প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ, শক্তিস্বরূপা তকমা, রাতারাতি যেন সেলিব্রেটি রেখা পাত্র। মোদীর ফোনের পরদিনই সন্দেশখালিতে পা রেখা পাত্রর। গ্রামে খবর পৌঁছেছিল আগেই, রেখাকে দেখতে সন্দেশখালি ফেরিঘাটে ভিড় জমিয়েছিলেন কাতারে কাতারে মানুষ। পোস্টার বিরোধিতা অতীত, প্রথমদিনে রেখাকে জড়িয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসল সন্দেশখালি। আবেগে চোখে জল রেখার।
বিজেপি সূত্রের খবর, সন্দেশখালির আন্দোলন-প্রতিবাদের মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী হিসেবে বেছেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। নদীপাড়ের পথ ধরেই এবার আরও বড় আন্দোলনের পথে এগোচ্ছেন রেখা। সন্দেশখালি পৌঁছে প্রণাম করলেন মাটিতে লুটিয়ে।
কোথাও আবির, কোথাও মালা, কোথাও ফুল। গ্রামের মেয়েকে বরণ করতে নাচ-গানে সামিল গোটা সন্দেশখালি। লোকসভা ভোটের ফলের পর আনন্দ হবে আরও, দাবি রেখার। রেখা পাত্রই বিজেপির অন্যতম 'মাস্টারস্ট্রোক' হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
রেখা পাত্র। সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ। বর্তমানে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী। রেখার মেসেজ পেয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোন করলেন রেখাকে। 'শক্তি স্বরূপা' বলে সম্বোধন করে বলেন রেখার সাহসিকতার জন্যই সন্দেশখালির ত্রাস এখন গরাদের ওপারে।
সন্দেশখালির মা, বোনেদের পাশে থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান রেখা। রেখার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর সন্দেশখালির মানুষের কী প্রতিক্রিয়া তা রেখার কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। রেখা জানান, সন্দেশখালিতে যে কয়েকজন তৃণমূলের সমর্থন করছিল, রেখা প্রার্থী হওয়ার পর তাঁঁরা বিরোধীতা করেছিলেন। তাঁরাও এখন মেনে নিয়েছেন। তাঁরা তাঁকে জানিয়েছেন, তৃণমূলের উস্কানিতেই তাঁরা এসব করেছেন। তাঁরা যা করেছেন, সে সবের জন্য তাঁরা ক্ষমাও চেয়েছেন।’
রেখা প্রধানমত্রীকে আরও জানিয়েছেন, কীভাবে ২০১১ সালের পর থেকে সন্দেশখালির মানুষ ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এবার যেন তারা নিরাপত্তার সঙ্গে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেটা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান রেখা। প্রধানমন্ত্রী রেখাকে আশ্বস্ত করে বলেন, রেখার কথা নিশ্চয় নির্বাচন কমিশনের কানে পৌঁছবে। সন্দেশখালির মানুষের পাশে থাকবে কমিশন, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পারে।
রেখা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, সন্দেশখালির সকল মানুষের জন্য তিনি কাজ করতে চান। এমনকি যাঁরা বিরোধীতা করেছেন তাঁদের জন্যও। প্রধানমন্ত্রী এ কথা শোনার পর খুশি হন, রেখাকে বলেন, বিজেপি সঠিক প্রার্থী বাছাই করেছে। একদিন দেশ রেখার এই ভাবনার জন্য গর্বিত হবে।
রেখা বলেছেন, 'সন্দেশখালিতে মা-বোনেদের অত্যাচারের পাশাপাশি পুরুষদের উপরেও আক্রমণ হচ্ছে। মারধর করা হয়। কিন্তু তাঁরাও আমার ভাই। তাঁদের সুরক্ষার জন্যও আমি লড়াই করব।'
রাজনীতির অভিজ্ঞতা না থাকা রেখা, খেটে খাওয়া কষ্টে দিন কাটানো রেখা, সন্দেশখালির উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে, কন্যাসন্তানকে কোলে নিয়ে মিছিলে হাঁটা রেখা। তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠা রেখার আত্মবিশ্বাস মুগ্ধ করে প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস রেখা নির্বাচনে জয়লাভ করে দিল্লিতে পৌঁছবেই।