দুই ট্রাক চালকের মধ্য়ে বচসার জেরে প্রাণ গেল এক চালকের। অভিযোগ, ঝামেলা চলাকালীন স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে খুন করা হয় ট্রাক চালককে। ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে দুর্গাপুর ফরিদপুর থানার মাধাইপুর এলাকায়। জানা গিয়েছে, মৃত চালকের নাম মইনুদ্দিন মণ্ডল (৪১)। নদীয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জানা গিয়েছে, দু'জন চালকই একই মালিকের গাড়ি চালাত। সোমবার রাতে দুর্গাপুর ফরিদপুর থানার মাধাইপুর এলাকায় ওই দুই ট্রাক চালকের মধ্যে বচসা এবং হাতাহাতি শুরু হয়। তখনই মইনুদ্দিন মণ্ডল নামের ওই ট্রাক চালককে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় আরেক চালক। এরপর খবর দেওয়া হয় পুলিসকে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য় পাঠিয়ে অভিযুক্ত চালকের সন্ধানেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। তবে কী কারণে বচসা হয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি।
রাজ্যের আনাচকানাচে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বালি মাফিয়ারা। নদীর বুক চিরে চলছে অবৈধ বালি উত্তোলন। মুর্শিদাবাদও তার ব্যতিক্রম নয়। এবার সেই বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রুখতে দাবাং মুডে বড়ঞার বিএলআরও রঞ্জন কুমার দে। বালি ঘাটে গিয়ে আইনি নোটিস টাঙানোর পাশাপাশি সর্তকবার্তা দিলেন বিএলআরও।
প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ময়ূরাক্ষী নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে বালি খনন করে প্রকাশ্য দিবালোকে দিনের পর দিন চলছে বালি পাচার। প্রতিনিয়ত বালি খননের ফলে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে ময়ূরাক্ষী নদীর একাংশের। এলাকাবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ময়ূরাক্ষী নদীর সুন্দরপুর বিপ্লবী ননী সেতু এলাকায় অভিযান শুরু করেন এবং কার্যত এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা গেল বিএলআরওকে।
প্রকৃতি ধ্বংসে মেতেছে সমাজের একশ্রেণির আসাধু চক্র। এভাবেই বালি উত্তোলন চলতে থাকলে কমবে জলের স্তর, নদী হারাবে তার গতিপথ। বাড়বে বন্যার আশঙ্কা। তাই অবিলম্বে বালি উত্তোলন বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রুখতে বিএলআরওর এহেন পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হয় সেটাই দেখার।
অবৈধভাবে মহানন্দা নদীর চর কেটে চলছিল মাটি মাফিয়াদের বালি বিক্রির কাজ। বালি বিক্রির কাজ বন্ধ করতে সরব গ্রামবাসীরা। শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর দিনাজপুর ও দার্জিলিং জেলার মাঝ বরাবর দিয়ে বয়ে চলেছে মহানন্দা নদী।
সেই মহানন্দা নদীর চর কেটে বিক্রি করছে মিনি ডাকপাড়া গ্রামের বেশ কিছু মানুষ। যারা বিক্রি করছে তাঁদের দাবি, তাঁরা পৈত্রিক সম্পত্তি কেটে বিক্রি হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর আগে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার ফলে আমাদের জমির উপর দিয়ে নদী বইতে শুরু করে। সেই সময় নদীগর্ভে চলে যায় কয়েকশ একর জমি। তবে এখন নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার ফলে সেই জমি ফিরে পেয়েছি। সেখান থেকেই নিজের বাড়ির কাজের জন্য ও গ্রামবাসীরা নিজেদের কাজের জন্য ট্রাক্টর করে বালি নিয়ে যাচ্ছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে নদীর চর জেসিবির মাধ্যমে কেটে ট্রাক্টর বোঝাই করে অন্য এক জায়গায় ডাম্পিং করা হচ্ছে। সেখান থেকে রাতের অন্ধকারে ডাম্পার করে বালিগুলি পাচার করা হচ্ছে। তবে রাতের অন্ধকারে বালি পাচারকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীরা লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন ফাঁসিদেওয়ার বিএলআর অফিসে।
ফাঁসিদেওয়ার বিএলআরও শুভ্রজিৎ মজুমদার জানান, নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে ওই এলাকায় আনুমানিক একশো থেকে দেড়শ বিঘা জমির চর বেরিয়ে এসেছে। তবে সেই চড় থেকে যারা বালি বিক্রি করছেন সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ। বালি চুরি বন্ধ করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনোমতেই বালি চুরি দুষ্কৃতীদের ছাড়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শহর কলকাতার বুকে এর আগেও বহুবার অ্যাপ ক্যাব চালকদের বিরুদ্ধে অভব্যতার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় ফের এমন ঘটনার সাক্ষী রইল শহর কলকাতা। সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় শিয়ালদহ থেকে মানিকতলায় যাওয়ার জন্য অনলাইনে অ্যাপ ক্যাব বুক করেছিলেন এক যুবতী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা এবং ভাইপো। অভিযোগ, গাড়িতে ওঠার পর থেকেই তাঁকে দেখে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন অ্যাপ ক্যাব চালক। এরপরেই প্রতিবাদ করায় ওই যুবতীর দাদাকে রীতিমত মারধর করেন চালক। যুবতী দাদাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাঁকেও, মারধর করা হয়। পরবর্তীতে রীতিমত লোকজন ডেকে ওই যুবতী এবং তাঁর দাদার উপর চড়াও হয় অভিযুক্ত চালক। এমনকি ছিনিয়ে নেওয়া হয় যুবতীর গলার সোনার হারও।
যুবতীর অভিযোগ প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটলেও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি কেউই। ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিসের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেও পুলিসের তরফেও কোনওরকম সাহায্য করা হয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই যুবতী। পাশাপাশি অভিযুক্ত চালক সহ গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টাও করেননি ঘটনাস্থলে থাকা কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিস, এমনটাই অভিযোগ ওই যুবতীর। পরবর্তীতে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে অভিযুক্ত ক্যাব চালক মহম্মদকে আটক করে পুলিস।
গোটা ঘটনায় রাজ্যে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ঘটনাস্থলে থাকার পরেও কেন যুবতীর সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিলেন না কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিস তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। শহরের বুকে জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে এমন ঘটনায় আরও একবার পরিষ্কার তিলোত্তমার নিরাপত্তার চিত্র। শহর কলকাতাকে সবচেয়ে নিরাপদ শহর বলা হলেও সেই নিরাপত্তা কোথায় পাচ্ছেন রাজ্যবাসী? প্রকাশ্যে খুন থেকে প্রকাশ্যে হয়রানি, মারধরের মতো ঘটনার বারংবার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে শহরের বুকে। পাশাপাশি অনলাইন ক্যাবগুলোতে যাত্রী হয়রানি সহ শ্লীলতাহানির ঘটনাও সামনে এসেছে একাধিকবার। তারপরেও কেন টনক নড়ছে না প্রশাসনের?
কথায় আছে, চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ো ধরা! আর ধরা পড়লে কি হবে? চাল চুরি পর্দাফাঁস, হাতেনাতে ধরে ফেলল স্থানীয়রা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের বনপুরা ৭ নম্বর অঞ্চলে অবস্থিত চুয়াশোল শিশু শিক্ষাকেন্দ্র। অভিযোগ,সেই কেন্দ্রের মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ বস্তা ভর্তি চাল, টোটোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল স্কুলের শিক্ষিকার বাড়িতে। নির্দেশ নাকি মিলেছিল এমনটাই। এলাকাবাসীর সন্দেহ হওয়ায় হাতেনাতে টোটোচালকে পাকড়াও করেন গ্রামবাসীরা। তারপর গ্রামবাসীর জেরা মুখে পড়ে সবটাই স্বীকার করে নেন টোটোচালক। তবে, এই প্রথম নয় এর আগেও দু-একবার শিক্ষিকার বাড়িতে চাল পৌছে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন টোটোচালক। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে সরব স্থানীয়রা, চলে বিক্ষোভ।
কোনও কোনও স্কুলে ঢালাও চাল চুরি। কোথাও কোথাও খোলা বাজারে চাল বিক্রি। অনেক ক্ষেত্রে আবার ছাত্রছাত্রীদের প্রাপ্য ডিম দেওয়া হয় না। পড়ুয়াদের মুখে গ্রাসটুকু কেড়ে নিচ্ছে খোদ শিক্ষিকাই? তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মানতে নারাজ অভিযুক্ত শিক্ষিকা।
স্কুলের প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের সুষম খাদ্য দিতেই মিড ডে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু এ রাজ্যে দুপুরের খাবার জোগান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বারে বারেই।
রেশন দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রেশন বন্টনে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকরা। এবার প্রকাশ্যে এল মিড ডে মিলের চাল চুরির অভিযোগ। পড়ুয়াদের খাবার নিয়েও এত গড়িমসি কেন?
পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর টোটো চালকের মৃতদেহ উদ্ধার। ঘটনায় আটক দুইজন অভিযুক্ত। বুধবার সকালে মোহন থানার দুর্গাবাড়ি এলাকার একটি নালা থেকে উদ্ধার হয় ওই টোটো চালকের মৃতদেহটি। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত টোটো চালকের নাম, শ্যামল মালিক (৪০)। পুলিসের অনুমান, টোটো বিক্রি করা নিয়ে ঝামেলার জেরেই খুন হয়েছে ওই টোটো চালক। মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিল ওই টোটো চালক। তারপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় পুলিস এবং পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোন হদিশ পায়নি শ্যামল বাবুর। এরপর এদিন সকালে মোহন থানার দুর্গাবাড়ি এলাকায় একটি নালা থেকে উদ্ধার হয় শ্যামল মালিক নামে ওই টোটো চালকের মৃতদেহ। এলাকার বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে মোহনপুর থানায় খবর দিলে পুলিস এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্যারাকপুর পুলিস মর্গে পাঠায়। ইতিমধ্য়ে পুলিস এই পুরো ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা হল ঝড়খালি। রবিবার ঝড়খালিতে নদীঘাট সংলগ্ন জেটি নদী বাঁধে ভয়াবহ ধস নামে। আর সেই নদী ভাঙ্গনের জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পর্যটক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে এই বিষয়ে উঠে আসছে প্রশাসনের ভূমিকা। কারণ এর আগে বহুবার এই নদী ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এখনও কেন প্রশাসন এই বিষয়ে সচেতন হয় নি সেই নিয়েও বারংবার প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্য়ে ঝড়খালিতে সেচ দফতরের তরফ থেকে নদী বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি, শীতের শুরুতে এভাবে নদী ভাঙ্গনে ফলে বেশ বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কারণ ব্যবসা সূত্রে দূর দূরান্ত থেকে আসা অনেক ব্য়বসায়ীরা এই নদী ভাঙনের জন্য় নিজেদের জিনিসপত্র আবার গুছিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য় হচ্ছেন। দিনের পর দিন যেভাবে গঙ্গাভাঙন বেড়ে গিয়েছে তাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এবং অন্যত্র আসা ব্য়বসায়ীরা আরও ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই বিষয়ে প্রশাসন কি পদক্ষেপ গ্রহন করে তা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে সাধারণ মানুষ।
উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয়। তিস্তার করালগ্রাসে চরম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিকিমে। কমপক্ষে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। অসমর্থিত সূত্রের খবর, এখনও নিখোঁজ ১০২ জন। বৃহস্পতিবার উদ্ধার হল সেনার ট্রাক। তিস্তার স্রোতে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে ট্রাকগুলি।
সিকিমের চুংথাম, ডিকচু, সিংতাম, রংপোর মতো একাধিক এলাকা গ্রাস করেছে তিস্তা। সিকিমের বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটে প্রায় ৩০০০ পর্যটক আটকে আছে। ২ বছর আগের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা জিওমরফোলজি জার্নালের গবেষণা কিন্তু আগেই জানিয়েছিল, এমন বিপদসঙ্কুল স্থানে দাঁড়িয়ে আছে সিকিম।
২০২১ সালে জিওমরফোলজি জার্নালের একটি গবেষণা জানিয়েছিল, গত কয়েকবছর ধরে লোনক হ্রদ আকারে, আয়তনে বেড়ে যাচ্ছে। হিমবাহের পরিমাণ ও হিমবাহের গলনের প্রবাহে এই হ্রদ ভেঙে যেতে পারে। বুধবার ভোররাতে এই হ্রদের জলই ভেঙে তিস্তায় গিয়ে মেশে। এরপরই ফুলে ফেঁপে ওঠে।
ভয়াল রূপ ত্যাগ করে শান্ত হচ্ছে তিস্তা। ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে জলপাইগুড়ির গজলডোবায় সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। ভয় নেই আর আশ্বস্ত করছেন মন্ত্রী, তিস্তা পারের বাসিন্দারাও একটু স্বস্তিতে। তবু খচখচ করছে ভয়ের কাঁটা। উত্তাল প্রকৃতি নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে গোটা মানবজাতিকে। বুধবার সব শেষ হওয়ার ভয়টাকে খুব কাছ অনুভব করেছে বঙ্গের উত্তর। সিকিমের লোনক হ্রদে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তিস্তার উথাল পাথাল স্রোতে জলপাইগুড়ির গজলডোবায় ভেসে এসেছিল ৩ টি মৃতদেহ। গজলডোবার উঠতি পর্যটন কেন্দ্র রাজ্য সরকারের স্বপ্নের প্রকল্প ভোরের আলো নিয়েও শঙ্কার শেষ নেই। বৃহস্পতিবার সেই গজলডোবার হাওয়া মহলেই বিশেষ বৈঠকে বসলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী।
শুধু সেচমন্ত্রী নয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, প্রতিমন্ত্রী বুলুচিক বরাইক, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল নেত্রী মহুয়া গোপ সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের নজর এখন শুধুই তিস্তার মাতাল স্রোতে। ঘাড়ের ওপর ৪৮ ঘণ্টার অশনি সংকেত। যদি আবার বাড়ে জল? তবে বৃহস্পতিবার একটু হলেও ভরসা দিচ্ছে তিস্তা। বুধবারের ভয়াল রূপ ত্যাগ করে স্রোতস্বিনী এখন ধীর প্রবাহিনী। ভয়ের কাঁটা খচখচ করছেই। খামখেয়ালি প্রকৃতির কখন আবার কি মর্জি হয়!
গঙ্গা তীরবর্তী এলাকা মানেই ভাঙনের (River Erosion) অভিশাপে জর্জরিত। জনজীবনকে কার্যত বিপর্যস্ত ও অনিশ্চিত করে তোলে। সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের খোঁজ করেন গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দারা। কিন্তু স্থায়ী সমাধান তো দূরের কথা, কোনও কিছুতেই যেন ভাঙন থেকে মুক্তি মিলছে না মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সামশেরগঞ্জের (Samserganj) মানুষের। বর্ষা পড়তেই ফের সামশেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙনে আতঙ্ক শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে গোটা গ্রাম নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আতঙ্কে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ব্লকের অন্তর্গত মহেশটোল, প্রতাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা। মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি গঙ্গা ভাঙনে বিপর্যস্ত মালদহও (Malda)।
মালদহের মালিক গোপালপুর এলাকায় গঙ্গা ভাঙ্গনে গত কয়েকদিনে ভেঙে পড়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। এই পরিস্থিতিতে গৃহহীন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে মালদহের মিল্কির ভবানীপুরে আম বাগানের মধ্যে। ত্রিপাল খাটিয়ে কোনওমতে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। নেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত পানীয় জল। প্রশাসনের কোনও ব্যক্তি একবারের জন্য খোঁজ নিতেও আসেননি বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন গৃহহীন গ্রামবাসীরা। পুনর্বাসনের অপেক্ষায় সাধারণ মানুষ।
নিম্নচাপের দোসর বৃষ্টি। আর তাতেই বাড়ছে আতঙ্ক। পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) ডেবরার মোরিমপুর থেকে তালিবাঁদি কংসাবতী নদী (Kansabati River) বাঁধে ধস। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জলস্তর বাড়লে প্লাবিত হয়ে যেতে পারে প্রায় ৪০টি মৌজা। বৃষ্টির (Rain) পূর্বাভাস থাকায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাসিন্দারা। গৃহহীন হওয়ার ভয় জাঁকিয়ে বসেছে বাসিন্দাদের মনে। বাঁধের অবস্থা বেহাল হওয়ায় ঘটছে দুর্ঘটনাও। এমনকি টিউশন থেকে ফেরার পথে পড়ে যায় ১ ছাত্রী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই পরিস্থিতি। বহুবার বাঁধ মেরামতির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি। এরফলে বিভিন্ন সময় নানা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।
তৃণমূল জেলা কো অর্ডিনেটর অজিত মাইতি ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, এটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়। মানুষের হাতে নেই। তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য জগন্নাথ মুর্মুর অভিযোগ, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানানোর পরও সুরাহা মেলেনি।
নদী পাড়ের মানুষদের বারোমাসই দুর্ভোগ লেগেই থাকে। কিন্তু সমস্যা সমাধানে জন্য এগিয়ে আসেনা কেউই। বাঁধের সুবন্দোবস্ত না হলে কী হবে, সেই আশঙ্কাই দিন কাটছে বাসিন্দাদের।
জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কনভয়ের এক চালককে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার অভিযোগে আটক করা হল। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট চালককে তাজ হোটেলে দেখা গিয়েছিলেন। যেখানে ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহায়ান ছিলেন। তিনি ওই হোটেলে প্রবেশ করা মাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নিরাপত্তা আধিকারিকরা আটক করলে, তিনি জানান যে, তাঁকে সকাল সাড়ে ৯'টার সময় আইটিসি মৌর্যতে যেতে হবে, যেখানে জো বাইডেন রয়েছেন। কিন্তু, তাঁর হাতে খানিকটা সময় থাকায় তিনি ভেবেছিলেন যাত্রী পরিষেবায় খানিকটা সময় ব্যয় করবেন। সেই উদ্দেশ্যেই এক যাত্রীকে তাজ হোটেলে নামিয়ে দিতে আসেন তিনি।
ওই চালককে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হলেও, তাঁকে জো বাইডেনের কনভয়ের দায়িত্ব থেকে তড়িঘড়ি সরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের শুরুটাই হল রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে। একে একে সেখানে উপস্থিত হলেন সম্মেলনে যোগ দেওয়া সমস্ত রাষ্ট্রনেতারা।
রাজঘাটে সকল অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একে একে সেখানে এসে পৌঁছন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং অন্যান্যরা।
দুর্গাপুরের (Durgapur) লাউদোহার কুনুর নদী (Kunur River)এক সময় বাসিন্দাদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ ছিল। এই নদীর জলে এলাকার প্রতাপপুর, কাঁটাবেরিয়া সহ প্রায় কুড়িটি গ্রামের মানুষ চাষবাস করতেন। কিন্তু সেই কুনুর নদীর জল (water pollution) আজ অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকার চাষীদের কাছে। অভিযোগ, বেসরকারি গ্যাস উত্তোলনকারী সংস্থার বর্জ্য মিশছে নদীর জলে। চাষের জমিতে জল ব্যবহার করলে কমছে মাটির উর্বরতা। বন্ধ্যা হয়ে পড়ছে জমি। জল দূষণের কারণে সংকটের মুখে কৃষকদের রুজি রোজগার। তারপর আবার কুনুর নদীর সেতুও দুর্বল। ভেঙে গেছে সেতুর রেলিংও। অবিলম্বে বেহাল সেতু আর রাস্তা সারাইয়ের দাবিও তুলেছেন অনেকে।
চাষবাস হচ্ছে না, অথচ চাষবাসের উপর নির্ভরশীল এই কুড়িটি গ্রামের বেশ কয়েক হাজার মানুষ। যাঁরা অনেকে পরিস্থিতির শিকার হয়ে পেশা বদলে ফেলেছেন, আবার অনেকে আত্মহত্যার পথকেই বেছে নিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, কুনুর নদীর সেতু দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছে, ভেঙে গিয়েছে নদীর সেতুর রেলিং। বেহাল হয়ে পড়েছে নদীর উপরের রাস্তা। তা সত্ত্বেও আজ ভারী যানবাহন এই সেতুর উপর দিয়ে যাতাযাত করছে, এতে বিপদ আরও বাড়ছে।
গ্যাস উত্তোলনকারী সংস্থা কারখানা তৈরির জন্য এলাকার বেশ কিছু জমি ১৫ বছরের জন্য লিজে নেয়। অভিযোগ, লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও জমিদাতারা পুনর্নবীকরণের টাকা পাননি। অভিযোগ, শুধুমাত্র শাসকদল ঘেঁষা জমিদাতারাই টাকা পাচ্ছেন। বিজেপি করার অপরাধে বঞ্চিত একাংশ জমিদাতা।
বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার বেশ কিছু মানুষ কুনুর বাঁচাও আন্দোলনে নামেন। এই আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের। অবিলম্বে বেহাল সেতু আর রাস্তা সারাইয়ের দাবিও উঠেছে। অভিযোগ উঠছে এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার অপরাধে তাদেরকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির অভিযোগ, 'কুনুর বাঁচাতে যতদূর যেতে হয় ততদূর যাব। যে মুখ্যমন্ত্রী জমি আন্দোলনকে সামনে রেখে ক্ষমতায় এসেছেন, আর তাঁর জামানায় কিনা ক্ষতির মুখে চাষিরা।'
যদিও এইসব বিজেপির নাটক বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব, দলের লাউদোহা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা বিষয়টি জানি চাষীদের পাশে আছি। বিজেপির নাটকের প্রয়োজন নেই।'
কুনুর নদীর একটা ইতিহাস প্রেক্ষাপট আছে। অনেক লেখা রয়েছে এই নদীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু কালের নিয়মে আজ এই নদী হাজারো প্রশ্নের মুখে। এর গতি কোথায় থামবে জানা নেই কারোর। তবে কুনুর বাঁচাও কমিটি বলছে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে কুনুরকে।
যে হলুদ ট্যাক্সিতে চাপিয়ে গত বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃতপ্রায় ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তার চালককে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। তাঁকে যাদবপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই রাতে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে নিয়ে কারা হাসপাতালে গিয়েছিলেন, তা তিনি জানিয়েছেন। ট্যাক্সিচালকের পাশাপাশি মেন হস্টেলের এক নিরাপত্তারক্ষীকেও বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার, ৯ অগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। এর পর তাঁকে হলুদ ট্যাক্সিতে চাপিয়ে যাদবপুরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, সেই ট্যাক্সিচালক বৃহস্পতিবার পুলিশকে জানিয়েছেন, আহত ওই ছাত্রের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছাত্র ছিল। তাঁদের ওই বেসরকারি হাসপাতালে নামিয়ে দিয়ে তিনি চলে এসেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্র তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে বেরিয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন পড়ুয়া। এর পর কয়েক জন ছাত্র এবং হস্টেলের সুপার নিরাপত্তারক্ষীকে গেট বন্ধ করে দিতে বলেন। তাঁকে এ-ও জানিয়েছিলেন, বাইরে থেকে সংবাদমাধ্যম বা পুলিশের কেউ যাতে ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে, সে দিকে নজর রাখতে। এ বার সেই রক্ষীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, তিনি জানিয়েছেন, ওই রাতে তিনি হস্টেলেই ছিলেন। গেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাঁকে গেট ছেড়ে যেতে বারণও করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
নদীর (River) ঘাট থেকে উদ্ধার (Rescue) হল দুটি শিশুর পচাগলা মৃতদেহ (Deadbody)। বুধবার, ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ (Bangaon) থানার পাশে অবস্থিত ইছামতি নদীতে। পুলিস সূত্রে খবর, দুটি শিশুর মৃতদেহের মধ্যে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের দেহ রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তাদের কোনও পরিচয়পত্র পাওয়া যায় নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বনগাঁ থানার পূুলিস এসে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্য়পক চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে এলাকায়।
প্রতক্ষ্য়দর্শী বাবলু গোলদার জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো এদিনও তিনি ঘাটে গিয়েছিলেন শৌচকর্ম করতে। সেই সময় একটা পচা দুর্গন্ধ পান তিনি। পরবর্তীতে তিনি দেখতে পান নদীর ঘাটে একটি শিশুর মৃতদেহ নদীর উপর ভাসছে। এরপর খবর দেওয়া হয় থানায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে বনগাঁ থানার পুলিস এসে মোট দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে।
পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, মৃত শিশু দুটির বয়স চার থেকে ছয় বছরের মধ্যে৷ কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তা জানতে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস প্রশাসন।