'মানুষ হাহাকার করছে, পথে বসে আছে, চাকরি পাচ্ছে না, বেতন বন্ধ হয়ে আছে, আর ক্লাব গুলিকে পুজোর জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে।' শুক্রবার দু্র্গাপুজোর অনুমতি চেয়ে একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্যই করলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ।
সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোর অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে তমলুক পুরসভার একটি ক্লাব। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানতে চান, কত গুলো পুজো হয় ওই এলাকায়? সবাই কি অনুদান পায়? এসবের পরেই বিচারপতি সিংহ বলেন, ‘‘আমি অনেক মামলা শুনেছি, যেখানে মানুষ বেতন পাচ্ছেন না, চাকরি পাচ্ছেন না, পেনশন পাচ্ছে না। আর পুজো কমিটিকে টাকা দেওয়া হচ্ছে!’’
এর পরেই বিচারপতি পুজো কমিটির উদ্দেশে বলেন, ‘‘জেলাশাসকের দফতরে পুজো নিয়ে বৈঠকে হবে। সেখানে যান। কী বলেন, দেখুন।’’ তিনি এই প্রশ্নও তোলেন যে, গত বছর ওই পুজোর অনুমিত ছিল। তা হলে এ বছর কেন আটকানো হচ্ছে।
নেই রাজ্যে বেতন বাড়ল বিধায়কের। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এমনই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, রাজ্যের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়ক স্তরে সবারই ৪০ হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বেতন বাড়াবেন না বলেই জানান।
সূত্রের খবর, রাজ্যের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করা হল। প্রতি স্তরেই ৪০ হাজার টাকা করে বেতন বৃদ্ধি করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় তা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের বিধায়কদের বেতন দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম। তাই আমাদের সরকার বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
মূলত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়ক— এই তিন স্তরে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিধায়কদের বেতন ছিল প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা। তা বেড়ে হল ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এত দিন মাসে ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে পেতেন। এখন থেকে তাঁরা পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এ ছাড়া, রাজ্যে যে পূর্ণমন্ত্রীরা আছেন, তাঁদের বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা। তাঁরা বেতন বাবদ এ বার থেকে ৫১ হাজার টাকা পাবেন।
সারা বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে কর্মী ছাঁটাই। ট্যুইটারের মালিকানা নেওয়ার পর ইলন মাস্ক (Elon Musk) শুরু করেছিলেন গণছাঁটাই (Layoffs)। ইলনের পথেই হাঁটতে শুরু করেছে মেটা, গুগল (Google), অ্যামাজন (Amazon), ডিজনি হটস্টার। Layoffs.fyi-এর ওয়েবসাইট অনুসারে মোট ৫৭০টি কোম্পানি থেকে এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯১৮ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে কর্মী ছাঁটাই হলেও ইউরোপিয়ান দেশগুলো থেকে কর্মী ছাঁটাই করতে সমস্যায় পড়ছে সংস্থাগুলি। তাই এক অভিনব পন্থা নিয়েছে কর্মী বরখাস্ত করতে।
জানা গিয়েছে, ইউরোপিয়ান দেশে গুগল, অ্যামাজন কর্মী ছাঁটাই করতে চাইলেও তা করতে পারছে না। কারণ সেখানকার 'লেবর প্রোটেকশন ল' অন্য জায়গার তুলনায় কঠোর। সেখানে বরখাস্ত করার আগে কর্মীদের সঙ্গে এক আলোচনায় বসতে হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গণ ছাঁটাইয়ে দেরি হয়েই চলেছে। তাই কর্মী ছাঁটাইয়ের উপায় হিসেবে গুগল, অ্যামাজন থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কর্মীদের এক বছরের স্যালারি বা বেতন দেওয়া হবে। যদি তাঁরা স্বেচ্ছায় তাঁদের পদ থেকে ইস্তফা দেন।
জানা গিয়েছে, ফ্রান্সে গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি 'অ্যালফাবেট' থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যে, নিজের ইচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিলে তাঁকে এক বছরের বেতন দেওয়া হবে। আবার জার্মানিতে অ্যামাজনও গুগলের পথেই হেঁটেছে। সেখানেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যে, স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে সরে এলে এক বছরেরে বেতন-সহ বোনাসও দেওয়া হবে।
৮ মাস ধরে বেতন বন্ধ নবান্নের (Nabanna) অর্থ দফতরের এক কর্মীর। এমনকি মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ সহকর্মীদের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, খড়দহের (Khardaha) বাসিন্দা রাজশ্রী সেনগুপ্ত। ২০১৪ সালে গ্রুপ ডি পদে তিনি নিযুক্ত হয়েছেন নবান্নর অর্থ দফতরে।
রাজশ্রী বাবুর দাবি, 'খড়দহ বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক প্রয়াত কাজল সিনহা তাঁকে এই চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তবে গত ৮ মাস ধরে তাঁর বেতন বন্ধ করে রেখেছে নবান্ন। তিনি প্রতিদিন কাজে যাচ্ছে কিন্তু কোনও বেতন পাচ্ছেন না।' রাজশ্রী বাবুর অভিযোগ, 'করোনাকালে যাতায়াতের অসুবিধা থাকায় বেশ কিছুদিন চাকরিতে হাজিরা দিতে পারেননি। যার ফলেই এই ঘটনা। এমনকি তিনি একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি কিন্তু তারপরেও তাঁকে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে তাঁরই সহকর্মীরা।'
অভিযোগ, 'সহকর্মীদের কথায় কাজ না করায় তাঁর উপরে চলছে নানারকমের অত্যাচার। এই ঘটনায় যথেষ্টই ভেঙে পড়েছেন রাজশ্রীবাবু ও তাঁর পরিবারের লোকজন। তাই তিনি আর নবান্নে কাজ করতে চান না।' তাছাড়া নবান্নর তরফে এতদিন বেতন বন্ধ করে রাখার কারণ হিসাবে কোনও সদুত্তর পাননি তিনি, এমনটাই দাবি।
কলকাতা রাজপথ এতদিন অনেক আন্দোলনের (Protest in Kolkata) সাক্ষী থেকেছে। চাকরীপ্রার্থীদের ন্যায্য চাকরির দাবিতে আন্দোলন, রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক কর্মসূচি, রাজনৈতিক আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে এই শহর কলকাতা। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন সরকারী কর্মচারীদের ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন। শহিদ মিনারের সামনে ডিএ (DA) বকেয়া দাবি নিয়ে সরকারি কর্মচারী (Employee Federation) এবং ২৮টি সংগঠন যৌথভাবে শুক্রবার রাত থেকেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে। মূলত তাঁদের দাবি রাজ্য সরকারকে বকেয়া ডিএ দিতে হবে এবং শূন্যপদে স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে।
শুক্রবার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে একটি মিছিলের মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনের শুরু। জানা গিয়েছে, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে অবস্থান বিক্ষোভের অনুমতি চেয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল এবং হাইকোর্টের অনুমতি পেয়েই এই অবস্থান আন্দোলন। আন্দোলনকারীরা জানান,'২০০৯ থেকে তাঁদের ডিএ দিতে হবে। যা যা পাওনা আছে, সেগুলি বকেয়া-সহ দিতে হবে। এছাড়াও আমাদের আরেকটি দাবি, সমস্ত শূন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগ করতে হবে।'
তাঁরা জানান, 'রাতভর তাঁরা এই অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়েছে এবং যতদিন না পর্যন্ত রাজ্য তাঁদের এই দাবি মানছে, ততদিন চলবে এই অবস্থান। এই মাঠ ভরানোর দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি।' এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য অবিলম্বে তাঁদের দাবি পূরণ না হলে এই আন্দোলন আগামী দিনে বৃহত্তর রূপ নিতে পারে সে নিয়ে কোনও প্রশ্নই থাকছে না রাজনৈতিক মহলে।