আবারও সরকারি হাসপাতালে সক্রিয় দালালচক্র। এসএসকেএম -এর পর এবার সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাতপাতালেও টাকার বিনিময়ে মিলছে পরিষেবা। দালালরাজের ডেরা এবার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। হাসপাতালের অন্দরে দালালচক্রের বিরুদ্ধে সরব কামাহরহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র থেকে শুরু করে একাধিক রোগী ও তাঁর পরিবার। শনিবার সাগর দত্ত হাসপাতালে দালালরাজ বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে করজোরে আবেদন করেন কামারহাটির বিধায়ক।
হাসপাতালে একাধিক সাইন বোর্ডে সরকারের তরফে বড় বড় করে লেখা রয়েছে বিনামূল্যে মিলবে যাবতীয় পরিষেবা। কিন্তু বাস্তবে সেই নিয়ম কি কার্যকর হয়েছে হাসপাতালে? জবাবটা মিলল একাধিক রোগী ও রোগীর পরিবারের কথায়। বেড পাওয়া থেকে শুরু করে রক্তের ব্যবস্থা করতে হাসপাতালে দিতে হচ্ছে কখনও ৫০ আবার কখনও ১০০ টাকা। কিন্তু সেই টাকার কোনও উল্লেখ নেই সরকারি রসিদে। মূলত টাকা দিলেই দ্রুত মিলবে পরিষেবা।রোগীর পরিবারের তরফে উঠে আসছে এমনই একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।
সম্প্রতি মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করতে এসেও বিপত্তির সম্মুখীন এক দম্পতি। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছিল, 'কিছু' দিলেই হবে কিছু ব্যবস্থা। হাসপাতাল থেকে রক্ত নিতে হলে 'কিছু' দিতে হবে। অভিযোগ রোগীর পরিবারের।
টাকার বিনিময়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়ার নামে হাসপাতালে ঘুরছে একাধিক দালাল। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, কারা রয়েছে এই দালালচক্রের নেপথ্যে? রক্তের প্রয়োজনে কিংবা বেড পেতে হাসপাতালে দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে রোগীকে। সেই পরিষেবা টাকা দিলেই কয়েক মুহুর্তের মধ্যে কীভাবে পাইয়ে দিতে পারে একজন সামান্য দালাল? এসএসকেএম হাসাপাতালের পর সাগার দত্ত মেডিক্যাল কলেজেও প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে সক্রিয় দালালরাজ? আবারও প্রশ্নের মুখে সরকারি হাসাপাতালের পরিষেবা।
জামিন পেয়ে গেল তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত (Anupam Dutta ) খুনের প্রধান অভিযুক্ত। খবর পেয়ে ২ সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা অনুপম দত্তের স্ত্রীর। অনুপম দত্তের স্ত্রী মীনাক্ষি দত্ত (minakhkhi Dutta) পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান তৃণমূল কাউন্সিলর (Councillor)।
গত ১৩ মার্চ পানিহাটিতে (Panihati) পাড়ার দোকানের সামনে পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে। প্রকাশ্যে আসে শ্যুটার অমিত পণ্ডিতের নাম। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস অমিতের আত্মীয় প্রসেনজিত্ পণ্ডিত ওরফে বাপি পণ্ডিত সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। সোমবার অনুপম দত্ত খুনে অভিযুক্ত বাপি পণ্ডিত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জামিন পেলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পডে় আগরপাড়ায়।
পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পরেই মীনাক্ষী দত্ত তার দুই শিশুকে নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর তাঁদের উদ্ধার করে কামারহাটি সাগর দত্ত হাসপাতালে (Sagar Dutta Hospital) নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে মীনাক্ষী দত্তকে অক্সিজেনও দেওয়া হয়েছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এই মুহূর্তে তাঁর অবস্থা স্থিতীশীল।
অনুপম দত্তের পরিবার এদিন জানান ,' আমরা পুলিসের ওপর ভরসা রেখেছিলাম। কিন্তু অভিযুক্ত জামিন পেয়ে গেল।' এই ঘটনার পরে এলাকার তৃণমূল সদস্যরা তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সোমবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ টায়ার জ্বালিয়ে বিটি রোডের তেতুলতলা মোড় অবরোধ (blockade) করা হয়। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলেও, বিক্ষোভ তুলতে ব্যর্থ হয়। রাজ্য পুলিস নয়, তাদের দাবি নিরপেক্ষ সিবিআই তদন্ত। অনুপম দত্ত খুনে প্রকট হয়ে উঠেছিল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (factional conflict) তত্ত্ব। যদিও শাসকদলের মরিয়া প্রয়াস ছিল বিরোধীদের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার। সোমবার অনুপম দত্ত খুনের মূল অভিযুক্ত ছাড়া পাওয়ায় ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠল শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন।