অভিনেত্রী সানা খান (Sana Khan)। একসময় হিন্দি ধারাবাহিক এবং সিনেমা জগতের নিয়মিত মুখ ছিলেন। কিন্তু খুব বেশিদিন গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে থাকতে চাননি অভিনেত্রী। শোনা যায়, ইন্ডাস্ট্রির কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর। সেই সম্পর্ক শেষে সানা তিক্ততায় পরিপূর্ন হয়ে উঠেছিলেন। সেই রাগ-ক্ষোভ থেকেই বলিউড ছেড়েছিলেন অভিনেত্রী। এরপর বিয়ে করেছিলেন পীরজাদা আনাস সায়াদকে। তাঁর সঙ্গেই পুত্র সন্তান এলো সানার কোলে।
বিয়ের তিন বছরের মাথায় অন্তঃসত্বা হয়েছিলেন সানা। আনন্দের সঙ্গে নিজের মাতৃত্বযাপন করেছেন অভিনেত্রী। আল্লাহ তাঁর পাথেয় হয়েছেন। জাঁকজকমক বসন ছেড়ে সেই কবেই হিজাব পরেছেন। অভিনয় জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে একেবারেই নিজের মত দিনযাপন করেছেন অভিনেত্রী। নিজের সৌন্দর্য এবং ধার্মিক পোশাকের একটি ব্র্যান্ড তৈরী করেছেন সানা। সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন।
৬ জুলাই সানা সামাজিক মধ্যে লেখেন, 'আল্লাহ যেন আমাদের সন্তানের জন্য আমাদের যথার্থ তৈরী করেন। ঈশ্বরের সম্পত্তি সবচেয়ে সুন্দর। আপনাদের ভালোবাসা এবং প্রার্থনার জন্য আল্লাহ আপনাদের দয়া দৃষ্টিতে রাখুন।' সানা পোস্টেও লিখেছেন, 'আল্লাহ আমাদের ছেলে দিয়েছেন।' সব মিলিয়ে খান পরিবারে যে উৎসব শুরু হয়েছে তা হলফ করে বলা যায়।'
সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা সানা খানের (Sana Khan) একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে সমাজমাধ্যমে। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এমন কী দেখা গিয়েছে ভিডিওতে? দেখা গিয়েছে, সানা খানের স্বামী মুফতি আনাস সাইদ (Mufti Anas Sayed) তাঁকে একটি পার্টিতে লোকজনের মাঝখান দিয়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কীভাবে তাঁর সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে পারেন তা নিয়ে মুফতিকে তুলোধনা করেছে নেটিজেনরা। অন্যদিকে এই ভিডিও নিয়ে জল্পনা শুরু হতেই দেখা গিয়েছে, সানা তাঁর স্বামীর পক্ষ নিয়ে সাফাই দিয়েছেন। কী বললেন তিনি?
ইফতার পার্টির (Iftar Party) আয়োজন করেছিলেন প্রাক্তন এমএলএ বাবা সিদ্দিকী এবং তাঁর ছেলে জিসান সিদ্দিকী। সেই অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রিত ছিলেন সানা ও তাঁর স্বামী। সেখানেই এই ঘটনাটি ঘটেছিল। দেখা গিয়েছিল, চারপাশে পাপারাৎজি-সেলেবদের ভিড়, তারমধ্যে সানাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল, তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল তাঁর যেন শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে, হাঁটতেও পারছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্বামীর সানার প্রতি এরূপ আচরণ মেনে নিতে পারেনি নেট দুনিয়া। ফলে শুরু হয় তাঁকে নিয়ে কটূক্তি।
এরপর এই ভিডিও সানার নজরে পড়তেই তিনি তাঁর স্বামীর এরূপ আচরণ নিয়ে বিশ্লেষণ দিয়ে বলেছেন, 'আমার এখনই নজরে এসেছে ভিডিওটি। আমি জানি ব্যাপারটি খুব অদ্ভুত। আসলে আমরা আমাদের ড্রাইভারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না, তাই অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। ফলে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম ও ঘামতে শুরু করেছিলাম। তাই মুফতি আমায় তাড়াতাড়ি করে ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন যাতে আমি বসতে পারি ও জল খেতে পারি। আমিই তাঁকে বলেছিলাম পাপরাৎজিদের বিরক্ত না করে তাড়াতাড়ি যেতে। তাই বিষয়টিকে অন্যভাবে নেবেন না।'
বিনোদন জগত্ ছেড়ে সানা খান (Actress Sana Khan) বিয়ে করেন মুফতি আনাস সঈদকে। বিয়ের ঠিক তিন বছরের মধ্যে সন্তানসম্ভবা সানা খান। নিজের মাতৃত্বের (Mom to be) সেই সুখবর দিলেন খোদ সানা। এক সাক্ষাত্কারে এসে প্রথম সন্তান নিয়ে কিছু ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন তিনি। ২০০৫ সালে ‘ইয়ে হ্যায় হাই সোসাইটি’ ছবি দিয়ে প্রথম বলিউডে অভিনয় শুরু সানার। হিন্দি, তেলেগু, তামিল-সহ মোট পাঁচ ভাষায় কাজ করেছেন সানা। এছাড়াও বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনেও দেখা গিয়েছে সানা খানকে। ছোট পর্দায় বেশ জনপ্রিয়তা বাড়ছিলো অভিনেত্রী সানার। ঠিক সেই সময়ে ধর্মীয় কারণে তিনি ছেড়ে দেন অভিনয় জগৎ।
সানা ২০২০-র নভেম্বর মাসে বিয়ে করেন একজন মৌলবী, যিনি পেশায় ইসলাম ধর্মের গবেষক। বিয়ের ঠিক তিন বছরের মাথায় সন্তানসম্ভবা সানা খান।
সানা সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমি চাই আমার সন্তান আলিম হয়। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আলিম মানে যে বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী। এই সময়টা একেবারেই আলাদা। একটা সুন্দর অনুভূতির অভিজ্ঞতা।'