
বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন সিলিং ফ্যান খুলে বিপত্তি। হাওড়ার (Howrah) জগৎবল্লভপুর কালিতলা বাজার এলাকার গোপেন্দ্র স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। জানা গিয়েছে, স্কুলে ক্লাস চালকালীন একটি সিলিং ফ্যান (Ceiling Fan) হঠাৎ-ই খুলে পড়ে। ঘটনায় আহত হয় প্রথম শ্রেণীর ২ পড়ুয়া। একজনের মাথায় গুরুতর চোট লাগে, আর অপরজনের চোখে এবং মাথায় আঘাত লাগে। দু'জনকেই স্থানীয় জগৎবল্লভপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্কুলের বাকি পড়ুয়াদের মধ্যে।
আহত পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যরা বলেন, স্কুলের পরিচর্যা সঠিকভাবে হচ্ছে না। সেকারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর স্কুলের শিক্ষকেরা ঘটনাটি কাউকে না জানানোর কথা বলেন। এমনকি চিকিৎসার যাবতীয় খরচ দিয়ে দেবেনও বলেন। কিন্তু ভবিষ্যতে আরও বড় কোনও দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। সেকারণে এখনই স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক হতে হবে বলে মনে করছেন আহত পড়ুয়ার অভিভাবকেরা।
স্কুলেও নিরাপদ নয় শিশুরা? স্কুলের ঠিকমতো পরিচর্যার অভাবে জখম হচ্ছে পড়ুয়া? যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে বেঞ্চ থেকে পড়ে চোট পেয়েছে। ফ্যান খুলে গিয়ে আহত হওয়ার অভিযোগ মিথ্যে।
একদিকে যখন বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো নিয়ে উঠছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। ঠিক তখনই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনা আরও একবার প্রশ্ন তুলছে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে।
বেহালায় পথ দুর্ঘটনায় ছোট্ট সৌরনীলের মর্মান্তিক মৃত্যুর রেশ এখনও কাটেনি। ওই ঘটনার পর থেকেই প্রশ্নের মুখে ট্রাফিক ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। ছোট্ট সৌরনীলের মৃত্যুতে যে টনক নড়েনি, তার আরও একবার প্রমাণ মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরে। ফের পথ দুর্ঘটনার কবলে স্কুল পড়ুয়া ও তার মা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। প্রতিবাদে মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন উদয়পল্লী-কুইকোটা রাস্তা অবরোধ করেন এলাকাবাসীরা। ভাঙচুরও করা হয় ঘাতক গাড়িটিকে।
জানা গিয়েছে, রাস্তা পারাপারের সময় মা ও ছেলেকে পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা মারে একটি লরি। একরত্তি স্কুল পড়ুয়া কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর জখম হয়েছেন মহিলা। ঘটনাস্থলে পুলিস গিয়েও কোনও সুব্যবস্থা করতে পারেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পথ দুর্ঘটনার পাশাপাশি বেহাল রাস্তা ঘিরেও সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ, একাধিক অবরোধ-বিক্ষোভ করেও কোনও সংস্কার হয়নি রাস্তার। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও হয়নি সমস্যার সমাধান।
এর আগেও একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে এই রাস্তায়। তারপরও টনক নড়েনি প্রশাসনের। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে কোতোয়ালি থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। এ রাজ্যে একাধিকবার পথ দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছে। তারপরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, প্রশাসনের তরফে। তবে কি সাধারণ মানুষের প্রাণের দাম নেই প্রশাসনের কাছে? উঠছে প্রশ্ন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যু নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ব়্যাগিংয়ের (Ragging) কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। এবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার (Habra) একটি স্কুলে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, ক্লাস নাইনের একটি ছাত্রকে ব়্যাগিং করে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। এবং নিজেকে বাঁচাতে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় সে। পরে অবশ্য নৈশ প্রহরীরা উদ্ধার করে নিয়ে আসে। অভিযোগকারী ছাত্রের নাম সাব্বার হোসেন।
জানা গিয়েছে, সাব্বার বাদুড়িয়া থানা এলাকার বাসিন্দা। সে বাণীপুর জহর নবোদয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। স্কুলেরই হস্টেলে থাকত সে। তার অভিযোগ, স্কুলেরই কয়েকজন উঁচু ক্লাসের পড়ুয়া তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। জ্যামিতির কাঁটা দিয়েও তার শরীরে আঘাত করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়েছিল যে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
সে আরও জানিয়েছে, নীচু ক্লাসের পড়ুয়ারা খাবার দাবার নিয়ে গেলে তা খেয়ে নিত সিনিয়ররা। এমনকী জল এনে না দিলে মারধর করা হত বলেও অভিযোগ সাব্বারের। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢোলাহাটের মাদ্রাসা স্কুলে শৌচালয়ে নাবালিকাকে আটকে রেখে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত পার্শ্বশিক্ষক। তবুও আতঙ্ক কাটেনি পড়ুয়া ও অভিভাবকদের। সেকারণেই এখনও ওই মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের পাঠাতে চাইছেন না তাদের অভিভাবক। ওই স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক জানান, এই ঘটনা শোনার পর থেকে মেয়ে, স্কুল তো দূর কোনও গৃহ শিক্ষকের কাছেও পড়তে যেতে চাইছে না। এ অবস্থায় পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে রিতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। এছাড়া এ ঘটনায় স্কুল কতৃপক্ষের উপরও ক্ষিপ্ত স্থানীয়রা।
সূত্রের খবর, যৌন নিগ্রহের পর ওই ছাত্রীকে স্কুলের শৌচালয়ে আটকে রেখে চম্পট দেয় অভিযুক্ত পার্শ্ব শিক্ষক। ঘটনার খবর পেয়েই ওই নাবালিকার পরিবার ঢোলাহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, অভিযোগের ভিত্তিতে পার্শ্বশিক্ষক গ্রেফতার হলেও নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে তৃণমূল নেতারা। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে অভিযোগ, এই ঘটনাকে কার্যত মিথ্যে প্রমান করার চেষ্টা করছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ, এবং তাঁদের সাহায্য করছে তৃণমূল। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই মাদ্রাসা বিদ্যালয়ে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই, শুধু পার্শ্বশিক্ষক দ্বারা গোটা বিদ্যালয় চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়দের আরও গুরুত্ব অভিযোগ, এর আগেও অভিযুক্ত ওই পার্শ্বশিক্ষকের উপর অন্য ছাত্রীদের উতক্ত করার অভিযোগ ছি, সব জানা সত্ত্বেও প্রধান শিক্ষক তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন। নির্যাতিতার দাদা জানিয়েছেন, 'তার বোনের উপর ওই বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষকের এই আচরণ কে ধিক্কার জানাই।' এবং ওই অভিযুক্ত পার্শ্বশিক্ষকের উচিত সাজার দাবি করেছেন নির্যাতিতার পরিবার ও অন্যান্য অভিভাবকরা।
পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ মজবুত করতে খানিকটা জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী হাতে-কলমে শিক্ষার উপর জোর দেবে রাজ্য সরকারের। শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার, সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট গোটা বিষয়টির উপর নজরদারি রাখবেন। এমনকি গ্রীষ্মর ছুটিতে ছাত্রছাত্রীরা কী কী করবে, তার গাইডলাইন প্রকাশ করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। নির্দেশিকা মেনে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের এই ছুটিতে নতুন নতুন কাজ দেওয়া হবে। প্রত্যেক ক্লাসের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা আলাদা কাজ দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস আরও নতুন করে গড়ে তুলতেই এই বিশেষ উদ্যোগ।
দেখুন কী সেই গাইডলাইনগুলি--
১.পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের প্রকৃতি সচেতন নিয়ে কাজ দেওয়া হবে। তা নিয়ে গবেষণা করে পরে সেই বিষয়ে লিখতে হবে। এমনকি এই পুরো কাজ শেষ করতে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় দেওয়া হবে ছাত্রছাত্রীদের।
২. সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়ারা বিজ্ঞান কেন্দ্র বা পেশাগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে। সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দূরত্ব স্কুল থেকে অন্তত ৩ কিলোমিটারের মধ্যেই হতে হবে। ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে যা শিখবে তার উপর নির্ভর করেই কাজ করবে পড়ুয়ারা।
৩. দশম শ্রেণীর পড়ুয়াদের ব্যাংক, কলেজ, গ্রন্থাগারে পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এটি তাদের পেশাগত জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এমনকি ঠিক একই রকমভাবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদেরও পেশাগত পাঠ নিতে হবে।
ঠিক এমনই গাইডলাইন পেশ করা হয়েছে শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে।