পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় রাস্তার বেহাল (Road problem) দশা নিয়ে অভিযোগ আগেই ছিল। এবার হুগলি (Hooghly) ও মুর্শিদাবাদ, দুটি আলাদা জেলার বহু রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযোগ, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও মেরামত করা হচ্ছে না প্রয়োজনীয় রাস্তা। পথশ্রী প্রকল্প-সহ জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েতের কোনও ফান্ডের মাধ্য়মে তাদের রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) গুধিয়া থেকে মনিহারপুর ঘাট পর্যন্ত সাড়ে তিন কিমি রাস্তায় বেহাল দশা। যার কারণে ধুঁকছে পর্যটনের শহর মুর্শিদাবাদ।
কুড়ি বছর আগে রাস্তাটি নির্মাণ হলেও এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি পাকা রাস্তা। প্রথমদিকে রাস্তার কাজ শুরু হলে সেখানে মোরাম দিয়ে কাজ চালানো হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার বেহাল দশা স্পষ্ট, ফলে কঙ্কালসার রাস্তায় বেড়িয়ে গিয়েছে মাটি। অভিযোগ, 'বর্ষাকালে নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হয় স্থানীয়দের।'
ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, 'এই রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজারের বেশি লোক যাতায়াত করে এবং আশেপাশের দশটির বেশি গ্রাম এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। স্কুল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুরু করে সমস্ত পরিষেবা নিতে গেলে এ রাস্তাটিকে ব্যবহার করতে হয়। ওই সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশায় রয়েছে। সেই কারণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।' স্থানীয়দের একটাই দাবি, রাস্তা ঠিক করতে হবে।
পাশাপাশি অভিযোগ, 'নিম্নমানের মাল সামগ্রী দিয়ে পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা তৈরি হচ্ছে। রাস্তাটি চওড়ায় ও উচ্চতায় সরকারি পরিকাঠামো অনুযায়ী করছেন না ঠিকাদার। রাস্তা তৈরিতে ব্য়বহৃত বালি-সিমেন্টের পরিমাণ নিয়েও। যার ফলে রাস্তা তৈরির একদিনের মধ্যেই রাস্তায় ফাটল দেখা দিচ্ছে।' এই ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাটের বালি পঞ্চায়েতের জগতপুর এলাকায়। অভিযোগ, 'জগতপুর থেকে সাঁকরা মেলাতলা পর্যন্ত যে দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের মাল সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে। সেই অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দেয় গ্রামের মানুষ।' অভিযোগ, 'সেই রাস্তা গ্রামের মানুষের সুবিধার জন্য করে দেওয়া হয়েছে। ওটা কোনো টেন্ডার হয়নি।'
রাস্তার বেহাল দশায় (Bad Road Condition) প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পথচলতি সাধারণ মানুষদের। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা (So0uth 24 Pargana) জেলার সুকদেবপুর গ্রামেরও একই অবস্থা। স্থানীয়দের দাবি, বাম আমল থেকে আজ পর্যন্ত রাস্তার একই ছবি দেখছেন এলাকার মানুষ জন। বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। সামনেই ভোট আর তার আগেই রাস্তা পেতে মরিয়া এই দুই জেলার মানুষজন।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার (Pashkura) নস্কর দীঘি থেকে শিমুল হাণ্ডা পর্যন্ত মোরাম রাস্তার দীর্ঘদিন বেহাল দশা। বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষজন এই রাস্তাতে যাতায়াত করে। এমনকি মারুতি মেশিনভ্যান-সহ বিভিন্ন চার চাকা গাড়িও যাতায়াত করে এই রাস্তায়। বর্ষার সময় বড় বড় গর্ত হয়ে হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায় উপর। প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা। অন্যদিকে ঠিক একই অবস্থা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুকদেবপুর গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে ইটের রাস্তা সংস্করণ না হওয়ায় রাস্তা খানাখন্দে ভরা। সুকদেবপুর গ্রামের রাস্তার উপর দিয়ে গুমুখবাড়িয়া, খোলাপুকুর বাজার, নারায়ণপুর, মনোহরপুরের বহু মানুষ যাতায়াত করেন।
এই রাস্তার জেরে প্রায় ঘটে চলে দুর্ঘটনা। একাধিকবার প্রশাসনিক মহলে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। এলাকাবাসীদের দাবি, আগে বহুবার প্রশাসন মহলে দরখাস্ত জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। ভোট আসে ভোট যায়, জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা সরাইয়ের প্রতিশ্রুতিও দেয়। তবে ভোট গেলেই আর কোনও প্রতিনিধিই সমস্যার সমাধান করে না।
তবে এবার সামনেই পঞ্চায়েত ভোট তার আগেই রাস্তা ঠিক করতে হবে জনপ্রতিনিধিদের।