অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সঙ্গীতশিল্পী উস্তাদ রশিদ খান। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই জানা গিয়েছিল, তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি ঘটেই চলেছে। অতি সঙ্কটজনক তিনি। এরপর মঙ্গলবার দুপুর ৩.৪৫ মিনিটে তাঁর প্রয়াণের খবর জানা গেল। শোকের ছায়া পুরো সঙ্গীত জগতে।
মঙ্গলবার জানা গিয়েছিল, রশিদ খানকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট অর্থাৎ আইসিইউ-র ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছিল। রাখা হয়েছিল সম্পূর্ণ অক্সিজেনের সাহায্যে। হাসপাতাল সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, শিল্পীর পালস রেট, অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছিল। শারীরিক অবস্থা এতটাই সঙ্কটজনক ছিল যে কাজ হচ্ছিল না ভেন্টিলেশনেও। জরুরি ভিত্তিতে মেডিক্যাল বোর্ড আলোচনায় বসেছিল। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তাঁর শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হলেও মঙ্গলবার তাঁর এতটা অবনতি নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরা। এর পরই হাসপাতাল সূত্রে জানা গেল, শেষ রক্ষা আর হল না। না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী।
একমাসেরও বেশি সময় ধরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী হাসপাতালে ভর্তি। অতীতে তাঁর প্রস্টেট ক্যানসার হয়েছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু পরে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ায় তাঁকে পিয়ারলেসে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাতেই পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে পড়েছে সারা রাজ্যজুড়ে।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভিত হলেও বলিউড ও টলিউডের একাধিক সিনেমায় গান গেয়েছেন উস্তাদ রশিদ খান। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় ‘আওগে যব তুম সজনা’ গানের মাধ্যমে সারা দেশের মন জয় করে নেন তিনি। শাহরুখ খানের ‘মাই নেম ইজ খান’ সিনেমায় ‘আল্লা হ্যায় রহেম’ গানটি গেয়েছেন শিল্পী। ‘মান্টো’র ‘বোল কে লব আজাদ হ্যায়’ থেকে ‘মিতিন মাসি’র ‘বরসাত সাওয়ান’— প্রত্যেক গানে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন শিল্পী। ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী পেয়েছিলেন উস্তাদ রশিদ খান। সেবছরই সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান তিনি।
প্রয়াত বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী অনুপ ঘোষাল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শুক্রবার দুপুর ১.৪৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রয়াত গায়ক ও উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়কের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার কলকাতায় নিজের বাসভবনে দেহত্যাগ করেন অনুপ ঘোষাল। মূলত নজরুলগীতির জন্যই জনপ্রিয় ছিলেন অনুপ ঘোষাল। তবে নজরুলগীতি ছাড়াও তিনি বাংলা, হিন্দি-সহ অন্যান্য ভাষার চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’র মতো ছবিতে গান গেয়েছেন শিল্পী। সেখান থেকেই তাঁর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর কিছু কালজয়ী গান- ‘দেখোরে নয়ন মেলে’, ‘ভূতের রাজা দিলো বর’, ‘ও মন্ত্রী মশাই’, ‘মোরা দুজনায় রাজার জামাই’। ‘সাগিনা মাহাতো’ চলচ্চিত্রে তিনি সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১১ সালে তাঁকে 'নজরুল স্মৃতি পুরস্কার' ও ২০১৩ সালে 'সঙ্গীত মহাসম্মান' প্রদান করে।
অনুপ ঘোষালের মৃত্যুর খবরে শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "অনুপ ঘোষালের প্রয়াণে সঙ্গীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি অনুপ ঘোষালের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।"
চারিদিকে পুজোর মরশুম, এই সময়ে প্রায় ক্লাবেই সংগীতশিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই মতো সংগীতশিল্পী অদিতি মুন্সীকেও একাধিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই শোনা গিয়েছে, একাধিক শো বাতিল হয়েছে তাঁর। আর তাঁর এই শো বাতিল হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁর অনুরাগীরা। হঠাৎ তাঁর কী হল, একাধিক প্রশ্ন ভক্তদের। তার পরই অদিতি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে, তিনি অসুস্থ, তাঁর গলায় সংক্রমণ হয়েছে। তাই তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই একাধিক শো বাতিল করেছেন।
গায়িকা অদিতি মুন্সীর ভক্তি গীতি শুনলেই মন-প্রাণ জুড়ে যায়। ফলে তাঁর অনুরাগীও অগুনতি। উৎসবের মরশুমে একাধিক ক্লাব তাঁর গান করার কথা ছিল। কিন্তু একের পর এক শো বাতিল হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনুরাগীরা। তখনই খোদ অদিতি জানান, তিনি অসুস্থ, গলা খারাপ, কথাই বলতে পারছেন না তিনি। এই বিষয়ে জানতে পেরেই অনুরাগীরা তাঁর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য কামনা করেছেন।
সৌমেন সুর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কালজয়ী নাম। সাহিত্য রসিকদের হৃদয়ে তারাশঙ্কর আমৃত্যু বেঁচে থাকবেন। তাঁর গল্প বলার স্টাইল, ভাষা, চরিত্র গঠন চোখ বুজে বলা যায় অনবদ্য। তারাশঙ্করের গল্প উপন্যাসগুলো যদি চলচ্চিত্রায়িত না হত তাহলে আমরা জানতেই পারতাম না, উপন্যাসের পেছনে তিনি একজন মস্ত বড় গীতিকার। সিনেমায় তিনি প্রথম গান লেখেন তারি লেখা গল্প 'কবি' ছবিতে। রবিন মজুমদারের কন্ঠ আর অনিল বাগচীর সুরে এবং লেখকের কথায় গানগুলো মন ছুঁয়ে যায়। কাব্যরসে ভরপুর, প্রেম ভালোবাসা, সব মিলিয়ে সংগীত মুখর ছবিটি দর্শক নিয়েছিল। পাশাপাশি রাইকমল, চাপাডাঙার বউ, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, ডাক হরকরা, , মঞ্জুরি অপেরা তারই কাহিনী একের পর এক গান লিখেছেন লেখক। সেই গান গীতা দত্ত, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, পঙ্কজ মল্লিক প্রভৃতি স্বনামধন্য গায়করা গান গেয়েছেন।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় গীতিকার হয়েছেন একটু বেশি বয়সে। প্রথম দিকে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা পড়লে এক বছর জেল হয়। এরপর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, তিনি সাহিত্য সেবায় দেশকে পূজিত করবেন বলে, সূচিত হয় সাহিত্য সাধনা। হাঁসুলী বাঁকের উপকথা ছবির জন্য তপন সিনহা বীরভূমে লোকেশন দেখতে বেরিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গী ছিলেন তারাশঙ্কর। তিনি ক্রমাগত হেঁটে চলেছেন আর, বিভিন্ন অঞ্চলের মাহাত্ম্য নিয়ে ইতিহাস বলছেন। ডাক হরকরা ছবিতে গীতা দত্তের মুখে 'কাঁচের চুড়ির ছটা, ছেঁয়া বাজের ছলনা/ আগুনেতে ছটা নাকি, ছটায় আগুন বলো না... ' তারাশঙ্করের লেখা এই গানটি আজও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তিনি যেসব ছবিতে গান লিখেছেন তার প্রায় সবকটি কাহিনী তারই।
কত গুণী মানুষ শিল্পের সম্ভারে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। শিল্পী আলোয় আসে, আলোয় মিশে যায়, রেখে যাই তার অমর কীর্তি। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তারই মাঝে একজন। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেনও।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম (Atif Aslam)। পাকিস্তানের গায়ক হওয়ার পাশাপাশি বলিউডেও একাধিক গান গেয়েছেন তিনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দু'দেশে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা অগুনতি। কিন্তু এনার মত গায়ককে এবারে মঞ্চে দাঁড়িয়ে হেনস্থার শিকার হতে হল। এক ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মঞ্চে দাঁড়িয়ে গান গাইছেন আতিফ, সেসময়েই এক ভক্ত তাঁর মুখে ছুড়ে মারলেন টাকা। এই দেখেই গান থামিয়ে দেন আতিফ, এরপরই তিনি এমন কথা বললেন যা শুনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গিয়েছে তাঁর ভক্তদের।
এর আগেও একবার অরিজিৎ সিং-কে মঞ্চে হেনস্থার শিকার হতে হয়। এবারে আতিফকেও মঞ্চে পারফর্ম করাকালীন হেনস্থার শিকার হতে হল। আমেরিকায় এক কনসার্টে গাইতে গিয়ে আতিফের দিকে টাকা ছুড়ে মারেন এক শ্রোতা। তবে মেজাজ হারাননি আতিফ। গান থামিয়ে গলা নামিয়ে ওই অনুরাগীর উদ্দেশে বলেন, "বন্ধু, এই টাকাটা দান করো, আমার দিকে ছুড়ো না। এটা টাকার অসম্মান।"
"My friend, Donate this money, don't throw it at me, this is just disrespect to the money" How calmly he requested and gave a message to the jahil pakistanis who made this thing a culture. What a man he his, one and only undisputed pakistani star whom you should admire @itsaadee pic.twitter.com/KOSvUMvSha
— Faizi (@faizanriaz7_) October 24, 2023
কনসার্টে আসা দর্শকের এমন অভব্য আচরণে সচরাচর অনেক শিল্পীরাই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু আতিফ আসলাম যেভাবে সেই পরিস্থিতি সামলেছেন ও সেই শ্রোতাকে উপযুক্ত উত্তর দিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাঁর এই ভিডিও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
বিগত বেশ কয়েক মাসে বারবার সংবাদ মাধ্যমের পাতায় উঠে এসেছে বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমা জগতের জনপ্রিয় মিউজিক কম্পোজার এবং গায়ক এআর রহমানের (AR Rahman) নাম। কখনও কনসার্ট করতে গিয়ে রাতের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় মঞ্চে উঠে তাঁর গান থামিয়েছেন পুলিস। সম্প্রতি আবার তাঁরই কনসার্টে চরম অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছিল। এবার তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠল।
সম্প্রতি এক চিকিৎসকের দল সঙ্গীত জগতের এই তারকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সার্জনদের একটি অ্যাসোসিয়েশন এএসআইসিওএন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ ২০১৮ সালে গায়কের সঙ্গে একটি মিউজিক কনসার্টের চুক্তি হয়েছিল। একটি কনসার্ট করবেন বলে গায়ক না কি তাঁদের থেকে অগ্রিম ২৯ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরিবর্তে কোনও অনুষ্ঠানে করেননি।
যদিও এই অভিযোগ শোনার পরেই পদক্ষেপ করেছেন গায়ক। পাল্টা সার্জনদের অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে মানহানের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। একইসঙ্গে ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।
গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের (Shreya Ghoshal) অগুনতি ভক্ত চারিদিকে। তাঁর গান শুনতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়াও মুশকিল। শ্রেয়ার ব্যক্তিত্বেরও ভক্ত অনেক। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভীষণ পরিমিত। নিজের ব্যক্তিগত জীবন আড়ালেই রাখতে পছন্দ করেন। মাঝেমধ্যে সামাজিক মাধ্যমের পাতায় নিজের জীবনের দু'এক পশলা ঝলক দিয়ে থাকেন গায়িকা। এইবার সামাজিক মাধ্যমে তাঁর চোখের তারার সঙ্গে ছবি আপলোড করেছেন।
গায়িকার চোখের তারা আর কেউ না, তাঁর ছেলে দেবযান। চলতি বছরের মে মাসে দু বছর শেষ করেছে সে। মা শ্রেয়া ঘোষাল মাঝেমধ্যেই ছেলেকে গানের রিহার্সালে নিয়ে যান, কিংবা কনসার্টে নিয়ে যান। ছেলেকে কোলে নিয়েই গান ধরেন শ্রেয়া। ছোট্ট দেবযানও সবটা বুঝতে না পারলেও মুগ্ধ চোখে দেখে মা'কে। একরত্তির সঙ্গেই ছবি পোস্ট করেছেন গায়িকা।
লেখক শ্রীজাত, অরিজিৎ সিং-কে (Arijit Singh) নিয়ে একটি কথা বলেছিলেন, 'অরিজিৎ এমন একজন মানুষ, পাশে বসেও যাঁকে ছোঁয়া যায় না।' দেশে বিদেশের বাঙালিরা অরিজিতে বুঁদ হয়ে রয়েছেন। শুধু তাঁর গান নয়, তাঁর ব্যক্তিত্বের ভক্ত চারিদিকে। গুগল বলছে, এখনও পর্যন্ত ৪০০-এর বেশি গান গেয়েছেন অরিজিৎ। এত নাম-যশ খ্যাতির শীর্ষে থেকেও অহং ছুঁতে পারেনি গায়ককে। বরং 'মাটির মানুষ' কাকে বলে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ তিনি। এমন মানুষের সংস্পর্শে এলে কী অন্যরাও বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে সাদামাটা জীবনে ফেরত আসতে পারেন? সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও দেখে, এই আলোচনা চলছে নেটিজেনদের মধ্যে।
বুধবার রাত থেকে একটি ভিডিও ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অরিজিৎ সিংয়ের জিয়াগঞ্জের বাড়িতে গিয়েছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা গায়ক বাদশা। এর আগে যতবার বাদশাকে জনসমক্ষে দেখা গিয়েছে, তিনি কোনও না কোনও বিলাসবহুল গাড়িতে সওয়ার ছিলেন। বিএমডাব্লু, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যাম্বরগিনি, কি নেই বাদশার কাছে! কিন্তু জিয়াগঞ্জে এসে তিনি যেন অন্য মানুষ। সামান্য স্কুটি নিয়ে ঘুরে দেখলেন গ্রামের চারপাশ। তাঁর পথিকৃৎ হয়েছিলেন অরিজিৎ। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
অরিজিৎ বরাবরই সাদামাটা। এত অর্থ উপার্জন করেও মুম্বইতে অন্যান্য তারকাদের মতো পেন্টহাউজ নেই তাঁর। বরং তিনি শিকড়ের কাছাকাছি থাকতে আজও জিয়াগঞ্জেই থাকেন। রেকর্ডিং থাকলেই নিজের গ্রাম ছেড়ে শহরে যান। বাকি সময় তাঁর পরিবারের। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই তিনি ব্যাগ হাতে বাজারে যান। চলতি পথে পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দায়িত্বশীল বাবার মতো ছেলে-মেয়েকে স্কুলে দিতে যান, নিতে যান। আসলে অরিজিতের জীবন এতটাই সাধারণ যে প্রত্যেক পরতে আকর্ষণীয় এমন বিশেষ কিছুই নেই। তবে এমন নির্মোহ জীবনযাপন ঈর্ষণীয় তো বটেই।
গায়িকা ইমন চক্রবর্তীর (Iman Chakraborty) জন্মদিন ১৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার। তবে জন্মদিন (Birthday) আসার আগেই শুরু হয়ে গেল উদযাপন। মঙ্গলবারই পাওয়া গেল সেই ঝলক। গায়িকাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলেন তাঁরই ছাত্রছাত্রী এবং প্রোডাকশনের সহকর্মীরা। ইমনের রুচি তাঁরা জানেন, তাই তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন বৃদ্ধাশ্রমে। ইমনও সেখানে গিয়ে খুব খুশি।
জন্মদিনের সকালে ইমনকে দেখা গেল একেবারে সাধারণ চেহারায়। সাদা রঙের টপের সঙ্গে সবুজ ট্রাউজার্সে দেখা গিয়েছে গায়িকাকে। তাঁকে পেয়ে ভীষণ খুশি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা। ইমনকে তাঁরা নিজের করে নিয়েছিলেন। প্রবীণারা গান গেয়েছেন ইমনের জন্য। ইমনও গান শুনিয়েছেন তাঁদের। সেই মুহূর্তে সামাজিক মাধ্যমে লাইভও করেছিলেন গায়িকা।
জন্মদিনে খাওয়া দাওয়া হবে না, তা কি হয়! কেক কাটা থেকে দুপুরের ভোজ হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমেই। গায়িকার জন্মদিন উপলক্ষে মেনু ছিল, ভাত, ডাল, বেগুন ভাজা, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে চচ্চড়ি, সর্ষে ইলিশ, ফুলকপি আলুর তরকারি, পনির, চাটনি, পাঁপড় এবং শেষ পাতে ছিল মিষ্টি। ইমন নিজেই পরিবেশন করে, যত্ন নিয়ে খাইয়েছিলেন সকলকে।
ইমনের ছাত্রছাত্রী ও প্রোডাকশনের সদস্যরা তো ছিলেন। ইমনের স্বামী নীলাঞ্জনকেও দেখা গিয়েছে ইমনের পাশে। জন্মদিন এভাবে শুরু করে যে ইমনের মুখে হাসি ফুটেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কিছুদিন আগেই ধুমধাম করে মেয়ের জন্মদিন পালন করেছিলেন অনীক ধর (Aneek Dhar)। সোমবার বাড়িতে নতুন সদস্যের আগমনের খবর দিলেন গায়ক। তাঁর স্ত্রী দেবলীনা পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি আপলোড করে অনীক লিখেছেন, 'আজ ঈশ্বর আমাকে, দেবলীনাকে ও আমাদের পরিবারকে একটি সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন পুত্র সন্তান উপহার দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন।' জানা গিয়েছে, অনীকের স্ত্রী ও সন্তান দুজনেই সুস্থ রয়েছেন।
কিছুদিন আগেই দেবলীনার সাধের অনুষ্ঠান হয়েছিল বড় করে। এরপরেই জীবনে এল নতুন অধ্যায়। কেরিয়ার জীবনেও বেশ সফল অনীক। সারেগামাপা এর মঞ্চ থেকে গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন গায়ক। বহু অনুষ্ঠানে গান গেয়ে দর্শকদের মন জিতেছেন। ব্যক্তিগত জীবনও এবার জমজমাট হল সন্তানের আগমনে।
জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো 'সারেগামাপা'-এর মঞ্চ থেকে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন গায়ক সৌম্য চক্রবর্তী (Soumya Chakraborty)। বিয়েও করেছিলেন। যদিও সেই বিয়ে সুখের হয়নি। তবে প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদ ভুলে আবারও জীবন গুছিয়ে নিতে শুরু করেছেন গায়ক। রবিবারে সামাজিক মাধ্যমে নিজেই সুখবর দিয়েছেন সৌম্য। দীর্ঘদিন প্রেম করার পর, আংটি বদল করে বাগদান সেরেছেন তিনি। পাত্রীটি কে জানেন?
ইন্ডাস্ট্রির কেউ নয়, পাত্রীর নাম রিতিকা চক্রবর্তী। আইটিতে কর্মরতা তিনি। থাকেন ব্যাঙ্গালুরুতে। তিনি নাকি বরাবরই সৌম্যর গানের ভক্ত ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে গায়ককে ফলো করতেন, তাঁর গান শেয়ার করতেন, কমেন্ট করতেন। এমনভাবেই একদিন তাঁকে চোখে পরে সৌম্যর। শুরুতেই নাকি রিতিকাকে ভালো লেগে গিয়েছিল সৌম্যর। এরপর সামাজিক মাধ্যমেই টুকটাক কথাকে শুরু হয় তাঁদের মধ্যে। লকডাউনে সেই কথোপকথন বাড়ে। এরপর বন্ধুত্ব তৈরী হয়। সেই বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, প্রেম থেকে একসঙ্গে জীবন কাটাবেন বলে ঠিক করেন দু'জনে।
ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং আত্মীয়দের উপস্থিতিতে বাগদান সেরেছেন সৌম্য রিতিকা। চলতি বছরেই বিয়ের পিঁড়িতেও বসবেন। জানা গিয়েছে, ১৫ ডিসেম্বর বিয়ে করবেন তাঁরা। এদিকে রিতিকা ব্যাঙ্গালুরুতে কর্মরতা এবং সৌম্য কাজের জন্য বেশিরভাগ সময় মুম্বইতে থাকেন। দুই শহর মিলিয়েই নাকি তাঁদের সংসারজীবন শুরু হবে।
৮০-এর দশকে সিনেমা জগতের প্লে ব্যাকে ডেবিউ করেছিলেন কুমার শানু। তারপর দশকের পর দশক শ্রোতারা তাঁর গানে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। শোনা যায়, তাঁর গাওয়া 'যব কোয়ি বাত বিগড় যায়ে' গানটি শুনে আত্মহননের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলেন এক শ্রোতা। উইকিপিডিয়া বলছে, কুমার শানু (Kumar Shanu) ২৫ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন এখনও পর্যন্ত। হিন্দি ও বাংলা সংগীতজগৎকে তিনি শুধুই দিয়েছেন। বদলে কোনও স্বীকৃতিই তাঁর ভাগ্যে জোটেনি। এত বছর পরে অবশেষে এই নিয়ে মুখ খুললেন গায়ক।
এক সাক্ষাৎকারে গায়ক বলেন, 'আমার অবশ্যই একটি জাতীয় পুরস্কার পাওয়া উচিৎ। একটি পদ্মশ্রী পাওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু আমি এই নিয়ে ভাবিত নয়। এটি তাঁদের বিষয়। এটি অবশই একটি সম্মান, এবং ব্যথা লাগে। অবশ্যই ব্যথা লাগে কিন্তু আমি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। তোমার যদি যথেষ্ট আবেদন না থাকে এবং তেল দেওয়ার দক্ষতা না থাকে তাহলে এই পুরস্কার পাওয়া সম্ভব না। তুমি তখনই পুরস্কার পাবে, যখন তোমার আবেদন থাকবে।
এর আগেও শ্রোতারা অনেকবার কুমার শানুর জন্য গলা ফাটিয়েছেন। সামান্য জনপ্রিয়তা পেয়েই যেখানে হাতে পুরস্কার উঠে যাচ্ছে সেখানে এমন গায়কের হাতে কোনও পুরস্কার নেই, এই নিয়ে ক্ষোভ জমেছে তাঁর ভক্তদের মনেও। ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়ে যে কুমার শানুর মনেও অভিমান জমেছে, তা স্পষ্ট হল।
গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের (Shreya Ghoshal) সুরের মূর্ছনায় মোহিত আট থেকে আশি। বাংলা কিংবা হিন্দি গানে সীমাবদ্ধ রাখা যায় না শ্রেয়াকে। শ্রোতাদের মতে, শ্রেয়ার কণ্ঠে গানের দেবীর অবস্থান। তাই শ্রেয়া সম্পর্কিত যেকোনও ঘটনা নিয়েই স্পর্শকাতর দর্শকেরা। কিছু মাস আগে এমন এক ঘটনা ঘটেছিল, যা দেখে দর্শক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। 'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি' সিনেমার 'তুম ক্যায়া মিলে' গানটি মুক্তি পেয়েছিল। অরিজিতের সঙ্গে যৌথভাবে গানটি গাইলেও সেই গানে কোনওরকম ক্রেডিট দেওয়া হয়নি গায়িকাকে।
শ্রেয়া নিজে সামাজিক মাধ্যমে গানটির লিঙ্ক শেয়ার করেছিলেন। কিন্তু গানের ক্রেডিট লিস্টে অরিজিৎ সিংয়ের নাম লেখা থাকলেও, শ্রেয়ার নাম কেন নেই? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করলে পোস্টটি ডিলিট করে দেন গায়িকা। কিন্তু সেই ঘটনা ভোলেননি গায়িকার ভক্তরা। প্রশ্ন উঠেছিল, গায়িকা হিসেবে এত বছর কাটানোর পরেও কী লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার শ্রেয়া? এবার এই প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য দিলেন শ্রেয়া।
গায়িকা লিঙ্গ বৈষম্যের তত্ত্বকে সমর্থন করে বলেছেন, 'শুধু এই দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা। এই চিত্র কেবল সংগীত বা ছবির জগতে অভিনেত্রী বা সংগীতশিল্পীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিটি শিল্পে এটা চলে আসছে।'
কয়েক দশক ধরে গানের জগতকে সমৃদ্ধ করেছেন গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে (KK)। দেশজুড়ে তাঁর অগুন্তি ভক্ত। একবার সামনে থেকে গান শুনবেন বলে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে গিয়েছে কত ভক্ত। কিন্তু কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসেই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে গিয়েছিল। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল প্রয়াণ হয়েছিল গায়কের। তিনি চলে গিয়েছেন, কিন্তু তাঁর আওয়াজ রয়ে গিয়েছে ভক্তদের মনে। তবু দিনের শেষে অভাববোধ তো রয়েই যায়।
গায়কের পরিবার এখনও ভুলতে পারেননি তাঁকে। বিশেষ করে কেকে কন্যা তামারা, মাঝেমধ্যেই বাবাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা পোস্ট করে থাকেন। কেকের জন্মদিনে বাবার স্মৃতিতে ডুব দিয়েছেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে ছোটবেলার একটি ছবি দিয়েছেন। একইসঙ্গে বাবার জন্য তাঁর ভাবনা-মনের কথা ব্যক্ত করেছেন।
তামারা তাঁর বাবার সঙ্গে ছোটবেলার একটি ছবি পোস্ট করেছেন বুধবার। ছবিতে দেখা গিয়েছে, মেয়েকে কোলে নিয়ে পিয়ানো বাজানো শেখাচ্ছেন তিনি। এই ছবি শেয়ার করে, তামারা লিখেছেন, 'শুভ জন্মদিন বাবা, তোমাকে কতটা ভালোবাসি তা বর্ণনাতীত। তোমাকে খুব মনে পড়ে। ধন্যবাদ অন্তত আমার স্বপ্নে আসার জন্য।'
বাংলাদেশেই বেড়ে ওঠা মঈনুল আহসান নোবেলের (Moinul Ahsan Noble)। কিন্তু জনপ্রিয়তা পাওয়া এই পশ্চিমবঙ্গ থেকেই। জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো 'সারেগামাপা'-এর মঞ্চ থেকেই দুই বাংলায় এত নাম করেন গায়ক (Singer)। বর্তমানে তিনি মাঝে মধ্যেই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন। তবে এখন তাঁর নাম হয় না, বদনাম হয়। কয়েক মাস আগে নোবেল মদ্যপ অবস্থায় মঞ্চে গান গাইতে উঠেছিলেন। তাঁর আচরণে দর্শকেরা হাতের কাছে যা পেয়েছেন ছুড়ে মেরেছিলেন। মাঝে তিনি বলেছিলেন, নিজেকে শুধরাতে চান। তবে গায়ক এখনও যেই কি সেই।
শুক্রবার রাত থেকেই সামাজিক মাধ্যমে নোবেলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমে। বাংলাদেশের কালিয়াগঞ্জের বড়দিয়া বিদ্যুৎ অফিস এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটান গায়ক। নিজের মোটরবাইক নিয়ে ধাক্কা মারেন, স্থানীয় একটি বাড়ির সামনে দাঁড় করানো মোটরবাইককে। আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। এরপরেই সকলে চিনতে পারেন নোবেলকে। স্থানীয়রা তাঁকে তুলে চেয়ারে বসান, এরপরই প্রলাপ বকতে থাকেন গায়ক। সেই ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করেন নেটিজেনরা।
তবে নোবেলের পরিস্থিতি দেখে নেট মাধ্যমে দর্শকরা তাঁকে করুণা করছেন। সকলেই বলছেন, মদ কিকরে একটি মানুষকে শেষ করে দিতে পারে, তাঁর উদাহরণ নোবেল। এমন সম্ভাবনাময় গায়ক এখন যেন সমালোচনার স্রোতে বইছেন। সব দেখে হতাশ, নোবেলের একদা ভক্ত-অনুরাগীরা।