায় টাটাকে সুদসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে। তিন সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের তরফে জানা গিয়েছে, সুদ সহ ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে। ২০১৬ থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মামলার খরচের জন্য আরও ১ কোটি টাকা দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে। তিন সদস্যর বেঞ্চে এই মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। অবশেষে আজ এই ঐতিহাসিক রায় দিল আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল।
সাতসকালে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। দুটি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে (Accident) মৃত্যু (Death) দুই ব্যক্তির। আহত (Injured) আরও দুই জন। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে সিঙ্গুরের (Singur) পুরুষোত্তমপুর এলাকায় বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোডে। এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিস (Police)। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আটকে পড়া দুটি লরির দুই চালক ও দুইজন খালাসিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিস। তবে তাঁদের মধ্যে দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে দু'জন। এই ঘটনার জেরে বেশ কিছুক্ষণ ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর ৫ টা নাগাদ সিঙ্গুরের দিকে থেকে একটি বালি বোঝাই লরি বৈদ্যবাটির দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে বৈদ্যবাটির দিক থেকে আসা একটি লরি সিঙ্গুরের দিকে আসছিল। আর সেই সময়ই সিঙ্গুরের পুরুষোত্তমপুর কলাহাট এলাকায় দুটি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। যার ফলে দুটি লরির সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এমনকি সংঘর্ষের জোরালো আওয়াজে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনার পরেই খবর দেওয়া হয় থানায়। তারপর পুলিস ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে ঘটনার পর ক্রেন এনে লরি দুটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রায় ২ ঘণ্টা পর ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে ওই রাস্তায়।
লরির ধাক্কায় (Accident) মৃত্যু (Death) হল এক ব্যক্তির। গুরুতর আহত (Injured) অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও ১ জন। বৃহস্পতিবার রাত ৭ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে সিঙ্গুরের (Singur) নসিবপুর বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোডে। ঘটনার পর ঘাতক লরিটিকে আটক করার দাবিতে প্রায় ১ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন এবং পুলিসকে (Police) ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। রাস্তা অবরোধের ফলে বন্ধ হয়ে যায় বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোডের যান চলাচল। ঘণ্টাখানেক পর পুলিসি আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম বিকাশ বাগ (৪২) এবং আহত ব্যক্তির নাম সন্ন্যাসী মালিক। তাঁরা দুজনেই সিঙ্গুরের দেশাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সিঙ্গুরের দিক থেকে একটি মোটর ভ্যানে করে ওই দুই ব্যক্তি দিয়াড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। সেসময় নসিবপুর বিশালক্ষীতলায় একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপর পড়ে থাকেন দুই ব্যক্তি। এমনকি ধাক্কা লাগার ফলে তাঁদের মোটর ভ্যানটিও দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয়রাই আহত দু'জনকে উদ্ধার করে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপরজন গুরুতর জখম হওয়ায় তাঁকে চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা।
ইতিমধ্যেই ঘাতক লরিটিকে আটক করেছে পুলিস। এমনকি এই ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে পুলিস।
নাকা তল্লাশির সময় গাঁজা (weed) ভর্তি একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করল হুগলি (Hooghly) জেলা গ্রামীণ পুলিসের সিঙ্গুর থানা (Singur Police)। সূত্রের খবর, ওই গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৮৭ প্যাকেট গাঁজা। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। গাঁজা পাচারের ঘটনায় গ্ৰেফতার (Arrest) করা হয়েছে এক মহিলা সহ তিনজনকে।
জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিস বিভিন্ন জায়গায় নাকা তল্লাশি শুরু করে। সিঙ্গুর থানা থেকে ১০০ মিটার দূরে সিঙ্গুর বিডিও এলাকায় একটি গাড়ি দেখে সন্দেহ হওয়ায় গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে কর্তব্যরত পুলিস। পুলিসের জিজ্ঞাসাবাদে অসংগতিতে পড়ে যায় গাড়িতে থাকা তিনজন। তখনই পুলিস গাড়িটির ভিতরে তল্লাশি করা শুরু করে। তল্লাশি চলাকালীনই গাড়ির সিটের তলা থেকে ৮৭ প্যাকেট গাঁজা উদ্ধার করে পুলিস। প্রত্যেকটি প্যাকেটে প্রায় এক কিলো করে গাঁজা রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ছয় লক্ষ টাকা।
হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিসের ডিএসপি জানান, পাচারকারীরা উড়িষ্যার তাজপুর জেলা থেকে গাঁজা নিয়ে আসছিল। সেই গাঁজাটি চন্দননগরের কোনও এক ব্যক্তিকে সরবরাহ করার কথা ছিল। এমনকি যাতে পুলিসের নজর এড়ানো যায় তাই পাচারকারীরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে জাতীয় সড়ক এড়িয়ে গিয়ে বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তা ধরে আসছিল। গাড়িটি চন্ডীতলার আঁইয়া, শিয়াখালা, বনমালীপুর, বাসুবাটি হয়ে যখন সিঙ্গুরে ঢোকে তখনই গাড়িটিকে আটক করে তল্লাশি শুরু করে পুলিস। তারপরেই গাঁজা পাচারের পর্দা ফাঁস হয়। তিনি আরও জানান, গ্ৰেফতার হওয়া ওই তিনজন এত পরিমান গাঁজা কাদের সরবরাহ করতো এবং এই চক্রের সাথে আর কারা কারা যুক্ত আছে তা তদন্ত করে দেখছেন পুলিস আধিকারিকরা।
প্রায় একযুগের বেশি সময় পর বঙ্গ রাজনীতিতে ফের চর্চায় সিঙ্গুর প্রসঙ্গ (Singur Issue)। বুধবার উত্তরবঙ্গে (North Bengal) বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata) দাবি করেন, 'টাটাকে আমি তাড়াইনি, তাড়িয়েছে সিপিএম। আমরা তো জমি ফেরত দিয়েছি। আপনারা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গিয়েছিলেন। জমির তো অভাব নেই, জোর করে কেন জমি নেবো। আমরাও প্রজেক্ট করেছি।' জোর গলায় তিনি জানান, কেউ কেউ বাজে কথা বলছে আমি টাটাকে তাড়িয়েছি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির প্রেক্ষিতে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, 'মুখ্যমন্ত্রী মাঝে মধ্যেই মিথ্যা কথা বলেন। আজকেও বললেন।' সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, উনি কখনও জীবনে সত্যি কথা বলেছেন? ওর রাজনৈতিক উত্থান মিথ্যা কথা বলেই। টাটার কারখানাকে বুলডোজার দিয়ে ভাঙিয়ে এখন মানুষকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যা বলছেন এবং অনবরত মিথ্যা বলে চলেছেন।
এদিকে, শুধু সিঙ্গুর প্রসঙ্গ নয় উত্তরবঙ্গ বাংলারই অঙ্গ কোনও রাজ্য ভাগ নয়। এই ইঙ্গিতও ঠারেঠরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আবেদন, কোনও প্ররোচনা ভাগভাগিতে পা দেবেন না। বঙ্গভঙ্গ নয় আমরা চাই সঙ্গ।